আমার পরিবর্তনের গল্প কাঁথা
#স্বপ্ন_নয়_নয়_কোন_অবাস্তব_গল্প_এটা_আমার_পরিবর্তনের_গল্প_কাঁথা।
উড়ো চিঠি
আড়াইটা বছর পরে,
তোমাকে লেখা আমার শেষ চিঠি।
অনেক বারেই ভেবেছি লিখবো লিখবো কিন্তু লেখা হয়ে উঠেনি।
হয়তো ব্যস্ততায় ভুলেছি, আবারো মনে হয়েছে
তোমার কাছে এই চিঠি পৌঁছাবে কিনা?
আজকের এই দুটি কবিতার লাইন আমার সাথে পুরো মিলে যাওয়া। তাই গল্পের শুরুতে উপস্থাপন করলাম। আমার প্রিয় স্যার, আমার পরিবর্তনের গল্পের নায়ক আমার ঘুড়েঁ দাঁড়ানো, সাহস ও শক্তি আমার আইডল জনাব @Iqbal Bahar স্যারের জন্য। কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি প্রিয় স্যার আপনার প্রতি। আমার বর্তমান পরিস্থিতি ও পরিবর্তনের জন্য আপনার কাছে আমি চিরকৃতজ্ঞ। আল্লাহ পাক দরবারে অনেক অনেক শুকরিয়া
আল্লাহ পাক আপনাকে আমাদের মাঝে আবার ফিরিয়ে দিয়েছেন।আপনার জন্য লাক্ষ তরুণী তরুণী জীবন বদলে গেছে সামনে আরো আরো প্রসারিত হবে।
প্রিয় স্যার আজকের লেখাটা শুধু আপনার জন্য। আপনি সবসময় বদলে যাওয়া মানুষ গুলো গল্প শুনতে ভালোবাসেন।আপনি একজন স্বপ্ন বাজ ও স্বপ্ন দেখাতেও ভালোবাসেন সেই সাথে তা পূরণ করার যত রকমের কলাকৌশল আসে সব শিখিয়ে দেন বিনা কোন প্রকার স্বার্থ ছাড়া।আজ কোথায় এমন স্বপ্নবাজ পাওয়া যাবে না যে না চায় আমার স্বপ্ন টা পূরণ হোক।কিন্তু আপনি তার ব্যতিক্রম। অন্যের স্বপ্ন পূরনের মাঝে আপনি আপনার স্বপ্ন পূরনের সুখ খুজে পান।
ও প্রিয় স্যার আপনার কাছে আমার আজকে উড়ো চিঠি লেখাটা নাও পৌঁছাতে পারে। তবে আজ আমি লিখতে চাই।আমার সকল না পাওয়া ও আপনার মাধ্যমে আমার পাওয়া গুলো। আমি সাথী আক্তার ১২ তম ব্যাচ থেকে আপনার শিক্ষার্থী হতে পেরেছি।তবে আপনার শিক্ষা বুঝতে আমার একটা ব্যাচ চলে যায়। ১৩ তম ব্যাচে আপনার সেশনের একটা সেরা উক্তি আমার অন্তরে দাগ কাটে প্রতিটি মানুষের স্বপ্ন থাকা দরকার, স্বপ্ন দেখলেই হবে না তা পূরণ করার জন্য লেগে থাকতে হবে সফল না হওয়া পর্যন্ত লেগে থাকতে হবে।
জীবনের ১০ থেকে ১১ বছর কঠিন পরিশ্রমের মধ্যে ছিলাম।কারণ HSC পাশ করার পর ভার্সিটিতে ভর্তি সময় নিজের পছন্দের মানুষের সাথে বিবাহবন্ধন আবদ্ধ হই। তখন থেকে শুরু হয় জীবনের কঠিন দিন।খুব অল্পে বয়সে বিয়ে হয়ে যাবার কারনে আর নিজের পছন্দের বিয়ে হবার কারনে পরিবারের সার্পোট টা কম নিতে থাকলাম। আমরা দুজনেই দুজনের অর্থে নতুন সংসার টা পরিচালনা করতে লাগলাম। তার উপর তো পড়ালেখার খরচ তো আসেই। সেই ২০০৯ সাল থেকে কিন্ডারগার্টেন থেকে শুরু করে হাই স্কুল পর্যন্ত ৯ বছরের কর্মজীবন ছিলো আমার কত সমস্যা, কত প্রতিবন্ধকতা সব কিছু পারি দিয়ে ঠিকে থাকার লড়াই করছি।
স্বপ্ন ছিল নিজেকে অনেক দূর নিয়ে যাবার কিন্তু সাহস,সার্পোট আর অনুপ্রেরণাকারি দেওয়ার মতো কেউ ছিলো না।নারী হিসেবে যেখানে যেতাম সব জায়গায় বলা হতো তুমি নারী তুমি পারবে না। তুমি এখন স্ত্রী, তুমি মা তোমার কোন প্রয়োজন নাই সমাজে বড় হবার।বাবা, ভাই বা স্বামী সবার একি কথা তোমার জন্য আমিই যথেষ্ট।এটা সমাজের কঠিন সত্য। তখন আমি মনে মনে ভাবতাম আসলে কি আমি আমার জন্য কিছু করতে পারবো না। পারবো না নিজের স্বপ্ন টা কে পূরন করতে। সেই চিন্তা হতাশায় দিন কাটে বহু বছর।মুখে হাসিঁটা সবসময় থাকে কিন্তু মনের কোনে লুকিয়ে থাকা কষ্ট টা কখনো প্রকাশ আমরা নারীরা পারি না সমাজ কেন জানি শৃঙ্খলার চাদরে মুড়ে রাখে।
কিন্তু বর্তমান পরিস্থিতি এখন আর সে অবস্থান নেই। নারী রাও পারে সমাজ কে নতুন করে গড়তে, সমাজের সেই কঠিন শৃঙ্খলা কে ভেঙ্গে নতুন করে আলোর পথের দিশারী হতে। সেই সাহসী নারীদের মতো আমি আমার চলার পথ টা নিজের মতো করে সাজেতে শুরু করছি প্রিয় স্যার আপনার শিক্ষা কে ধারণ করে।
স্যার এটা শুধু উড়ো চিঠি না এই চিঠি এক বদলে যাওয়া নারীর জীবন কাহিনী।
আমি আপনাকে বিশ্বাস করাতে পারবো না আপনি আমাকে কত সাহস আর কত অনুপ্রেরণা দিয়েছেন আপনার অজান্তেই। আমি আজ আপনার কাছে চিঠি লিখছি আর দুচোখ আমার ভেসে গেছে নিরব কিছু আনন্দ অশ্রুতে😪। আমার পরর্বতন, আমার সাহস, আমার শক্তি প্রিয় স্যার আপনাকে যে কত কথা আছে বলার। যা একটা উড়ো চিঠিতে বলা সম্ভব না। তাও বলার চেষ্টা মাত্র।
আমি স্বপ্ন দেখতাম মেয়ে হয়ে বাবার - মার মুখ যেন উজ্জ্বল করবো।বাবার স্বপ্ন ছিলো মেয়ে আমার বড় উকিল হবে কিন্তু আমার কেন যেন ছোট বেলা থেকে শিক্ষকতা পেশা পছন্দ ছিলো।পছন্দের পেশার সাথে আত্মার সম্পর্ক ছিলো ১০ বছর।সংসার,পড়ালেখা, পাশাপাশি চাকরি করে জীবন কাটছিলো। সেই দিন গুলো থমকে দ্বারালো যখন প্রথম কন্যা সন্তানের মা হলাম।স্বপ্ন টা পূরন করা আর হলো না থেমে গেলে সব পথ চলা।হয়ে গেলাম ঘর বন্দী। এরে মধ্যে ২য় কন্যা সন্তানের মা হওয়া থমকে গেলে পুরো পৃথিবী সঙসার নামক মায়াজালে।
সন্তান আর সংসার করে নিজের স্বপ্ন টা মরে গেলে, ভুলে গেলাম আমি একজন স্বপ্নবাজ ছিলাম।
চিন্তা করতাম বেবিরা বড় হলে আবার চেষ্টা করবো পারাইফেট চাকরি করার। আশায় দিন গুনি কিন্তু কোন কিছু করার সাহস পাই না।অনেক রকমের হাতের কাজ শিখেছি।ছাত্রী জীবনে কিন্তুু কখন এ সব কাজে প্রয়োগ করি নাই। তাই অনেক কাজই ভুলে যাচ্ছি। ভুলে গেছি কম্পিউটারের সেরা টাইপার হয়েও টাইপিং করতে। দুঃখের বিষয় মোবাইলে বাংলা লেখার এপ্যা ব্যবহার করতাম না আর কম্পিউটার তো গত ৫ বছর দরে হাত দেই না তাই বাংলা লেখার অদক্ষ হয়ে গেছি বাংলার ছাত্রী হয়ে।
দুঃখজনক হলে এটাই সত্যি স্যার।
আজ আমি আপনার উদ্দেশ্য উড়ো চিঠি লিখছি বলতে পারেন আপনি আমাকে হাতে ধরে আবার বাংলা লেখা শিখিয়েছেন।
আজ আপনার কাছে আমার উড়ো চিঠি যেন গল্প হয়ে প্রকাশ পাচ্ছে লেখার দক্ষতা বৃদ্ধি পাচ্ছি আপনার প্লাটফর্ম সেরা একটি
উদ্যোগ #স্ট্যাটাস_অফ_দ্যা_ডে এর মাধ্যমে। বাংলায় অনার্স-মাস্টার্স শেষ করে কখনো সাহস পাই নাই দুই লাইন লিখতে সাহিত্যের এতো এতো বই শুধু পাশ করার জন্য পড়েছি।যার ফলে সার্টিফিকেট পেয়েছি কিন্তু সাহিত্য এখনো বুঝলাম না। আজ বুঝলাম সাহিত্য পড়লেই সাহিত্যক হওয়া যায় না।দরকার বাস্তব কিছু অভিজ্ঞতা, দক্ষতা, সাহস আর অনুপ্রেরণা দেওয়ার মতো ভালো মনের কিছু সহযোগী।
#নিজের_বলার_মত_একটা_গল্প প্লাটফর্মে যুক্ত হয়ে আমার মনে হচ্ছে অনার্স-মাস্টার্স শিক্ষা জীবনে যে শিক্ষা আমি অর্জন করতে পারি নাই তার চেয়ে বেশি বাস্তববাদি শিক্ষা আপনার প্লাটফর্ম থেকে আমি পাচ্ছি । এই প্লাটফর্ম যুক্ত হয়ে মিট আপে পরিচিতি হতেও ভয় ও জড়তা কাজ করতো মনে মনে ভাবতাম আমাকে যেন কেউ না ডাকে । সেই আমি নিয়মিত সঞ্চালনার দায়িত্ব পালন করছি নিজ জেলায় ও আন্তর্জাতিক ক্রস বর্ডার মিট আপে সুযোগ হয়ে ছিলো সঞ্চালনর। ছোট কিছু থেকেই বড় বড় কাজের সূচনা।
কৃতজ্ঞতার শেষ নাই প্রিয় স্যার আগেই বলেছি স্যার বলার আছে অনেক কিছু যা একটা উড়ো চিঠিতে সম্ভব না বলার।শুধু যে আমি বাংলা টাইপিং,গল্প লেখা,বা সঞ্চালন শিখছি না স্যার।আজ আমি একজন উদ্যোক্তা হবার পথে হাঁটছি।স্বপ্ন টা আবার নতুন করে ধরার চেষ্টা করছি ঘরে বসেই যেটা আমি কখনো চিন্তা করতেও পারি নাই।আমার পরিবর্তনের জন্য এতো সুন্দর একটা প্লাটফর্ম আপনি তৈরি করছেন। এখন ঘরে বসে সংসার, সন্তান সব কিছু খুব ভালো ভাবে মেন্টেন করে উদ্যোক্তা জীবন শুরু করছি। চেষ্টা করছি ঘুড়ে দাঁড়াবার জন্য শিখছি। ঘরে বসে ৯০ দিনের ফ্রি প্রশিক্ষন, শিখছি ১২ টি স্কিল,দক্ষতা বৃদ্ধির জন্য ইংলিশ ক্লাস, ICT ক্লাস, নারীদের বিভিন্ন প্রশিক্ষন মূলক ক্লাস
আর পাচ্ছি অফুরন্ত সাহস।
সেই সাহস নিয়ে যাত্রা শুরু করছিলাম হোম মেইড ফুড নিয়ে। প্রিয় স্যার আপনার অবগতির জন্য জানাচ্ছি যে আমি এখন সিজনাল আচার, বার্থডে কেক সহ নানা ধরনের কেক ও বিভিন্ন ধরনের পোশাকাদি নিয়ে কাজ করছি । আমি মাসে হয়তো এখনো ৫০,০০০ হাজার টাকা ইনকাম করতে পারি নাই কিন্তু মাস শেষ আমার যা সেল আসে তা আমার কাছে আকাশ ছোঁয়া স্বপ্নের মতো। কেন জানেন স্যার কারণ আমি ঘরেন গৃহিণী হবার পর থেকে আমার ভিতর একটা কষ্ট কাজ করতো নিজের টাকা ইনকাম করে ভালোবাসা মানুষদের ছোট ছোট উপহার দিতে পারতাম না। নিজে একটু স্বাধীন ভাবে টাকা খরচ করার আনন্দ টা পেতাম না। তাই আমার কাছে এই সামান্য টাকা জিরো ⭕ থেকে হিরো হবার মতোই ছিলো।
দীর্ঘ ৬ বছর পর নিজের টাকায় ১২ বছরের বিবাহবার্ষিকীতে আমি পেরেছি সম্পূর্ণ আমার টাকায় নিজের স্বামী - সন্তানদের জন্য উপহার সামগ্রিক কিনতে। এই আনন্দ টা প্রকাশ করতেও আমার দু চোখ বেয়ে পানি পড়ছে।কিভাবে আপনি আমাকে তৈরি করেছেন স্যার বলে বুঝাতে পারবো না। আপনি বলেছেন সময় দিন সময়ের পরিবর্তন টা আপনি নিজেই বিশ্বাস করতে পারবেন না। আসলেই তাই আজ আমার উড়ো চিঠি আপনার কাছে পৌঁছেবে কিনা জানিনা কিন্তু আমার আনন্দময় অশ্রু সিক্ত মনের আকুতি আল্লাহ পাক দরবারে প্রার্থনা করবে সবসময়। যুগ - যুগ ধরে আপনার মতো ইকবাল বাহার যেন বেচেঁ থাকে আমাদের মতো স্বপ্নবাজ দের স্বপ্ন গুলো পূরণ করার জন্য।
আমার আনন্দ অশ্রু গুলো আপনার জন্য দোয়া করবে সব সময়। আল্লাহ পাক আপনার নেক হায়াত দান করুন, সুস্থতা দান করুন, হেফাজতে রাখুন।আপনার শিখাকে ধারণা করে এগিয়ে যেতে চাই আরো অনেক দূর। লেগে থাকবো নিজের বলার মতো একটি গল্প তৈরি না করা পর্যন্ত। আমার জন্য দোয়া করবেন প্রিয় স্যার।
__________________________ ইতি আপনার গর্বিত ছাত্রী
সাথী আক্তার
আজ প্রিয় প্লাটফর্ম লেখদের সম্মানিত করার ৬০০ তম দিন পূরন হলো। #স্ট্যাটাস_অফ_দ্যা_ডে জন্য পর্দার আড়ালে থেকে যারা অক্লান্ত পরিশ্রম করে যাচ্ছে সেরা লেখক কে সম্মানিত করতে তাদের জন্য অনেক অনেক দোয়া ও শুভকামনা রইল। আজ পর্যন্ত হওয়া সকল সেরা লেখকদের জন্য ও আগামী দিনের সেরা লেখদের জন্য রইল অনেক অনেক দোয়া ও শুভকামনা। সবাই কে বলতে চাই নিয়মিত গঠনমূলক ও জ্ঞান মূলক লেখা উপহার দিবেন। আপনাদের লেখার মাঝেও অনেক অনেক কিছু শিখতে পারছি নিয়মিত। নিজের লেখার দক্ষতা আরো প্রসারিত হচ্ছে। সকল সেরা লেখদের জন্য অনেক অনেক ভালোবাসা রইলো। অনেক বেশি সম্মান করি আপনাদের ও আপনাদের লেখা গুলো কে।
#জয়_হোক_প্লাটফর্ম_স্ট্যাটাস_অফ_দ্যা_ডে_৬০০শ_তম_দিন।
ধন্যবাদান্তে🌺🌺🌺🌺🌺🌺🌺🌺
_________________________________
নিজের বলার মতো একটা গল্প ফাউন্ডেনের গর্বিত সদস্য
✳️আমি সাথী আক্তার
✳️কমিউনিটি ভলান্টিয়ার
✳️রেজিষ্ট্রেশন টিম মেম্বার
🛑ব্লাড মেনেজমেন্ট টিম মেম্বার
🏆টপ 20 ক্লাব মেম্বার
✳️ব্যাচঃ১২
✳️রেজিঃ৩৭৯৫৫
✳️জেলাঃ মুন্সিগঞ্জ ও পটুয়াখালী
✳️বর্তমান অবস্থান মিরপুর
✳️কেরানীগঞ্জ জোন মেম্বার
✳️আমার পেইজঃ👇👇👇
✅1. https://www.facebook.com/সাত-রঙ-106136524597772/
✅2.https://www.facebook.com/SS-Fashion-House-106766304681201/