আমি বাবা মা হারা এক এতিম ছেলের উদ্যোক্তা হয়ে ওঠার গল্প বলবো।
বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম
আসসালামু আলাইকুম
##আজকে আমি বাবা মা হারা এক এতিম ছেলের উদ্যোক্তা হয়ে ওঠার গল্প বলবো।
আপনারা সবাই শুনবেন তো এই এতিম ছেলেটার কথা।বলব তাহলে.............
তাহলে বলছি শুনুন--- --
2001 সাল আমার বাবা মারা গেলেন
জীবনে প্রথম কোন প্রিয় জন হারালাম প্রিয় বাবা কে হারানোর যে ব্যথা আমি অনুভব করলাম। আমার মনে হচ্ছিল পৃথিবীটা ফাঁকা পৃথিবীটা শূন্য আমার কেউ নেই আমার মাথার উপরে ছাতা টা ছিল সেটা আর নেই
• এই ব্যথা একমাত্র যার বাবা- পৃথিবী থেকে চলে গেছেন সেই একমাত্র বুঝতে পারবেন।
• তাই আমি সবাইকে বলব আপনাদের যাদের বাবা মা বেঁচে আছেন তাদেরকে অনেক ভালোবাসবেন অনেক সেবা-যত্ন করবেন।
• আমি বুঝতে পাচ্ছি এখন বাবা কি জিনিস।যাহোক বাস্তবতাকে মেনে নিতেই হবে
মায়ের আঁচল তলে আবারো জীবন চলা শুরু করলাম ইনশাআল্লাহ
এবং কি মনোযোগ সহকারে পড়াশোনা করতে লাগলাম সামনে তখন আমার এইচএসসি পরীক্ষা কিছুদিন পর আমার এইচএসসি পরীক্ষা শুরু হলো এইচএসসি পরীক্ষা দিলাম পরীক্ষা শেষ হয়ে গেল তারপর পরীক্ষার রেজাল্টের অপেক্ষা রেজাল্ট হল আল্লাহর অশেষ রহমতে এক চান্সে পাস করলাম ইনশাআল্লাহ আমার ছোট থেকেই ইচ্ছে ছিল বাংলাদেশ সেনাবাহিনীতে ভর্তি হব।এরই মধ্যে আমার সেনাবাহিনীতে ভর্তি হওয়ার সার্টিফিকেট এ বয়স হলো সার্কুলার অনুযায়ী ঢাকা আর্মি স্টেডিয়ামে যাই সেনাবাহিনীতে ভর্তি হওয়ার জন্য সবই ঠিকঠাক ছিল কিন্তু ফাইনাল মেডিকেলে গিয়ে আমার পায়ে বেড়ি কেস ধরা পড়ে আমার স্বপ্ন ভেঙ্গে যায় চোখে টলটল করে অশ্রু ঝরতে থাকে
পরে বাড়ি চলে আসি বাড়িতে এসে কিছুদিন পরে আমার পায়ের ভেরিকেইস অপারেশন কড়াই
এভাবে বেশ কয়েকটা মাঠে সেনাবাহিনীতে ভর্তির জন্য চেষ্টা করেও ব্যর্থ হই কারণ পায়ের ভেরিকেইস সঠিকভাবে অপারেশন না হওয়ার কারণে আবারো ভেরিকেইস ধরা পড়ে লাস্ট পর্যন্ত আমার চাকরির বয়স শেষ হয়ে যায়
আমার জীবনে হতাশা নেমে আসে
কিন্তু আমার প্রাণ প্রিয় 💖 মা 💖
বলেছিলেন আলম বাবা তুমি চিন্তা করোনা সামনে তোমার অনেক ভালো কিছু অপেক্ষা করছে আমি বলে দিলাম।
তুমি একদিন অনেক বড় হবা ইনশাআল্লাহ আল্লাহতালা যা করেন বান্দার ভালোর জন্যই করেন এটা সবসময় বিশ্বাস রেখো তখন আমার বড় ভাই বাংলাদেশ সেনাবাহিনীতে কর্মরত সেই সময় উনি বাংলাদেশ সেনাবাহিনী থেকে জাতিসংঘ মিশনে আইভেরি কোস্ট ছিলেন এবং তিনি আমাকে ফোন করে বলেন আলম তুমি বিজনেস করতে পারো।তখন থেকে আমার মাথায় বিজনেস করার পরিকল্পনা আসে
আমার মা ও চাইছিলেন আমি বিজনেস করি উদ্যোক্তা হই তখন আমি ছিলাম বেকার মা আমাকে নিয়ে অনেক চিন্তা করতেন আমার মা বলতেন আমি মরে যাওয়ার আগে আমার ছেলেটাকে একটা কর্মের ব্যবস্থা করে দিও আল্লাহ।তখন আমার শরীরের লোম জেগে জেগে উঠতো এবং আমার চোখে জল এসে যেত আর আমি মাকে বলতাম মা তুমি আর কখনো মৃত্যুর কথা বলবা না।কারণ তুমি মরে গেলে আমার দেখার কেউ থাকবে না তোমাকে ছাড়া আমি বাঁচতে পারব না মা। তখন মাও কেঁদে দিত আমি একদিন আমার উপজেলা শহরে কোনো এক কাজে যাই সেই দিন হঠাৎ করে আমার ভাগিনা ফোন করে আমাকে বলে আমার মা পৃথিবীতে নেই আমার মাথায় মনে হলো আসমান ভেঙে পড়ল পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ উপহার আমার মা আমাদের মাঝে নেই আমাদের একা করে চলে গেছেন।আমাকে আর নাম ধরে ডাকবে না আমি মা বলে ডাকতে পারবো না এটা আমি কোনোভাবেই মেনে নিতে পারছিলাম না।পরে আমি বাড়ি গিয়ে দেখি আমার মায়ের লাশ।
পৃথিবীতে এর চেয়ে কঠিন দৃশ্য আর হতে পারে না। আমার কান্না তো থামছে না আমার মনে হচ্ছিল মাকে ছাড়া আমি কেমনে থাকবো।
যে মাকে দিনে 100 ডাক না দিলে আমি থাকতে পারতাম না।সেই মাকে আর কোন দিন ডাকতে পারবো না।এটা আমি কোনোভাবেই মেনে নিতে পারছিলাম না। তারপরও বাস্তবতা মেনে নিয়ে মাকে দাফন করে চলে আসলাম।
কিছুদিন পর আমি ঢাকায় আসলাম বিজনেস শুরু করবো সেই উদ্দেশ্যে এবং মায়ের ইচ্ছে ছিল আমি বিজনেস করি উদ্যোক্তা হই মায়ের সেই ইচ্ছেটা আমাকে প্রচন্ড শক্তি যোগায়।
এবং কি মায়ের সেই আশীর্বাদে আমি সুন্দর একটা দোকান পেয়ে যাই ঢাকার বুকে সাভার আশুলিয়া তে কয়েকদিন পরেই আমার দোকানে মাল উঠিয়ে বিজনেস শুরু করে দিই সেল ও শুরু হয় প্রচুর পরিমাণ এভাবে আমার বিজনেস খুব ভালো চলতেছিল কিছুদিন পরে আমি পাইকারি সেল করা শুরু করে দেই পাইকারি ব্যবসায়ও অনেক সারা পাচ্ছিলাম আমার কাছ থেকে অনেক খুচরা দোকানদাররা আমার দোকান থেকে মাল নেয়া শুরু করলো অনেক দোকানদাররা আস্তে আস্তে বাকি নেয়া শুরু করলো বেশকিছু দোকানে আমার অনেক টাকা বাকি পড়ে যায়।এই টাকা আর তারা দিচ্ছিল না।আমি মহা বিপদে পড়ে যাই বাকি দিয়ে বেশ কিছুদিন পর আমার জীবনে একটা ধাক্কার আসে ঢাকার বাহিরের এক দোকানদার আমার দোকানে মাল নিতে আসে অনেক টাকার মাল নেয়
কিছু টাকা দিয়ে যায় মোটা অংকের টাকার একটা চেক দেয়
কিন্তু চেক পাস করে না আমি নিজে উনার দোকানে খোঁজ করতে গিয়ে দেখি উনি পলাতক আরো অনেক মানুষের টাকা মেরে পালিয়ে গেছে আমি মাথায় হাত দিয়ে বসে পড়লাম।
আমার মনে হল আমি তো শেষ একদিক দিয়ে অনেক টাকা মার্কেটে বাকি পড়েছে। অন্যদিকে দোকানদাররা বাকি টাকা দিচ্ছেন না আরেকদিকে এত টাকার মাল নিয়ে সে পলাতক নিখোঁজ চোখে শুধু অন্ধকার দেখছিলাম আমি পাগল প্রায় কূলকিনারা পাচ্ছিলাম না। মনে হচ্ছিল নিজেকে শেষ করে দেই এত চাপ আর সইতে পারছিলাম না
এমন সময় ইউটিউবে আমার প্রিয় ইকবাল বাহার জাহিদ স্যারের সন্ধান পেয়ে যাই এবং স্যারের বেশ কয়েকটি ভিডিও দেখার পরে আমি নিজেকে আবার নতুন করে আবিষ্কার করি এবং ঘুরে দাঁড়াই তার কয়েকদিন পরেই আমি এই গ্রুপে রেজিষ্টেশন করে ফেলি রেজিস্ট্রেশন করার পরে আমি অনেক কিছু জানতে পারি এবং শিখি যখন জানতে পারি এই প্ল্যাটফর্ম অনেক নিরাপদ এবং ভালো মানুষের প্ল্যাটফর্ম। তখন আমার স্ত্রীকেও এই গ্রুপে রেজিস্ট্রেশন করে দেই এখন আমরা স্বামী-স্ত্রী দুজনেই এই গ্রুপের গর্বিত সদস্য আমরা স্বামী-স্ত্রী দুজন।
নিজের বলার মত একটা গল্প গ্রুপে সদস্য হতে পেরে নিজেদেরকে ধন্য মনে করি গ্রুপে অসংখ্য ধন্যবাদ আমাদের প্রিয় স্যার আমাদের সকলের প্রিয় মেন্টর মানবতার ফেরিওয়ালা ভালো মানুষ তৈরি করার কারিগর।শ্রদ্ধেয় জনাব ইকবাল বাহার জাহিদ স্যারকে।
আমাদেরকে এত সুন্দর একটা প্লাটফর্ম তৈরি করে দেয়ার জন্য আমাদের প্রিয় স্যার নিজের বলার মত একটা গল্প গ্রুপ তৈরী না করলে এত ভাল মানুষদের সাথে আমার পরিচয় হত না সেলুট আমাদের প্রিয় স্যার কে
আর বেশি কিছু লিখে আপনাদের মহা মূল্যবান সময় নষ্ট করতে চাইনা ভুল হলে ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন।এবং শিখিয়ে দিবেন আশা করি। আল্লাহ হাফেজ
স্ট্যাটাস অব দ্যা ডে"- ৫৫২
Date:- ১৮/০৬/২০২১
আমি
আলম আকন্দ
ব্যাচঃ13
রেজিঃ 58287
উপজেলা ঃভুয়াপুর
জেলা ঃটাংগাইল
বর্তমানঃ আশুলিয়া,সাভার,ঢাকা
# কাজ করছি ফ্যাশন লেদার গিফট আইটেম নিয়ে
স্বত্বাধিকারীঃ এনাক্সা ওয়ার্ল্ড
Anaxsa world