এই গল্পটা অনেকের জীবন বদলে দিতে পারে।
আমরা পাঁচ ভাই পাঁচ বোন আলহামদুলিল্লাহ সকলে আরবি শিক্ষায় উচ্ছ শিক্ষিত।
আমি প্রবাসে থাকা কালীন আমার আব্বা হুজুর কে হারিয়েছি(আল্লাহ যেন আব্বা হুজুর(রহঃ) কে জান্নাতের দুলহা বানিয়ে রাখেন) আমিন।
আমার 'মা' জননীকে আল্লাহ আমাদের চোখের মনি বানিয়ে এখনো হায়াতে হিজরী দান করে বাছিয়ে রেখেছেন আল্লাহ যেন 'মা' জননীকে হাজারো বছর বেছে রাখেন এই ফরিয়াদ করছি।
পরিবারে আমি ভাইদের মধ্যে বড় সন্তান অবশ্যয় বোনদের মধ্যে দুই বোন আমার বড় ইতি মধ্যে আমি আমার মেঝ আপু কে হারিয়েছি কয়েক মাস আগে (আল্লাহ আমার মেঝ আপু কে জান্নাতুল ফেরদৌস নসীব করুক) আমিন।

ঠিক সময়ে স্কুল মাদ্রাসায় যাওয়া আসা এবং প্রতিদিন মাগরিবের নামাজের পর কিছুক্ষন আল্লাহর জিকির মিলাদ দরুদ শরীফ পড়ে সকলের জন্য দোয়া মোনাজাত করতে হতো। শিশু কালে এই নিয়ম নীতি আমার জন্য খুবই কষ্ট দায়ক মনে হলে ও বড় হয়ে বেড়ে উঠার সাথে সাথে বুঝতে বাকী নাই যে মুরুব্বীদের শিক্ষা দিক্ষা শাসন যেন এক মহা নেয়ামত।

আমার শিক্ষা জীবন ঘিরে রয়েছে অনেক গল্প শুরু থেকে আমাকে সংগ্রাম করতে হয়েছে এই শিক্ষা অর্জন করতে সব বাঁধা অতিক্রম করে এস,এস,সি পরিক্ষা দিয়ে আমি ঘর থেকে বের হয়ে যাই কারন রেজাল্ট হতে তিন মাস সময় লাগবে ভাবলাম এই তিন মাস আমি বসে থাকব না।
সাহস ছিল অনেক আলহামদুলিল্লাহ
ঐ সময় আমাদের পাশ্ববর্তি কোন টাইপিং স্কুল ছিল না মনস্হ করলাম টাইপ শিখব খবর নিয়ে চন্দনাইশ চলে গেলাম টাইপিং স্কুলে ভর্তি হয়ে গেলাম
ওখানে আমার ফুফুর বাড়ি ছিল ফুফুকে বল্লাম ফুফু বল্ল আমাদের বাড়িতে থেকে টাইপিং শিখবি কোন সমস্যা নেই।

টিউশনি ঠিক হয়ে গেল টিউশনি করা শুরু করলাম এদিকে আমার ফুফু আমার উপর ভিষম রাগ কারন ফুফু এলাকার খুবই নামি দামি মানুষ এক নামে চৌধুরী পরিবার আমি টিউশনি করলে নাকি ফুফুর ইজ্জত চলে যাবে আমাকে ফুফু বকা বকি শুরু করল টিউশনি ছেড়ে দেওয়ার জন্য।
আমি এবার কৌশলে ফুফুকে বুঝাতে শুরু করলাম যে টিউশনি করলে কেন আপনার ইজ্জত যাবে অনেক বুঝানোর পর ফুফুর শুভ বুদ্ধি উদয় হলে আমাকে বাহবা দিতে শুরু করল।

আমি হয়ে যাব বধির, আমি হয়ে যাব অন্ধ, আমি হয়ে যাব লেংড়া, তাই আমাকে এগুতে হবে আমাকে যখন যা পাই তাই করতে হবে আমি তৈরী করা পাচ্ছি আর খাবো আনন্দ করবো তা হতে পারে না সময় আমার জন্য অপেক্ষায় থাকবে না।

প্রতিদিন মাগরিবের নামাজের পর ভীর জমাতো এলাকার বুরো বুরো মা,চাচী,দাদীরা কারন আমি ঐ ছোটকালের বাবার শিক্ষা মতো লজিং বাড়িতে মাগরিবের নামাজের পড়ে ছাত্র/ছাত্রীদের নিয়ে জিকির, মিলাদ পড়ে মোনাজাত করার প্রবনতা চালু করেছি তাই পাড়ার সকলে খুবই খুশি সবাই একটু মোনাজাত করতে ঘরের বাহিরে দেওয়ালের আনাছে কানাছে বসে থাকত।

এর মাঝে আমি প্রতিটি সামাজিক কাজে ও কারো দুঃখে দৌড়ে পাশে যেতাম যেমন বিবাহ,মেজবান,রোগির সেবা, কারো ঘরে আগুন লাগলে ঐ সমস্ত কাজ গুলোতে আমি আগে থাকতাম।
এ ভাবে আমার এস,এস,সি রেজাল্ট হলো ফলা ফল ভাল এডমিশন নিলাম এইস, এস,সি তে এভাবে জীবনের সাথে সংগ্রাম করে লেখা পড়ার পাশা পাশি টিউশনি,বিভিন্ন ইনকামের পথ বের করে নীজের খরছ এমন কি পরিবারের খরছ ও বহন করা শুরু করলাম। ইতি টানলাম শিক্ষা জীবন।

এবার চলে আসলাম চট্টগ্রাম শহরে একটা মাসিক পত্রিকা করলাম পাশা পাশি আন্দর কিল্লা প্রিন্টিং এর ব্যাবসা শুরু করলাম এক বন্ধুর সাথে।
তবে প্রিন্টিং ব্যাবসায় আমি অনবিজ্ঞ আমার প্রিয় ব্যাক্তিত্ব প্রিয় বন্ধু টা খুবই আন্তরিক ছিল প্রকৃত একজন ভাল মানুষ ছিল তিনি আমাকে শেখাতে কার্পন্য করতো না কাজ করছি লেগে আছি কোন দিন পাই কোন দিন পাই না দুঃখে সুখে দুজনে ভাগা ভাগি করে চলছি আল্লাহর উপর তাওয়াক্কুল ছিল শক্ত। সামান্য উপার্জন হলে খেতাম খরছ করতাম না হলে ও কেউ না জেনে মত উপবাস থাকতাম। সেই আন্দরকিল্লা থেকে ২নাম্বার গেইট রাত বারোটার পর কেউ যেন না দেখে পায়ে হেঁটে চলে আসতাম। তবে আমরা এতে কোন প্রকার হতাশ হতাম না ভেংগে পড়তাম না পাছে লোকে কি বলছে তা ফিরে থাকাতাম না। স্বপ্ন দেখতাম আগামীকাল আমার জন্য ভাল কিছু অপেক্ষা করছে।


ব্যাবসায় লোকসান গুনে আমি ক্লান্ত হইনি, জিমিয়ে পড়িনি, হতাশা ভোগ করিনি মনে সাহস রেখেছি আবার কিছু পুঁজি যোগাড় করে কাজে মনোযোগ দিলাম বিজ্ঞদের বুদ্ধি পরমর্শ কাজে লাগালাম আলহামদুলিল্লাহ সফলতা আমাকে ঠিকই ধরা দিল আমি ক্ষুদ্র একজন কাঠ ব্যাবসায়ী থেকে সরকার অনুমোদিত বৃহত্তর কাঠ ব্যবসায়ী সমিতির সদস্য হলাম যা বর্তমান বলবৎ আছে।

তবে আমার শ্বাশুর বাড়ির সবাই শাশুর চাচা শাশুর আমার সহধর্মিণীর তিন ভাই সবাই ছিল বিদেশী সৌদি আরব প্রবাসী আল্লাহর হুকুম বিনা আলোচনা বিনা খবরে আমি হঠাৎ একদিন জানতে পারলাম সৌদি আরব থেকে আমার ভিসা চলে আসছে।


ছোট ভাই বোনেরা যখন বলে আমরা খুব ভাল আছি সুন্দর জুতো কাপড় কিনেছি ঠিক মত স্কুল মাদ্রাসায় যাচ্ছি ঠিক ছেলে মেয়ের মূখে যখন শুনি ঐ একই কথা আর কোন দুঃখ মনে পড়ে না।
জনম দুঃখী 'মা' বাবা যখন বলে পুত তুই কেমন আছিস ভাত খেয়েছিস তারা যখন বলে আমরা খুব ভাল আছি তখন প্রবাসের সব দুঃখ বেদনা দুর হয়ে যায় ভুলে যাই হাজারো বেদনার কথা সাহস পাই সামনে এগিয়ে যেথে 'মা' বাবার মুখের সেই হাঁসি ধরে রাখতে। ছোট ভাই বোনদের ছেলে মেয়ে স্ত্রীকে সেই ভাল রাখার প্রত্যয়ে প্রবাসী মানে মোমবাতির মতো এক উজ্জল প্রদীপ যে নিজে জ্বলে অপরকে আলো দেয় ঠিক প্রবাসীরা নীজেরা জ্বলতে জ্বলতে শেষ হয়ে আলোকিত করে দেশ জাতী সমাজ ও পরিবার কে।



------------------------------------------------------
আমার একমাত্র ছেলে চিটাগাং কলেজ ও জামেয়া আহমদিয়া সুন্নীয়া আলীয়া মাদ্রাসার শিক্ষার্থী সে অনলাইনে বিজনেস করে লিখা পড়ার পাশা পাশি তার ব্যাবসা প্রতিষ্ঠান এর নাম Q10.E Bazar ছেলের সাথে কথায় কথায় উটে আসলো এই ফাউন্ডেশনের কথা আমাকে গ্রুপের লিংক দিলো প্রতিদিন দেখতাম পড়তাম নীজে নীজে রেজিষ্ট্রেশন করার চেষ্টা করলাম পারছি না হঠাৎ চোখে পড়ল Shirin Sultana আপুর একটা পোষ্ট মনোযোগ দিয়ে পড়লাম নিছের টিকানায় দেখলাম তিনি চট্টগ্রাম এর একজন এবং রেজিষ্ট্রেশন করানোর দায়িত্বে আছেন।
আপু কে ইনবক্সে নক করলাম আপু কে বল্লাম আমি ফাউন্ডেশনের সদস্য হতে চাই। আপু আমাকে আন্তরিকতার সহিত রেজিষ্ট্রেশন করে দিয়ে ফাউন্ডেশনের আজীবন সদস্য হওয়ার সৌভাগ্য বান করে দেন এবং বিস্তারিত নিয়ম নির্দেশনা গুলো বলে দেন। এমন কি চট্টগ্রাম জেলা খুলশি জোন ম্যাসিন্জার গ্রুপে এ্যাড দেন। সেশন চর্চা ক্লাশে সুযোগ করে দেন আপুর এই মহা মন মানষিকতা উদারতায় আজ আমি এই গল্প লিখার সুযোগ বা সাহস উৎসাহ পেয়েছি আমি কৃতজ্ঞ Shirin Sultana আপুর কাছে।


---------------------------
অবশেষে আল্লাহর দরবারে ফরিয়াদ মহান আল্লাহ তাঁর প্রিয় হাবিব দঃ এর উসিলায় আমাদের সকলের প্রিয় মেন্টর লাখো লাখো ছাত্র/ছাত্রী, তরন তরুনী, যুবক যুবতীদের আইডল আইকন জনাব iqbal Bahar zahid স্যার যেন পরিপূর্ণ সুস্হ হয়ে আমাদের লাখো লাখো মানুষের মন টা কে শান্ত করেন -আমিন।

পেশাঃ- ব্যাবসা।
পাশা পাশি হজ্ব ও ওমরা বিষয়ে কাজ করছি।
আমার হজ্ব ওমরা কোং এর নাম
আবরাজ ওমরা ইউনাইটেড কোম্পানি লিঃ
ও সমরকন্দি হজ্ব কাফেলা ট্রাভেল্স ট্যুরস।

📌"স্ট্যাটাস অব দ্যা ডে"- ৬৩১
Date:- ২৭/০৯/২০২১
আলহাজ্ব সৈয়দ মুহাম্মদ আমান উল্লাহ আমান সমরকন্দি (Aman ullah)
ব্যাচঃ- ১৫
রেজিষ্ট্রেশনঃ- ৬৮৯৯৮
চট্টগ্রাম
বর্তমানঃ-সৌদি আরব প্রবাসী (মক্কা শরীফ)
পেশাঃ- ব্যাবসা