একজন মায়ের অসমাপ্ত জীবনী
আজ আমি ফুটিয়ে তুলবো একজন মায়ের জীবনের আত্মকাহিনী।
মানুষ সৌন্দর্যের মোহে পড়ে খারাপ কাজে লিপ্ত হয় আবার অর্থের মোহে পড়েও মানুষ খারাপ কাজে লিখতে হয়।
কেউ কেউ স্বার্থের মোহে পড়ে খারাপ কাজে লিপ্ত হয়।
আজ এমন একটি ধারাবাহিক অসমাপ্ত জীবনের গল্প আপনাদেরকে শোনাবো।
সকলের কাছে অনুরোধ গল্পটি মনোযোগ দিয়ে পড়বেন
আমার নিজের চোখে দেখা ছোট থেকে যখন বড় হয়েছি নিজেও অনেক অভাব-অনটনে বড় হয়েছি সেটা আপনাদের সকলেরই জানা।সে সময় আমাদের আশেপাশে যে মানুষগুলো ছিল তাদের পারিপার্শ্বিক অবস্থা ততটা ভাল ছিল না।
আর্থিক অবস্থা তেমন ভালো ছিল না।
আসলে মা বলতে উনি আমার মা নয় কিন্তু আমার মত কোনো একটি সন্তানের মা যার কারনেই আমি তাকে মা বলে সম্বোধন করেছি।
সুতরাং গল্পের প্রতিটি ক্ষেত্রে আমি তাকে মা বলে সম্বোধন করব আপনারা বুঝে নিবেন ইনশাআল্লাহ।
আমার নিজের চোখে দেখা যতোটুকু বাকি ঘটনাটি
আমার নিজের মায়ের মুখ থেকে শোনা।
ঘটনাটা আজ থেকে প্রায় 30 বছর আগের তখন আমি পৃথিবীতে জন্মগ্রহণ করি নি সেই অসহায় মায়ের অসমাপ্ত জীবনের ঘটনাটি তুলে ধরলাম
মা অত্যন্ত সুন্দর চেহারার অধিকারী ছিলেন।
সে সময়ে মানুষ পড়াশোনা খুব কম করেছে যাদের পারিবারিকভাবে অর্থ-সম্পদ কম ছিল তাদের সন্তানরা পড়াশোনা খুব কমই করেছে।
আমার জানা মতে 30 বছর আগে মায়ের বয়স ছিল 20 বছর অত্যন্ত সুন্দর চেহারার অধিকারী হওয়ার কারণে মায়ের একটু অহংকার বেশিই ছিল।
সব সময় ভাবতেন খুব ধনী একটি পরিবারে তার বিবাহ হবে সে অনেক সুখী জীবন যাপন করবে।
আসলে এগুলা প্রত্যেকটা মানুষের ব্যক্তিগত ভাবনাচিন্তা কারো ব্যক্তিগত ভাবনা বা চিন্তার উপরে হস্তক্ষেপ করা কারো অধিকার আছে বলে আমার জানা নাই।
বিভিন্ন জায়গা থেকে বিয়ের প্রস্তাব নিয়ে আসতে থাকে দেখার জন্য সে কখনোই রাজি হতো না।
যদি শুনতো তাদের আর্থিক অবস্থা ভালো না ছেলে নিম্নবিত্ত কোন পর্যায়ে চাকরি করে বা কোন ব্যবসা করে।
ভাগ্যের ক্রমান্বয়ে কোন একদিন সে কাঙ্খিত সময় এসে হাজির হলো প্রিয় মায়ের সামনে।
ছেলেটাও দেখতে অত্যন্ত সুন্দর ছিলেন।
সে কোন একটি সরকারি চাকরি করে কিন্তু এটার বিস্তারিত খবর নিতে পারেনি উনাদের কথাতেই বিশ্বাস করেছেন এবং বিয়েতে রাজি হয়ে গেছেন।
আসলে সে সময়ের বিয়েটা সম্পর্কে আপনাদেরকে কিছু ধারণা দেয় ওইভাবে জাঁকজমক করে যারা গরীব ছিল তারা বেশি একটা আনুষ্ঠানিকতা করতো না তাছাড়া যারা ইসলাম ধর্মাবলম্বী ছিলেন তারা পদ্মার ভিতরেই বিয়ের কাজ কে বেশি প্রাধান্য দিতেন।
মা খুবই আনন্দে ছিল একটি ধনী পরিবারের ছেলের সাথে তার বিয়ে হচ্ছে।
বাবার বাড়ি থেকে প্রায় 200 কিলোমিটার দূরে সে ক্ষেত্রে অনেকটা আনন্দ ছিল যে অনেক দূরে বিয়ে হয়েছে।
তারপর প্রায় দুই বছর কেটে গেল হঠাৎ বাপের বাড়িতে হাজির। এসে খুব কান্নাকাটি শুরু করল সবাই জানতে চাইল কি হয়েছে উনি যেসব ঘটনা গুলো প্রকাশ করেছিলেন পরিবারের মানুষের কাছে সবাই হতাশাগ্রস্ত হয়ে পড়েছিলেন।
উনি এভাবে বর্ণনা করেছিলেন যে আমাকে যার সাথে বিয়ে দিয়েছেন তার অলরেডি আরো একটি বউ আছে।
তার ঘরে দুইটি বাচ্চা আছে আমাদের পরিবারকে মিথ্যা কথা বলে আমার সৌন্দর্যটাকে ভোগ করার জন্য উনি আমাকে বিয়ে করেছেন।
সে সময়টাতে ওই মা অন্তঃসত্ত্বা ছিলেন কিন্তু উনি স্বামীর ঘরে আর যেতে চাইলেন না এতদিনে উনি ভালভাবেই বুঝে ফেলেছেন যে আমি লোভ করতে গিয়ে নিজের পায়ে নিজে কুড়াল মেরেছি।
পেটের সন্তান তাকে নিয়ে উনি বাবার বাড়িতে থেকে গেলেন যার সাথে বিয়ে হয়েছিল তাকে ডিভোর্স করে দিয়েছেন।
একটা কথাই বলতেন আমার আম্মুকে যে বিয়ের সাধ জীবনের দুই বছরে যথেষ্ট উপলব্ধি করেছি।
বেঁচে থাকলে আর কখনো বিয়ে করবো না কয়েক মাস পরেই ওনার সন্তান দুনিয়াতে আসলেন তখনো ওই মা কোন কিছু করতেনা না।
মানে তিনি একটা সময় ভেবেছিলেন যে কোন একটি বড়লোক পরিবারে তার বিয়ে হবে সেখান থেকে সে নিজেকে সাজিয়ে গুছিয়ে নেবে।
কিন্তু এখন এমন একটি জায়গায় এসে উনি উপনীত হয়েছেন যে উনাকে বাধ্য হয়ে কিছু একটা করতে হবে এমন পরিস্থিতির শিকার হন।
আস্তে আস্তে উনি ওনার নিজের মধ্যে ধৈর্যধারণ করা শুরু করলেন যেহেতু সন্তানটা দুনিয়াতে এসেছে তার জন্য কিছু একটা করতে হবে সেটা ভেবেই উনি জীবনের প্রথম উদ্যোগ হাতে নিলেন বাড়িতে থেকেই কিছু হাঁস মুরগি এবং ছাগল লালন পালন করবেন।
একটা সময় উনি শুরু করে দিলেন উনার উদ্যোক্তা জীবনের কার্যক্রম আমার আম্মু আমাকে বলেছিল যে আমার থেকে একটি মুরগি নিয়েছিল ডিম ফোটানোর জন্য।
আপনারা হয়তো জানেন যে মুরগি ডিমের উপরে তাওয়া বা উম দেওয়ার যোগ্য হয় ওই মুরগিটাকে ডিমের পরে বসানো হয় টানা 20 দিন বা 25 দিন। গরম তাপ পেলে ডিম ফুটে বাচ্চা বের হয় সেজন্য ওই মা আমার আম্মুর থেকে একটি মুরগী নেয় ডিমে তাওয়া দেওয়ার জন্য।
এবং এক মাস পরে সেটাকে ফিরিয়ে দেয়।
ওটা হচ্ছে উনার জীবনের প্রথম কোন একটি কাজ শুরু করা শুধু সন্তানের কথা ভেবে।
অবশ্যই আপনাদেরকে বলতে ভুলে গেছি ওনার একটি ছেলে সন্তান হয়েছিল আমার আম্মু বলেছিল ছেলেটা দেখতে রাজপুত্রের মতো একদম ওর বাবার চেহারার মতো।
আসলে প্রত্যেকটা মা এর তার সন্তানের ভালোর জন্য যেকোনো কিছু ত্যাগ করতে পারে।
সেটা সামনের দিকে ঘটতে চলেছে একটা সময় মুরগির তাওয়া থেকে ফুটানো বাচ্চা দিয়ে উনি প্রায় 100 মত মুরগী তৈরি করে ফেলেন।
সে সময়ে মুরগির দাম তেমন বেশি ছিল না
বাবার বাড়িতে থেকে খেয়ে উনি আলাদাভাবে কিছু করার চেষ্টা করেছিলেন প্রায় দুই বছর পর একটি ছাগল কিনেছিলেন।
তার দুই বছর পর একটি গরু ক্রয় করেছিলেন। তারপর উনাকে আর পিছন দিকে ফিরে তাকাতে হয়নি এই চার পাঁচ বছরে উনি যথেষ্ট স্বাবলম্বী হয়ে উঠেছিলেন।
ছেলেটা অনেক বড় হয়ে গেছে পাঁচ বছরে সেও মায়ের সাথে যথেষ্ট সময় দিত।
এখানে স্যারের কথাটি আমার খুবই মনে পড়ে যায় আমাদের প্রিয় মেন্টর যে কথাটি বলেছেন।
স্বপ্ন দেখুন
সাহস করুন
শুরু করুন
লেগে থাকুন
সফলতা আসবেই ইনশাল্লাহ।সেই ধারাবাহিকতায় উনি কিন্তু উনার জীবনের একটা সফলতা পেয়েছিলেন এভাবে উনার ভালো ভাবেই চলছিল। সন্তানকে নিয়ে সুখী ছিলেন।
হঠাৎ একদিন কালবৈশাখী ঝড়ের মত ওনার জীবনের সবকিছু উলটপালট হয়ে গেল।
আমার আম্মু আমাকে বলল হঠাৎ করে ওই বাড়িতে হইচই কান্নাকাটি শুনতে পেলাম ছুটে গেলাম কি হয়েছে দেখতে
গিয়ে দেখি ওনার পাঁচ বছরের যে ছেলেটি ছিল সে মারা গেছে। বিস্তারিত জানার চেষ্টা করেছি সকলেই বলেছে পুকুরে গোসল করতে নেমেছিল সাঁতার জানেনা গভীর পানিতে গিয়েছে সেখান থেকে আর উঠে আসতে পারেনি।
যতক্ষণে আমরা আশপাশের মানুষজন টের পেয়েছি ওকে উঠিয়ে আনতে আনতে ও মারা গেছে।
আসলে এখানে ওই মা টা তার জীবনের একটা সময় স্বামীর আদর সোহাগ হারিয়েছে যে সন্তানের আশায় সবকিছু ছেড়ে দিয়ে নতুন করে বাঁচতে শিখেছি সে সন্তান দুনিয়া থেকে বিদায় নিলো।
একটা সময় উনি মেন্টালি অনেকটা পাগলের মত আচরণ শুরু করেন। এলাকার মানুষ ভেবেছিল বুঝি উনি পাগল হয়ে গেছে।
এভাবে আরো দুই-তিন বছর কেটে যায়। সব সময় নিরব থাকতেন কারো সাথে কথা বলতেন না।
আর সন্তানের কথা মনে পড়লেই খুব জোরে জোরে আত্ম চিৎকার দিয়ে কান্না করতেন ছেলের নাম ধরে ধরে।
আমার আম্মু বলেছিল যে ওর কান্না দেখে আমি নিজেও সহ্য করতে পারতাম না আমি নিজেও কেঁদে ফেলতাম।
সত্যি কথা বলতে আমি আজকে আপনাদের সামনে যে গল্পটা প্রকাশ করতেছি আমি লিখতেছি কিন্তু চোখের পানি ধরে রাখতে পারছিনা।
কারণ আমারও একটি সন্তান আছে সন্তানের কিছু হলে আমি কতটা উন্মাদ হয়ে যাই সেটা আমি ভালো বুঝি
আর ওই মায়ের সন্তান চিরতরে দুনিয়া থেকে বিদায় নিয়েছে।
তারই ধারাবাহিকতায় আরো কয়েকটি বছর কেটে গেল এর মধ্যেই মা আর স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসতে পারল না প্রায় 10 থেকে 12 বছর পাগলের মতো ঘুরে ঘুরে একটা সময় উনিও মারা গেলেন।
এজন্যই আমি বলেছি যে একটি মায়ের অসমাপ্ত জীবনের কাহিনী।
এখান থেকে আমি কিছু শিক্ষা গ্রহণ করেছি সেটা হচ্ছে সৌন্দর্যের বড়াই দেখানো কারো জন্যই মঙ্গলময় নয় অথবা অতি লোভ বা বেশি লাভ কখনোই কারো জন্য কল্যাণ বয়ে আনে না।
আশা করবো আমার প্রাণের ভাই এবং বোনেরা আপনারা আপনাদের মতামত জানাবেন
আজকে আমাদের এই প্ল্যাটফর্মের কোন ভাই অথবা কোন বোন তার জীবনের যেন এমন কোন পরিস্থিতির শিকার না হয় সেজন্যই আমি এই গল্পটি আপনাদের সামনে প্রকাশ করলাম।
এখন পর্যন্ত আমার গল্পটি ধৈর্য সহকারে যে সকল প্রিয় ভাই এবং বোনেরা পড়েছেন সকলকে অসংখ্য ধন্যবাদ।
আমার কথা বলার মাঝে ভাষাগত বাক্যগত অনেক ভুল-ত্রুটি থাকবে সকলে ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন।
ধন্যবাদন্তে
🍁আব্দুর রহিম
🍁🍁কমিউনিটি ভলেন্টিয়ার
🍁🍁🍁ব্লাড ডোনেট টিম মেম্বার
🍁🍁🍁🍁ব্যাচ ১৩
🍁🍁🍁🍁🍁 রেজিঃ নাম্বার ৬০৪৮৫
🍁🍁🍁🍁🍁🍁ব্লাড গ্রুপ AB+
🍁🍁🍁🍁🍁🍁🍁জেলা যশোর
🍁🍁🍁🍁🍁🍁🍁🍁বতর্মান নারায়ণগঞ্জ সোনারগাঁও
আমার পেইজ লিক্ন https://www.facebook.com/Roja-bdcom-105212061359030/
কাজ করছি ALL SIM PAWER LODE.📲📲📲
🥭🍓🍍মৌসুমি ফল এবং রান্নার বিভিন্ন প্রকার মশলা🍝🍜🍝🍜🍝 নিয়ে।
#রক্তের_সন্ধানে_আমরা_64_জেলা
#আপনার_দেওয়া_একব্যাগ_রক্তে
#কারো_জীবন_বাচতে_পারে