আমি আমার আগামীর সম্ভাবনা
25 জানুয়ারি আমার জন্মদিন। মধ্যবিত্ত পরিবারের সদস্যদের জন্য জন্মদিন তেমন একটা অর্থ বহন করে না। তবে এসএসসির পর থেকে শহরে বেড়ে উঠায় কিছুটা আধুনিকতার ছাপ আমার গায়ে লেগেছে। তারই ধারাবাহিকতায় জন্মদিন পালন করা হয়েছে কয়েকবার যদিও কখনও ঘটা করে কিছু করা হয়নি। কলেজের বন্ধু বান্ধব এবং কিছু শুভাকাঙ্খির শুভেচ্ছা বিনিময়, ঘুরাঘুরির মধ্যেই সীমিত। সময়ের পরিক্রমায় যারা নিয়মিত জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানাতো, জন্মদিন মনে রাখত, তারা সবাই অনেক দূর দূরান্তে চলে গেছে। অনেকে ভুলেই গেছে আজকে আমার জন্মদিন। আমার প্রিয় বন্ধু, প্রিয় বান্ধবী এবং কাছের কিছু মানুষ সবাই। তাই বলে কি আর জন্মদিন থেমে আছে।
তবে আজকে মজার বিষয় হল স্বল্প সময়ের পরিচিত কিছু মুখ চেনা মানুষ। যাদের সাথে সম্পর্ক শুধু আমার "নিজের বলার মত একটা গল্প " প্ল্যাটফর্মের সুবাদে তারা যখন শুভেচ্ছা জানাচ্ছিল, বিভিন্ন পোস্ট দিচ্ছিল, ইনবক্স করছিল তখন বরংবার প্রিয় মানুষগুলোকে মিস করছিলাম।
যাই হোক জীবনে একটা অংশ ক্যারিয়ারের পিছনে কাটিয়ে দিয়েছি। এই স্বল্পদৈর্ঘ্য সময়ে জীবনে অনেক প্রতিকূলতা কাটিয়ে আজকের আমি। অজো পাড়া গাঁ থেকে উঠে এসে শহরে বসবাস, পড়াশোনা পাশাপাশি কর্মজীবন। চট্টগ্রাম থেকে ঢাকায় প্রত্যাবর্তন আবার ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম। এর মাঝে শেখা হয়েছে গ্রাফিক্স ডিজাইন, ইলেকট্রিক্যাল ওয়ারিং, সেলস এন্ড মার্কেটিং, প্রডাক্ট প্রমোশন এর বিভিন্ন কাজ। 2012 তে শুরু করা নিজের ব্যবসা। বিভিন্ন মেলাতে অংশগ্রহণ করা, নিজের শোরুম খোলা। একটা থেকে দুইটা, দুইটা থেকে তিনটা- চারটা। ফুটওয়ার ফ্যাক্টরি করা, গার্মেন্ট সেক্টরে কিছু কাজ করা। প্রতিষ্ঠান হিসেবে কাজ করেছি আড়ং, ট্রান্সকম -পেপসিকো, প্রগ্রেসিভ প্রেস ইত্যাদির স্বনামধন্য প্রতিষ্ঠানে। সবকিছু মিলিয়ে বাস্তব জীবনের অভিজ্ঞতার ঝুড়ি নিয়ে আজকের আমি। এই যে পথ চলা কত মানুষ ধোকা দিয়েছে, কথা দিয়ে কথা রাখেনি, বিপদে ফেলেছে, ভুল পরামর্শ দিয়েছে, ভুল পথে পরিচালিত করেছে।
মাঝে মাঝে মনে হতো এখন আর কিছুই করার নেই আবার মাঝে মাঝে মনে হয় এখনো তো শুরুই করিনি। এতকিছুর পরও একটা একটা পর্যায়ে গিয়ে মনে হল আমার দেশ ভালো মানুষের জন্য নয় পাড়ি জমালাম দেশের বাইরে দেশের বাইরে কাটিয়ে দিলাম দুইটা বছর। এখন দেশে যাওয়ার প্রস্তুতি চলচে।
দেশের বাইরে থাকা অবস্থায় খুঁজে পেলাম " নিজের বলার মতো একটা গল্প"" প্ল্যাটফর্ম কে। এইযে অর্জিত অভিজ্ঞতা সেগুলো শেয়ার করার মত জায়গা কখনো খুঁজে পায়নি কিন্তু এখন নিজের বলার মতো একটা গল্প প্ল্যাটফর্ম আমাকে সেই সুযোগ করে দিয়েছে। যেখানে আমার অর্জিত অভিজ্ঞতা, কর্মপ্রণালী বিভিন্ন বিষয় শেয়ার করার সুযোগ এবং আমার জীবনে যেখানে ভুল ছিল যে কারণে বিভিন্ন সময়ে ব্যবসায়ীক ভুল হয়েছে সেই জায়গা গুলো ঠিক করার সুযোগ।
এখন আমি নতুন প্রত্যয়ে এগিয়ে যাচ্ছি। এই প্লাটফর্ম থেকে আগামী ভবিষ্যৎ সুনিশ্চিত করার প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখেছি। প্লাটফর্মে আমি আমার আগামীর সম্ভাবনা দেখেছি। বর্তমানে আমি দেশের বাইরে থেকে ও অনলাইনের মাধ্যমে অর্ডার নিয়ে গার্মেন্টস রিলেটেড বিভিন্ন কার্যক্রম শুরু করেছি এবং সফলতার মুখ দেখছি।
মজার ব্যাপার হলো দেশে থেকেও যেটা করতে পারিনি এই প্ল্যাটফর্মের বদৌলতে এখানে বসেই তার চেয়ে দ্বিগুণ কাজ করতে পারছি। আমি একটা জিনিস সবসময় ভাবতাম একটা শোরুম কিংবা ট্রেডিশনাল কোন বিজনেস নিয়ে একবার বসে গেলে সেখান থেকে ছুটি পাওয়া এত সহজ নয়, আসলেই তাই। প্রযুক্তিকে কাজে লাগিয়ে অনেক কিছু করা সম্ভব আর সেটা যদি হয় "নিজের বলার মতো একটা গল্প" প্ল্যাটফর্ম তাহলে তো কথাই নেই। নিজের বলার মতো একটা গল্প প্লাটফর্মে আমি শিখেছি কিভাবে উদ্যোগ নিতে হয়। কিভাবে উদ্যোগের বাস্তব রূপ দিতে হয়। বিভিন্ন সমস্যার সমাধান, ব্যবসায়িক বিভিন্ন সহায়তা, পার্টনার, বিনিয়োগ পাওয়ার সুয 2 লক্ষ রেডি কাস্টমার যাদের কাছে অনায়াসে আমার পণ্য ও সেবা পৌছে দিতে পারছি।
আমি আশা ব্যক্ত করছি আগামী কিছুদিনের মধ্যে আমার সেবার পরিধি অনেক বৃদ্ধি পাবে। Amazed ""JUST Ask"" এর বিভিন্ন সেবা নিয়ে আসবো। নিয়মিত ব্যবসা করবো, সাহস করবো, শুরু করবো, লেগে থাকবো, সাফল্য আসবেই। আমার মেন্টর ইকবাল বাহার জাহিদ স্যারের সহায়তায় এই অসাধ্যকে সাধন করব। যদিও আমি এখন পুরোদমে সফল নই, তবে আমি আত্মবিশ্বাসী, দিশেহারা নই, আমি জানি আমি কে? আমি কি করতে পারব? আমার নিজের উপর আত্মবিশ্বাস আছে।
📌"স্ট্যাটাস অব দ্যা ডে"- ১২১
Date:- ২৬/০১/২০২০ ইং
নূরুন নবী রিয়াজ
Moderator & Core Volunteer, 5th Batch,
NRB KUWAIT/ FENI.