দুপুরের খাবারের সময় নিয়ে যেতো আর রাতের কখন আসতো ঠিক নাই কোন খাবার নেই
সেই ২০১৭ সালের ৯ জুলাই আমি সৌদি আরবের আবহা তে আসি তখন থেকে আজ পর্যন্ত বিভিন্ন চড়াই উৎরাই পেরিয়ে আজকের আমি।
দীর্ঘ এ সময় আমি অর্জন করেছি অনেক অভিজ্ঞতা।
শিখেছি কিভাবে জীবনের সাথে যুদ্ধ করে টিকে থাকতে হয়।
টিকে থাকার লড়াইয়ে আমি এক নির্ভীক সৈনিক।
২০১৭ সালে সৌদি আরব এসে প্রথম আমি ইলেকট্রিক কাজ করেছি জীবনে প্রথম।
আমার মনে পড়ে একটা তার জোড়া দিতে গিয়ে আমি একটু সরে বসেছি আর তাতেই যা বকা শুনতে হয়েছে।
ইট(ব্লক) ভাঙতে ভাঙতে হাতে ফোসকা পড়ে যেত
তারপর আসলাম একটা পাইপ পিটিং এর কাজে সে আরেক অভিজ্ঞতা।
কিন্তু জীবনের সবচেয়ে বড় অভিজ্ঞতা পেলাম ড্রাইভিং করে।
দুপুরের খাবারের সময় নিয়ে যেতো আর রাতের কখন আসতো ঠিক নাই কোন খাবার নেই কিছু নেই।
সেখান থেকে ও চলে আসলাম।
চাকরি নেই একটা আবাসিক হোটেলের ক্লিনারের। পর্যায়ক্রমে প্রমোশন পেয়ে ম্যানেজার হয়ে গেলাম।
কিন্তু করনা মহামারী তে হোটেল টা বন্ধ তাই আপাতত একটা ছোট চাকরি করছি।
এখন আসুন একটু অন্য গল্প শুনাই।
আপনাদের মনে পড়ে কি স্যার পার্টটাইম ব্যবসায়ী হওয়ার কথা বলেছিলেন।
এখন আপনাদের শুনাবো প্রবাসে আমার পার্টটাইম ব্যবসায়ী হয়ে উঠার গল্প।
এইতো আমি মাত্র ১১০০ রিয়াল বেতনের চাকরি করি। সকাল ৭ টা থেকে ২ টা পর্যন্ত।
তারপর বিকাল বেলা আমি বসে সময় কাটাই। স্যারের বানী টি নজরে আসার পর ভাবলাম আমি কেন হতে পারবোনা পার্ট-টাইম ব্যবসায়ী।
যেই কথা সেই কাজ
প্রথম শুরু করলাম সবজি দিয়ে। যেহেতু আমার কাছে কোন গাড়ি ছিলোনা তখন আমি ঘাড়ে করে সবজি নিয়ে যেতাম আবার মাগরিবের পরে বাসায় নিয়ে আসতাম। এভাবে দীর্ঘ ১ মাস আমি এভাবে কাজ করেছি।
শুরুর দিকে আমি তেমন সেল পেতাম না কিন্তু তখন আমি স্যারের সেই সেশন টা মনে করতাম।
স্বপ্ন দেখুন সাহস করুন শুরু করুন এবং লেগে থাকুন সাফল্য আসবেই
আলহামদুলিল্লাহ গত এক মাসে আমি যা সেল করলাম তা আপনাদের সাথে শেয়ার না করলেই নয়।
আমার গত মাসের হিসেব টা শুনাই।
আমার ডিউটি তে যাওয়া আসা এবং নাস্তা খরচ সহ দৈনিক ১০ রিয়াল খরচ।
রুম ভাড়া আমার ২০০ রিয়াল মোবাইলে নেট খরচ ১৩০ রিয়াল।
ম্যাচ খরচ আসছে ১৬৫ রিয়াল।
আর বাড়িতে মোট খুচরা টাকা দিলাম ২৫০ রিয়াল৷
এসব খরচ এর মধ্যে আমার বাড়তি আয় ছিল ১৮০ রিয়াল।
বাকি সব গুলো আমার এই পার্ট-টাইম ব্যবসা থেকে আয়৷
আলহামদুলিল্লাহ। আমার বেতনের ১১০০ রিয়াল পুরটাই আমার কাছে রয়ে গেলো।
কিন্তু গাড়ি না থাকায় আমি অসুস্থ হয়ে পড়ছিলাম অধিক পরিশ্রম এর কারণে।
তাই আমি ব্যাবসা পরিবর্তন করলাম।
এখন কাজ করছি গার্মেন্টস আইটেম নিয়ে।
আলহামদুলিল্লাহ প্রথম দিনের সেল এ আমার পুঁজি হাতে চলে আসছে বরং ২৫ রিয়ালের মতো লাভের মুখ দেখলাম।
এখনো আমার কাছে ৩১ টি টিশার্ট রয়েছে যেগুলো খুচরা মূল্য মাত্র ১০ টাকা।
তাহলে একটা হিসেব করি চলেন ২৭০ রিয়াল পুঁজি তে আমি অন্তত ৩১০ রিয়াল এর মুনাফার আশাকরি। ইনশাআল্লাহ।
গল্প তো শুনলাম আসুন এবার একটু আলোচনা হোক যে আমরা এই বাস্তব অভিজ্ঞতা সম্পুর্ণ গল্প থেকে কি শিখলাম।
আমরা যা শিখতে পারবো এই গল্পেঃ-
প্রথমত আমরা জানতে পারবো স্যার কেন আমাদের চাকরির পাশাপাশি পার্ট-টাইম ব্যবসায়ী বা উদ্দোক্তা হতে বলেছেন।
চাকরির পাশাপাশি পার্ট-টাইম ব্যবসায়ী হওয়ার সুফল কি তা সম্পর্কে জানতে পারবো।
জানতে পারবো স্যারের মূল্যবান বাণী গুলো আমাদের জীবনে কতটা প্রভাব বিস্তার করে।
স্যারের একটা মহামূল্যবান বানী রয়েছে।
বৃষ্টি সবার জন্য পরে কিন্তু ভিজে কেউ কেউ
প্রায় ৫ লক্ষ সদস্য এবং আজীবন সদস্য দের নিয়ে স্যার এ পর্যন্ত ১৩ টি ব্যাচ শেষ করলেন কিন্তু উদ্দোক্তা তৈরী হলো ১৫ হাজার।
পার্ট-টাইম ব্যবসায়ী বা উদ্দোক্তা হলেন কয়েকজন আমার জানা নেই।
কিন্তু সেই ৫ লক্ষ্য সদস্য সবাই কিন্তু স্যারের কথা গুলো কাজে লাগাতে পারেনি।
সে জন্যই স্যার বলেন
বৃষ্টি সবার জন্য পড়ে কিন্তু ভিজে কেউ কেউ।
যাইহোক পরিশেষে বলবো শুধু স্যারের পোস্ট এ কম্মেন্ট করে অথবা প্রতিদিন মিট আপ এ এড হয়ে কিছুই হবেনা।
বরং স্যারের প্রতি টি কথা কে নিজের জীবনে বাস্তব রুপ দিন। যা আপনার ভালো লাগে যে কাজ করতে আপনি ভালোবাসেন তা দিয়ে শুরু করুন। সাফল্য আসবেই ইনশাআল্লাহ।
আবার এ কথা শুনে লাইক কম্মেন্ট আর মিট আপ এ এড হওয়া বন্ধ করে দিবেন না যেন৷
সমাপনী তে সবার সর্বাঙ্গীণ সফলতা কামনা করছি।
স্যার এবং স্যারের পরিবারের জন্য আন্তরিক দোয়া এবং শুভ কামনা করে শেষ করছি।
সবাইকে ধন্যবাদ আমার এই লেখাটা আপনাদের মূল্যবান সময় ব্যয় করে পড়ার জন্য।
"স্ট্যাটাস অব দ্যা ডে"- ৪৭৭
Date:- ০৭/০৩/২০২১
কামরুল হাসান রাসেল।
কমিউনিটি ভলেন্টিয়ার।
ব্যাচঃ-১১ তম।
রেজিষ্ট্রেশন নাম্বার ঃ-২৯২৭৪
উপজেলাঃ- চাটখিল।
জেলাঃ- নোয়াখালী।
সদস্যঃ- এসো কুরআন শিখি।
Owner of পণ্যসম্ভার সুপার শপ
বর্তমান অবস্থান সৌদি আরব আবহা