আমি তাকে ফুল কিনে দিলাম
🏵️ আজ আমি বলবো প্রবাসে থেকে আমার মাতৃ ভাষা পালনের অনুভুতির কথা। আশা করি লেখাটা সবাই
পড়বেন।
🏵️ মোদের গরব মোদের আশা আম,রি বাংলা ভাষা "
ইতিহাসের দিকে তাকালে পরিস্কার একটা ধারণা
১৯৫২ সালেই বিশ্ববাসী পেয়েছেন।যে ভাষার জন্য
লড়াই একমাত্র বাংলা ভাষারই। তাই এই ভাষা নিয়ে গবেষণার যেনো শেষ নেই। পৃথিবীর এমন কোন দেশ নেই যে দেশে বাংলা ভাষা নিয়ে গবেষণা হয়না।কারন এই ভাষা অর্জিত হয়েছে হয়েছে এক রক্তাক্তময় ইতিহাসের মধ্য দিয়ে।
🏵️ জাতি হিসাবে এটা আমাদের কাছে কত বড় একটা
পাওয়া সেটা হয়তো ভাষায় প্রকাশ করা সম্ভব না।
আমরা বাংলা ভাষা ভাষি মানুষ গুলো প্রিয় এই
মাতৃভাষায় কথা বলে নিজেদের কে গর্ববোধ করি।
ভাষা প্রকাশের যেই অনুভূতি যারা দেশে থেকে
প্রকার ভেধে আঞ্চলিকতা বজায় রেখে সাধারণত
ভাষায় কথা বলেন।তাদের মাঝে কোন ভাষা গত
সমস্যা নেই। তাই তারা নিজের ভাষার সেভাবে
তেমন মুল্যায়ন করে না।তাদের কাছে সবই প্রায়
একই রকম শুধু আঞ্চলিকার পার্থ্যক্য ছাড়া।
🏵️ কিন্তু এর সম্পুর্ন বিপরীত চিত্র দেখা যায় শুধু মাত্র প্রবাসীদের ক্ষেত্রে। ভাষার মুল্য প্রবাসীদের ছাড়া এত গভীর ভাবে কেউ উপলব্ধি করতে পারে না। একজন প্রবাসী যতই ইংরেজিতে কথা বলেন
হিন্দিতে, আরবি, উর্দু, ফার্সি,তে কথা বলেন।
নিজের ভাষার একটা শুন্যতা সবসময় কাজ করে।
🏵️ এই শুন্যতা কাটানোর জন্য কেউ কেউ বিদেশি
সহকর্মিদেরকে বাংলা ভাষা শিখিয়ে ফেলেছেন।
এতে সে যেমন নিজের ভাষার স্বাদ পায়, তেমনি
সেদেশের মানুষের মাঝে নিজের ভাষার প্রচলন
ঘটাতে সক্ষম হয়। বাংলা ভাষা আন্তর্জাতিক ভাবে
এভাবেই প্রসার লাভ করেছে। সুতরাং আজকে যেই বাংলা ভাষা আন্তর্জাতিক ভাবে এত প্রসারিত হয়েছে তার মুল ধারক বাহক এই প্রবাসীরাই।
🏵️ বছর ঘুরে যখন একুশে ফেব্রুয়ারি তারিখটি আসে রফিক,সফিক, সালাম, বরকত সহ প্রতিটি ভাষা
শহিদদের অবদানের কথা স্বরন করতে এতটুকু
ভুল করে না প্রবাসী বাংলাদেশিরা । চোখের সামনে রাজপথে তাদের লাশের দৃশ্য যতদিন বাংলা ভাষা থাকবে ততদিন তা দৃশ্যমান থাকবে। পৃথিবীর সমস্ত বাংগালির বুকে তা চির অম্লান হয়ে থাকবে।
🏵️ বাংলাদেশের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় অর্জন হিসাবে
ধরা হয়, ১৯৭১ সালে স্বাধীনতার লাভের অর্জনকে
কিন্তু এই স্বাধীনতা অর্জন করে তার রক্ষা করাটা
যে বড় চ্যালেন্জ ছিলো। সেই চ্যালেন্জে সম্পুর্ন
পরাজিত বাংলাদেশ, স্বাধীনতার সন্মান কখনোই
রক্ষা করতে পারেনি। অদুর ভবিষ্যতে পারবে কি না তার প্রশ্ন থেকেই যায়। কিন্তু শুধু মাত্র ভাষার স্বাধীনতা অর্জন টুকুই বাংলাদেশ সফলতার সাথে রক্ষা করতে পেরেছে। আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি লাভের পাশাপাশি দিনের পর দিন বিস্তৃতি লাভ করেছে বিদেশে থাকা প্রবাসী বাংলাদেশিদের স্বতঃস্ফূর্ত অবদানে।
🏵️ বাংলা ভাষাকে বিশ্বের বুকে মাথা উঁচু করে রাখা এই সব প্রবাসি বাংলাদেশিরাই আন্তর্জাতিক ভাবে
নিজের ভাষার প্রতিনিধিত্ব করছেন প্রতিটি মুহূর্তে।
প্রবাসীরা হয়তো এত আনুষ্ঠানিক ভাবে দিবসটি পালন করতে পারে না।কারন বাংলা মাতৃভাষা দিবসের জন্য কোন দেশে ছুটির ব্যবস্হা নেই।
সারাদিন কর্ম ব্যস্ততায় কেটে যায়, দিনশেষে
শুধু দীর্ঘশ্বাসেই পালন হয় এই দিবসটি। কিন্তু
এই দীর্ঘশ্বাসের মাঝেই তাঁদের লুকিয়ে থাকা
শ্রদ্ধা ভালো বাসা, সন্মান টুকু প্রদর্শন করে থাকে।
তবে কোন কোন দেশে বেশ জমকালো ভাবেই আয়োজনের করে থাকে প্রবাসী বাংলাদেশিরা।
🏵️ কিন্তু আপনি কি জানেন,হৃদয়ের গহীনে লুক্কায়িত
এই দীর্ঘশ্বাস একজন প্রবাসীর জীবনের স্মৃতির
ক্যানভাসে গচ্ছিত প্রতিটি মুহূর্তের ভেসে ওঠা
অগনিত প্রতিচ্ছবি।সে কিছুক্ষনের জন্য হারিয়ে যায় তার স্মৃতির আয়নায়।
খুব ভোরে ঘুম থেকে ওঠে আমার ছোট্ট ছেলেটি বলেঃ , বাবা ওঠো তুমি কি ভুলে গেছ আজ একুশে ফেব্রুয়ারি। আমি তড়িঘড়ি করে
ওঠে বললামঃ সরি বাবা, ভুল হয়ে গেছে।
ছেলেঃ ওকে সরি বলতে হবে না এখন চলো আমাকে ফুল কিনে দাও,সবার আগে আমি
বেদিতে ফুল দিতে চাই। আমিঃ ওকে চলো
🏵️ বিছানা থেকে নেমে যেই জুতো পড়তে যাবো তখন ছেলেঃ কি করছো আজ তো একুশে ফেব্রুয়ারি আজ তো খালি পায়ে হেঁটে যেতে হবে।
আমিঃ সরি বাবা এবরো ভুল হয়ে গেলো ঠিক আছে চলো তোমাকে ফুল কিনে দিবো।
কিন্তু আমার ছেলে যাচ্ছে না। আমিঃ কি হলো বাবা চলো। ছেলেঃ আচ্ছা বাবা বলতো আজ
তোমার কি হয়েছে? আমিঃ কেন বাবা কি হবে। ছেলেঃ কি হয়নি বলো আমার ড্রেস কোথায়? কালকে যে একুশের নাম খচিত পোশাক কিনেছো সেটা পরিয়ে দাও। আমিঃ সরি বাবা আমি অনেক সরি।
🏵️ ছেলেঃ আচ্ছা বাবা তুমিও কি ছোট বেলায় আমার মতই ভাষা দিবস পালন করেছ। আমিঃ হুম কিন্তু কেন বাবা। ছেলেঃ কিন্তু বড় হয়ে সবই ভুলে গেছ তাইনা?কিন্তু আমি বড় হয়ে ও ভুলে যাবোনা।আমি এটাকে সারা জীবন স্বরন করতে চাই। আমার ছোট্র ছেলের কথা গুলো আমার হৃদয়ে এখনো দাগ কেটে আছে। ছেলেকে কোলে নিয়ে কত গুলো চুমো খেয়েছিলাম মনে নেই। কিন্তু ওর যে ভাষার প্রতি সম্মান সেটা এখনো মনে আছে কোন দিন ও ভুলতে পারবো না।সত্যিই তো বড় হলে আমরা হয়তো একরকম অবহেলাই করি।
🏵️ আমি তাকে ফুল কিনে দিলাম সে তার স্কুলের শত শত বাচ্চাদের সাথে সারিবদ্ধ ভাবে শহীদ মিনারে ফুল দেওয়ার জন্য খালি পায়ে হেঁটে চলছে। সাথে জাগরণের গান "আমার ভাইয়ের রক্তে রাংগানো একুশে ফেব্রুয়ারি আমি কি ভুলিতে পারি "দাঁড়িয়ে থেকে তাদের কে স্যালুড জানিয়ে, ডান হাতটি বুকের বা পাশে রেখে দু চোখ বন্ধ করে গর্বের একটা অনুভূতি প্রকাশের সেই মুহুর্তটি একজন বাংগালির কাছে কতটা আবেগের, কতটা মমতাভরা বিনম্র শ্রদ্ধা তা কোন বাক্যে প্রকাশ করা সম্ভব না। আজ আমি একজন প্রবাসী খুব ভোরে কেউ আমার ঘুম ভাংগাবে না পোশাক ও পরাতে পারবেনা কিন্তু কপালে হাত দিয়ে স্যালুড, বুকের বাম পাশে ডান হাত রেখে শ্রদ্ধা জানাতে গিয়ে একটা দীর্ঘশ্বাস তো আসতেই পারে। এই টুকু অধিকার তো সব মানুষেরই আছে তাইনা?
🏵️ এতে করে অন্তত হৃদয়ের গহীনে থাকা শ্রদ্ধা, ভালো বাসা এককী নিরবেই আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস পালন করে দেশের অক্সিজেন খ্যাত, দেশের অর্থনীতির চাকা সচলকারী জীবিকার সন্ধানে আসা লাখো লাখো রেমিট্যান্স যোদ্ধারা।ভাষা দিবসের পাশা পাশি বিনম্র শ্রদ্ধা জানাই আজকে আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি পাওয়া
বাংলা ভাষার ধারক ও বাহক, এবং দেশের অর্থ
নীতির প্রান ভোমরা, অক্সিজেন,রেমিট্যান্স যোদ্ধা
প্রবাসীদের।
🏵️ আমি আমার প্রিয় প্ল্যাটফর্ম নিজের বলার মত একটা গল্প ফাউন্ডেশনের মাধমে পৃথিবীর সকল ভাষার মানুষের কাছে উদাত্ত আহ্বান জানাই ভাষা আপনার
নিজস্ব সম্পদ আপনার পরিচয়, আপনার সত্তা।
এটাকে রক্ষা করুন ভাষার মাধ্যমে আপনার পরিচয়
বিশ্বের বুকে তুলে ধরুন।
🏵️ পরিশেষে জাতির বিবেকের আমার একটি প্রশ্ন
দেশের এত এত অর্জনে যাদের প্রানডালা অবদান।তাদের কে কতটুকু সম্মান করছি। আমরা কি এই প্রবাসীদের কোনদিন ও তাদের প্রাপ্ত অধিকার, সম্মান দিতে পারবো না? যদি নাই পারি তাহলে বাংগালী জাতি হিসাবে আমরা এই লজ্জা লুকাবো কোথায়?
স্ট্যাটাস অব দ্যা ডে"- ৪৬৭
Date:- ২১/০২/২০২১
-----------------------------আমি -------------------------------------
🌿 মোঃ আব্দুল আলীম
🌿 ব্যাচঃ দশম
🌿 রেজিষ্ট্রেশন ১৮৪৮৩
🌿 রক্তের গ্রুপঃ এ/বি পজেটিভ
🌿 নিজ জেলাঃ শরিয়ত পুর
🌿 বর্তমান অবস্থানঃ মরিশাস।