কিছু সম্পর্ক হয়তো আপনাকে তাৎক্ষণিক কোন কিছু দিবে না,কিন্তু ছোট ছোট কিছু সম্পর্ক যত্ন করে আগলে রাখতে পারলে সেই সম্পর্ক গুলো একদিন আপনার বিশাল এক শক্তিতে রূপান্তরিত হতে পারে
গল্পে গল্পে সেল পোস্ট
❤️কিছু সম্পর্ক হয়তো আপনাকে তাৎক্ষণিক কোন কিছু দিবে না,কিন্তু ছোট ছোট কিছু সম্পর্ক যত্ন করে আগলে রাখতে পারলে সেই সম্পর্ক গুলো একদিন আপনার বিশাল এক শক্তিতে রূপান্তরিত হতে পারে।তাই সম্পর্ক গুলোর যত্ন নিতে শিখুন,আগলে রাখা শিখুন।ভালো থাকবেন আপনি,ভালো থাকবে অন্য একজন,সাথে ভালো থাকবে ❤️সম্পর্ক❤️।।
আজকের গল্পটা তেমনই একটি ছোট্ট সম্পর্কের গল্প 🥰🥰--তাহলে চলুন শুরু করি💁♀️
সামিয়া-- সায়মা আপু কেমন আছ?তুমি আজকে বাসায় আসতে পারবে?
আমি-- কেন?এতো জরুরি খবর?কোন সমস্যা হয়েছে?
সামিয়া-- আরে না,কোন সমস্যা না।তুমি সিদ্রাতুল আপু কে চিনতে পারছ?ঐযে তোমার সাথে ২দিন দেখা হয়েছিলো।আব্বু যাকে ছিদ্র বলে ডাকে😁😁।
আমি-- হে হে চিনতে পারবো না কেন?আপুর মতো মানুষকে ভুলা সম্ভব নয়।আপুকে চিনতে পারছি।আমার মনে আছে।আর আংকেল তো আমাকেও কি কি নাম দিত,তুমি এইসব পাবলিক করো না মেয়ে🥰।
সামিয়া-- আচ্ছা শুন তাহলে,সিদ্রাতুল আপু বাসায় এসেছে আপু তোমার সাথে দেখা করবে,তোমাকে জরুরি নোটিশ দিয়েছে,বাসায় আসো।
আমি-- ও আচ্ছা, আপু আসছে আগে বলবে তো।আমি আসবো।
সামিয়া-- হে এখন কি আরও আমার জন্য আসবে?এখন তো আমি কেউ না।তোমাদের দুইজনের ২দিনের দেখাতে এতো সক্ষতা কি করে হলো আমি বুঝিনা।আচ্ছা আসো তাহলে।
আমি-- কি হিংসে হয়??😉।আপুর সাথে সম্পর্ক টা কি করে এতটা ঘনিষ্ঠ হলো আমি জানিনা গো।আসতেছি আমি।🚶♀️
🥰🥰এখন সিদ্রাতুল আপুর সাথে প্রথম পরিচয়ের কথা বলি🥰
আমার স্টুডেন্ট সামিয়া,তাকে আমি বাসায় গিয়ে পড়াই।স্টুডেন্ট আমার সুযোগ পেলেই ফাঁকি দেয়।একদিন বাসায় গিয়ে দেখি তাদের বাসায় মেহমান।তার মামা রা এসেছে,আমাকে জানায়নি।যাওয়ার পর স্টুডেন্ট এর রুমে গিয়ে বসলাম,তখন খুব সুন্দর একটা মেয়ে এসে আমাকে জিজ্ঞেস করলো"" কেমন আছেন মিস""?
আমি তো হা করে তাকিয়ে আছি।এতো সুন্দরী মেয়ে।আবার আমাকে মিস বলছে।আমার স্টুডেন্ট ই তো আমাকে আপু ডাকে।আমি অপ্রস্তুত হয়ে জবাব দিলাম
" আসসালামু আলাইকুম,জি ভালো আছি।আপনি কেমন আছেন? "
তখন সেই সুন্দরী মেয়ে মিষ্টি একটা হাসি দিয়ে বললো,আপনি অপ্রস্তুত হয়ে গেলেন তাই না?আসলে আপনাকে অপ্রস্তুত করার জন্যই আমি এভাবে বলেছি😁,আমার মানুষকে অপ্রস্তুত করতে ভালো লাগে🥰।
আমি তখন মনে মনে গালি দিচ্ছিলাম,কি দুষ্ট মেয়ে।
তখন আবার বললো"মনে মনে গালি দিতে হবে না,তুমি আমাকে সরাসরি ই গালি দিতে পারো,আমি কিচ্ছু মনে করবো না🥰।বাই দ্যা ওয়ে,আমি সিদ্রাতুল মারিয়া,তোমার স্টুডেন্ট এর বোন কম বান্ধবী বেশি বলতে পারো,আর আসার পর থেকেই তোমার কথা কয়েকবার শুনে ফেলেছি তার কাছে,তুমি আমার ছোট হবে,তাই তুমি করে বললাম,তোমার কথা অনেক শুনলাম আসার পর থেকে,তখন থেকে তোমাকে দেখতে ইচ্ছে হলো তাই সামিয়া কে বলেছি তোমাকে যেন আজকে আসতে মানা না করে।তাই তুমি এখন এখানে😍।
আমি রীতিমতো অবাক হচ্ছিলাম।আমাকে দেখবে?আমি আর কি বলবো আমি চুপ করে ছিলাম।
তখন আপু ই বললো,লজ্জা পেতে হবে না।আমি তোমার সাথে প্রথমে মজা করেছি।আমার সাথে তুমিও ফ্রেন্ডলি মিশতে পারো।আমি পড়াশোনা করছি জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে।।ঢাকাতেই থাকা হয়।তোমাদের এখানে বেড়াতে আসা কয়েকদিনের জন্য।আর সামিয়া তোমার খুব ভক্ত,তোমার অনেক প্রশংসা করলো।তোমার সাথে পরিচিত হয়ে আমারো ভালো লাগলো।
এইভাবেই আপুর সাথে খুব দারুণ ভাবে পরিচয়ের শুরুটা ছিলো।কি মিষ্টি একটা মেয়ে কি সুন্দর করে কথা বলে,আমি রীতিমতো তার ভক্ত হয়ে গিয়েছিলাম।আমি খুব সহজে মিশতে পারি,কিন্তু ঐদিন কেন যেন খুব আনইজি লাগছিলো।আমি কথা বলতে পারিনি।ঐদিন পরে চলে এসেছিলাম বাসায়।
তার ২দিন পর আবার পড়ানোর ডেইট ছিলো।সেদিন গিয়ে সিদ্রাতুল আপুর সাথে আর দেখা হয়নি,পড়ানো শেষে আপু কোথা থেকে যেন চলে আসলো,এসেই কোন কথা না,সরাসরি বললো সামিয়া তুই রেডি হয়ে নে সায়মা সহ আমরা এখন ঘুরতে যাব।আমার কোন কথায় শুনলো না।ঘুরতে নিয়ে গেলো আমাকে।সেদিন আপুর সাথে অনেক কথা হয়েছিলো।আপু এতো মজার মানুষ, এতো ফ্রেন্ডলি খুব সহজেই আমাদের বন্ধুত্ব হয়ে যায়।অনেক কথা হলো,আপুর ভার্সিটি লাইফ নিয়ে অনেক কিছু বললো।তার ড্রীম নিয়ে বললো।দারুণ একটা দিন ছিলো।তারপর আর দেখা হয়নি আপুর সাথে।এতোদিন পর আবার আপু এসেছে তাও আমাকে যেতে বলছে না গিয়ে উপায় নেই আমার।আমি চললাম😊😊
সিদ্রাতুল আপু-- "কেমন আছেন মিস?""
আমি--" আলহামদুলিল্লাহ ভালো,আপনি কেমন আছেন মিস মারিয়া?"
দুজনেই হেসে দিলাম😁🥰।
আপু খুব খুশি হলো আমি বলার সাথে সাথে চলে গিয়েছি।অনেক দিন পর দেখা অনেক কথা হলো।করোনায় আপু এখন ঘরে বসে বসে ফ্রিলেন্সিং করছে সেটা বললো।আমার কথা জিজ্ঞেস করলো।তখন বললাম আমু একটা ছোট অনলাইন বিজনেস করছি।এটা শুনে আপু খুব খুশি হলো।অনেক আগ্রহ নিয়ে জানতে চাইলো আমার বিজনেস নিয়ে।আপুর এই দিকটা খুব বেশি ভালো।প্রতিটা মানুষকে,তাদের কাজকে খুব সম্মান করে।তখন আমি বলার আগেই আমার স্টুডেন্ট সব বলে দিলো আমার কাজ নিয়ে।সে আবার আমার কাজের বিশাল ভক্ত।
তখন আপু সাথে সাথে প্রিয়ণিকা লিখে সার্চ করে আমার পেইজটা ভিজিট করা শুরু করলো।পেইজের নামটা তার খুব পছন্দ হয়েছে সেটা বললো।আপু তখন বললো বিজনেস কিভাবে শিখলাম?সেল কিভাবে করি?কোথায়?
তখন আপুকে বললাম আপু অল ক্রেডিট #নিজের_বলার_মতো_একটা_গল্প_ফাউন্ডেশন এর।এখান থেকেই সব কিছু শেখা,আর এখানেই বেশি সেল করি।সব সময় পোস্ট করি।বিজনেস শিখছি।ভালো মানুষ হওয়ার চর্চা করছি।আপু যেহেতু খুব ভালো একজন মানুষ তাই আপু খুব আগ্রহ নিয়ে সকল কিছু জানতে চাইলো।আমিও সব বুঝিয়ে বললাম।তখন আপু বললো আপুও যুক্ত হতে চায়,আমি যেন যুক্ত করে দেই।আমিও সাথে সাথে যুক্ত করে দিলাম,ভালো মানুষের পরিবারে অন্য আরেকজন ভালো মানুষকে🥰।
তারপর আমরা আবার অনেক কিছু নিয়ে গল্প করা শুরু করলাম।লাস্ট যখন আমি এসে পরবো তখন আপু আমাকে ডাকলো"সায়মা শুনো,তোমার সাথে এই নিয়ে আমার মাত্র ৩ দিন দেখা,কিন্তু আমার মনে হয়না এটা আমাদের তৃতীয় দিন দেখা,আমার মনে হচ্ছে তোমাকে আমি অনেক দিন ধরে চিনি।তুমি খুব ভালো।আমি সবার সাথে মিশতে পারি ঠিকই কিন্তু আন্তরিকতা সৃষ্টি হয়না,সেখানে তোমার সাথে আমার কেন জানি একটা মনের টান সৃষ্টি হয়েছে,তোমার সাথে কথা বলতে ভালো লাগে।তুমিও খুব ভালো ভাবে মিশেছো আমার সাথে।তোমাকে অনেক thank you..তোমাকে খুব মনে পরবে।আমি কাল ই আবার চলে যাব জানিনা কবে দেখা হবে।
আপুর কথা শুনে খুব ইমোশনাল হয়ে গিয়েছিলাম, কিছুই বলতে পারিনি😥😥।
তার ৪/৫দিন পর আপু আমাকে পেইজে নক করে।আইডি নাম দেখেই চিনতে পারি এটা আসলে আমার সিদ্রাতুল আপু।
আপু তার একটা ছবি দিলো,আমি খুব অবাক হয়েছিলাম সেটা দেখে।কারন ছবিতে আপুর কপালে ছিলো আমার বানানো একটি টিকলি।যেটা আমার স্টুডেন্ট কে আমি দিয়েছিলাম।তখন আপু বললো আমার বানানো একটি জিনিস পেয়েছে তাই সে নিয়ে এসেছে,আর তার খুব পছন্দ হয়েছে।এখন তার আরো কিছু জিনিস লাগবে।তার বান্ধবীর বিয়ে সামনে তার ৫/৬জন বান্ধবীর ম্যাচিং গহনা লাগবে,আর তখন তার আমার কথা মনে হলো তাই আমাকে নক করলো।শাড়ির সাথে গর্জিয়াস গহনা লাগবে।
আপুর মেসেজ দেখে খুব খুশি হয়েছি আমি,এই মানুষটা সত্যি অদ্ভুত।মানুষকে চমকে দিতে সে খুব ভালোবাসে।সে পেইজ ভিজিট করে "সুনয়না" গহনা পছন্দ করলো।৫সেট লাগবে তার।অর্ডার দিলো।
আমার মন খারাপ হলেই তখন আপুকে নক দিতাম।এমন অদ্ভুত অদ্ভুত কথা বলতো সেটা নিয়ে ভাবতে ভাবতে মন ভালো হয়ে যেত।কিছু মানুষ সত্যি জীবনে হঠাৎ করে এসে অনেক টা জায়গা দখল করে নিয়ে যায়, সিদ্রাতুল আপুও তেমনই একজন।সব সময় সব কিছুতে আপুকে পাশে পাওয়া যায়।একটা মানুষ এতটা আন্তরিক কিভাবে হতে পারে??আসলে আপুর কাছ থেকে যেই সার্পোট,যেই স্নেহ, ভালোবাসা পাচ্ছি সেটা কোন কিছুর সাথে তুলনা করলে আপুকে ছোট করা হবে।কিছু মানুষ আছে যাদের কোন তুলনা হয়না,যাদের সাথে সম্পর্ক টা কয় বছর,কয় মাস,কয়দিন দেখা হয়েছে এইসব দেখে বিচার করা যায় না।তারা শুধু প্রাণ ভরে ভালোবাসতে জানে।মানুষকে আপন করে নিতে জানে।এই সম্পর্ক গুলো আর্থিক ভাবে কিছু না দিলেও মানসিক ভাবে এগুলোই বেঁচে থাকার অবলম্বন।জীবনের বড় এক শক্তি।।সম্পর্ক গুলোর যত্ন করতে হয়,যেমনটা করে সিদ্রাতুল আপু।
যেই শিক্ষাটা আমরাও পেয়েছি #নিজের_বলার_মতো_একটা_গল্প ফাউন্ডেশন থেকে।সবাই চেষ্টা করবেন সম্পর্ক গুলোর যত্ন করতে,সুস্থ স্বাভাবিক রাখতে।এগুলোই একদিন আপনাকে শক্তি জোগাবে।সবাই ভালো থাকবেন।সুস্থ থাকবেন।দোয়া করবেন আমার জন্য।অনেক অনেক দোয়া রইলো সকলের জন্য।।
(সুনয়নার মূল্য মাত্র ৫৮০টাকা)
"স্ট্যাটাস অব দ্যা ডে"- ৫২৭
Date:- ০৬/০৫/২০২১
আমি হিজাব ইমতিয়াজ সায়মা
ক্যাম্পাস এম্বাসেডর
ব্যাচ-১২
রেজি-৩৮২৮২
জেলা-ময়মনসিংহ
কাজ করছি হাতের তৈরি গহনা নিয়ে
পেইজ---- প্রিয়ণিকা-prionika
#প্রিয়কে_সাজাই_প্রিয়ণিকা