২৫ বছর বয়সের একজন তরুণের ৯ বছরের উদোক্তা হওয়ার "নিজের বলার মত একটি গল্প"
সালঃ২০১১-২০১৯ (অর্জন ও অভিজ্ঞতা)
প্রথমে ইকবাল বাহার স্যার কে ধন্যবাদ দিয়ে শুরু করছি।
আমরা ৪ ভাই ১ বোন। বাবা বংশসূত্রে জমিদার। কিছু দোকানঘর আছে সেগুলোর ভাড়া দিয়ে মোটামুটিভাবে ভালোই চলে যায় আমাদের পরিবার।বড় ভাই নিজের প্রচেষ্টায় আজ সুপ্রীম কোর্টের আইনজীবী,মেজ ভাই নিজ প্রচেষ্টায় ভালো বিজনেসম্যান বর্তমানে।বাবার ভালো ইনকাম থাকলেও এরপরেও কেন জানি বাবার কিছুতে আমার মন টানত না। নিজের প্রচেষ্টায় কিছু করতে ইচ্ছে করত ছোট থেকেই।
আমি ছোট বেলা থেকেই উদোক্তা টাইপ ছিলাম।
ঈদের সময় বিভিন্ন আইটেম নিয়ে লটারির দোকান দিতাম। প্রায় ৩/৪ বছর ঈদে এইরকম করেছিলাম।😂
১ঃ সবসময় মাথাই নিজে কিছু করার ইচ্ছা নিয়ে ঘুরতাম। যখন আমি মেট্রিক পরিক্ষা দেয় তারপর বছর থেকে প্রথম ৪ বন্ধু মিলে রমজান মাসে মার্কেটে দোকান নিয়ে পাঞ্জাবির দোকান দেয়। সেল ভালোই ছিলো সব মিলিয়ে । পুজি তুলে ফেলেছিলাম কিন্তু লাভ করতে পারিনি, প্রায় ১৭ হাজার টাকার পাঞ্জাবি রয়ে যায়। কিন্তু তাতে দমে যায়নি।☺🙂
অর্জনঃ অভিজ্ঞতা হলো।
২ঃ ডিপ্লোমা ইন সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং এ ভর্তি হই। তখন মাথায় ঘুরছিলো কিছু একটা করতে হবে। চেষ্টা করতে থাকি কিন্তু পুজির অভাবে সেটা হচ্ছিলো না।🙄
তারপর একটা সময় গিয়ে ৪ জন পার্টনার মিলে একটা ছোট ঝাল নাস্তার ফ্যাক্টরি দিলাম একদম অল্প পুজিতে।(প্রতিজন ৭ হাজার)। বিজনেস টা ভালো ছিলো। প্রথম মাস প্রচুর কষ্ট করলাম। সকালে উঠে নিজেরা গিয়ে ডেলিভারি বয়ের সাথে নিজেরাও যেতাম শীতের সকালে। ডেইলি বাজার করতে হতো। এভাবে ঠুকিঠাকি চলতে থাকে। ডেইলি ৬০০/৭০০ পিস নাস্তা ডেলিভারী করতাম। বিজনেস টা এক প্রকার সেটাপ করে দিয়ে আমি পড়াসূত্রে চট্টগ্রাম চলে আসলাম।তারপর পার্টনারদের অক্ষমতা ও বিবিধ কারণে সমস্যা দেখা দিলো। এভাবে গিয়ে সেটাও এক সময় বন্ধ করতে হলো পার্টনারদের কারণে।
অর্জনঃ অভিজ্ঞতা হলো। শিখলাম নিজে না থেকে অনেক বিজনেস হয়না, সম্পূর্ণ পার্টনার ভরসায় ও না।
৩ঃ ডিল্পোমার প্রথম ২ বছর বিজনেস বিজনেস করে, পাশাপাশি পার্ট টাইম জব খুজে খুজে পাগল হয়ে গিয়েছিলাম। কিছু ফিল্ড জব ও করেছিলাম। রবিতে ইন্সুরেন্স ফিল্ড কর্মি ছিলাম৷ সেখানে নিজে জব করতে গিয়ে আমার আন্ডারে এজেন্ট নিয়ে ৩ জন কে জব দিয়েছিলাম। ডাচ বাংলা ব্যাংক এ মোবাইল একাউন্টে ফিল্ডে কাজ করেছিলাম।পরে আবারো নিজে এজেন্ট নিয়ে ৩-৪ জন কে জব দিয়েছিলাম বিনা পুজিতে৷ এভাবে কিছু টাকা সঞ্চয় হলো।
অর্জনঃ ফিল্ড লেভেলে অভিজ্ঞতা নিলাম।অনেক মানুষ কে জানলাম। বিভিন্ন রকম বিষয়ে অভিজ্ঞতা হলো।বুঝলাম ভালো কিছু করতে হলে পুজি প্রয়োজন।
৪ঃ অনেক কিছু হচ্ছে, আবার হচ্ছেনা। এর মাঝে টং দোকান, ভ্রাম্যমাণ ফুড কার্ট, জুসবার, বিভিন্ন কিছু নিয়ে রিসার্চ করলাম৷ পুজিটা বড় সমস্যা ছিলো। তারচেয়েও বড় ছিলো সাহস করে নেমে যাওয়া।
রিক্সা ভাড়ায় দেব এমনটা চিন্তা করলাম। ঘুরে ফিরে অনেক খোজ খবর নিয়ে শেষ মেষ হতাশ হলাম আবারো৷ বিবিধ ঝামেলার কথা চিন্তা করে সেটাও হলো না।
৫: মাথায় সব সময় ক্রিয়েটিভ কিছু ঘুরত।৭ জন মানুষ নিয়ে একটা ক্রিয়েটিভ বিজনেস প্লানিং করলাম। একটা ইউনিক শপ অথবা একটা ইউনিক রেষ্টুরেন্ট (আমি এখনো বিশ্বাস করি আমাদের প্লানিং অনেক ইউনিক ছিলো এবং বেশ ভালোভাবেই চলত)। দফায় দফায় মিটিং, আলোচনা চলতেই লাগল। প্রথমে সবাই খুব আগ্রহ দেখালো। একটা জয়েন্ট একাউন্ট ওপেন করার ও প্রস্তুতি হয়ে গেলো৷ পুজি ছিলো জনপ্রতি ৫০/৬০ হাজার প্রথম অবস্থায়।
এর মধ্যে আমার একটা ভালো জব হলো এবং আমি জবের পাশাপাশি বিজনেস করব বলে ঠিম করি যেহেতু সঞ্চয় লাগবে। সবকিছু কনফার্ম হলো৷ হুট করে পার্টনার রা বললো আমি জবে জয়েন করলে বিজনেস এরেঞ্জ পিছিয়ে যাবে,ঠিকঠাক হবে না। পরে সবার কথা ও বিজনেস এর কথা চিন্তা করে জব না করে দিলাম। প্রথমে রেষ্টুরেন্ট নিয়ে আগাতে থাকলাম। বিভিন্ন স্থানে প্লেস দেখলাম, কোথায় ১৫ লাখ এডভান্স তো কোথাও ৭ লাখ সর্বনিম্ন। (মজার বিষয় হলো আমরা যে যে প্লেস গুলো দেখেছিলাম সব প্লেসে বর্তমানে প্রতিষ্ঠিত রেষ্টুরেন্ট। টাকার কারণে হচ্ছিলো না আমাদের৷এর মধ্যে আমরা ২ ছাড়া অন্য সব পার্টনার লিভ নিলো পারবেনা বলে।ধাক্কা খেলাম।
যেহেতু ওটা হচ্ছিলো না সেহেতু চিন্তা করি আমরা ২ জনে একটা ইউনিক শপ দিব।অনলাইন অফ্লাইন দুটোই কাভার করব। কথা মত শপ খোজা শুরু করলাম।একটা মন মত পেয়েও গেলাম। অনেকটা কথা বার্তা হবে এমনটা কনফার্ম।খুশি হলাম অনেকদিন পর ভালো কিছু হবে। কিন্তু বিধিবাম।
যে বন্ধুর মাধ্যমে দোকান টা পেয়েছিলাম সে ধোঁকা দেয়। অন্য কাউকে দোকান টি দিয়ে দেয়। পরে ওই এরিয়ায় সুবিধাজনক আর দোকান না পাওয়ায় শপ করা হয়নি।
অর্জনঃ ভালো পুজির জন্য সঞ্চয় প্রয়োজন।বিজনেসে অতিরিক্ত পার্টনারশিপ ভালো না। সব সময় সবাইকে বিশ্বাস করা উচিত না। অভিজ্ঞতা হলো। আর বিজনেস প্লানিং করার শুরুতে পুজি হিসাব করে মিনিমাম একটা টাকা জমা নেয়া যাতে বুঝা যায় অন্তত মাঝপথে ব্যাক করবে না।
৬ঃ এত ধাক্কা খাওয়ার পর ও দমে যায়নি। তবে রাগ করে কিছুদিন অফ ছিলাম। পরে আমরা ৪ জন্য বন্ধু আবার একত্রিত হলাম। আমার এক বন্ধুর একটা দোকান ছিলো একটা ব্যাক সাইড প্লেস এ৷ সেটাতে আগে সাইবার ক্যাফ ছিলো। আমরা চাইলাম নতুম ভাবে ভিন্ন সিষ্টেমে আবার ক্যাফে ও গেইম জোন করব। চমৎকার কিছু প্লান করলাম। আগের অভিজ্ঞতা থেকে এইবার বললাম সবাইকে টাকা জমা করতে। দুঃখজনক হলেও সত্যি ২ জন টাকার জন্য আবার লিভ করল।আমরা ২ জন আবার একা পড়ে গেলাম। টাকার জন্য এটাও হলোনা।
অর্জনঃ একবুক হতাশা ও কিছু করার ইচ্ছা আরো বেশি ভাবে লাগল। বুঝলাম ধৈর্য ধরতে হবে।
৭ঃ এত কিছুর পর ও কুকুরের বাকা লেজের মত বিজনেস করার চেষ্টা নিয়ে পড়ে ছিলাম। ঘুরতে ফিরতে একটা ইন্টারনেট প্রভাইড বিজনেস এর সেটাপ পেলাম। একটা এরিয়ায় সেট করা বিজনেস সেল করে দিবে। বুঝে শুনে দেখলাম ভালো ছিলো। ৩ জন নিয়ে কথাবার্তা আগাতে লাগলাম। দরদাম ও হয়ে গেলো। আমরা ২ জন টাকা রেড়ি করলাম। শেষমেশ আমাদের ৩ নাম্বার পার্টনার যার এলাকায় বিজনেস করব সে টাকা ম্যানেজ করতে পারল না৷ মাথায় বাজ পড়ল। ওর এলাকার সাপোর্ট নিয়েই বিজনেস টা করব চিন্তা করছিলাম। কিন্তু ওর সাপোর্ট ছাড়া করতে গেলে কিছু অসুবিধায় পড়তে হতো। ওটাও আর করা হলোনা৷
অর্জনঃ নতুন বিজনেস সম্পর্কে জানলাম। এরিয়া বুঝলাম, পার্টনার সম্পর্কে ধারণা হলো।শিখলাম ভরসা বেশি করা ঠিক না।
৮ঃ বিজনেস যেহেতু করব চিন্তাই করেছি তাই লেগে থাকলাম। ২ জনে মিলে ছোট্ট করে একটা ইমপোর্ট করা হেডফোন বিজনেস শুরু করলাম৷ একদম অল্প দিয়ে শুরু করলাম। লাভ হলো। কিন্ত বিধিবাম যে ইমপোর্ট করে দিতে সে অন্য দিকে মুভ করবে কিন্তু প্রোডাক্ট গুলো আমাদের পছন্দ হচ্ছিলোনা। তাই ওটাও অফ হয়ে গেলো অল্প লাভ করে।
অর্জনঃ নতুন বিজনেস সম্পর্কে জানলাম।লাভ হলো। ইমপোর্ট বিজনেস সম্পর্কে ধারণা পেলাম।
৯ঃ বিজনেস চেষ্টা চলছে চলবেই 😂। এক্সপোর্ট ইম্পোর্ট চিন্তা করে ঘাটাঘাটি করলাম। আবার ৩ বন্ধু একত্রিত হলাম। ইউনিক অনলাইন শপ করব প্লানিং করলাম। এইবার টাকা জমা দিতে বললাম। এর মাঝে একটা জব ও হলো, অভিজ্ঞতা খাটিয়ে জব এইবার ছাড়লাম না। অভিজ্ঞতার সূত্রে সবাই আটকা পড়ল।টাকা ম্যানেজ হলো। চিন্তা অনুযায়ী একটা উডেন শপ (BD WOODY) শেষমেশ ওপেনিং এর চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিলাম। এইবার খোজ নেয়া শুরু করলাম কোথায় কি পাবো, কোথায় বানাব, কি আনব, সবকিছু। পার্টনার দুইজন একটু স্লো ছিলো। তারপরেও একটা বিজনেস শুরু হলো এবং আলহামদুলিল্লাহ এখনো চলছে। ভালোই খারাপ না। সময় নিয়ে, ধৈর্য ধরে করতে পারলে কাজ দিবে।
অর্জনঃ কাঠখড় পুড়িয়ে একটা বিজনেস রান করা গেলো।নতুন বিজনেস সম্পর্কে অভিজ্ঞতা হলো। পার্টনার নির্বাচনের প্রতি অভিজ্ঞতা হলো।
১০ঃ যেহেতু BD WOODY অনালাইন শপ ছিলো। তাই আয় অল্প ছিলো। চেয়েছি পাশপাশি অফলাইনে কিছু করব কারণ জব করব না জব দিব এমন চিন্তা মাথায় ছিলো। একটা ভিন্ন রকম কোচিং দিব প্লানিং করলাম। যেই ভাবা সেই কাজ। প্রজেক্ট রেড়ি। কোচিং এর জন্য রুম খোজা শুরু। রুম পেয়েও গেলাম। ভাড়া ও ভালো এমাউন্ট ছিলো।চিন্তায় পড়ে গেলাম। ভয় লাগছিলো পারব কিনা । সাহস নিয়ে মিটিং ডাকলাম। বাকী দুইজন পার্টনার মিটিং এর আগের দিন পর্যন্ত ঠিক ছিলো। কিন্তু শেষমেশ ওরাও ভয় পেয়ে কাভার করতে পারবেনা চিন্তা করে ব্যাক করল। এটাও বললাম প্রথম ৬ মাস আমি ব্যাকাপ দিব ওদের ইনভেস্টমেন্ট টা আমি করব।কিন্তু ওরা সাহস করতে পারলাম না। আমি একা হয়ে গেলাম।আর এটা একা সম্ভব ছিলোনা। তাই আর হলোনা৷ আবারো হতাশা।
অর্জনঃ সব সময় পুজি থাকলেও বিজনেস করা যায় না। সঠিক পার্টনার ও সাহস ও উদোম্য লাগে সেটা শিখলাম এবং শেষ সময় পর্যন্ত অটল থাকতে হয় সেটাও শিখলাম।
১১ঃ হাল ছাড়ার পাত্র আমি না। করব মানে করবই।এটা না হয় ওটা। যেহেতু আমি সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং লাইনে আছি তাই এই নেটওয়ার্ক টা কাজে লাগাতে চাইলাম।৪ জন মিলে একটা ফার্ম করব নির্ধারণ করলাম। প্রজেক্ট রেডি করলাম। ভিজিটিং কার্ড ও ছাপা হলো। কাজের জন্য চেষ্টা করতে লাগলাম পাশাপাশি ফার্ম গোছাতে চেষ্টা করলাম৷। অল্প কাজ ও পেলাম। কিন্ত দুঃখজনক এইবার ও ভুল মানুষ নির্বাচন করেছি পার্টনারশিপ এ।আসলে ভুল বলতে বন্ধুদের নিয়েই কিছু করতে চাইছিলাম। চেয়েছিলাম তাদের নিয়েই সফল ব্যবসায়ী হব, সফল উদ্দোক্তা হব। কিন্তু অতিরিক্ত বন্ধু প্রীতি আমাকে এইবার হতাশ করল৷ কিন্তু এইবার দমে যায়নি। একা একা সময় নিয়ে গুছাতে লাগলাম এবং গোছাতে আছি। ইনশাআল্লাহ একদিন একাই উদ্ভোধন করব গুছিয়ে।
অর্জনঃ নিজের প্রতি বিশ্বাস। ব্যবসায় পার্টনারশিপ এ বন্ধুপ্রীতি নিষেধ।
১২ঃ ইতিমধ্যে আমি একটি গাড়ি ক্রয় করি টাকা সঞ্চয় করে এবং সেটি ভাড়ায় দিয়ে দেই।কোন পার্টনারশিপ ছাড়া। একটা সময় পর্যন্ত সেটি ঠিকঠাক ভাবেই চলেছে। পরে প্রয়োজনে বিক্রি করেছি।
অর্জনঃ মাস শেষে ভালো ইনকাম এসেছিলো 😊
১৩ঃ
একটা কোম্পানিতে অ্যাসিস্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে ২ বছর চাকরিরত ছিলাম, সিদ্ধান্ত নিতে পারছিলাম না, সর্বশেষ মার্চ ২০১৯ এ চাকরি ছেড়ে আমার শহরে একটি ব্যতিক্রমী প্রশিক্ষণ কেন্দ্র গড়ে তুললাম, পূর্বের সব অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে এটাতে আমি আলহামদুলিল্লা সফলতার মুখ দেখলাম।
অর্জনঃ হেরে যাওয়া, কিছু হচ্ছেনা মানে দমে যাওয়া নয়, এটিই সফল হওয়ার অন্যতম ধাপ। মনে রাখবেন যে কিছু করেনা তার কিছুই নেই, যে করে তার অভিজ্ঞতা আছে।
আমার ভুল ছিলো আমি নির্দিষ্ট লক্ষে অটুট ছিলাম না, পরস্থিতি,পুজি আমাকে ভাবিয়েছে, যা পেয়েছি তাই করেছি, যদিও লক্ষ্য অবশ্যই জরুরি ।
আমার ২৫ বছর বয়সে এতকিছুর পরেও এই দীর্ঘ ৯ বছরে আমি হাল ছাড়িনি। আমি বিশ্বাস করি আমি সফল হব, অবশ্যই হব। একদিন বড় ও সফল উদ্যোক্তা হব।
📌"স্ট্যাটাস অব দ্যা ডে"- 137
Date:11/02/2020
Nur Talukdar Munna
DA
Rangamati District
2nd Batch
Reg: 2456