এই পতাকার লাল রং আমাদের শহীদদের রক্তের নিশানা
❤️❤️একুশ আমার অহংকার❤️❤️
খুব ছোট সময় যখন বিটিভি দেখতাম,অন্য কোন চ্যানেল দেখার কোন সুযোগ ছিল না তখন একুশে ফেব্রুয়ারি নিয়ে সম্পূর্ণ ফেব্রুয়ারি মাস জুড়ে অনেক আয়োজন দেখতাম।ছোট থেকে শহীদ মিনার দেখেছি টিভিতে,টাকার নোটে।কিন্তু পতাকা টা হয়তো আমরা ছোট থেকেই চিনতে পারি,না বুঝলেও চিনতাম। একটু বড় হয়ে যখন ড্রইং করা শিখলাম জাতীয় পতাকা হয়তো আমাদের প্রায় সকলের ই ড্রয়িং করার শুরুর দিকের একটি ছবি থাকে।কিন্তু তখন আমরা এই সবুজের বুকে লাল কেন বুঝতাম না,বললেও না,তখন বুঝার মতো বয়স আমাদের ছিলোনা।কিন্তু বড় হওয়ার পর ঠিক ই অনুভব করতাম কেন সবুজের বুকে লাল,তখন মনে হতো এই পতাকার লাল রং আমাদের শহীদদের রক্তের নিশানা,তাদের রক্তে অর্জিত স্বাধীন বাংলার প্রতিকে তারা বেঁচে থাকবে আজীবন, এর চাইতে ভালো আর কি হতে পারে?
এরপর যখন থেকে শহীদ মিনার আঁকতাম তখন থেকে অন্য রকম একটা আলাদা কিছু কাজ করতো ভিতরে ভিতরে কিন্তু তখন বুঝতে পারতাম না।তারপর আরেকটু বড় হওয়ার পর একদিন একুশে ফেব্রুয়ারি তে আমি শহীদ মিনার বানিয়ে ছিলাম কাঠি দিয়ে আমার এখনো মনে আছে,আর তখন জীবনের প্রথম ছিল এটা করা।বানিয়ে সব জায়গা খুঁজে খুঁজে ফুল এনে দিয়েছিলাম,আর সবাইকে বলছিলাম তোমরাও এখানে ফুল দিয়ে যাও,টিভিতে আমি দেখেছি আজকে ফুল দিচ্ছে সবাই।তখন এক বড় ভাই এসে বলতাছে তোর শহীদ মিনার তো হয়নি,এটা শুনে তো মনটাই ভেঙে গেল😥😥পরে ভাইয়া ঠিক করে দিয়েছিল🥰,আর পরে সবাইকে ধরে ধরে নিয়ে এসে ফুল দিতে বলতাম আর ফুল দিত আমার তখন কি যে খুশি লাগতো।তখন সেই বয়সে একটা উৎসব মনে হতো।
তখন বুঝতাম না এটা কি দিন,কেন এইভাবে মানুষ এই দিনকে স্মরণ করে,এগুলো কিছুই বুঝতাম না,তবুও ভালো লাগতো এগুলো।
তারপর বড় হওয়ার সাথে সাথে জানতে শুরু করলাম মুক্তি যুদ্ধ নিয়ে,আমাদের বাংলা ভাষার জন্য প্রান দিয়েছে সেইসব শহীদদের নিয়ে,যখন বই পত্রে পড়তাম এগুলো নিয়ে তখন নিজের অজান্তেই শ্রদ্ধা চলে আসতো মুক্তি যোদ্ধাদের প্রতি।বাংলা ভাষায় কত সহজে কতো সুন্দর করে আমরা আমাদের মনের ভাব প্রকাশ করি,ভাষা আন্দোলন গুলো নিয়ে পড়তাম সময় বারবার মনে হতো আজ যদি আমাদের ভাষা শহীদরা আমাদের বাংলা ভাষা রক্ষার দাবিতে না এগিয়ে আসতো আমরা উর্দূ ভাষায় কথা বলতাম!!ভাবা যায়??বাংলা ছাড়া অন্য কিছু মনে আসলেই কেমন বুক খালি খালি লাগে,তখন তাদের প্রতি শ্রদ্ধা এমনিতেই চলে আসে,তাদের এই আত্মত্যাগের জন্য আমরা আজ পেয়েছি আমাদের মাতৃভাষা "" বাংলা""।
একদিন ক্লাসে স্যার বলছিল একুশে ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস,আর সেটা বাংলার মানুষের জন্য,আমাদের ভাষা রক্ষার দাবিতে সেদিন যারা প্রান দিয়েছিল তাদের স্মরণে আমরা পালন করতাম তারপর সেটা আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস ঘোষণা করা হলো,বাঙালির বিশাল এক অর্জন ছিল।এগুলো যখন থেকে জানা শুরু করলাম শ্রদ্ধা আরো বাড়তে শুরু করলো।বুঝতে শিখলাম ছোট সময় যেটা আমি করেছিলাম সেটা ঠিক কেন করে?কতোটা শ্রদ্ধা,ভালোবাসা নিয়ে প্রতিটি বাঙালি সেদিনটা স্মরণ করে ❤️❤️।তারপর থেকে স্কুলে প্রতিবছর একুশে ফেব্রুয়ারি তে ফুল দিতে যাওয়া,আলোচনায় অংশগ্রহণ,বিতর্ক প্রতিযোগিতা করা সকল কিছুতে অংশগ্রহণ করতাম।সারাটাদিন খুব ভালো লাগতো তখন।বাংলা ভাষা নিয়ে গর্ব হতো।
যখন ক্রিকেট খেলার শুরুতে সকল নিরবতা উপেক্ষা করে আমাদের বাংলার টাইগার রা আমাদের জাতীয় সংগীত গাইতে শুরু করে তখন হঠাৎ করে যেন বুক কেঁপে উঠে,এইতো আমাদের সেই ভাষা,আমাদের সেই বাংলা ভাষায় আমাদের জাতীয় সংগীত❤️সেই অনুভূতি টা আসলে আমরা যখন ফীল করি বুঝতে পারি আমাদের ভাষা আমাদের কাছে কি।
আমরা এখন যতই আধুনিক হয়না কেন আমরা যতটা সাচ্ছন্দ্যে বাংলায় কথা বলি সেটা অন্য কিছুতে সম্ভব না,কখনো না।আমরা বাঙালি,আমাদের ভাষা রক্তে অর্জন করা,পৃথিবীর অন্য কোন ভাষা হয়তো রক্তের অর্জন না,কিন্তু আমাদের প্রানের ভাষা আমরা পেয়েছি ৩০লক্ষ শহীদের রক্তের বিনিময়ে।এই ভাষা আমাদের,আমরা বাঙালি,আমাদের মাতৃভাষা বাংলা এটা আমাদের গর্ব,আমাদের অহংকার,আমাদের ভালোবাসা❤️❤️।একুশে ফেব্রুয়ারি আমাদের ইতিহাসের সেরা একটি দিন,আমরা মন থেকে শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করি আমাদের ভাষা শহীদদের।আমাদের মনে তারা এখনো জীবিত।তাদের এই ঋণ আমরা কখনো পরিশোধ করতে পারবো না।লক্ষ কোটি সালাম তাদেরকে❤️❤️❤️❤️
স্ট্যাটাস অব দ্যা ডে"- ৪৬৭
Date:- ২১/০২/২০২১
আমি হিজাব ইমতিয়াজ সায়মা
ক্যাম্পাস এম্বাসেডর (নেত্রকোনা সরকারি কলেজ)
ব্যাচ-১২
রেজি-৩৮২৮২
জেলা-ময়মনসিংহ
কাজ করছি হাতের তৈরি গহনা নিয়ে।
পেইজ--------- প্রিয়ণিকা-prionika