See More Post

আমার মধ্যে তিল তিল করে বেড়ে ওঠা ছোট্ট প্রাণের হৃদস্পন্ধন বন্ধ হয়ে গেছে

🌺🌺  প্রাপ্তি  🌺🌺 


❣প্রাপ্তি কথাটি খুবই ছোট একটি শব্দ হলোও এর পরিধী ব্যাপক ও বিস্তৃত। 

আমাদের প্রিয় পরিবার, "নিজের বলার মত একটা গল্প "ফাউন্ডেশনের প্রতিটি সদস্যদের এই ফাউন্ডেশন থেকে অনেক ধরনের 

প্রাপ্তি রয়েছে। 


❣আজ আমি আপনাদের সাথে শেয়ার করবো ,"নিজের বলার মত একটা  গল্প" ফাউন্ডেশন থেকে ,আমার প্রাপ্তি সম্পর্কে।একজন 

পথহারা ও অন্ধকার আচ্ছন্ন মানুষের জীবন আলো ও সঠিক পথ খুজে পাওয়া  যতটা গুরুত্বপূর্ণ, ঠিক ততোটাই "নিজের বলার মত একটা গল্প ফাউন্ডেশন আমার কাছে গুরুত্বপূর্ণ। 

আমি এই ফাউন্ডেশনের এক্টিভ থাকার আগে পর্যন্ত এমন একজন মানুষ ছিলাম যে ,,কোন কাজ করতে গেলেই কিছু সময় পর অধৈর্য হয়ে যেতাম।

কোন কাজে কি ভাবে সফল না হওয়া পর্যন্ত লেগে থাকতে হয় সেটা আমার জানা ছিল না।

❣আর আমার বাবার খুব ইচ্ছা ছিল আমি চাকরি করি।কিন্ত আমার বাচ্চাটা ছোট থাকার কারণে চাকরির প্রস্তুতি নেওয়া বা চাকরি করা কোনটাই করতে পারছিলাম না।

আর এই বিষয়টি নিয়ে সব সময় খুবই চিন্তায় থাকতাম। সব সময় ভাবতাম কি করবো আর কি ভাবে করবো।এর মধ্যে আমার হাজব্যন্ড  আমাকে "নিজের বলার মত একটা গল্প" ফাউন্ডেশনে ১১তম ব্যাচে রেজিস্ট্রেশন করে দেয়। 


তখন থেকে গ্রুপে যুক্ত থাকলেও বিভিন্ন কারণে এক্টিভ থাকতে পারিনি।

কিন্ত সবসময়ই বাবার স্বপ্নটা পূরণ করতে না পারার জন্য মানসিক কষ্টে থাকতাম। 

আমাদের প্রিয় মেন্টর, জনাব ইকবাল বাহার জাহিদ স্যারের অনুপ্রেরনামুলক উক্তি,,,,,, 


চাকরি করবো না,,

     চাকরি দিব,,,

এই শক্তিশালী অনুপ্রেরনামুলক বাণীতে অনুপ্রেরণিত হয়ে আমার হাজব্যন্ডের সহযোগিতায়  আমিও উদ্যোক্তা হওয়ার জন্য কাজ শুরু করলাম।কিন্ত সমস্যা হলো কাজে   লেগে থাকা।কারণ আমি খুব অল্পতেই অধৈর্য ও হতাশ হয়ে যেতাম। আমি পজেটিভ থেকে নেগেটিভ চিন্তাই বেশি করতাম।আর এই জন্যই আমার মধ্যে সব সময় অনেক বেশি হতাশা কাজ করতো। 


❣বেশকিছু দিন আগে পর্যন্তও আমার সামান্য জ্বর হলেও মনে হত যে,, এবার মনে হয় আমি আর বাঁচবো না। আর এজন্য আমার পরিবারের সদস্যদের কাছে অনেক বকাবকিও  শুনতে হয়েছে। 


আর এর মধ্যেই আমার জীবনে সবচেয়ে ভয়ংকর দুর্ঘটনা ঘটে😥😥। এই দুর্ঘটনা আমার জীবনকে সম্পূর্ণ এলোমেলো করে দেয়। 


💕2021 সালের ফেব্রুয়ারি মাসের মাঝামাঝি সময়ে আমি আমার দ্বিতীয় বাচ্চা কনসেপ্ট করি।আমার  তিন জনের ছোট পরিবারে আরও একজন নতুন সদস্য আসতে  চলেছে এটা ভেবেই অনেক ভাল লাগাছিল ।পরিবারের সবাই অনেক খুশি ছিল🥰🥰🥰। 


❣প্রতিটি পরিবারে নতুন শিশু আগমন উপলক্ষে থাকে অনেক আয়োজন  ,অনেক স্বপ্ন ও অনেক প্রস্তুতি । আমিও আমার বাচ্চাটাকে নিয়ে অনেক স্বপ্ন দেখেছিলাম😍😍। 


💕এরপর আমার শারীরিক বিভিন্ন ধরনের সমস্যার দেখা দেওয়া শুরু করলো। খাওয়া - দাওয়া একেবারেই প্রায় বন্ধ হয়ে গেল,এটা অবশ্যই স্বাভাবিক ব্যাপার ছিল, কিন্ত সমস্যা হলো, আমার ছেলেকে নিয়ে ,একদিকে ওর বয়স মাত্র তিন বছর তারপর আবার ও খুব দুষ্ট,,যাইহোক সব কিছু মিলায়ে মোটামুটি দিন কাটছিল । 


কিন্ত কে জানতো  যার জন্য এত স্বপ্ন, এত প্রস্তুতি  তার কখনোই পৃথিবীর আলো দেখার সৌভাগ্যই হবে না ।সে শুধু কিছু দিনের, না দেখা, অতিথি মাএ 😭😭😭। 


💕বাচ্চাটা যখন সাড়ে তিন মাসের, তখন হঠাৎ একদিন রাত ২ টার সময় প্রচণ্ড পেটে ব্যাথা শুরু হলো।ভেবেছিলাম হয়তো ক্ষুধা লেগেছে,কিন্ত না অস্তে অস্তে ব্যাথা বাড়তে লাগলো।ভোর বেলায় ব্যাথাটা কমলো কিন্ত ব্লিডিং হওয়া শুরু হল। 


সকালে  আমি আমার ডাক্তার ম্যামেকে ফোনে আমার শারীরিক অবস্থা কথা  জানাই।ম্যাম বলেন,, সম্পূর্ণ বেড রেস্টে থাকতে আর আমার হাজব্যান্ডকে প্রেসক্রিপশ নিয়ে ম্যামের সাথে দেখা করতে । ম্যাম কিছু ওষুধ ও ইঞ্জেকশন লিখে দিলেন,।ওষুধ খেলাম ,ইঞ্জেকশন পুস করা হলেও, অজানা অতঙ্কের মধ্যে দিয়ে একটা দিন পার করলাম, 

ভেবেছিলাম সব কিছু ঠিক আছে আর মনে হয় কোন সমস্যা হবে না,কিন্ত না তখনও বুঝতে পারিনি আগামীকাল আমার জন্য কি অপেক্ষা করছিলো। 


পরদিন দুপুর থেকে আবারও পেটে ব্যাথা শুরু হলো,,আর সেই ব্যাথা যে কতটা যন্ত্রনাদায়ক তা লিখে বোঝানোর ক্ষমতা আমার নেই😭 ।সেই দিনটার কথা মনে পড়ল এখনও মনে হয় আমি সেই অসহ্য যন্ত্রনা অনুভব করতে পারছি।এতটা কষ্ট আমার জীবনে আমি কখনোই পাইনি। 


আবারও ডাক্তার ম্যামের ফোন দেওয়া হলো,,ম্যাম ব্যাথা কমার ওষুধ দিলেন, কিন্ত কিছুতেই কিছু হলো না। 

ডাক্তার ম্যামকে ব্যাথা কমছে না, জানানোর পর তিনি আমার হাজব্যান্ডকে বললেন, আমাদের মন শক্ত করতে ,যা বিপদ হবার তা হয়ে গেছে। 


কিন্ত আমি বিশ্বাস করিনি,,তখনও আমি আমার বাচ্চার হার্টবিট  বুঝতে পারছিলাম। 

দুই বার আলট্রাসনোগ্রাফির পর  ডাক্তার নিশ্চিত করলেন, "আমার  মধ্যে তিল তিল করে বেড়ে ওঠা ছোট্ট প্রাণের হৃদস্পন্ধন বন্ধ হয়ে গেছে।আমি বারবার ম্যামকে বলেছিলাম, ম্যাম আমি হার্টবিট বুঝতে পারছি,তিনি শুধু আমার দিকে কিছুক্ষণ তাকিয়ে বলেছিলেন ,ওটা আমার মনের ভূল ছিলো। আমার মা আমাকে বারবার বোঝানো চেষ্টা করছিলেন ,কিন্ত আমার শুধু মনে হচ্ছিল, ,আমার পুরু পৃথিবীটাই মনে হয় উলটপালট হয়ে গেল😭😭😭। 


ডাক্তার ম্যাম  ওষুধ দিলেন যাতে নরমাল ভাবে ডেলিভারি হয়ে যায়।মৃত বাচ্চাটা সাথে নিয়ে বাসায় ফিরে আসলাম😭😭😭। ওষুধ খাওয়ার পর , প্রচণ্ড জ্বর , এলার্জি ও খিচুনী শুরু হল কিন্ত কাজের কাজ কিছুই হল না। 


আমি DMC করতে ভয় পাচ্ছিলাম, তাই ম্যাম আবারও ওষুধ দিলেন, কিন্ত এবারো একই অবস্থা।

শেষ পর্যন্ত যেটা ভয় পাচ্ছিলাম সেটাই করতে হলে।

ডাক্তার ম্যাম যেদিন আমার DMC করেন, সেই দিন আমার হাজব্যান্ডকে বলেছিলেন,,ম্যামের 30 বছর ডাক্তারী জীবনে আমার মত এমন পেশেন্ট উনি একটাও পাননি। কারন ওষুধ খাওয়ার  পর 48 ঘন্টার পর নরমাল ডেলিভারি হয়ে যায় আর আমার তেমন টা হয়নি। 


বাচ্চাটা মারা যাওয়া প্রায় 12 দিন পর DMC করা।

এই দিন গুলো কি ভাবে কেটেছে আর মানসিক অবস্থা কেমন ছিল,,তা একমাত্র আল্লাহই জানেন । 


এই সময় শারীরিক অসুস্থতার চেয়ে মানুসিক ভাবে বেশি অসুস্থ হয়ে পড়ি।আমি বুঝতে পারছিলাম যে আমার মানসিক অবস্থা দিন দিন আরও খারাপ হয়ে যাচ্ছে,আর এভাবেই যদি চলতে থাকে তাহলে  মনে হয় আমি পাগল হয়ে যাবো । 


💕তখন হঠাৎ মনে পড়ে আমার প্রিয় পরিবার, " নিজের বলার মত একটা গল্প "ফাউন্ডেশনে কথা।

আমি যেন আমার অন্ধকার দুচোখে আলো দেখে পেলাম।আসলে আমার হতাশা ও ডিপেরেশন এত বেশি ছিল যে এর থেকে বের হয়ে আসা আমার জন্য খুবই কষ্টের কাজ ছিল। আর তখন থেকেই নিজেকে ভাল রাখার জন্য প্রিয় পরিবারে সময় দিতে থাকি। প্রতিনিয়ত প্রিয় স্যারের থেকে শিক্ষা গ্রহণ করছি। 


❣আমার নিজের বলার মত একটা গল্প ফাউন্ডেশন থেকে প্রাপ্তি,,,,,,,,,,,,, 


1.এখন আমি ধৈর্য সহকারে কাজে লেগে থাকতে পারি ।

2.অল্পতে আর হতাশা হই না।

3.বস্তুবতা যাই  হোক না কেন তা মেনে নেওয়ার জন্য প্রস্তুত থাকি।

4.সব সময় পজেটিভ চিন্তা করি।

5.কারর উপকার করতে না পারলেও কখনও কারর ক্ষতি করি না।

6.সর্বোপরি একজন মানুষ হওয়ার চেষ্টা করছি।এবং সফল না হওয়া পর্যন্ত ভালবেসে  কাজে লেগে থাকার শিক্ষাটা পেয়েছি। 


❤ আর সব কিছুর জন্য আমি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করতে চাই আমাদের শ্রদ্ধেয় প্রিয় শিক্ষক, আমাদের আইডল ,আলোর দিশারী ,সবার অনুপ্রেরণা, পথপ্রদর্শক "জনাব ইকবাল বাহার জাহিদ"স্যার  প্রতি যিনি এত সুন্দর একটা পরিবার তৈরি করে দিয়েছেন, সেখানে আমার মত হাজার মানুষ বেঁচে থাকার পথ খুজে পায়। 


"নিজের বলার মত একটা গল্প"ফাউন্ডেশন ,আমার কাছে অক্সিজেনের মত। এই পরিবার আমাদের প্রিয় স্যার তৈরি করে দিয়েছেন বলেই ,আজ আমি 

স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসতে পেরেছি।

এই পরিবারটা না থাকলে আজ  আমার কি অবস্থা  হত আমি নিজেও জানিনা। 

এই অল্প কিছুদিনে "নিজের বলার মত একটা গল্প" ফাউন্ডেশন  আমাকে অনেক কিছু দিয়েছে।

আর পেয়েছি হাজার, হাজার  ভাল  মনের ভাই-বোন,,যারা প্রতিনিয়ত আমাকে  এগিয়ে যাওয়ার অনুপ্রেরনা যোগাচ্ছে। সবার অনুপ্রেরণায় আমি একজন উদ্যোক্তা হওয়ার স্বপ্ন দেখছি।সবাই আমার জন্য দোয়া করবেন। 


🌺আর এসব কিছুই পেয়েছি সেই মহৎ মানুষ ,জনাব ইকবাল  বাহার জাহিদ স্যারের জন্য , যিনি প্রতিনিয়ত তার মূল্যবান সময় ব্যয় করে  আমাদেরকে ভালোবেসে ,আমাদেরকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য নিরলস ভাবে পরিশ্রম করে যাচ্ছেন। দোয় করি আল্লাহ যেন আমাদের সবার প্রাণ প্রিয় স্যারকে সুস্থতা ও দীর্ঘায়ু দান করেন, আমিন। 


👩আমি ,,,"তাহমিনা খানম লিজা" কাজ করছি নিজেদের হাতের তৈরিকৃত গহনা আইটেম ও  সব ধরনের পোশাক  নিয়ে। 


পেজ,,👇 

https://www.facebook.com/Queenpointbd/ 



📌"স্ট্যাটাস অব দ্যা ডে"- ৬৮২

Date:- ২৬/১১/২০২১ ইং

💢নাম-তাহমিনা খানম লিজা

💢কমিউনিটি ভলেন্টিয়ার   

💢রেজিস্ট্রেশন নং-২৮৭০৯

💢 ব্যাচ নং-১১ তম

💢ব্লাড গ্রুপ-O পজেটিভ

💢 জেলা- রাজবাড়ী

💢বর্তমান অবস্থান - ঢাকা মিরপুর।

💕ওনার অফ:কুইন পয়েন্ট- Queen point 

ফরিদপুর জেলা টিম কর্তৃক আয়োজিত বৃক্ষরোপন কর্মসূচি -২০২৪

ইনশাআল্লাহ ফরিদপুর জেলার বাকি ৮টি উপজেলায় এই কর্মসূচি চলমান থাকবে। অনেক বেশি ধন্যবাদ Iqbal Bahar Zahid স্যার কে ॥

পর্দাশীল ঘরোয়া নারী- সফল উদ্যোক্তা

আমি রান্নাটা ভালো পারি, রান্নাটা নিয়েই পেজ খুলি অনলাইনে কাজ করি। প্রথম অর্ডার আসছিল পিৎজা ডেলিভারির। আলহামদুলিল্লাহ তারপর থেকে আর পিছনে ফিরে তাকাতে হয়নি ।