আমার ঘুরে দারানোর গল্প
বিসমিল্লাহির রাহমানুর রাহিম
আসসালামু আলাইকুম
👑আমার ঘুরে দারানোর গল্প 👑
🌸🌸🌸 আমি দিপা আহমেদ। ইকটু পেছন থেকে শুরু করছি। আমরা তিন বোন এক ভাই ।ভাই সবার ছোট। আমার বাবা এক জন চাকরিজীবি ছিলেন তাই আমার মা বাবার ইচ্ছে ছিল ছেলে মেয়েরা ও লেখা পড়া শেষ করে ভালো কোন চাকরি করবে। কিন্তু ছোট বেলা থেকে আমি ছিলাম বাবা মায়ের বাধ্য সব সময় তাদের কথা মতো চলার চেষ্টা করতাম। আমার ইচ্ছে ছিল আমি লেখা পড়া শেষ করে স্কুলে চাকরি করবো। বাবা মায়ের ইচ্ছে পুরন করবো।
তাই আমি যখন নবম শ্রেণিতে এ পড়ি আমি চিন্তা করি আমি দুই জন ছাত্র পরাবো কয়েক দিনের মধ্যে আমার এক জন ছাত্র আর এক জন ছাত্রী ঠিক হয়ে যায়। আমি ওদের কে পরানো শুরু করি এক মাস নাহতে আরো দুই জন ছাত্র ছাত্রী চলে আসে।পড়াশোনা করতে আমার খুব ভালোই লাগতো ওদের কে পড়াতে প্রথম মাসের বেতন পেলাম আমি ৪০০/ (২০০৬ সাল) টাকা এটা আমার জীবনের প্রথম উপার্জন। সেদিন আমার খুব ভালো লেগেছে। ২য় মাসে আমার ৮০০/ টাকা এবাবে চলতে থাকে আট দশ মাস। আমি যখন ক্লাস Ten উঠেছি সমস্ত টিউশুনি ছেরে দেই নিজের পরাশোনার জন্য আমাকে যে ভালো রেজাল্ট করতে হবে। কারন আমি সব সব সময় ভাব তাম বড় হয়ে আমি স্কুলে চাকরি করবো।
SSC পরিক্ষার পড়ে একটা লম্বা ছুটি পেলাম তিন মাস সেই ফাঁকে শিখে নেই টুকি টাকি ব্লক আর বাটিক এবং সেলাই এর কাজ। এবার রেজাল্ট চলে এলো কলেজে ভর্তি হলাম শুরু করলাম আবার আগের টিউশনি কিন্তু এছাড়া আমার আরো অনেক কিছু করতে ইচ্ছে করে যেমন বেবি ড্রেস বড় দের ড্রেসের হাতের কাজ করা ইত্যাদি🎰। কিন্তু লোকে কি বলবে অমুকের মেয়ে জামা সেলাই করে অমুকের বোন জামা বানায় এই ভেবে আবার থেমে যাই। কারন আমাদের সমাজ মেয়েদের কাজ করা কখনো ভালো চোখে দেখেনা।কিন্তু চাকরির ব্যাপার টা আলাদা তাই আমি ঠিক করে নেই আমি চাকরি করবো। এবাবে এগিয়ে জেতে থাকি আমার দুচোখ ভরা সপ্ন নিয়ে। হটাৎ ভালো সমন্ধ পেয়ে আমাকে বিয়ে দিয়ে দেয় আর আমাকে বোঝানো হয় বিয়ের পর পড়া লেখা কম্পিলিট করবা। কিছু দিন আমি আমার পড়া লেখা চালিয়ে যাই।
হটাৎ আমার শাশুড়ি খুব অসুস্থ হয়ে যায় কিডনি সমস্যা দেখা দেয় কিডনি খুব খারাপ পর্যায়ে ডায়ালেসিস করতে হয় সপ্তাহে দুই তিন দিন তার দেখাশোনা সংসার সামলানো ইত্যাদি কাজে ব্যস্ত হয়ে যাই। নিজের সপ্ন গুলো আস্তে আস্তে চাপা পড়ে যেতে থাকে কিন্তু কিছু করবো এটা মাঝে মাঝে ভাবতাম। এবার আমার কোল আলো করে চলে এলো আমার ছোট্ট সোনা মনি। আমি মা হয়ে গেলাম ওকে নিয়ে আরো বেশি ব্যস্ত হয়ে গেলাম আমার আর পড়ালেখা কম্পিলিট হলো না। আমার সপ্ন সুধু স্বপ্ন থেকে গেল কিন্তু মাঝে মাঝে ইচ্ছে হতো আমি কিছু করবো কি করবো কিছু ভেবে পাচ্ছি না। পড়াশোনা শেষ করে চাকরি করবো কিন্তু আমার হাছবেন্ড আমাকে এক দিন জানিয়ে দেয় আমাকে কোন দিন চাকরি করতে দিবে না 😶। তাই আর পড়াশোনা কম্পিলিট করার ইচ্ছে টাও হারিয়ে যায়। কিন্তু আমার ভিতরে সব সময় জোনাকি পোকার মতো জলতে আর নিভতে থাকে আমি কিছু করবো কিন্তু কি করবো কিছু ঠিক করতে পারিনা। কোন কিছু করার সাহস পাইনি সব সময় মনে হতো মানুষ কি বলবে এগুলো ভেবে কখনো কিছু শুরো করতে পারিনি। অবসর সময় কাটিয়ে দিতাম ইউটিউব আর ফেছবুক দেখে। 😐
🎩হটাৎ এক দিন স্যারের একটা সেশন আমার চোখে পড়ে তখন ১১ তম ব্যাচ ছিল আমি কিছু বুজতে পারছি লাম না কি বলছে কিন্তু স্যারের লেখা টা পড়ে আমার খুব ভালো লেগেছে। কিন্তু কি গ্রুপ কিসের গ্রুপ কিছু বুজতে পারলাম না।মাঝে মাঝে সেসন টা ফলো করতাম আমার খুব ভালো লাগতো। কি বাবে রেজিষ্ট্রেশন করবো বুজি না তাই আমার ছোট ভাইয়ের সাহায্য নিয়ে আমি গ্রুপের নিয়ম কানুন কিছু টা বুঝতে পারলাম।
১১তম ব্যাচের শেষের দিকে আমি রেজিষ্ট্রেশন করি। কিন্তু আমি ১২ তম ব্যাচ থেকে স্যারের সেশন ফলো করি আর আস্তে আস্তে আমার ভিতরের সপ্ন গুলো জাগ্রত হতে থাকে কি করবো তখনো ঠিক করতে পারিনি। প্রিয় স্যারের বাণী আমাকে অনেক সাহস জুগিয়েছে।
সপ্ন দেখুন সাহস করুন শুরু করুন লেগে থাকুন সাফল্য আসবেই ইনশাআল্লাহ।
🤔কিন্তু কি ভাবে শুরু করবো আমর কাছে তো কোন মুলধন নেই। আছে শুধু স্যারের থেকে শিক্ষা পাওয়া সাহস আর নিজের প্রতি বিশ্বাস। আমি পারবো আমি পারবো আমি পারবো।
🕸️🕸️স্যার সব সময় একটা কথা বলেন যদি নিজের ঘরের মানুষকে না বুঝাতে পারো তাহলে বাহিরের মানুষ কে কি ভাবে বুঝাবে। তাই আমি প্রথম আমার হাসবেন্ড কে বুঝিয়ে বলি তুমি তো বলেছো কোন দিন আমাকে চাকরি করতে দিবেনা। কিন্তু আমি যদি ঘরে বসে কিছু করি তাহলে আমায় অনুমতি দিতে হবে সে বললো তুমি আসলে কি করতে চাও আমি বললাম তুমি আমাকে ভরসা করো তো আমি এমন কিছু করবোনা যাতে তুমি মানুষের কাছে ছোট হও। আমি ওর কাছ থেকে ৫০০০ 💵হাজার টাকা চেয়ে নেই। সেই টাকা দিয়ে অনলাইনে দেখে আমি কিছু চায়না ব্যাগ আনাই।
ব্যাগ গুলো দেখেছি এক রকম আর দিয়েছে আরেক রকম। ব্যাগ দেখ মন টা আমার খুব খারাপ হয়ে গেল😭। কি ভাবে এ ব্যাগ সেল করবো এতো বাজে কোয়ালিটি ৫০০০ টাকার ব্যাগ ২০০০ টাকা ও আমি সেল করতে পারবো না😫। তাই আমি আর ব্যাগের কোন সেল পোস্ট দেই না কারন আমি ইকবাল বাহার জাহিদ স্যারের শিক্ষা ভিতরে ধারণ করি। আমি নিজে ঠকেছি আমি কাওকে ঠকাবোনা। শুরুতে এতো বড় একটা লছ খেলাম এবার কি করবো। আমার পুরো মুল ধন শেষ। কিন্তু আমি যে সপ্ন দেখেছি আমার যে এগিয়ে যেতে হবে। কি করবো শুধু এটাই ভাবছি মাথায় একটা আইডিয়া এলো আমার কাছে আমার জমানো দুই হাযার টাকা আছে আর সেটা দিয়ে শুরু করবো নতুন করে। এখন তো আর ভয় পাই না মনে অনেক সাহস স্যারের সেশন থেকে পেয়েছি।
মাত্র দুই হাজার টাকা দিয়ে থ্রি পিছ নিয়ে কাজ শুরু করি কয়েক দিনের মধ্যে আল্লাহর রহমতে থ্রি পিছ গুলো সেল হয়ে যায়। আবার থ্রি পিছ নিয়ে আসি। এবাবে চলতে থাকে। আমি যেহেতু ব্লক আর বাটিকের কাজ কিছু টা জানি। এবার সাহস করি ওটাও চালু করবো কিন্তু কি ভাবে করবো? নতুন করে আরেক টুকু শিখে নেই।
🔎🔎আর এ গ্রুপ থেকে পেয়ে যাই কি ভাবে ইকটু ভালো করে সেখা যায়। লিপি আপু বিথি ও দিবা আপু এদের কাছ থেকে আরেক টুকু ভালো করে শিখে আমরা স্বপ্নের ব্লক আর বাটিকের কাজ শুরু করি। অনলাইন আর অফলাইনে ইকটু ইকটু সেল হতে থাকে। আলহামদুলিল্লাহ আমার কাজের গতি বেরে যায়।
🌈এভাবে আমি উদ্যোক্তা জীবন শুরু করেছি। অনেক ঠকেছি আবার অনেক কটু কথা শুনেছি। আমার আসে পাসে মানুষ বলে এগুলো করে কি হবে! কিন্তু আমি যে হাল ছেরে দিব না তবে চেস্টা চালিয়ে যাচ্ছি, চেষ্টা চালিয়ে যেতে চাই!!
😇আমি আবারো আবারো কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি আল্লাহর কাছে যিনি আমাকে এই গ্রুপের সাথে ইকবাল বাহার স্যারের সেশন ও তার গ্রুপের সাথে যুক্ত করেছেন। নাহলে হয়তো আমার মতো অনেকেই উদ্যগক্তা হোতে পারতো না।সাহস পেত না। আমার জীবনে নিজের বলার মতো গল্প গ্রুপ টা যেন এক ম্যাজিক যার মধ্যে থেকে আমি পেয়েছি অনেক অনেক সাহস ও ইচ্ছা শক্তি। এখন আর আমি ভয় পাই না মানুষের কথা পরয়ো করি না। এখন আমি নিজের সিদ্ধান্ত টাকে বেসি গুরুত্ব দেই। তাই আমি বলবো আমি খুব সৌভাগ্য ভান যে কিনা স্যারের মতো শিক্ষক পেয়েছি। যার অবদান জীবনে ভোলার মতো না। আমি স্যারের র্দীঘায়ু কামনা করি।
🍁🍁 🍁আমি দিপা আহমেদ মুন্সিগঞ্জের মেয়ে কাজ করছি নিজের হাতে তৈরি পুতির সোপিছ আর তার সাথে ব্লক বাটিক নিয়ে এছাড়া আমাদের দেশিও পোশাক শাড়ি থ্রি পিছ ইত্যাদি নিয়ে।
স্ট্যাটাস অব দ্যা ডে"- ৫৫৩
Date:- ১৯/০৬/২০২১
"ওনার অব "
স্নেহা কুটির
স্নেহের ছোয়া প্রতিদিন
♦️আমি দিপা আহমেদ।
♦️ব্যাচঃ ১১
♦️রেজিঃ৩৩৮৯৮
♦️জেলাঃ মুন্সিগঞ্জ।