একজনঃ ক্ষুদ্র উদ্যোক্তার গল্প
____________বিসমিল্লাহির রাহমানুর রাহিম______________
আসসালামু আলাইকুম ওরাহমাতুল্লাহ।
আমার সব প্রশংসা, মহান রাব্বুল আলামীনের জন্য,শান্তি বর্ষিত হোক নবী মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু সাল্লাম এর উপর।(সাঃ)
আশা করছি আপনারা যে যার অবস্থান থেকে ভালো আছেন, আলহামদুলিল্লাহ আমি ও ভালো আছি।
আমি তারপরে কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করছি প্রিয় মেন্টর জনাব ইকবাল বাহার জাহিদ স্যারের প্রতি।অসংখ্য ধন্যবাদ নিজের বলার মত একটা গল্প ফাউন্ডেশন-এর ভাই ও বোনেরা।
👉 এই জীবন কে উপভোগ করতে শিখা👈
আসলেই আমি একটা ব্যপার খেয়াল করে দেখলাম যে,জীবন একটা রঙিন ঘুরির মতো আবার কখনো কখনো পলিথিন দিয়ে বানানো সাদামাটা ঘুরির মতো, আকাশে যখন ঘুড়ি গুলো উড়তে থাকে আমরা রঙিন ঘুড়িটির দিকে বেশি নজর দেই বলতে গেলে রঙিন ঘুড়ি আমাদের দৃষ্টি কারে।
তবেঁ কিন্তু এর কারণ কি কারণ ঘুড়িটির নিজের সৌন্দর্য ও গুণ দিয়ে আমাদের মানুষের নজর কারে। কিন্তু পলিথিন দিয়ে বানানো ঘুরিটির যতই গুণ থাকুক তা কখনো প্রকাশ পাচ্ছেনা তার অসৌন্দের্যের কারণে।আমরা মানুষ গুলো এইরকম ঠিক এমনই আমাদের এই বর্তমান সমাজে। তারা তাদের গুণ থেকে সৌন্দর্য কে আগে রিপ্রেজেন্ট করে।
এবং তারপর গুণ আর এই খেলায় টিকে থাকতে হলে আপনাকে আপনার জীবনের ভালো খারাপ সময় গুলোকে উপভোগ করতে হবে।মেনে নেওয়া জানতে হবে।কাজ করতে হবে এবং সময়ের অপেক্ষা করতে হবে।
আপনার মানসিকতা পরিবর্তন করতে হবে,আপনাকে কেউ পাওা দিবেনা যদি না আপনি কখনো পাত্তা আদাই করে নিতে না জানেন।কারন এটাই সত্যি ও বাস্তব।
আমার এই কথাগুলো তিতু হলেও এটাই সত্যি। মানুষ কখনো আপনার সমস্যা খুঁজে বের করবেনা আপনার ভালো খারাপ দেখবেনা তারা আপনার সমস্যা ও ফেস করবেনা। কিন্তু আপনার সফলতার গল্প গুলো শুনার জন্য আপনার পিছু ছুটবে প্রতিনিয়ত।
আপনার সফল হওয়ার সূত্র গুলো জানতে চাইবে।আর আপনি সফল এজন্য আপনাকে সম্মান করবে।তাই নিজের জীবন শুধুই নিজের। জীবনে কখনো অবহেলা করা উচিত না জীবনের কোন দোষ থাকেনা। থাকে আমাদের এই দুনিয়ায় এবং দুনিয়ার মানুষ গুলোর।কিন্তু তারপরও আমরা ছুটি আমাদের ছুটে চলা বন্ধ হবেনা কোন দিন কিন্তু কষ্ট গুলো মনের ভীতর ক্ষত বিক্ষত করে ফেলবে। যেটার ঔষধই হলো সফলতা অর্জন করা।
👉আমাদের ভুল থেকে শেখা উচিৎ👈
আমাদের কোনো কাজে ভুল হলে বা ব্যর্থ হলে কখনোই হতাশ হওয়া যাবে না।বরং সেখান থেকে শিক্ষা নিয়ে আবারো নতুন উদ্যমে চলতে হবে। প্রত্যেক উদ্যোক্তাই মানুষ আর মানুষ মাত্রই ভুল করে। তবে কোনো ভুল হয়ে গেলে সেই ভুলের ক্ষয়ক্ষতি কীভাবে কমিয়ে আনা যাবে সেই বিষয়টা ভালোভাবে বুঝতে হবে ও নজর রাখতেই হবে সচেতন ভাবে।
👉আমাদের টাকা ও আমাদেরকেই ম্যনেজ করতে হবে👈
যেমন একজন উদ্যোক্তার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ন জিনিস হলো নিজের বুদ্ধি ও টাকা। যদি সঠিকভাবে নিজেকে এবং ব্যবসার টাকাকে ম্যানেজ করতে পারে তাহলেই অনেক কিছু সহজ হয়ে যাবে । অনেক উদ্যোক্তাই অল্প সাফল্যেই নিজেকে বড় কিছু মনে করা শুরু করে এবং অযথাই খরচ করে বড় অফিস, সুন্দর ফার্নিচার দিয়ে। এভাবে ফান্ডের বারোটার সাথে চৌদ্দটাও বেজে যাবে। সচারাচর বেজে ও যাচ্ছে।
__________________________________________________
👉আমাদেরকে প্রতিযোগীকে ফলো করতে হবে👈
আমাদের নিজের কাজের ক্ষেত্রের সাথে মিল আছে এমন অন্য উদ্যোক্তাদের কাজের ব্যাপারে খেয়াল রাখা, যেন তারা কী করছে সেই ব্যাপারে পূর্ণ সজাগ থাকতে হবে। তাহলেই বোঝা যাবে যে আমাদেরকে কোথায় কোথায় উন্নতি করতে হবে।
👉আমাদের দ্রুত সিদ্ধান্ত নেওয়া দরকার 👈
আমাদের উদ্যোক্তাদের জন্য দ্রুত সিদ্ধান্ত গ্রহণ অনেক বেশী দরকার। উদ্যোক্তা পথটা অনেক বেশী চ্যলেঞ্জের।তাই যেকোনো পরিস্থিতিতে দ্রুত সিদ্ধান্ত নেওয়ার গুণ থাকা দরকার। অনেক প্ল্যান করে কাজ করার পরও মাঝে মাঝে এমন পরিস্থিতির উদ্ভব হয় তখন দ্রুত অন্য প্ল্যান করাটাই বুদ্ধিমানের কাজ হবে।
__________________________________________________
👉আমাদেরকে পরিবর্তনশীলতার দিকে খিয়াল রাখতে হবে
__________________________________________________
এই পৃথিবীতে এখনকার যুগ, তা পরিবর্তনের যুগ। সময়ের সাথে সাথে মানুষের চাহিদা, আচার আচরণের ব্যাপক পরিবর্তন হচ্ছে। তাই একজন উদ্যোক্তার উচিত সব সময় পরিবর্তনের সাথে নিজেকে এবং নিজের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানকে খাপ খাওয়ানোর চেষ্টা করা।
👉আমাদের ভয় না পেয়ে কাজ শুরু করা👈
আসলেই কি আমরা যখনি নতুন কিছু করতে চাই কিন্তু ভয়ের লাগাম টেনে ধরে, উদ্যক্তা হতে হলে মনে রাখতে হবে।বুদ্ধি করে প্ল্যান করে একটু একটু সামনে আগাতে হবে,নিজের কাছে যা কিছু আছে সেটা দিয়ে শুরু করতে হবে।আর কাজের পিছনে সময় দিয়ে লেগে থাকতে হবে।নিজের উপর নিজের বিশ্বাস রাখতে হবে।কঠিন বিপদের সময় ধৈর্য হারাতে নেই,জীবনের কঠিন বাস্তবতার মুখোমুখি দাঁড়াতে হলে সময়ের সাথে তাল মিলিয়ে চলতে হবে
নেই তো কি হয়েছে।আমাদের যতোটুকু আছে ততটুকুই দিয়েই শুরু করা উচিত,আমি চেষ্টা করেছি,সাহস করে ধৈর্য্যের সাথে লেগে ছিলাম,আমি পেরেছি, আপনারাও পারবেন।
👉একজনঃ ক্ষুদ্র উদ্যোক্তার গল্প👈
শুধু মাত্র মালদ্বীপ এর ১০রুপিয়া অর্থাৎ বাংলাদেশের ৫০ টাকা ক্যাশ ছিলো আমার।আমি দশটি অরেঞ্জ কিনলাম,দশ রুপিয়া দিয়ে দশ মিনিট পর এই অরেঞ্জ গুলো বিক্রি করলাম ২০ রুপিয়া, আমার ১০ রুপিয়া দশ মিনিটে লাভ হলে,হাতে আমার ২০রুপিয়া পরে আবার দশটি অরেঞ্জ কিনলাম ও ১০ রুফিয়া দিয়ে, বাকি দশ রুফিয়া দিয়ে ঝড়া আংগুরফল আধা কেজি ১০রুফিয়া দিয়ে কিনলাম। আংগুর ও অরেঞ্জ বিক্রি করে লাভ ধারালো ৪০রুফিয়া আমার হাতে আসলো। এইভাবেই আমি ডিউটির পাশাপাশি এই ব্যাবসাটি করে একদিন লাভ হলো মালদ্বীপ এর রুফিয়া ১০০রুফিয়া অর্থাৎ বাংলাদেশের ৫০০টাকা।সময় দিয়েছি মাত্র একঘণ্টা। যেহেতু আমাদের শিক্ষক Iqbal bahar zahid sir বলেছেন যে পার্ট টাইম এর কথা।সেই থেকে আমি লেগে পরেছি, যেহেতু কাজটি ছোট আমি যখন এই প্রডাক্ট গুলো হাতে করে বেগে নিয়ে বিক্রি করতে যেতেম তখন অনেকেই বলেছেন যে,চকলেট এর মত একটি পোলা তর কি এটা মানায়?
আমি চুপচাপ কিছু না বলে মাটির দিকে ছেয়ে থাকতাম, কারন স্যার বলেছেন যে, সাথে সাথে উত্তর না দিয়ে,কাজের মাধ্যোমে উত্তর দেওয়া।আমি সেই কথটা জব্ধ করে রেখেছিলাম আমাত মাথার মেমোরি তে।তারপরে আমি এইভাবেই করতে থাকি এই ব্যাবসা টি ৬মাস তার ফলে আমার কাছে বেশ কিছু রুফিয়া কেশ হয়ে গেলো, ৭মাস এর মাথায় আমি শুরু করলাম আলো,পিয়াজ, ডিম, রসুন এর সাফ্লাই এর ব্যাবসা পাইকারি ক্রয় করে এনে বিক্রি করা। এইভাবেই করলাম দুটি বছর তারপরে চিন্তা করলাম দেশে কিছু একটা করা দরকার যেই চিন্তা সেই কাজ করে ফেললাম একটি প্রতিষ্ঠান ফ্যামিলি ষ্টোর নামে একটি
মুদির দোকান ছোট ভাইকে ও ছেলেকে দিয়ে ব্যাবসা পরিচালনা করছি, ইনশাআল্লাহ ভালো সাড়া পাচ্ছি আশার চেয়ে অনেক বেশী যা কল্পনার বাহিরে।এখন মাসে সেল হচ্ছে ৫লাকের অধিক যা কল্পনা করিনি।আমার এই অর্জন ও এর ক্যাডিট শুধুই এই শিক্ষক এর জন্য সম্ভব হয়েছে।আর একটা সময় যারা আমাকে নিয়ে সমালোচনা করেছে তাদের কে আমি দেশে যাওয়ার জন্য টিকেট এর টাকা দিয়ে সহযোগীতা করেছি।এটাই হল আমার জবাব, যা আমাদের শিক্ষক বলে থাকেন।
আমার নিজের উপর নিজের অনেক বিশ্বাস ছিল,সবাই পারে,আমি পারবো না কেন,আমিও সবার মত মানুষ,সবার মত না পারি নিজের মতো তো পারব।আমি ১৪ বছর বয়স থেকে যুদ্ধ করে আজ এ পর্যন্ত এসেছি,আমি কোন পরিস্থিতিতে হার মানিন নিজের উপরে শুধু বিশ্বাস রাখতে হবে,আর চেষ্টা করতে হবে ,কাজের সাথে লেগে থাকার,একদিন অভাব নামে অন্ধকার কেটে যাবে,আবার সুখ শান্তিতে সংসার কানায় কানায় ভরে উঠবে,হতাশা এমন একটি রোগ মনে জায়গা করতে পারলে তার সব কাজ শেষ।একজন মানুষকে নিঃস্ব করতে হতাশাই যথেষ্ট ।হতাশাকে কখনোই মনে বাসা বাঁধতে দিবেন না।একবার যদি হতাশা আপনার মনে জায়গা করে নিতে পারে তাহলে এর থেকে মুক্তির উপায় আর থাকবে না।জীবনে বাধা আসবেই তাই বলে হাল ছাড়লে চলবে না এগিয়ে যেতে হবে ।জীবনে চলার পথে অনেক সমস্যা,চড়াই উৎরাই থাকবেই,আর এগুলোকে মোকাবেলা করে সামনে এগিয়ে যাওয়ার নামই তো জীবন ।
হাল ছেড়ে দিয়ে থেমে যাওয়া চলবে না যত বাঁধা বা প্রতিবন্ধকতা আসুক না কেন। মনের শক্তি দিয়ে সব বাঁধা বিপত্তি পেরিয়ে এগিয়ে যেতে হবে তাহলেই সফল হওয়া যাবে ইনশাআল্লাহ।
আমার সম্ভাবনাময় বিশ্বাস সময়ের নির্যাস ভালো ফলাফল।
এখন আমি আমার মালদ্বীপ এর জব এর পাশাপাশি আমার আলো পিয়াজ ডিম,রসুন বিভিন্ন ধরনের সবজি সেইল করে যাছি ইনশাআল্লাহ খুব অচিরেই আমি আরেকটি প্রতিষ্ঠান চালু করবো " আমার সপ্ন" নামে একটি কারখানা মুড়ির অন্তত ৫০ লোকের কর্মসংস্থান হবে সবাই আমার জন্য দোয়া করবেন। অল রেডি কাজ চলছে। শিগ্রীহ আপনাদের মাঝে আমি এই গল্পটি নিয়ে আসবো ইনশাআল্লাহ। আলহামদুলিল্লাহ আমাদের সংসারের অভাব অনটন,কাটিয়ে উঠতে লাগলাম,ধীরে ধীরে সংসারের সুখ ফিরে এলো,মা আমরা তিন ভাই ও আমার স্ত্রী সন্তানদের সুখে শান্তিতে দিন কাটাতে লাগল।
👉যদি চেষ্টা থাকে অসাধ্য সাধন করা সম্ভব👈
__________________________________________________
আসলেই আমরা যদি একটু চেষ্টা করি,একটু ধৈর্য্য ধরি,একটা মানুষের কটু কথা সহ্য করি,একটা সংসার ধ্বংসের হাত থেকে রক্ষা করতে পারি,আমরা যদি,আমাদেরবুদ্ধি,মেধাশক্তি, বিবেক বোধকে কাজে লাগাই,জগত সংসারে, ভালোভাবে খেয়ে পরে বাঁচতে পারি।সংসারের সচ্ছলতা ফিরিয়ে এনেছি,আমার মত আপনারাও চেষ্টা করলে,আপনারা সবাই,নিজেদের পরিবারের সচ্ছলতা আরও উজ্জ্বল করে তুলতে পারেন।আসুন সময়কে কাজে লাগাই, সময়কে অবহেলা করলে সময় একদিন আমাদেরকে সময় দিবে না,তাই সময়ের কাজ সময়ে করা উচিত। এতক্ষণ ধরে পাশে থেকে এই লেখা টুকু পড়ার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ। সবার সুসাস্থ্যতা কামনা করছি।
__________________________________________________
নিজের বলার মত একটা গল্প ফাউন্ডেশন এর
আমি মোঃ মোতালেব, কমিনিউটি ভলেন্টিয়ার
ও হাট মনিটারিং টিমের মেম্বার, দশম ব্যাচ রেজিঃ ১৫৩৪৯,নিজ জিলাঃ মৌলভীবাজার নিজ উপজিলাঃ কমলগঞ্জ। বর্তমানে আছি মালদ্বীপ একজনঃ রেমিটেন্স যোদ্ধা।
________প্রতিষ্ঠতাঃ ফ্যামিলি ষ্টোর।