একজন ইকবাল বাহার জাহিদ স্যার এবং আমাদের জাহিদ ভাই ও আমার আমি
আজ ২১ই জানুয়ারি ২০২০ খ্রীস্টাব্দ নিজের বলার মত গল্প গ্রুপের ৮ম ব্যাচের ৯০ দিনের শেষ দিন। গ্রুপের ৮ম ব্যাচের ২৮তম দিন থেকে এই গ্রুপের সাথে আমার যাত্রা। গত ৬১ দিনের স্যারের প্রতিটি পোস্টসহ পুরো ৯০ দিনের উদ্যোক্তা বিষয়ক প্রতিটি পোস্ট আমার কাছে বিশেষ ভাবে সংগ্রহে রাখা আছে। স্যারের প্রত্যেকটি সেশন এক একটি জীবন কাব্য। স্যারকে অনেক বার বলতে শুনেছি, তিনি বলতেন "এই ৯০ দিনের সেশন শেষ করতে পারলে যে কোন মানুষের ভিতরে পরিবর্তন অবশ্যম্ভাবী "। উনার কথা যে যথার্থ তার সাক্ষী আমি নিজেই। আমি আমার নিজের লাইফ স্টাইলে গত দুই মাসে যে পরিবর্তন দেখতে পেয়েছি তা দেখে আমি নিজেও অবাক। প্রথম যে পরিবর্তন তা হচ্ছে আলহামদুলিল্লাহ আমার কনফিডেন্ট লেভেল অনেক বেড়ে গেছে। নিজেকে যথেষ্ট ভীতু মনে হতো কিন্তু এখন আর সে আগের মত মনে হয়না। সিদ্ধান্ত গ্রহনে খুবই ইতস্তত করতাম। এখন সে জায়গায় ও অনেক উন্নতি হয়েছ। আর সবচেয়ে বড যে অর্জন তা হচ্ছে বেশ কিছু পজেটিভ মানুষকে চিনতে পেরেছি। যারা হয়তো আগামী দু, চার বছরের মধ্যে নিজেদের একটা গল্প তৈরি করে নিতে পারবেন। আমার মতো আজ হাজার হাজার মানুষের যে মৌলিক পরিবর্তন হয়েছে তা সম্ভব হয়েছে শুধুমাত্র একজন মানুষের স্বার্থহীন শিক্ষাদানের মাধ্যম। তিনি একজন শিক্ষক, একজন মেন্টর জনাব ইকবাল বাহার জাহিদ স্যার।
উনার সেশন গুলো দেখে আমদের মনে ও উদ্যোক্তা হওয়ার আশার সঞ্চার হয়েছে। আমি ও আজ স্বপ্ন দেখার সাহস করি যে একদিন আমি ও একজন বড় উদ্যোক্তা বা ব্যাবসায়ী হয়ে উঠতে পারবো।
স্যার নিজে ও সমাজে একজন সু প্রতিষ্ঠিত মানুষ,। উনি ও অন্য শিল্পপতিদের মত কোট, ট্রাই পরেন কিন্তু আমার কাছে মনে হয়েছে তিনি নিজেকে কখনো একজন Boss মনে করেন না । উনি উনার অধিনস্তদের ও সব সময় উৎসাহিত করে থাকেন যেন তারা এক একজন ইকবাল বাহার জাহিদ স্যার হয়ে ঊঠতে পারেন।সাধারণত সমাজের উঁচু তালার মানুষদের মাজে যা ঠিক দেখা যায় না।
এই হলো আমার জাহিদ স্যার। উনাকে যখন স্যার বলে সম্বোধন করে থাকি তখন আমার মনে পড়ে যায় আমার প্রাইমারী জীবনের প্রিয় নেপাল স্যারের কথা,
হাই স্কুল জীবনে প্রিয় স্যার লালমোহন স্যারের কথা, কলেজ জীবনের মশিউর স্যারের কথা এবং কর্মজীবনের আমার বর্তমান স্যারের (boss) এর কথা। বিশ্বাস করুন জীবনের এক একটা সময় এই স্যারেরা আমার খুবই পছন্দের এবং ভালোবাসার মানুষ ছিলেন। কিন্তু সব চেয়ে অবাক হওয়ার কথা উপরের উল্লেখিত স্যারদের জন্যে মনের যে জায়গায় থেকে শ্রদ্ধা সম্মান টা আসে ঠিক একই জায়গায় থেকে আমার জাহিদ স্যারের জন্যে সেই সম্মান টা আসেনা। জাহিদ স্যারের কথা যখন স্মরণ করি তখন শ্রদ্ধা, সম্মান বা ভালোলাগা টা তার চেয়ে আরো কয়েকগুণ বেশি কাজ করে। জীবনে চলার পথে যে কয়জন কে স্যার সম্বধন করে ছিলাম তাদের সাথে সম্পর্ক টা ছিল ছাত্র, শিক্ষক।
নতুবা মালিক কর্মচারী, কিংবা ক্ষনিকের কোন গ্রহিতা এবং সেবা দাতা সম্পর্ক। কিন্তু এই স্যারের সাথে সম্পর্কটা ঠিক যেন আত্নার সাথে আত্নার। উনার কথা মনে পড়লে, উনার জন্যে সম্মান টা ঠিক সেই জায়গা থেকে আসে যে জায়গা থেকে আমার প্রিয় বাবার জন্যে সম্মান আসে। সেই সম্মান টা কাজ করে যেটা প্রিয় কোন বড় ভাইয়ের জন্যে আসে।
জীবনের চলার পথে যাদেরকে আমি স্যার বলে সম্মান করেছিলাম আমি লক্ষ্য করেছিলাম এই শব্দটা সামনের লোকটার সাথে আমার পার্থক্য এবং দূরত্ব টা কি তা আমাকে স্মরণ করে দেয়। কিংবা সেখানে অদৃশ্য স্বার্থের একটা লেন দেন চলতো। কিন্তু জাহিদ স্যার আমাদের শুধু পথ দাখাই দিয়ে আমাদের ছেড়ে দেন নি, উনার দেখানো সেই পথের সব পথিক কে গন্তব্যে না পৌঁছা পর্যন্ত তিনি আলোর দিশারি হয়ে সকলে পাশে থাকেন। এমন নিঃস্বার্থ ভাবে শুধু মাত্র একটা পরিবারের বাবা তার সন্তানদের জন্যে এবং একজন দায়িত্ববান বড় ভাই তার স্নেহের ছোট ভাই দের জন্যে করে থাকেন। সে ই জায়গা থেকে জাহিদ স্যার কে যখন মনে মনে নিরবে আমাদের জাহিদ ভাই বলে আওয়াজ দিই, মনের ভিতরে অন্যরকমের এক তৃপ্তি পাই। যেমন তৃপ্তি পেতাম আমার বাবাকে আব্বু বলে।
📌"স্ট্যাটাস অব দ্যা ডে"- ১১৬
Date:- ২১/০১/২০২০ ইং
আব্দুল মান্নান
৮ম ব্যাচ ৬৪০১
ফেনী
সংযুক্ত আরব আমিরাতের শারজাহ থেকে।