অতি উত্তেজনার বিপত্তি
***গল্পে গল্পে বিক্রয় ঃ
অতি উত্তেজনার বিপত্তি
আমি ভোলাভালা যাযাবর মানুষ ছিলাম। চাকুরী আর বাল্যবন্ধু বাতেনের সাথে ঘুরাঘুরি ও খুনসুটিতে জীবন ভালোই কাটছিলো। এরই মধ্যে ছন্দপতন, হঠাৎ শুনলাম বাতেন বিয়ে করেছে তাও নাকি পাক্কা তিন বছর প্রেমের পর। ওরে বাতেইন্না এই ছিলো তোর মনে। আমি কিছুই জানলাম না শুনলাম না। বাতেনের সাথে মেয়ে নিয়ে কথা উঠালে এমন একটা ভাব করত যেন মেয়েমানুষ হল অচ্ছুৎ, সব নষ্টের গোড়া, যার জীবনে আসে তার জীবন ফালাফালা করে দেয়। সুতরাং আমরা দুই বন্ধু যেন এদের পাল্লায় পড়ে জীবন তামাতামা না করি এইসব লেকচারই বাতেন আমাকে দিত। আমিও বোকা.... মত তার কথায় মেয়েদের থেকে একশহাত দূরে থাকতাম।
যাক বিয়ের ঠিক একমাস পর বাতেইন্নাকে দেখলাম। আমাকে দেখে ভূত দেখার মত চমকে উঠল। হারামীকে শক্ত করে ধরে কফিশপে নিয়ে গেলাম আর বললাম ব্রুটাস (বাতেন) তুইও? বাতেইন্না বলল দোস্ত তুই কি জানস না অই চিরন্তন কথাটা যে যেই জিনিস নিয়ে বেশি নাক সিটকাবে সে সেই জিনিসের বেশী ভুখা।
যা তোকে মাফ করে দিলাম এখন বল সংসার কেমন চলছে। দোস্ত বিয়েতে হেব্বি মজা সবচেয়ে মজা বলে বাতেইন্না একটু থেমে গেল........সবচেয়ে মজা বউয়ের রান্না করা খাবার যা মেসলাইফে মিস করতাম।
দোস্ত তুইতো তাইলে হেব্বি আছিস আর আমার অবস্থা দেখ একবারে টাইট। বাতেইন্না রহস্যভরা হাসি দিয়ে বলল দোস্ত আমার লেজ কাটা গেছে তোরটাও কাটার এন্তেজাম করে ফেলেছি। আমার শালী সবদিক দিয়েই মাশাআল্লাহ। তুই কাল দুপুরে আমার বাসায় আয় অইযে বাজারের সামনে ৫ তলা বিল্ডিয়ের তিন তলায় ডানদিকে।
পরদিন সময়ের কিছুটা আগেই বাতেনের বাসায় হাজির। উদ্দেশ্য সমন্ধে আর নাই বললাম। ভাবীর সাথে কুশল বিনিময় হলো। বাতেনকে বললাম তোর শালীর সাথে কথা বলার ব্যবস্থা কর। বাতেন বলল দোস্ত এত উত্তেজিত হইস না বেশি উত্তেজনা ভাল না বলেই মুচকি হাসি। ইদানীং বাতেনের মুচকি হাসির প্রবনতা লক্ষ্য করছি, বিষয়টা কিছুটা ঝাপসা।
যাক বাতেনের অবশেষে দয়া হল। শালীকে নিয়ে এসে বলল আমার সবচেয়ে আরাপো.... দোস্ত খুবই ভালো ছেলে কিন্তু মাঝেমাঝে পেয়াজ খায় তাই একটু সাবধানে থেক বলেই মুহুর্তেই গায়েব। কি এক বিব্রতকর অবস্থায় ফেলে গেছে। আমি থতমত খেয়ে বললাম দেখুন আমি পেয়াজ একদমই খাই না এমনকি সিংগাড়ার সাথেও না। একথা শুনেই সে হেসে দিল বলল। দুলাভাই আগেই আপনার কথা বলেছে। ওকে বেশ সপ্রতিভ মনে হল যা আমার খুবই পছন্দ।
খেতে বসে দেখি এলাহি কারবার। খাবার এতই টেস্টি যে সবকিছু ভুলে গপাগপ গিলছি বললাম ভাবী আপনার হাতে যাদু আছে বাতেনের কি কপাল। যখন শুনলাম রান্না বাতেনের শালী করেছে শুনেতো আমি খুশিতে বাকুমবাকুম। বিদায়ের সময় হারামী বাতেনকে বললাম দোস্ত আমি ফানা একমাত্র তুইই ভরসা। বলল দোস্ত আমি দুই পরিবারের সাথে কথা বলে ব্যবস্থা করছি তুই ততদিন ..... শান দিতে থাক।
আমার পরিবারতো মহাখুশি যেই ছেলেকে ঠেলেও বিয়েতে রাজি করানো যায় নি সে নাকি বন্ধু বাতেনসমেত চিরকুমার থাকবে। আজ বাতেন বিয়ে করে নিজের শালীর প্রস্তাব নিয়ে এসেছে। যাক শুভকাজে বেশি দেরী হল না। দুই পরিবার,দুই দোস্ত আর দিই বোন সবাই খুশি।
পরিবার থেকে বিদায় নিয়ে বাসাও নিলাম বাতেনের কাছাকাছি। দোস্ত বাতেনকে জিজ্ঞেস করলাম সংসার সুখের ফরমুলা বল। বাতেন বলল আমি আর কত দিন সংসার করেছি তবে এই অল্প কিছুদিনেই বুঝেছি সবচেয়ে অব্যর্থ ফরমুলা হল জ্বি জ্বি করা আর তার সবকিছুর প্রশংসা করা। দোস্ত তোর মাথায় এত বুদ্ধি। এখন বল বাজার কি কি করব। অনেকদিন বাজারের আশেপাশেও যাই নি।
বাতেনের কাছে পরামর্শ নিয়ে ইচ্ছামত বাজার করলাম। আর চিন্তা করলাম এখন থেকে মজা করে খাওয়া যাবে। বউ আমার অনেক কিছু রান্না করলো।
আমিও বাতেনের পরামর্শমত খাওয়ার আগেই বউয়ের রান্নার প্রশংসা করে বললাম দুষ্টপাখি জানো তোমার সবচেয়ে বেশি ভালো লাগছে তোমার হাতের রান্না। আমার প্রশংসা শুনে বউ আমার খুশিতে গদগদ হয়ে বলল জানপাখি আমি বেড়ে দিচ্ছি তুমি খাও।
রান্না মুখে দিয়েইতো আমার হালুয়া টাইট, একেবারে বমির মত অবস্থা, চোখদুটি বড় হয়ে গেছে আর গিলতে পারছি না। বউ বলল জানপাখি কেমন হয়েছে? আমি হারামী বাতেইন্নার কথামত বললাম অসাধারণ..........। আর যায় কোথায় বউ আমার খুশিতে, ঠেলায়, ঘুরতে একের পর এক পদ আমার প্লেটে ঢালতে লাগলো আর বলল জানু তোমাকে মজা করে খাইতে দেখলে আমার কি যে ভালো লাগে। দুলাভাইয়ের বাসায় তুমি যেই খাওয়া দিয়েছ এই খাওয়া দেখেইতো তোমাকে ভাল লেগেছে।
আমি চোখ বন্ধ করে গিলছি কিন্তু কি গিলছি বলতে পারব না শুধু আল্লাহ আল্লাহ করছি যাতে বমি না হয়। কোনমতে খাওয়া শেষ করে ঘুমের ভান করে পড়ে থাকলাম। ইতোমধ্যে পেটের মধ্যে তুফান শুরু হয়ে গিয়েছে পাশ ফিরে দেখলাম বউ ঘুমিয়ে গেছে। আস্তে করে বিছানা থেকে উঠে সরাসরি টয়লেটে গিয়ে কমোডে বসে বাতেইন্না ভায়রাকে ফোন।
হারামী তুই আমার সবচেয়ে আপন বন্ধু হয়ে আমার সাথে এইরকম প্রতারণা করতে পারলি? তোর শালী কি ...ছাল রান্না করছে, আনা মারিজুন খাতিবুন, আমার অবস্থা শেষ, এখন নিচে দিয়ে আগুন জ্বলছে।
বাতেইন্না বলল তোরে আমি আগেই কইছিলাম অধিক উত্তেজনায় দ্রুত পতন হয়। তুই মসলা কই থেকে কিনছস। কেন বাজার থাইকা। আমার কথা শুনার সময় মন কি শালীর ... তে ছিল আমি যে তরে ভালো করে কইলাম সকল প্রকার মসলা এপিক হোম ডেলিভারি থেকে অবশ্যই কিনবি, কিনলি না কেন?
আমি কান্না কান্না কন্ঠে বললাম রান্নায় যে মসলার এত গুরুত্ব, আগে বুঝি নাই রে বাতেইন্না। টয়লেটে বসে এখন মাথার চুল ছিড়ছি আর এপিক হোম ডেলিভারির নাম নিচ্ছি। আর ভালো করা বুঝলাম রান্নার আসল যাদু এপিক হোম ডেলিভারির মসলার হাতে........।
বিঃদ্রঃ ইহা কেবলই একটি ফান পোস্ট। কেউ অধিক উত্তেজিত হইবেন না, কারন অধিক উত্তেজনায় দ্রুত.. …....…....😁। ধন্যবাদ সবাইকে।
স্ট্যাটাস অব দ্যা ডে"- ৫৫০
Date:- ১৫/০৬/২০২১
আলী রেজা মাসুদ
সপ্তম ব্যাচ রেজিঃ২১৩৫
সদস্য ঃ রিসার্চ এন্ড প্রোমোশন টিম
উদ্দোক্তা ঃ১) ইউনিটি এগ্রো
ব্র্যান্ডঃ এপিক ড্রিংকিং ওয়াটার (জার)
২) এপিক হোম ডেলিভারি
জন্মস্থান ঃ দেবিদ্বার, কুমিল্লা
বর্তমান অবস্থান ঃ মাতুয়াইল, ডেমরা, ঢাকা
মোবাঃ ০১৯৭০-৩৮৫৫১৭ (ইমো/হোয়াটসঅ্যাপ)