শূণ্য থেকে শুরু করে মাসিক সেল ছয় লক্ষ টাকা !
শূণ্য থেকে শুরু করে মাসিক সেল ছয় লক্ষ টাকা !
মোনোয়ার হোসেন
আসসালামু আলাইকুম।
শুরুতেই কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি প্রিয় মেন্টর ইকবাল বাহার জাহিদ স্যারের প্রতি , যাঁর উৎসাহে অনুপ্রাণিত হয়ে আজ আমি চাকুরির পাশাপাশি একজন ব্যবসায়ী হিসেবেও নিজের পরিচয় দাড় করাতে পেরেছি।
নিজের বলার মতো একটি গল্প ফাউন্ডেশনের প্রিয় উদ্যোক্তা,ক্রেতা বন্ধুদের আজ আমি শুনাবো আমার গল্প। কীভাবে শুণ্য থেকে শুরু করে আজ আমার মাসিক সেল ছয় লক্ষ টাকার উপরে।
সময়টা ২০২০ সাল। মার্চ মাস। দেশে এলো মহামারী করোনা । করোনার জন্য সকল অফিস ছুটি ঘোষণা করলেন রাষ্ট্র। সেই সুবাধে আমারও অফিস বন্ধ হয়ে গেল। সবার মতো ঘরে আটকা পড়লাম আমিও। অলস সময় পার করতে লাগলাম বই পড়ে, গল্প লিখে। ওহ হ্যাঁ, আপনাদেরকে তো একটি কথা বলাই হয়নি। আমি কিন্তু লেখালেখিও করি। লিখি শিশুসাহিত্য নিয়ে। আলহামদুলিল্লাহ এরই মধ্যে আমার বইও প্রকাশ হয়েছে চারটি। অনামিকার খরগোশছানা, সাদাবক ও পাখিছানা, সাহসী খোকার গল্প, আউট বই গুড বই।
লেখালেখির পাশাপাশি ফেসবুক আর ইউটুবে সময় কাটাতে লাগলাম। প্রতিদিনের মতো সেদিনও লেখা শেষ করে ইউটুবে ভিডিও দেখতে লাগলাম , হঠাৎ চোখ আটকে গেল ইকবাল বাহার জাহিদ স্যারের একটি ভিডিওতে। অনুপ্রেরণামূলক ভিডিও। ভিডিওটি হৃদয়ে দাগ কাটলো আমার। ভাবলাম, আরে সত্যিই তো , আমরা তো চাকুরির পাশাপাশি কিছু একটা করতেই পারি। যা হবে নিজের। একান্ত আপনার। ভাবতে শুরু করলাম কি করা যায়? হঠাৎ মাথায় এলো চালের বিষয়টি। দিনাজপুর চালের জন্য বিখ্যাত। ঠিক করলাম এই চাল নিয়েই কাজ করবো আমি। কিন্তু কিভাবে শুরু করবো, ঠিক বুঝতে পারছিলাম না। কিছু না বুঝেই চলে গেলাম চালের আড়তে। কথা বললাম আমার অনলাইনে চাল ব্যবসার পরিকল্পনা নিয়ে। ব্যবসায়ী অভয় দিলেন, আপনি শুরু করুন, আপনার যা চাল লাগবে আমি দিবো। সেই থেকে নিজের বলার মতো একটি গল্প গ্রুপে চাল বিক্রি পোস্ট দিতে লাগলাম। আলহামদুলিল্লাহ ব্যপক সাড়া পেতে লাগলাম । চালের অর্ডার নিয়ে দোকানে যায়, চাল পাঠাই। চালের টাকা এলেই দোকানে টাকা দিয়ে দিই। এইভাবে করতে করতে আলহামদুলিল্লাহ প্রথম মাসেই আমার মুনাফা এলো ১৪,৭২৮/- টাকা । একেবারে বিনা পুঁজিতেই। শূণ্য হাতে। আমার বিক্রি দেখে আড়তের সেই ব্যবসায়ী একটু একটু হিংসা করতে শুরু করতে লাগলেন । একদিন দেশের একজন সুনামধন্য খ্যাতিমান লেখকের চালের অর্ডার পেলাম। নাজিরশাইল চালের। উনি আমাকে আশ্বস্ত করলেন, চাল ভালো হলে আমি রিভিউ দিবো। অনেক খ্যাতিমান গ্রাহক আপনি পাবেন। আমারও বিশ্বাস ছিল, সত্যি তাই। আমি সবকিছু ওই লোভী ব্যবসায়ীকে খুলে বলে বললাম, আপনি দুই টাকা বেশি নিবেন সমস্যা নেই, আমাকে ভালো নাজিরশাইল চাল দিবেন। দোকানদার এখানেই আমাকে দিলেন বাঁশ। সবচেয়ে খারাপ চালটা দিলেন আমাকে। যা আমি বুঝতে পারিনি। চাল পেয়ে সেই ভদ্রলেখক খুব মন খারাপ করলেন এবং চাল ফেরত পাঠালেন। আমার খুব মন খারাপ হলো। ভেঙ্গে পড়লাম কিছুটা। তারপর ঠিক করলাম না এইভাবে নয়, গ্রাহককে ভালো কিছু উপহার দিতে হলে নিজেকেই আগে কোয়ালিটি ইনশিওর করতে হবে। দিনাজপুরে তো অনেক অটোরাইস মিল। শতশত। খুঁজতে লাগলাম কোন অটোমিলের চাল অর্গানিক। মান ভালো। পেয়ে গেলাম। তারপর নিজেই সরাসরি মিল থেকে চাল এনে কুরিয়ার করতে লাগলাম। আলহামদুলিল্লাহ। হু হু করে আমার সেল বাড়তে লাগল। নিজেই একটি চালের দোকান দিলাম। নাম জান্নাতি রাইস সেন্টার।
এখন অনলাইন অফলাইন মিলে প্রতি মাসে ছয় লক্ষ টাকার উপরে সেল হয় আমার ।
"স্ট্যাটাস অব দ্যা ডে"-৫১১
তারিখ :- ১৮.০৪.২০২১
মোনোয়ার হোসেন
দশম ব্যাচ
রেজিষ্টেশন নং 20883
দিনাজপুর জেলা
মোবাইল 01737084169