জীবনটা পরিবর্তনের জন্য একটা বইয়ের একটা বাক্যই যথেষ্ট
জীবনটা পরিবর্তনের জন্য একটা বইয়ের একটা বাক্যই যথেষ্ট।আজ আমি আমার প্রিয় প্লাটফর্মে নিজেকে নিয়ে কিছু লেখার চেষ্টা করব।
আমার জন্ম গ্রামের এক মধ্যেবিত্ত পরিবারে। নুন আনতে পান্তা না ফুরালেও ঢের কিছু যে অবসিষ্ঠ থাকে তা কিন্তু নয়। জীবনকে খুব কাছ থেকে দেখার সৌভাগ্য বা দুর্ভাগ্য বলেন সেটা অর্জন হয়েছে আমার।আমি দেখেছি কিভাবে একটা স্বপ্নকে বাস্তবায়ন করতে গিয়ে আরেকটা স্বপ্নকে বিষর্জন দিতে হয়। আমার বাবা ছিলেন একজন মূদি ব্যবসায়ী। আমরা দুই ভাই ও দুই বোনের মধ্যেই আমি সবার ছোট বেলা থেকেই পড়াশোনার পাশাপাশি বাবার ব্যবসায় সাহায্য করার চেষ্টা করতাম। ছাত্র হিসেবে বেশি ভাল না হলেও একদম খারাপ ছিলাম না।


পাওনা ধার কে টাকা শোধ দিয়ে বাদবাকি টাকা দোকানের ব্যবসার কাজে ব্যবহার করি। সব কিছু ঠিকঠাক সুন্দর ভাবে চলছিল।
এই দিকে বাবা আমাদের পাশের গ্রামের এক পরিচিত বড় ভাই দুবাই প্রবাসী। উনার সাথে বাবার খুব একটা ভালো সম্পর্ক। তাকে বিষয়টা অবহিত করলে উনি বললেন যে দেখতেছি কি কর যায়।পরবর্তীতে হকসাব ভাইয়ের মাধ্যমে ভাইয়ার একটা ব্যবস্থা হয়। কিন্তু সেটা ও বেশি স্থায়ী হলো না। দুই বছর পরে আবার কোম্পানি থেকে নোটিশ আসে দেশে ফেরত পাঠানোর। এইবার আর রক্ষা হয়না আবার হকসাব ভাইয়া মাধ্যমে আর একটি কোম্পানি তে চাকরির ব্যবস্থা করা হয়।
কিন্তু ঠিক মতে সেলারি দেয় না অনেক কষ্টে দিন চলছে।ভাই এখন সব কথা বাড়িতে প্রকাশ ও করে না। ভাইয়ার ফেন্ডস দের কাছ থেকে বিষয় গুলো জানতে পারি।
প্রায় একবছর পর IFFCO GROUP এ কাজ পান ভাইয়া আলহামদুলিল্লাহ।কিছু দিন পর কোম্পানিতে আরো কিছু লোক নিয়োগ নিচ্ছেন। তখন ভাইয়া অনেক মানুষ কে কাজের ব্যবস্থা করে দিলেন। বিনামূল্যে কাজের সুযোগ পেয়ে তারা ও খুব খুশি।
এইদিকে আমাকে ফোন দিয়ে বললেন পাসপোর্ট পাঠাইতে।আমি পাসপোর্ট পাটিয়েছি এবং ভাবলাম অনেক সময় লাগবে কবে হয় না কবে হয় তার ঠিক নাই। বাবার সাথে চলছে আমার কর্ম।
হঠাৎ ফোন ৬ মাস পরে বলো তোমার ভিসা হয়ে যাচ্ছে তুমি একটু বিশ্রাম করো ও গুমাও বন্ধুদের সাথে বেশি আড্ডা দিও না। তার কিছু দিনের মধ্যে পারি দিলাম আমি ও প্রবাসে।
শুরু আমার প্রবাস জীবন, প্রবাসী জীবন কত সুখ কত কষ্ট এখন দেখা হবে নিজ চোখে। কথা আছে যে যেই জিনিস খায় না সে কি বুঝতে পারে কি তার মজা।যতই অনুভব করেন না কেনো।
অামি আর আমি নাই কি আর করবো ভাইয়ার মতো আমার ও মিথ্যা বলা শুরু বেছে থাকা যে এখন সুখে থাকা। কোনো রকম খিদা নিবারন করা যে ভালো খানা।ঘড়ি সময় দেখা যে ছেড়ে দিয়েছি।কি সকল কি বিকাল সবই সমান।তা শুধু একজন প্রবাসী বুঝতে পারবে।আলহামদুলিল্লাহ সব কিছু মিলিয়ে নিয়ে চলছে জীবন।
এর মাঝে হঠাৎ একটা দুর্ঘটনার কবলে পড়ে পরিবার।ঘুরে দাঁড়ানোর আগে আবার যেন গর্তে পড়ে গেলাম।এগুলো সমাধান করতে গিয়ে আবার ৪/৫ লক্ষ টাকার মত ঋণ হয়ে গেছে। এগুলো পরিশোধ করতে এইবার রাত আর দিন সব সমান তালে সংগ্রাম করে চলছি।
এই দিকে ছোট বোনের বিয়ে প্রস্তাব এসেছে। সে পড়া লেখায় ভালো সবে মাত্র HSC শেষ করলো।সে পড়তে চায় আমি ও চাই সে পড়তে। কিন্তু মা বাবা রাজি নয়। দিন দুনিয়া নাকি ভালো না বিয়ে দিয়ে দিবে।আজ নয়তো কাল বিয়ে দিতেই হবে।আর কি করা মা বাবার মুখের উপর তর্ক করা সম্ভব নয়। বিয়ে দিযে দিলেন।
এতে আমার দুই বন্ধু খুব সহযোগীতা করেছে তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা স্বীকার করছি। সব কিছু আল্লাহর রহমত।আল্লাহ একদিক না একদিকে ব্যবস্থা করে দেন।

এখন চাকরির পাশাপাশি কিছু করার চেষ্টা করছি। অনলাইনে কিছু শুরু ও করে দিয়েছি। স্যার তো বলেন একদিন দেরি করলেন তো একদিন পিছিয়ে গেলেন।




হ্যাঁ আমি স্বপ্ন দেখি একজন সফল উদ্যোক্তা হবার। পাশাপাশি চেষ্টা করি আমার মত স্বপ্নবাজ মানুষেদেরকে স্বপ্ন দেখাতে।
স্ট্যাটাস অব দ্যা ডে"- ৪৫২
Date:- ৩০/০১/২০২১
মোঃ মিজানুর রহমান



