বাবা বলে তুমি আর একটু বড় হও আমি বলি এখন অনেক বড় হয়েছি আমি
আমি ভালোবাসি আমার বেহেশত্
আমার গর্ভধারিণী মা কে।
আমি ভালোবাসি আমার জন্য যেই মানুষটি,
সারা জীবন নিজের কথা না ভেবে
আমার কথা ভাবে আমার বাবাকে।
আমি তাদের স্বপ্ন তাদের আশা
পরিবারের বড় ছেলে।
মৃত্যুর আগ মুহুর্ত পর্যন্ত শুধু চাই বাবা মায়ের ভালোবাসা
১৯নাম্বার সেশনে প্রিয়
IQBAL BAHAR ZAHID স্যার বলেন
আমার জীবনে যা চমক ঘটেছে সবই বাবা মায়ের দোয়াই।
যার বাবা মা আছে সে ভাগ্যবান
স্যারের ১৯ নাম্বার সেশন টা
শুনে আমার চোখের জল গোড়ে পড়ে 😭
তাই আমিও ভাগ্যবান কারন আমার বাবা মা আছে,
আছে বাবা ও মায়ের দোয়া ও ভালোবাসা।
আমি যখন ছোট তখন আমার বাবা একজন তিন চাকার ড্রাইভার ছিলেন।খুবই দরিদ্র ছিলো আমার পরিবার
আমার বাবা একদিন ঈদের সময় আমাকে একটা জামা কিনে দিবে বলে খুব ইচ্ছে ছিলো
অভাবের তাড়নায় তা দিতে পারেনি আমায়
সেইদিন শুধুই দিয়েছেন দোয়া।
কোনো কোনো দিন টাকা না থাকায়
আদা কেজি মুড়ি বাকিতে আনার জন্য
দোকান্দারের কাছে বসে থাকতেন বাবা।
দোকান্দার বাকিতে দিলে তা নিয়ে আসতেন
আমাদের দুই ভাই কে দিতেন।
আর 🔹মা🔹শুধু কাঁদতেন আমাদের নিয়ে😭
ভালোবাসি 🔸মা🔸ভালোবাসি
আজ দুর প্রবাসে
কতোদিন তোমার জলমলে চেহারাটা দেখিনা
একদিন আমাদের পরিবারের উপর থেকে
যেনো দুঃখের কালো মেঘ সরতে শুরু করলো
আমার নানা ভাই সৌদিআবর ছিলেন তখন
একদিন আমার নানা ভাই আমার বাবার জন্য সৌদির একটা ভিসা পাঠায়
তখন আমার বাবা বলেন আল্লাহ তুমি তাহলে আমার
এই সন্তানদের উপর রহম করলে। আলহামদুলিল্লাহ।
বাবা সৌদিতে আসেন
তারপর থেকে আলহামদুলিল্লাহ আমাদের জন্য
মুড়ি আর বাকিতে আনাতে হয়নি
আমার মনে আছে
আমাদের ছোট্ট একটা মাটির ঘর ছিলো
সেই ঘর বাবা কয়েক বছর পর টিন দিয়ে করেন
এর মাঝে দুই ভাই পড়া লেখা করি
বাবা আমাদের পড়া লেখার খরছ দেন এখন বাবাও খুশি আমাদের কে ভালো জামা কাপড় দিতে পারেন।
এবং আমার কোনো চাওয়াই আমার বাবা অপূর্ন রাখেনি।
এখন আলহামদুলিল্লাহ
আমরা ভালো খাচ্ছি,ভালো কাপড় পাচ্ছি
আমিও মোটামোটি বড় হয়েছি।
এর মাঝে বাবা দীর্ঘ ৫বছর পর ছুটিতে আসে
এসে আবার ৫মাস পর চলে যায়
তার পর এক দিন আমি বাবা কে বলি আমায় বিদেশ নাও আমি বিদেশ যাবো।
বাবা বলে তুমি আর একটু বড় হও
আমি বলি এখন অনেক বড় হয়েছি আমি😊।
বাবা বলে তুমি একটা কাজ শিখো
তোমার জন্য ভালো হবে সেটা
কাজ না শিখলে বিদেশ আনবোনা তোমাকে
আমি বলি আচ্ছা ঠিক আছে।
আমি এমব্রয়ডারি কাজ শিখার জন্য
বাবা ২০হাজার টাকা কন্টাক্ট করেন
আমি এমব্রয়ডারির কাজ শিখতে যাই।
আমি এমব্রয়ডারি কাজের ২০তম দিনে
এমব্রয়ডারির সুঁই আমার হাতে ডুকে যায় বলে
আমি এই কাজ আর করার ইচ্ছে হয়নি
এইবার বাবা ২০হাজার টাকা কন্টাক্ট করলো
মোবাইল সার্ভিসিং সেন্টারে ৩মাসে কাজ শিখিয়ে দিবে
কিন্তু দেখলাম নিজে না শিখলে উনারা শিখায়না
যাক আলহামদুলিল্লাহ মোটামুটি কাজ শিখলাম
এবং আমি দীর্ঘ ২বছর পার্সেন্টিস হিসেবে কাজ করি
আমাদের ফেনী মহিপাল প্লাজা মার্কেটে।
এই ভাবে আমার বয়স যখন ১৭বছর
কারণ বশত ২০১৩তে আমি বিয়ে করে ফেলি
বাবা মায়ের সম্মতিতে
এখন বাবাকে আবারো বললাম বিদেশ যাবো
তখন বাবা আমার জন্য ভিসার ব্যাপারে
সব কথা পাইনাল করে পেলে আমার কাছের একজন রিলেটিভ এর সাথে ২০১৪
আমাকে বাবা যখন বলে তোমার জন্য ভিসা কিনেছি
আমি বললাম কোন দেশের? বাবা বলে লিবিয়া
আমি বললাম কে দিছে ভিসা বাবা কার থেকে নিয়েছেন
বাবা বলে তোমার এই রিলেটিভ থেকে নিয়েছি
আমি বাবাকে সাথে সাথে না বলে দিলাম
বাবা কোনো রিলেটিভ এর সাথে ভিসার লেনদেন করলে
সাধারণত আত্মীয়র সম্পর্ক টা কিন্তু নষ্ট হয়ে যায়
আর তাছাড়াও লিবিয়াতে এখনো যুদ্ধ থামেনি
আমার ইচ্ছা নেই বাবা আমি যাবোনা
বাবা রেগে গেলেন রাগ করে বসে রইলেন ঐ রিলেটিভ তিনিও
পরে এক পর্যায়ে রাজি হয়ে বাবা বলি ঠিকআছে আমি যাবো
তখন আমার ১৮বছর বয়স পাসপোর্ট বানালাম
এবং আমার জীবনে ঘটে জাওয়া একটি দুর্ঘটনা
এই লিবিয়া পাড়ির চরম অভিজ্ঞতা
আমি অবশ্য অন্য পোস্ট এর মাধ্যমে জানাবো
আমি লিবিয়া যাই এবং ১৫দিন জেলে থেকে
তারপর আবার আমি ফেরত আসি বাংলাদেশে
বাবা তো রীতিমত হতভম্ব
বাবা বিদেশ করে যেই টাকা সঞ্চয় করেছেন
সেই টাকায় কিন্তু আমায় বিদেশ পাঠিয়ে ছিলেন
আর তাই বাবা হঠাৎ নিস্তব্ধ হয়ে গেলেন
আবারো যেনো কালো মেঘে ডেকে যাচ্ছিলো
আমাদের ছোট এই পরিবার
অনেক টাকা খরছ হয় আমার বিদেশ যাওয়ার পিছনে
মনে মনে ভাবতেছি কেমন ছেলে আমি
যেই বাবা এতো কষ্ট করে তিলেতিলে যেই টাকা জমা করে
আমি সেই টাকা গুলা নষ্ট করে দিলাম
আমার কারনেই বাবার এতো গুলা টাকা লছ হলো
ইনকাম করে দিতে পারলাম এক টাকাও
দেশে আশার পর খুব একটা ভালো যাচ্ছিলোনা দিন
শুধুই চিন্তা পেরেশানি কি করলাম কি করবো কিছুই বুজে উঠতে পারছিলামনা।
তার পর দেশে বেশ ২/৩বছর কাজ করি
এর মাঝে বাবাও কিছুটা আর্থিক ও মানুষীক
সচ্ছল হয়েছেন আলহামদুলিল্লাহ
২০১৬ অক্টোবরের দিকে বাবা বলে সৌদিআরব এরভিসা নিয়াছি
আবার সব কিছু ঠিক ঠাক করে সৌদিতে আসি।
আসার পর সাথে সাথে বাবা কে বলি
বাবা দেশে চলে যাও তুমি..বাবা বলে কেনো?
আমি বলি বাবা এতো বছর কষ্ট করেছো
তোমার দুই ছেলে ছোট বলে
আজতো তোমার ছেলে বড় হয়েছে বিদেশেও এসেছে
তাহলে এখন কেনো আর তুমি কষ্ট করবে
তোমাকে আমি আর বিদেশ করতে দিবোনা
বাবা বলে আমি যাবোনা
আমি বলি বাবা তুমি না গেলে দেশে
আমি চলে যাবো দেশে
তখন বাবা রাজি হয় এবং বাবাকে আমি পাঠিয়ে দেই
আমি সৌদিআরব আসার ২/১ মাসের মধ্যেই
কারন আমি জানি আমার বাবা কি কষ্ট করেছেন
আমার বাবা আমার জন্য একটা জামা কিনতে পারেনি
আমার বা আমাদের জন্য নিজের
সব কিছুই বিলিয়ে দিয়েছিলেন
আজ আমি বিদেশে আসছি যেহেতু
এখনো কি দিবো বাবাকে কষ্ট করতে
এটা হতেই পারেনা
আমি সারা জীবন চাই বাবা মায়ের মুখে হাসি
এবং বাবা মা এর দোওয়া
আমার জন্য দোওয়া করবেন দোয়া চাচ্ছি।
আমি আজও পর্যন্ত মায়ের কাছেই মাসিক টাকা টা পাঠাই
আর মা এই টাকা থেকে বাবার খরছের টাকা বাবা কে
এবং আমার একটা মেয়ে সন্তান আছে ওর টাও মা দেয়
এবং আমার মেডাম কেও আমার মা তার হাত খরছ দিয়ে দেয়
আমার বেহেশত আমার বাবা মা
ভালোবাসি বাবা মা কে
আলহামদুলিল্লাহ আমরা দুই ভাই এখন সৌদিআরব
ভালোই আছি মা বাবার দোওয়ায়
আমি আবারো বলছি ১৯নাম্বার সেশনে প্রিয়
IQBAL BAHAR ZAHID স্যার বলেন
আমার জীবনে যা চমক ঘটেছে সবই বাবা মার দোয়া।
যার বাবা মা আছে সে ভাগ্যবান
স্যারের সেশন টা শুনে আমার চোখের জল গোড়ে পড়ে
তাই আমিও ভাগ্যবান কারন আমার বাবা মা আছে
আছে বাবা ও মায়ের দোওয়া।।
স্ট্যাটাস অব দ্যা ডে"- ৪৬৬ Date:- ১৯/০২/২০২১
ধন্যবাদান্তে
---------------
সোহেল রাজ
নিজের বলার মত একটা গল্প ফাউন্ডেশন একজন গর্বিত সদস্য
জেলা : ফেনী
রেজিস্ট্রেশন:৫৭০৭৭
ব্যাচ : ১৩
বর্তমান অবস্থান :সৌদি আরব