চাকুরী কোথায় পাই কে বা দিবে, তাই এখনও
*****আমার জীবনের গল্প ******
সকল কে একবার হলেও পড়ার জন্য অনুরোধ করলাম?
প্রথমে বাবাকে দিয়েই শুরু করলাম,হাজারো শ্রদ্ধা রইলো আমার বাবার প্রতি,আল্লাহ তায়ালা তাকে যেন জান্নাতুল ফেরদাউসের উচ্চ মাকাম দান করেন।,আমিন
আমার বাবা চাচারা মিলে তিন ভাই এক বোন,আমার বাবা ছিল মেঝো, তিনি ছিলেন অত্যন্ত সহজ-সরল আমার বাবা ও বড় চাচা ১৯৬৬ সালে ডিসি কোর্টে পিওনের চাকুরী করত,ছোট চাচা পড়া-লেখা করতো,ঐ সময় বাবার বেতন ছিল ২৫ টাকা,দাদা জানের সংসার মহিষ- গরু দেখার মতো কোন ছিলনা সারাদিন দাদা বকা- ঝকা করতো,বাবা যেহেতু সহজ-সরল ছিলো তাই তাকেই বেশি করতো, যাই হোক বাবা চাকুরী ছেড়ে দিয়ে সংসারের হাল ধরলো,এবং আমার মায়ের সাথে যখন বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হলো এবং আমার তিন ভাইয়ের যখন জন্ম হলো তারা আস্তে আস্তে যখন বড় হতে থাকলো এই দিকে ছোট চাচার চাকুরী হলো দলিল রেজিস্টার অফিসে সেই সুবাদে একদিন সুযোগ বুঝে সমস্ত সম্পত্তি তার নামে রেজিস্টার করে নেয়,(অর্থাৎ দাদার সমস্ত জমি লিখে নেয়)দাদা বাবাকে শুধু বাড়ির ভিটির জায়গা দিয়ে বাবা একবারে খালি হাতে বের করে দেয়,বাবা-মা অত্যন্ত পরিশ্রম করে আমাদের সংসার টা সামনের দিকে এগিয়ে নেন,এখন আমরা ছয় ভাই কোন বোন নেই আলহামদুলিল্লাহ্,
ভাইদের মধ্যে আমি পঞ্চম,আমরা সব ভাইরাই মোটামুটি পড়া-লেখা করেছি,১৯৯৭ সাল থেকে বাবা কে কাজের জন্য বড় ভাই ও সেঝো ভাই সাংসারিক বোঝা তারা মাথায় নেয়, এ ছাড়া সবাই পড়া-লেখা করে আমি ২০০১ সালে ৫ম ক্লাস পাশ করার পরে মেঝো ভাই আমাকে গজারিয়া,মুন্সিগঞ্জের একটা হাফিজিয়া মাদ্রাসায় ভর্তি করে দেন চলতেছে আমার মাদ্রাসা জীবন আর বাবা সব সময়ই বলতো আমি যেন হাফেজ কুরআনের বাবা হয়ে মরতে পারি বাবা এই দোয়া সব সময়ই আমার জন্য করতো,ইতিমধ্যে বড় ভাই ২০০২ সালে ও মেঝো ভাই ২০০৪ সালে বিবাহ্ বন্ধনে আবদ্ধ হন,এদিকে ছোট চাচা সাথে জায়গা জমি নিয়ে প্রায় সময়ই ঝগড়া, মারামারি হয় এবং ছোট চাচা আমাদের নামে কয়েকটি মামলা করে, ঐ সময় মামলা সম্পার্কে আমাদের কোন আইডিয়া ছিলনা,মামলাতে আমাদের প্রায় অনেক টাকা খরচ হয়,যাই হোক ২০০৪ সালে বাবা অসুস্থ হয়ে পড়েন অনেক ডাক্তার দেখানোর পরে পরিক্ষা - নিরিক্ষা করার বাবার রোগ ধরা পড়লো পিত্তে পাথর ও ক্যান্সার হয়েছে,এভাবে বাবার চিকিৎসা করতে করতে প্রায় অনেক টাকা ঋণ হয়ে যাই,২০০৫ সালে জুনেমাসে আমার হেফজ শেষ হয় এবং বাবা আমাকে হাফেজ দেখে ২০০৫ সালের ১১ আগস্ট শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন,ইন্না,,,,,,,,,,,,,রাজিউন।
বাবার মৃত্যুর পরে ঋনের টাকা বড় ভাই মেঝো ভাই দুই জনার মাথায় নিয়ে নেয় এবং দুই ভাই সংসার আলাদা করে নেয়,সংসারের দায়িত্ব সেঝো ভাই নেন তিন ভাইয়ের পড়া-লেখা সহ সংসার চালানো কঠিন হয়ে পড়ে তার পক্ষে,৪ নাম্বার ভাই ইন্টার পাশ করে পড়া-লেখা ছেড়ে দেন কিছু পরে সেঝো ভাই ও চার নাম্বার ভাই বিবাহ্ করে নেন এবং তারাও কিছুদিন পরে ২০১০ সালে সংসার আলাদা করে ফেলেন, শুরু হলো আমার পথ চলা।
আমার হেফজ শেষ এখন সামনে অনেক পড়া-লেখা আছে, ইচ্ছে ছিল বড় একটা মাদ্রাসায় পড়বো কিন্তু কে চালাবে এই পড়া- লিখার খরচ,
এবং ছোট ভাই আর মাকে,মাথায় যেনো আকাশ ভেঙ্গে পড়লো যাই হোক রিযিকের মালিক আল্লাহ,
আমি ২০০৮ সাল থেকে পটুয়াখালী দুই বাঁধঘাট জামে মসজিদে রমজানে খতমে তারাবীহ পড়াই সেখান থেকে যা হাদিয়া পেতাম তা দিয়ে নিজের পড়া-লেখা চালাতাম এবং টিউশনি করে ছোট ভাই কে পড়া-লেখা সহ সংসার চালাইতাম,আমি ২০১০ সালে দাখিল,১২ তে আলিম দিয়ে ১৩তে ফাযিল(ডিগ্রী) ও পটুয়াখালী সরকারী কলেজে ইসলামী ইস্টাডিজ বিভাগে এ্যাডমিশন নেই,এবং একটা হাফিজিয়া মাদ্রাসায় চাকুরী নেই,একদিকে কলেজ, একদিকে মাদ্রাসা,একদিকে সংসার অন্যদিকে চাকুরি, তাই নিজের কাছে অনেক বোঝা মনে হলো তাই এক বছর পরে কলেজ ছেড়ে দিলাম,২০১৫ সালে ফাযিল(ডিগ্রী) করলাম এবং বিবাহ্ বন্ধনে আবদ্ধ হলাম ১৭ কামিল ( মাস্টার্স) শেষ করলাম, ছোট ভাই টা কেও কমার্স নিয়ে পটুয়াখালী সরকারী কলেজ থেকে মাস্টার্স শেষ করলাম,যতটুকু সাধ্য পড়া-লেখা করেছি এখন চাকুরী কোথায়,চাকুরী করতে হলে হয় লাগে মামুর জোড় না হয় টাকার জোড়,
একবার আমার পল্লী বিৎদুত চাকুরী হয়ে পরে আর হলোনা টাকার জন্য,এক লোক বলছিলো ফায়ার সার্বিসে চাকুরী দিতে পারবে টাকা লাগবে ১২ লক্ষ এত টাকা আমি কোথায় পাবো,আস্তে আস্তে করে সার্টিফিকেটের বয়স শেষ হয় যাচ্ছে
কিন্তু চাকুরী কোথায় পাই কে বা দিবে, তাই এখনও হাফিজিয়া মাদ্রাসায়ই খেদমত করতেছি
আর আপনারাই তো জানেন হাফিজিয়া মাদ্রাসার চাকুরী ও মসজিদের চাকুরী অস্থায়ী,চাকুরী আসলে সম্মানের হলেও কমিটিরা যখন না বলবে তখন চাকুরি দিয়ে অব্যাহতি দিয়ে চলে যেতে হবে,তাই নিজের বলার মতো একটা গল্প ফাউন্ডেশন ""এর সদস্য হতে পেরে আমি গর্বিত কারণ স্যার বলেছেন চাকুরী করবোনা চাকুরী দিব,স্যার কথাগুলো মনে আকড়ে ধরে সামনের দিকে পথ চলতেছি, যদি মহান আল্লাহ্ তায়ালা তার সুদৃষ্টি আমার উপরে দেন জীবনের গল্পটা টা অনেক বড় যা লিখে শেষ হবেনা,,,
ধন্যবাদ ও অভিনন্দন জানাচ্ছি তরুন-তরুনিদের যিনি আইডল যিনি আমাদের উৎসাহ যোগিয়েছেন সেই মহা মানব জনাব ইকবাল বাহার জাহিদ স্যার কে এবং আমাকে যিনি এই গ্রুপে Add করেছেন জারিফ বিন হাবিব কে
আল্লাহ্ তায়ালা আপনাদের নেক হায়াত দান করুক।
=====ধন্যবাদন্তে====
নিজের_বলার_মতো_একটা_গল্প _ ফাউন্ডেশান,
স্ট্যাটাস অব দ্যা ডে"- ৫৫৫
Date:- ২২/০৬/২০২১
আমি _
নাম:- মোঃ জামাল হোসাইন
থানা+জেলা পটুয়াখালী সদর
ব্যাচ১৪
রেজিঃনং ৬৫৩০৯
বর্তমান অবস্থান :- পালাখাল, কচুয়া, চাঁদপুর।।