অনেক ভাবনা চিন্তার পর একটা ভিন্নধর্মী আইডিয়া পেয়েছি
☑️ জীবনের গল্প _____=_____
♻️ খুব ছোট যখন ছিলাম,অনেক করে চাইতাম ব্যাংকে চাকরি করবো।কেন জানিনা,আমাদের মধ্যে যে কেও ব্যাংকার ছিলো তাও কিন্তু না।ছোটবেলায় যেখানে সবাই ভাবতো ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার হবে সেখানে আমি হাড়িপাতিল খেলায় সবসময়ই ব্যাংকার ছিলাম।
যাই হোক,আমরা ছিলাম ৪ ভাই, ৫ বোন।আমি ছিলাম ৮ নাম্বার। বাবা মা অবহেলা করেননি কখনো তবে যেখানে এখনকার বাবা মা রা ২/৩ সন্তান নিয়ে যা করেন আমাদের মা বাবারা কিন্তু অমনটা করতেন না।
♻️ ছোট বোন মারা গেলো ছনটেক মহিলা মাদ্রাসায় আগুন লেগে,😭 আমি তখন ক্লাস সেভেনের ছাত্রী। আর আমরা কিছুটা কনজারভেটিভ, তাই আমি তখন থেকেই বোরকা পড়তাম।ছোট ছিলাম তাই ভাবলাম যে নাহ,এবার আমি সবার ছোট, তাই আমি অনেক আদর পাবো।
আমি আসলে অনেক বেশি আদরের কাংগাল ছিলাম।
যাই হোক সপ্ন দেখতাম,ব্যাংকার হবো।সেই কারণে ব্যাবসায়ী শিক্ষা নিয়ে এসএসসি,এইচএসসি দিলাম।কিন্তু বিধিবাম,কপাল বলে একটা কথা আছে না?🤭
♻️ আব্বু বলতেন মাদ্রাসায় পড়তে হবে,আমি তো মাদ্রাসায় পড়বোনা।আমার মেজো বোন ইংলিশে এমএ পাশ করেছে,আমার আপু কিন্তু আমার সেই ছোটবেলা থেকেই দেখতাম ব্রিটিশ ষ্টাইলে ইংলিশ বলতো।তার সপ্ন আমাকে ইংলিশেই পড়তে হবে।পড়ে গেলাম দোটানায়,আমার সপ্নের কি হবে?🤔
মেজো আপু সিটি কলেজে ইংলিশে ভরতির ব্যাবস্থা করলেন আর আমি রাগ করে ভরতির পুরো টাকা না নিয়ে সামান্য কিছু টাকা নিয়ে চলে গেলাম মুন্সিগঞ্জ হরগংগা কলেজে,ভরতি হলাম সেখানে(ইংলিশে)।
♻️ ভর্তি হলাম কিন্তু পড়ায় তো মন বসেনা,একাউন্টিং টা আমাকে প্রচন্ডভাবে টানে।১ম সেমেষ্টার পরীক্ষা,হলে গিয়ে দেখি কিচ্ছু পারিনা,পুরা মাথায় হাত।এতো লজ্জা পেলাম যে ১ বছর গ্যাপ দিয়ে নতুন করে পড়াশুনা শুরু করলাম।
♻️ ঢাকা কলেজের ইংরেজির অধ্যাপক নোহেল স্যার, যার কথা আসলে না বললেই নয়।স্যার আমাদের ব্যাচ টা কে এতো সুন্দর করে পড়ালেন যে আলহামদুলিল্লাহ রেজাল্ট কল্পনার অতীত ভালো হলো।সেই ব্যাচে আমরা দুইজন মেয়ে ছিলাম, বাকিসব ছেলে।তবে ওদের সাথে আমাদের সম্পর্ক ছিলো খুবই ভালো।👥
♻️ ১ম এবং ২য় বর্ষ,রেজাল্ট অনেক ভালো।এই পরযন্ত আমার লেখাপড়ার খরচ আমি নিজেই চালিয়েছি টিউশনি করে।সে সময় আমি কিছু শেয়ার ও কিনেছিলাম।রাগ করে কারো থেকে আর পড়ার খরচ নেইনি। চেষ্টা করছিলাম ইডেনে ট্রান্সফার হওয়ার জন্য। এরমধ্যেই আব্বুর পছন্দে বিয়ে ঠিক 😭।ছেলেদের দাবি আর পড়াশুনা করা যাবেনা,আব্বু রাজি কারণ আব্বু আসলে মেয়েদেয় জেনারেল লাইনে লেখাপড়া টা পছন্দ করতেন না।
👩❤️👩 বিয়ে হয়ে গেলো ১২/১২/১২।
♻️ হাজব্যান্ড নিজে মাষ্টারস কমপ্লিট করেছেন, তাই আমাকে আর বলতে হয়নি,তিনি নিজেই আমাকে পড়াশোনা করিয়েছিলেন। যদিও আমার আর ক্লাস করা, প্রাইভেট পড়া হয়নি,নিজে বাসায় পড়ে এবং ফ্রেন্ডদের থেকে ফোনে পড়া বুঝে নিতাম।এইভাবে অনার্স, মাস্টার্স শেষ করলাম,রেজাল্ট আগের মত ভালো না হলেও খুব খারাপ ছিলো না,সেকেন্ড ক্লাস।
👩👩👧👫 এরমধ্যে হয়ে গেলাম ৩ মেয়ের জননী।
♻️ কি করবো,ব্যাংকার হওয়ার সপ্ন তো শেষ😭। ভাবলাম বিসিএস দেই,দেখি কি হয়।জানিনা বিসিএস দিয়ে কি করব,তবুও দিলাম।
এরমধ্যেই একদিন হুট করেই ইকবাল বাহার জাহিদ স্যারের 👁️ একটা ক্লাস দেখলাম।ওখানে শুনলাম উনি বলছেন,৯০ দিনের ক্লাস করিয়ে উদ্যোক্তা বানাবেন এবং এই ক্লাসগুলো সম্পুর্ন ফ্রী।ইন্টারেস্টেড হয়ে স্যারকেই ম্যাসেজ দিলাম,কমেন্ট করলাম,তখন তো আসলে স্যারের সম্পর্কে কিছুই জানতাম না আমি।
♻️ জানিনা কিভাবে কি হলো,হঠাৎ করেই দেখি আমি নিজের বলার মতো একটা গল্প -এই প্লাটফর্ম এর মেম্বার।
প্লাটফর্মে এসে একটু একটু ভালো লাগছিলো, স্যারের সেশনগুলো দেখছিলাম আর ভাবছিলাম কি করবো।একটা পেজ খুলে ফেললাম।
হঠাৎ করোনার আগমন সাথে আমের সিজনও শুরু।
আমেরিকা প্রবাসী খালাতো ভাই বললেন, তোমাদের পেজে কি সেল করবা,আমি সেল করবা নাকি?
ব্যাস শুরু করে দিলাম ভাই এর শশুর বাড়িতে নিজেদের বাগানের আম দিয়ে বিজনেস।নতুন অবস্থায়
🙈 আলহামদুলিল্লাহ প্রায় ১ টন আম বিক্রি করেছি আমি।
♻️যদিও প্লাটফর্মে আমি তখন ছাত্রী। মানে শিখছি।
যাই হোক প্লাটফর্মে ঘুরতে ঘুরতে পেলাম ওয়ারীজোনের সন্ধান।
এখানে এসেই এই প্লাটফর্মের মজাটা বুঝা শুরু করলাম।বিভিন্ন মিটয়াপে অংশ নিয়ে পেলাম Md Sohel Rana, Abdul Ahaad, Foysal Bin Sharif, Ismat Hasan ভাইদের যারা পাশে থেকে শিখিয়ে দিয়েছে কিভাবে সবার সাথে সম্পর্ক বাড়ানো যায়,কিভাবে সম্পর্ক বাড়িয়ে পণ্য বিক্রি করা যায়, এমন আরো অনেক কিছু।
♻️ আমি পরে কাজ করলাম সুন্দরবনের মধু, পাবনার ঘী, কুমিল্লার অরিজিনাল মাত্রিভান্ডারের রসমালাই, বগুড়ার দই, রাজশাহীর খাটি খেজুরের গুড়,নাটোরের লালী এবং শ্রীমঙ্গলের চা পাতা নিয়ে।কিন্তু কেন যেন শান্তি পাচ্ছিলাম না,স্যারের কথাটাই কানে বাজছিলো,উদ্যোক্তা হতে হবে। এমন কিছু করতে হবে যাতে সমাজের কোন একটা সমস্যার সমাধান হয় এবং কিছু সংখ্যক লোকের করমসংস্থান হয় এরকম ভিন্নধর্মী কিছু করতে হবে।
🤔 অনেক ভাবনা চিন্তার পর একটা ভিন্নধর্মী আইডিয়া পেয়েছি এবং এপ্রিল মাসেই ইনশাআল্লাহ আমি আমার কাজ শুরু করছি,২ জন লোক রেখেছি।আমার কাজ হচ্ছে ক্লথ ওয়াশ এন্ড লন্ড্রি।ডোর টু ডোর সারভিস।
😷 যদিও ভয় পাচ্ছি কারণ আমার আলহামদুলিল্লাহ ৩ মেয়ে এবং ওরা ৩ জনই ছোট। বড় মেয়ে ৭ বছর,মেজো মেয়ে ৫ বছর এবং ছোট মেয়ে ১ বছর ৩ মাস।আল্লাহর কাছে লাখো কোটি শুকরিয়া যে তিনি এমন একজন মানুষ কে জীবন সংগী হিসেবে দিয়েছেন যিনি আমার প্রত্যেকটা কাজে সাপোর্ট দেন।তার এই সহযোগিতার ফলে ভয় কে জয় করে উদ্যোগ নিয়েই ফেললাম।
🙏 সবাই আমার জন্য দোয়া করবেন যেন ভালোভাবে আমি আমার কাজটা শুরু করতে পারি এবং একজন এ্যাকটিভ ভলান্টিয়ার হয়ে এই ভাল মানুষের প্লাটফর্মে নিজেকে ঢেলে সাজাতে পারি।
আগামী ৫ বছর পর যেন আমার কোম্পানি একটা ব্রান্ডে পরিণত হয় এবং অন্তত ১০০ লোকের করমসস্থান হবে এই কোম্পানিতে ইনশাআল্লাহ 👆
📌 পরিশেষে বলবো, আমাদের স্যার কে নিয়ে কিছু কথা। আসলে স্যার এমন একজন মানুষ যাকে নিয়ে বলতে গেলে বলার শেষ নেই এবং সবাই জানে।তিনি যদি এই প্লাটফর্ম টি তৈরী না করতেন তাহলে হয়তো আজকের বলা এই কথাগুলো কখনোই বলা হতোনা।সারা দেশজুড়ে এমনকি দেশের বাইরেও স্যার আমাদের জন্য যে নেটওয়ার্ক তৈরি করে দিয়েছেন।
আমরা যদি তা কাজে লাগাতে পারি তবে আমরা অতি অবশ্যই একজন সফল উদ্যোক্তা এবং ভালো মানুষ হতে পারবো। এইযে স্যার এতোগুলো মানুষের জন্য এতোগুলা সম্ভাবনার দুয়ার খুলে দিয়েছেন তার জন্য স্যারকে আসলে ধন্যবাদ দিয়ে কোনভাবেই তার প্রতি আমাদের কৃতজ্ঞতা শেষ হবেনা।।স্যারের জন্য মহান রাব্বুল আলামিনের দরবারে লাখো কোটি দোয়া,আল্লাহ যেন স্যারের হায়াত অনেক গুণ বাড়িয়ে দেন,আমিন।
স্ট্যাটাস অব দ্যা ডে"- ৪৭১
Date:- ২৫/০২/২০২১
Sayma Akter Tanha
Batch 11
Registration 22942
Jatrabari, Dhaka (Warizone)
Owner of Blue bird online শপ্স