কিছু দিন পর কিন্তু হঠাৎ একদিন খবর এলো বাবা আমাদের বাসার ছাদ থেকে নিচে পড়ে গেছে
আমি মো ফারুক হোসেন, আমার জন্ম লক্ষীপুর জেলার রামগঞ্জ এর ছোট্ট একটি গ্রাম এ। আমাদের ছোট সুখী পরিবার এর আমরা 5 সদস্য আমার পিতা-মাতা দুই বোন এবং একমাত্র ভাইয়ের দিন অনেক সুন্দর কাটছিলো। ছোট বেলা থেকে আমি লেখা পড়াতে অনেক দূর্বল ছিলাম তার পরেও চেষ্টা করতাম 2004 সালে এসএসসি 2006 সালে এইস এস সি দিলাম।
প্রিয় বাবা ছিলেন দুবাই প্রবাসী রেমিটেন্স যোদ্ধাদের একজন 2010 সালে বাবার কোম্পানিতে শ্রমিক ছাঁটাই বাবার নামটি এসে যায় ফিরতে হলো দেশে এ যেন মেঘ না চাইতে বৃষ্টি হঠাৎ বাবা দেশে আশা ছিলো না কোন প্রস্তুতি ছিলোনা কোন ব্যাংক বেলেন্স। আমারা দিশারা আপন জন যেন পর হয়ে গেলো, শুভ দিনের শুভকাঙ্খী এখন আর নাই কেউ পাশে।সময় থেমে থাকে না যেন জীবন যুদ্ধ কাউকে না কাউকে হাল ধরতে যে হবে ।
শুরু হল আমার জীবন যুদ্ধ। ভাগ্য ভালো যে চাচা এগিয়ে এসেছে। এক রাস্তা বন্ধ হলে আল্লাহ আরেক রাস্তা খুলে দেয় মুরুব্বী দের মুখে শুনতাম তা যেন হাতে নাতে পেলাম।
চাচার সহযোগিতায় চলে আসলাম সংযুক্ত আরব আমিরাত UAE (Al AiN) প্রবাস নামের জেল খানায়। ভালোই চলছিল আমাদের ছোট পরিবার ইতিমধ্যে দুই বোনের বিয়ে হয়ে গেল,আলহামদুলিল্লাহ।
কিছু দিন পর কিন্তু হঠাৎ একদিন খবর এলো বাবা আমাদের বাসার ছাদ থেকে নিচে পড়ে গেছে।
ঢাকা নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি করানো হল বাবাকে দীর্ঘদিন ঔষধ খাওয়ার পর মোটামুটি সুস্থ হল।
এ ভাবেই চলছে আবার কিছু দিন কিন্তু সেই সুখ বেশি দিন রইলো না বাবা আবার অসুস্থ হয়ে পড়লেন শুরু হল নতুন যুদ্ধ এবার বাবার হার্ট এ সমস্যা ডাক্তার দেখিয়ে আবার শুরু করলো ঔষধ খাওয়া কিছু দিন পর ডাক্তার বললো আমার পক্ষে আর সম্ভব নয় কারণ বাবার হার্টের অবস্থা বেশ খারাপ। বাঁচতে হলে হার্ট পরিবর্তন করে কৃত্রিম হার্ট লাগাতে হবে। শুরু হয়ে গেল আমার মায়ের ছুটা ছুটি এ ডাক্তার ও ডাক্তার এভাবে চলতে থাকলো ঔষধ আর ডাক্তার পরিবর্তন। কিছু টা সুস্থ হলেন বাবা।
এটা ও বেশী দিন রইল না কারন বাবা আবার অসুস্থ হয়ে পড়লেন। এবার আর আমাকে জানানো হল না কারন আমি বিয়ে করার উদ্দেশ্যে দেশে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে এবং দেশে ও গেলাম কিন্তু প্রিয় বাবা আমাকে কিছু বললেন না হঠাৎ একদিন বাবার হার্টের প্রচন্ড ব্যাথা শুরু হল ঢাকাতে নিয়ে হসপিটাল এ ভর্তি করানো হল পরবর্তীতে ডাক্তার বললেন হার্ট এ রিং বসাতে হবে অনেক টাকা দরকার আমি মাকে বললাম বিয়ের জন্য স্বর্ন গহনা যা কিছু নিয়ে এসেছি সবকিছু বিক্রি করে বাবার চিকিৎসা করেন। যা কিছু করার পরে করবো।
পরবর্তীতে আমার চাচা বললেন কোন কিছু বিক্রি করতে হবে না আমি দিবো সব টাকা। বাবার চিকিৎসা করলাম। বিয়ে করলাম আবার ফিরে এলাম প্রবাসে।
এবার নতুন চিন্তায় পড়ে গেলাম বাবার চিকিৎসা, মায়ের চিকিৎসা সকল কিছু আমাকে একাই দেখতে হবে তাই আমাকে আরো ভালো কিছু করতে হবে।
স্বপ্ন দেখা শুরু করলাম ইউরোপ পাড়ি দেওয়ার চেষ্টা ও শুরু করলাম প্রথমে তুর্কি ভিসা আবেদন কিন্তু ভাগ্য সহায়তা করলো না করোনার ভয়াল থাবায় সব কিছু তছনছ করে দিলো।
শেষ বলতে কিছ নাই শেষ থেকে শুরু হার থেকে শিক্ষা আমাদের স্যার সবসময় বলে।তাই তো আবার ঘুরে দাঁড়ানোর প্রত্যয়। আমাকে যে পারতে হবে শুরু করি নতুন করে সাজানো।
ইউরোপের চিন্তা বাদ দিয়ে এখন স্বপ্ন দেখি একজন উদ্যোগতা হওয়ার। স্বপ্ন দেখি ভালো মানুষের হওয়ার।
আলহামদুলিল্লাহ কারন এখন স্যার এর শিক্ষা নিয়ে মনে অনেক সাহস এবং কিভাবে লেগে থাকতে হয় তা শিক্ষা পেয়েছি। তা কাজে লাগিয় আজ আমি নিজেকে পরিবর্তন করছি । স্যার কে সেলুট আমাকে এবং লক্ষ লক্ষ তরুণ প্রজন্মের এবং প্রবাসীদের পাশে দাড়িয়ে তাদের হতাশা দুর করে নতুন করে নিজেকে জানার বুঝার সুযোগ করে দিয়েছেন।
এই প্লাটফর্ম সম্পর্কে আমার অনুভূতি প্রকাশ
কথায় বলে, একটি সুন্দর উক্তি রত্নের চেয়েও মূল্যবান। একটি চমৎকার অনুপ্রেরণা মূলক উক্তি দুর্বলকে যোগায় শক্তি, দিশেহারাকে দেখায় পথ, অন্ধকারে জ্বালায় আলোর মশাল। হতাশা, ব্যর্থতা, গ্লানির তিক্ত অনুভূতিগুলো যখন ঘিরে ধরে তখন ঘুরে দাঁড়ানোর জন্য সম্বল হয় একটু আশা, একটুখানি সম্ভাবনার হাতছানি। জীবনের কঠিন সময়গুলোতে তোমার মনোবল ধরে রাখতে হৃদয়ে অনুপ্রেরণা যুগিয়ে যাবে। এ সব কিছুই আমারা পেয়ে থাকি আমাদের এ প্রিয় প্লাটফর্ম থেকে। সে জন্য ধন্যবাদ জানাই আমাদের প্রিয় জনাব ইকবাল বাহার জাহিদ স্যার কে।
যার অক্লান্ত পরিশ্রমে আমরা পেয়েছি একটা ভালো মানুষের প্লাটফর্ম, নিজের বলার মতো একটা গল্প ফাউন্ডেশন। যার মাধ্যমে আমরা যুক্ত হতে পেরেছি বাংলাদেশের 64 জেলা ও পৃথিবীর 50টির দেশের সাথে। স্যারকে আমার অন্তরের অন্তস্তল থেকে অনেক অনেক ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানাই।
সবাই আমার জন্য দোয়া করবে এবং পাশে থাকবেন।আমি যেন আমার পরিচয় কিছু করতে পারি।অসংখ্য ধন্যবাদ আমার লেখা টি আপনার মূল্যবান সময় ব্যয় করে পড়ার জন্য।
সবাইকে ধন্যবাদ আমার এই লেখাটা আপনাদের মূল্যবান সময় ব্যয় করে পড়ার জন্য।
"স্ট্যাটাস অব দ্যা ডে"- ৪৫৯
Date:- ১০/০২/২০২১
----------আমি-------
মুহাম্মদ ফারুক হোসেন
12 তম ব্যাচ
রেজিস্ট্রেশন 37646
জেলা লক্ষীপুর
UAE al ain রেমিটেন্স যোদ্ধাদের একজন
Mob - 00971557710200