আমার আজকের আয়োজন
আমার আত্মকাহিনী।
আমি দিলনাহার পলি। আমার জন্ম নোয়াখালী এক সম্ভ্রান্ত পরিবারে। আমার বাবা একজন সরকারি চাকরিজীবী ।সাত ভাই বোনের মধ্যে আমি সবচেয়ে ছোট মেয়ে। সবার খুব আদরের। লেখাপড়া ,গান নাচ সবকিছু তেই পারদর্শী। আমার পিছনে কখনো আমার বাবা-মা টিউশান ফিস দিতে হয়নি। নিজের যোগ্যতায় সবসময় সর্বোচ্চ রেজাল্টে করে এসেছি ।এবং বিশ্ববিদ্যালয় পর্যন্ত সর্বোচ্চ কৃতিত্বের সাথে ফলাফল অর্জন করেছি। শিক্ষাজীবন শেষ করেই বিয়ে তারপর চাকরিতে জয়েন করলাম । তেমন কোনো প্রতিবন্ধকতা আমার জীবনে কখনো আসেনি। সংসার জীবন শুরু করেছি এবং আল্লাহ তালার অশেষ রহমতে একটা পুত্রসন্তান হয়েছে । বরাবরই আমার একটা ব্যাংকিং সেক্টরে চাকরি করার ইচ্ছে ছিল ।যেটা খুব সহজেই আমার হয়ে গেল। কিন্তু ৯ টা থেকে ৫টা আবার ৫ থেকে রাত ৯ টা এই টাইমটা কিছুতেই যেন আমার সাথে যাচ্ছিল না ।প্রত্যেকটা মুহূর্তে মনে হল আমি আমার সন্তানকে চরমভাবে বঞ্চিত করছি।যাদের ভালো রাখার জন্য আমার এই চাকরি তাদের কান্নার আওয়াজ শুনেই যদি আমার দিন পার করতে হয় ,তাহলে এ চাকরির কোন মানে হয় না ।আর তাই সেই সোনার হরিণের মত চাকরি ছেড়ে দিয়ে আমি বেছে নিলাম আমার অনাকাঙ্ক্ষিত শিক্ষকতা পেশাকে। কখনই ভাবিনি যে আমি শিক্ষকতা পেশায় আসবো। যদি আমার বড় বোন রা শিক্ষকতা পেশায় আছে। তখন সব সময় বলতাম ,আমি কখন শিক্ষকতা পেশায় আসবোনা ।কিন্তু যখন আসলাম তখন আমার কাছে মনে হল আমার সন্তানদের আমি অনেকটা সময় আমি দিতে পারছি ।এমন একটা আত্মতৃপ্তি আসলো। টাকার চাইতে আমার সন্তানদের এর হাসি আমার কাছে বিশাল বড় একটা প্রাপ্তি মনে হল। আর সেই প্রাপ্তি নিয়ে আমি সন্তুষ্ট ছিলাম ।কিন্তু মধ্যে ও মাঝে মাঝে আমার মনে হয় তো পাশাপাশি আরেকটি পরিচয় তৈরি করি ।আর সেই সুবাদেই কোন এক সময় আমার সাথে পরিচিত হলো গ্রামীণ ব্যাংকের প্রতিষ্ঠাতা ডঃ মুহাম্মদ ইউনুস স্যারের সাথে । স্যার অত্যন্ত আন্তরিকতার সাথে আমার সাথে কথা বললেন ।আমার পরিচয় জানতে চাইলেন ।পরিচয় জেনে, আমাকে একটা উপদেশ দিয়েছিলেন ।"যে তুমি যেখানে চাকরি করছো, যাদের কাছ থেকে বেতন নিচ্ছে, কোন একসময় তুমি তোমার একটা পরিচয় তৈরি করো, যাতে অন্য কাউকে বেতন দিয়ে রাখতে পারো ।তোমার আন্ডারে অনেক মানুষ কাজ করবে ,।তার মানে উনি আমাকে উদ্যোক্তা হওয়ার ইঙ্গিত দিয়েছিলেন ।আর উনার এই কথাগুলি বারবারই আমার কানে বাজতো।যেকোনো সময় সুযোগ পেলে আমি নিজেকে এক নতুন পরিচয়ে আত্মপ্রকাশ করব ।কিন্তু ইতিমধ্যে ফেসবুকের মাধ্যমে নিজের বলা গল্প ফাউন্ডেশন এর কর্ণধার জনাব ইকবাল বাহার জাহিদ স্যার সম্পর্কে জানলাম ।এবং উনার এতো সুন্দর সুন্দর কাজ,এত বড় একটা ফাউন্ডেশন এর নাম শুনে , স্যারের চমৎকার সেশন গুলি পড়ে নিজেকে দমিয়ে রাখতে পারলাম না। মনে হলো অতি শীঘ্রই আমার উদ্যোক্তা হওয়ার কাজটা শুরু করতে হবে। আর স্যারের অনুপ্রেরণায় অনুপ্রাণিত হয়েই, আমি গত এক বছরের মধ্যে আমি নিজেকে নতুন রূপে আত্মপ্রকাশ করলাম ।আমি নীলাম্বরী কাব্যর নামে একটা পেজ ওপেন করলাম। সম্পূর্ণ দেশীয় পোশাক নিয়ে, আমি কাজ করছি সম্পূর্ণ নিজস্ব তৈরি ,বাজার থেকে কিনে কোন পণ্য নয় ।আমার নিজের তৈরি করা, নতুন নতুন পণ্য । ।আমার পেইজটি ইতিমধ্যে জায়গা করে নিয়েছে অনেকের কাছে। আর নিজের বলার মতো গল্প ফাউন্ডেশনে এসে আমার কাজের গতি আরো অনেকগুণ বেড়ে গেল। জীবনের অনেকটা সময় কাটিয়ে দিয়েছি, দীর্ঘ ১৫ বছর শিক্ষকতা পেশায়। কিন্তু উদ্যোক্তা জীবনে আমি সম্পুর্ন নতুন। এত মানুষই অনুপ্রেরণায় অনুপ্রাণিত হয়ে আমি নিজেকে অনেক দূর এগিয়ে নিতে চাই। স্যারের একটি শ্লোগান কে বুকে ধারণ করে এগিয়ে যেতে চাই। "বৃষ্টি সবার জন্য পড়ে, কেউ ভিজে,কেউ ভিজে না" ।কিন্তু আমি সেই বৃষ্টিতে ভিজতে চাই ।ইনশাআল্লাহ সবাই আমার পাশে থাকবেন ।সবার সহযোগিতা আমার একান্ত কাম্য ।ধন্যবাদ সবাইকে।
সবাই আমার জন্য দোয়া করবেন ।সবাই কে নিয়ে এগিয়ে যেতে চাই ।
"স্ট্যাটাস অব দ্যা ডে"- ৫৪৫
Date:- ০৭/০৬/২০২১
দিলনাহার পলি
ব্যাচ নাম্বার নাম্বার ১২।
রেজিস্ট্রেশন নাম্বার ৪৪৮২৭।
জন্মস্থান নোয়াখালী বসবাস করছি ঢাকায়।
পেশায় একজন স্কুল শিক্ষিকা।
ওনার অফ নীলাম্বরীর কাব্য
ইনশাআল্লাহ ফরিদপুর জেলার বাকি ৮টি উপজেলায় এই কর্মসূচি চলমান থাকবে। অনেক বেশি ধন্যবাদ Iqbal Bahar Zahid স্যার কে ॥
আমি রান্নাটা ভালো পারি, রান্নাটা নিয়েই পেজ খুলি অনলাইনে কাজ করি। প্রথম অর্ডার আসছিল পিৎজা ডেলিভারির। আলহামদুলিল্লাহ তারপর থেকে আর পিছনে ফিরে তাকাতে হয়নি ।