এক কথায় তিনি একজন সমাজ সেবক ও মানুষের কল্যাণে নিবেদিত প্রাণ।
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।আসসালামু আলাইকুম।
💫আজ আমি আমার কস্টের জীবনের গল্প বলবো,
সবাইকে পড়ার অনুরোধ করছি।
শুরুতেই পরম করুনাময় মহান আল্লাহ তাআলার নিকট কোটি কোটি শুকরিয়া আদায় করছি, এই জন্য যে আজও আমাকে এবং আমার পরিবারের সবাইকে সুস্থ সুন্দর ও নিরাপদ রেখে, তারই সৃষ্টি সুন্দর দুনিয়ার মনোরম প্রাকৃতিক পরিবেশের নির্মল বিশুদ্ধ বায়ু গ্রহণের মাধ্যমে আমাকে সরব ও কর্মক্ষম রেখেছেন।
আলহামদুলিল্লাহ।
পরক্ষণেই আমি আমার অন্তরের অন্তস্থল থেকে শ্রদ্ধা কৃতজ্ঞতা ও ভালোবাসা জানাচ্ছি, আমার প্রিয় মেন্টর নিজের বলার মতো একটা গল্প ফাউন্ডেশন এর প্রতিষ্ঠাতা জনাব, ইকবাল বাহার জাহিদ স্যারের প্রতি।
👌কেননা তার অক্লান্ত পরিশ্রমের বিনিময়ে তৈরী করা ফাউন্ডেশন থেকে শিক্ষা নিয়ে আমাদের অন্ধকারাচ্ছন্ন জীবনকে আলোকময় করে তুলতে সক্ষম হচ্ছি।আমরা পৃথিবীর এক প্রান্ত থেকে আরেক প্রান্তের ভাই বোনদের সাথে বন্ধুত্বের সম্পর্কে আবদ্ধ হতে পারছি, আমরা আমাদের গতানুগতিক শিক্ষার বাহিরে বর্তমান আধুনিক পৃথিবীর চাহিদা মোতাবেক জীবনের জন্য অপরিহার্য শিক্ষাগুলো শিক্ষার চমৎকার সুযোগ পাচ্ছি, সর্বোপরি আমরা বিনা খরচে ভালো মানুষি চর্চা করে যাচ্ছি বিরামহীনভাবে। হাজার উদ্দোক্তা সৃস্টি হচ্ছে। যার ফলে দিনে দিনে বাংলাদেশের বেকার সমস্যা দূর হচ্ছে।
এক কথায় তিনি একজন সমাজ সেবক ও মানুষের কল্যাণে নিবেদিত প্রাণ। তাইতো প্রিয় এই পরম-সুন্দর মানুষটিকে আরো একবার স্যালুট।
সাথে সাথে প্রিয় প্লাটফর্মে প্রিয় ভাই ও বোনদেরকে জানাচ্ছি, আমার হৃদয়ের গহীন থেকে একরাশ শুভেচ্ছা ও ভালোবাসা। মানুষের বেঁচে থাকার যে মহাশক্তি অনুপ্রেরণা সেই অনুপ্রেরণা পেয়ে যাচ্ছি প্রিয় ফাউন্ডেশনের ভাই-বোনদের কাছ থেকে। তাই তাদের প্রতিও আমি চির কৃতজ্ঞ।
আসলে জীবন কোনো ছোট গল্প নয়, যা অল্প কোনো কথাতে সাজিয়ে ফেলা যায়।তবে এটা সত্য ফ্রেমে বন্ধি জীবনটাকে সুন্দর ভাবে স্মৃতিময় করে সাজানো যায়।
একটা বাস্তব ও গুরুত্বপূর্ণ কথা হলো নাটকের চেয়েও জীবন নাটকীয়।
🤱আমার শিশু কাল:
আমার আম্মু বাড়ির বড় মেয়ে বয়স যখন ১১ বছর আমার বাবার সাথে বিয়ে হয়।আমার আব্বুর বাবা মানে আমার দাদুভাই সবাইকে ছেড়ে পাড়ি জমিয়েছেন আব্বুর বয়স তখন ১০ বছর ছিল। শুধু দাদি মা ছিলেন, তিনি শয্যাশায়ী। মূলত তাঁর সেবা করার জন্য আম্মুকে বাড়িতে আনা।আমার জন্মের আগেই আমার দাদী মা আমাদের ছেড়ে দাদুর সাথে পাড়ি জমালেন। আমার আব্বুর চাচা আমাদের সকল সম্পত্তি নিজের করে নিলেন, আমার বাবা ছোট থাকায় তিনি কিছুই বুঝতে পারতেন না।
অতঃপর আমার জন্ম হয় নানা বাড়িতে।মা আমাকে নিয়ে নানা বাড়িতে থাকতেন তখন। প্রথম নাতনি হওয়ার অতি আদরের ছিলাম।তবে আমার আব্বু আমি মেয়ে হওয়াতে অখুশি হলেন যার কারনে আমার ও আম্মুর কারোই খোঁজ নিতেন না। তবে তখন আব্বু বি,ডি,আর এ চাকরি করেন।যাই হোক যদিও তাঁকে মিথ্যে সংবাদ দিয়ে বাড়িতে আনা হয়েছিল। একে তো হলাম মেয়ে তার উপরে কালো।
বুঝতেই পারছেন কি অবস্থা! যাই হোক সময় বয়ে চলতে থাকে।আমিও বড় হতে থাকি নানা বাড়িতে ভীষণ আদরে তাঁদের কোনো দুঃখ নাই মেয়ে আবার কালো এসব নিয়ে । তবে ছোটবেলা থেকে এত শুনেছি কালো, বেশি লম্বা হবে না। তা শুনে শুনে নিজের মনের মাঝে কস্টের পাহাড় জন্মে। আমি ছোটবেলা থেকেই ভীষণ শান্ত ছিলাম। হয়তো আমার শিশু মন এসব কটু কথা ভালো ভাবে মেনে নিতে পারতো না। আমার মনে আছে আমি এই কালো, খাটো কথাটার আরও বেশি কষ্ট পেতে থাকি আমার ছোট বোনের জন্মের পর থেকে। ও অনেক সুন্দর হয়েছে আব্বু ইতিমধ্যে সেনাবাহিনীতে যোগদান করেছেন।এভাবেই মনের মধ্যে ছোট্ট বেলাতেই কষ্টটা দানা বেঁধে থাকে।তাই ছোটোবেলা থেকেই আমি তেমন কারে সাথে মিশতাম না, কথা বলতাম না। আমার স্কুল জীবনের আমার সাথী ছিল বাড়ির বেলকনি আর ছাদ। খুবই শান্তশিষ্ট, শ্যামবর্ণের বালিকা।কোনদিন কোথাও সাজিয়ে নিয়ে যেতে পারতো না আমাকে, তখন আমি খুব কান্নাকাটি করতাম।আমার ছোট বোনকে যে পোশাক পড়াতো খুবই সুন্দর লাগতো। আমরা দু'বোন সবসময় একই রকম জামা পড়তাম। অনেকেই বলতো জমজ। তফাৎ ফর্সা ও কালো। সময় যাচ্ছে আমরা বড় হচ্ছি বোন তো ততদিনে আরো সুন্দরী হয়ে উঠেছে।
🧚♂️আমার কৈশোর কাল:
আমি শ্যামলা হওয়া স্বত্বেও শুনেছি আমার মুখের মধ্যে নাকি মায়া আছে। আমার জীবনে পরিবর্তন আসতে শুরু করে সপ্তম ও অষ্টম শ্রেণিতে। কবে থেকে সবার চোখে পড়তে শুরু করলাম তা বুঝতে পারি নি।তবে ছাত্রী হিসেবে খুবই মেধাবী সবাই বলতো।পরিক্ষায় প্রথম ৪জনের মধ্যেই থাকতাম।পড়াশোনা ও সহশিক্ষা কার্যক্রম সবাইকে ছাড়িয়ে সামনে চলে এলাম।নাচ,গান, কবিতা আবৃত্তি,উপস্থিত বক্তৃতা, উপস্থাপনা,বিতর্ক প্রতিযোগিতা, জারি গান, স্কাউট লিডার, রোবার লিডারসহ নানা সেবামূলক কার্যক্রমের সঙ্গে নিজেকে যুক্ত রেখেছি। তখন কমবেশি কালো এ কথা শুনতে হতো। মন খারাপ করতো ভীষণ। বালিকা বিদ্যালয়ে পড়াশোনা করা স্বত্তেও ছেলেদের সাথে ও একটা কম্পিটিশনে পৌঁছে গেলাম। যখন ২০০৬ সালে এস,এস,সি পরীক্ষার ফলাফল স্কুলের মধ্যে জয়ী হলাম এবং উপজেলায় মোটামুটি ভালোই হলো। আমি এলাকায় কলেজে পড়বো সিদ্ধান্ত নিলাম।কলেজেও ভর্তি হলাম।
বয়ঃসন্ধিতে যেসব আচরনিক বৈশিষ্ট্য লক্ষ্য করা যায়, আমিও তার ব্যতিক্রম নই।আবেগ অনুভূতির বিষয় ভীষণ রকম নাড়া দিতো।
👨👨👧👧পারিবারিক জীবনঃ
আমি ছোটবেলা মানে যখন বুঝতে শিখেছি তখন থেকেই অনেক টাকা পয়সা না থাকলেও অনেক সুখে আছি, ভালো আছি এটা বুঝতে পারতাম। সুখী পরিবার
বলতে যতটা হাসি আনন্দ থাকা দরকার কোন কমতি ছিল না আমাদের পরিবারে । বাবা, মায়ের ভালোবাসার মহা সমুদ্রে ভেসে ভেসে কখন যেন বড় হতে লাগলাম বুঝতেই পারিনি। শিশু সময় থেকেই পড়াশোনার প্রতি নিজস্ব টান অনুভব করতাম। মাকে কখন পড়তে বসতে বলা লাগতো না আমাকে, ক্লাসে পড়া না হলে লজ্জা পাবো এই ব্যাপারটা মেনে নিতে পারবো না তাই নিজের থেকেই পড়াশোনা করতাম। তাই সকল শিক্ষকের খুবই স্নেহের ছিলাম। তাঁদের ভালোবাসা আমাকে আরও অনুপ্রাণিত করতো। এভাবেই এস,এস,সি পরীক্ষায় আলহামদুলিল্লাহ মোটামুটি সন্তোষজনক ফলাফল করি এবং সকলেই খুশি। এমনভাবেই চলতে থাকে জীবন। তবে সেই কালো খাঁটো সে খোটা হারিয়ে যায় না।
বর্ণবৈষম্যের শিকার হয়ে মনোবল ভেঙে যায়। শুধুমাত্র পজেটিভ উৎসাহ মানুষের ভেতরের সুপ্ত প্রতিভাকে বিকশিত হতে সাহায্য করে।
🙏🙏আসুন বর্ণবৈষম্য ভুলে কাজের যোগ্যতাকে মূল্যায়ন করি, যোগ্যতা প্রমানের সুযোগ করে দেই।
আসুন দৃষ্টিভঙ্গি বদলাই জীবন বদলে যাবে।
এভাবেই প্রতিটি দিন নানা রকম প্রতিকূলতার মধ্যে দিয়ে কাটাতে হয় আমাকে যা লিখে প্রকাশ করতে পারছি না।
🤝🤝ফাউন্ডেশনে যুক্ত হওয়া এবং আমার স্বপ্নঃ
একদিন আমার পরম শ্রদ্ধেয় গুরু জনের মুখে আমাদের আলোর দিশারি, শিক্ষক, মেন্টর জনাব ইকবাল বাহার জাহিদ স্যারের নামটা জানতে পারি, আর সাথে তাঁর ফেইসবুক আই,ডি চেয়ে নেই। তেমন বিস্তারিত কিছু না জেনেই অল্প কিছু কথাতেই কেন যেন স্যারের প্রতি শ্রদ্ধা অনুভব করলাম। তারপরে একটু একটু করে জানতে জানতে স্যারের একটা পোস্টে নিজের বলার মতো গল্প ফাউন্ডেশনের সন্ধান পেলাম। তখন ১৩ তম ব্যাচের ৩৫-৪০ দিন অতিবাহিত হয়েছে।আমিও রেজিস্টেশন করে আজীবন সদস্যপদ লাভ করি। আমি ভীষণ আগ্রহ নিয়ে সেশন আয়ত্ব করার চেষ্টা করতে থাকি। যার ধারাবাহিকতা এখনও অব্যাহত আছে।আমি গর্ব করে বলতে পারি আমি প্রিয় এই ফাউন্ডেশনের সুপার একটিভ একজন সদস্যা।
ছোট বেলা থেকেই আমার স্বপ্ন ছিল একজন উদ্দোক্তা হবো, একদিন মানবিক কাজ করবো,দেশ ও সমাজের জন্য ভাল কিছু করবো,,এই স্বপ্নকে বাস্তবায়ন করার জন্য লেগে আছি প্রিয় এই ফাউন্ডেশনে।
🤲আলহামদুলিল্লাহ, ইতিমধ্যে আমি অনলাইনে ফেইসবুকে পেজ খুলে বিজনেস শুরু করেছি।আলহামদুলিল্লাহ, ভাল সাড়া পাচ্ছি,আমার পেজ থেকে ঘুরে আসার বিনীত অনুরোধ রইল।
প্রিয় স্যারের সাহস, অনুপ্রেরণা, শিক্ষা সেইসাথে প্রিয় ভাই বোনদের আন্তরিক দোয়া, সহযোগিতা, ভালবাসা ও অনুপ্রেরণা নিয়ে সামনে এগিয়ে যেতে চাই সবাই আমার জন্য দোয়া করবেন।
💌এতক্ষন আপনাদের মুল্যবান সময় ব্যয় করে আমার লেখাটি পড়ার জন্য আন্তরিক ধন্যবাদ এবং কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করছি।
🙏লেখার মাঝে ভুলত্রুটি হলে ক্ষমার
দৃস্টিতে দেখার অনুরোধ রইল।
পরিশেষে সকলের সুস্বাস্থ্য এবং দীর্ঘায়ু
কামনা করে আজকের মতো বিদায় নিলাম,আল্লাহ হাফেজ।
স্ট্যাটাস অব দ্যা ডে"- ৫৫৫
Date:- ২২/০৬/২০২১
শুভেচ্ছান্তেঃ
নামঃ তানিয়া মরিয়ম
ব্যাচঃ ১৩ তম
রেজিঃনং ৫৬১৬৬
জেলাঃ বাগেরহাট
বিজনেস পেজ লিংক : Tani's Mirror
আমি কাজ করছি সকল ধরনের পোশাক, গহনা, ব্যাগ ও জুতা নিয়ে