এইতো দ্বিতীয় বার প্রবাসে আসার সময় নিজ হাতে কোলে তুলে নিয়ে দাদিকে মেডিকেল এর বিছানায় রেখে আসলাম।
-----বিসমিল্লাহির রাহমানির রহিম
-----আসসালামু আলাইকুম
👇👇👇👇👇👇👇👇👇
😢আমার প্রবাস জীবনের করুন কাহিনি 😢
🙏আশা করি সবাই মন দিয়ে লেখাটা পড়বেন।
📖📖📖সর্বপ্রথমে শুকরিয়া আদায় করছি মহান রাব্বুল আলামিনের দরবারে। তিনি আমাদের সকলের এতো সুন্দর একটি প্লেট ফর্ম একতৃত তৈফিক দান করেছেন তার জন্য।
💝💝💝কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি আমার প্রান প্রিয় স্যার জনাব ইকবাল বাহার জাহিদ স্যারের ।তিনি দিনরাত অক্লান্ত পরিশ্রম করে এমন একটি পাঠশালা তৈরি করে দিয়েছেন,যেটা নতুন বাংলাদেশ নির্মাণের জন্য প্রতিনিয়ত কাজ করে যাচ্ছেন।
👉প্রিয়জন কে হারানোর বেদনা
অদ্ভুত এক শব্দ "প্রবাস" স্বদেশ থেকে যোজন যোজন দূর, ভিনদেশ, সংস্কৃতি আর সভ্যতা।আর এর ভিতরেই নিজেকে গুছিয়ে নিয়ে মানিয়ে নেওয়ার নামি বোধহয় প্রবাসজীবনে প্রধান শর্ত। আরেকটি কঠিন বাস্তবতার মাঝে প্রবাসী মানুষের জীবন টেনে নিতে হয় আর তা শুধু দেশ থেকে যোজন যোজন দূরত্ব নয় বরঞ্চ স্বজন পরিজনকে পিছনে রেখে আসার অভিজ্ঞতা। এতোজটিলতার পরও যখন কারো কাছ থেকে পাওয়া স্বজনদের দুঃসংবাদে আমার মতো হাজারো প্রবাসীরা হার মানে পরিস্থিতির কাছে। না পরে জলদি দেশে ছুটে যেতে, আবার অনেক সময় ছুটে গেলেও দেখা হয় না প্রিয়জনের মুখটি শেষ বারের মতো। ভাগ্যের নিষ্ঠুর পরিহাস মেনে নেওয়ার মতো শক্তি সামর্থ কিংবা সাহসটুকু ও অবশিষ্ট থাকে না অনেক প্রবাসীদের।
১.প্রথম স্বজন হারানো
এইতো গত ২০১৩ সালে পারি জমায় প্রবাসে তার ঠিক দুবছরের মাথায় দাদুর মৃত্যুর সংবাদ পায়। যার থেকে ছোট বেলা শিখে আসছি কিভাবে ভালো মানুষ হওয়া যায় কিভাবে মানুষ কে ভালোবাসতে হয়। (দাদুর অনুপ্রেরণায় আজ আমি একজন ভালো মানুষ হতে পেরেছি ইনশাআল্লাহ)
হঠাৎ একদিন ছোট বোন কে কল দিয়ে দাদুকে চাইলে ওর মুখ পসকে বেরিয়ে যায় দাদুতো মারা গেছে তুই কি ভুলে গেছিস। তুই দাদুকে অনেক ভালোবাসতি বলে তোর মনে নেই যে দাদু মারা গেছে। আসল কথা আমি কষ্ট পাবো বলে আমাকে দাদুর মারা যাওয়ার খবর জানানো হয়নি।
কথাটা শুনে মনে হলো আকাশ ভেঙে আমার মাথায় পড়লো আমার পায়ের নিচের মাটি সরে গেলো আমি একদমি এই কথা শোনার জন্য প্রস্তুতি ছিলাম না। মনের ভিতরে নানা প্রশ্ন আর স্মৃতি ভেসে উঠতে লাগলো।
তখন চিৎকার করে কাঁদতে থাকলাম অঝোরে ঝরছে চোখের পানি। হাইরে প্রবাস জীবন তুই আমার জীবনের সবচাইতে প্রিয় মানুষটিকে কেড়ে নিয়ে গেলি। এভাবেই প্রবাসীদের স্বজন হারানোর কথা শুনতে হয়।
তারপরে আব্বু কে কল দিয়ে বললাম কষ্টের ভয়ে আমাকে জানালে না হায়রে জানালে যতই কষ্ট হক শেষ দেখাটাতো দেখতে পারতাম এই আধুনিক দুনিয়াতে ইন্টারনেট ব্যবহার একবারতো শেষবারের মতো চাঁদ মুখটা দেখতে পারতাম, সেটাও কপালে হলো না। এভাবেই মনের কষ্ট মনে চেপে চলে আমাদের প্রবাসী জীবন।
২.স্বজন হারারো
এইতো দ্বিতীয় বার প্রবাসে আসার সময় নিজ হাতে কোলে তুলে নিয়ে দাদিকে মেডিকেল এর বিছানায় রেখে আসলাম। তখন বার বার দাদুর কথা মনে পড়তেছিলো এবারো কি দাদিকে দাদুর মতো হারিয়ে ফেলবো নাতে!! সেদিন বুক ফেটে কান্না পাচ্ছিলো আর বার বার দাদির মুখের দিকে তাকাচ্ছিলাম। এবার কয়েক দিনের মাথায় দাদি আমাদের সবাইকে ছেড়ে চলে গেলো। এবার ভিডিও কলে তার চাঁদ মুখটা দেখা আর চোখের পানি ঝড়া ছাড়া পারলাম না তার চিরবিদায়ে এক মুঠো মাটি দিতে। কতোবার দুমড়ে মুচড়ে কেঁদেছি আর আফসোস করেছি হাইরে প্রবাস জীবন।
এভাবেই স্বজন হারানো ফোনে শোনা আর দেখা ছাড়া কিছুই করার থাকে না আমার মতো হাজারো প্রবাসীর।
এভাবেই প্রিয় দাদু ও দাদি চলে গেলো না ফেরার দেশে শুধু মোবাইল ফোনে শোনা ছাড়া কিছুই করার ছিলো না।
নিয়তি যেটা লেখা সেটা খন্ডানোর ক্ষমতা যে মানুষের নেই।
সবশেষে সবার কাছে একটাই অনুরোধ আপনারা আমার দাদু ও দাদির আত্তার শান্তির জন্য মাগফেরাকের দোয়া করবেন।
👉 স্বজনহারা প্রবাস ঈদ উদযাপন
ঈদের ঠিক আগের দিন থেকে মন খারাপ হতে থাকে। রাত পেরিয়ে সকাল বেলা ঘুম ভাঙার পর আশপাশে যখন কাউকে খুঁজে পাওয়া যায় না তখন নিজের অজান্তেই চোখে পানি চলে আসে। মনে পড়ে যায় চিরচেনা গ্রামে ঈদ উদযাপনের স্মৃতি গুলো। ঈদের দিন সকালে ঘুম থেকে ওঠার জন্য মায়ের বকুনি, মা -বাবা সহ বড়দের সালাম করে ঈদের নামাজ আদায় করতে যাওয়া, তারপর দিনভর বন্ধুদের সাথে আড্ডা এসব স্মৃতি মনে পড়ে চোখের কোনে পানি গড়িয়ে পরে।
আমি সিঙ্গাপুর প্রবাসী এবারের ঈদ নিয়ে ২০১৩ সাল থেকে অনেক ঈদ মা বাবা আত্মীয় পরিজন ছাড়া উদযাপন করতে হয়েছে। হয়তো ঈদের দিন মা - বাবার সালাম দোয়া নিতে পারি কিন্তু তাদের সাথে ঈদ উদযাপন করতে পারি না।
ঈদের নামাজ শেষে প্রবাসীদের সঙ্গে আলাপচারিতায় ভুলে থাকার চেষ্টা করে চলছি নিজের কষ্ট গুলো। একেক প্রবাসীর কষ্ট এক এক রকম
এভাবেই আমার মতো হাজারো প্রবাসী স্বজনের ছবি দেখেই প্রবাসে ঈদ উদযাপন করে চলেছি। বুকের কষ্ট গুলো বুকে চাপিয়ে ঈদের দিন হাসি মুখে স্বজনদের সাথে কথা বলে চলি।
আলো ঝলমলে শহর গুলোতে জাঁকজমকপূর্ণভাবে পালিত হয় ঈদ। তবে প্রবাসে স্বজনহারা ঈদ কতো কষ্টের তা শুধু আমার মতো প্রবাসীরাই জানে।
পরিশেষে বলতে চাই আমার মতো হাজারো প্রবাসী পরিবারের চাহিদা মেটাতে গিয়ে অনবরত নিজের জীবনের সঙ্গে যুদ্ধ করে বাঁচে।
🙋♂️🙋♂️সকলকে অসংখ্য ধন্যবাদ লিখাটা মনোযোগ দিয়ে পরার জন্য 🙋♂️🙋♂️
"স্ট্যাটাস অব দ্যা ডে"- ৫৩৬
Date:- ২৩/০৫/২০২১
✍️✍️✍️✍️✍️আমি ✍️✍️✍️✍️✍️✍️
এম এইচ মারুফ হোসেন
নিজের বলার মতো গল্প ফাউন্ডেশনের একজন কমিউনিটি ভলেন্টিয়ার
🚩 ব্যাচ নং 👉 ১৩
🚩🚩 রেজিষ্ট্রেশন নং 👉 ৫২৩১৫
🚩🚩🚩 নিজ জেলা ফরিদপুর
🚩🚩🚩🚩 বর্তমান ঠিকানা সিংগাপুর প্রবাসী