জীবনের অলিগলি দু'পায়ে মাড়িয়ে, ছোট কতগুলো স্বপ্ন নিয়ে, এসে দেখি শেষটা কি শুধুই
🍀🍀জীবনের অলিগলি দু'পায়ে মাড়িয়ে, ছোট কতগুলো স্বপ্ন নিয়ে, এসে দেখি শেষটা কি শুধুই ফাঁকা???ধবধবে বিশাল একটা ক্যানভাসে কেবল কিছু নীল স্কেচ আঁকা???🍀🍀🍀
🌷🌷🌷হুম,জীবনের অনেকটা অলি গলি আমি মাড়িয়ে এসেছি! পিছনে পড়ে আছে ঘুটঘুটে কালো একটা অধ্যায়! তাতে কি, মরে তো যাইনি!! জীবনে অনেক বড় একটা প্রাপ্তি এই বেঁচে থাকা!🌷🌷🌷
আমি খাদিজা। আমার আরেকটা পরিচয় আছে।আমি একজন মা! একটু ভুল বললাম......মা নামটার পাশে আরেকটা বিশেষণ আছে..! সিঙ্গেল মাদার....! নাক সিটকানোর মতো কথা তাই না??? হ্যাঁ আমি একজন সিঙ্গেল মাদার! আমার যে একজন সন্তান,সে সন্তান এবং তার বাবা একই আকাশের নিচে বাস করে তবুও তারা একজন আরেকজনের থেকে দূরে!!!! কি অবাক লাগছে না! আমাকে দোষী মনে হচ্ছে!! খালি চোখে যদিও এমনটা মনে হয় হতে পারে। তবে সৃষ্টিকর্তা যা করেছেন হয়তো এতেই আমার কোনো মঙ্গল নিহিত আছে! আমার যে ছেলেটা, ওর নাম মিয়াদ।মোহাইমিনুল ইসলাম মিয়াদ।মাদ্রাসায় পড়ে ও। দ্বিতীয় শ্রেণিতে।পরীক্ষায় যখন ঠিকানা লিখতে বসে যখন বাবার নাম লিখতে যায় তখন দু' মিনিটের জন্য হলেও ওর কোমল হৃদয়টা আন্দোলিত হয়।ভেঙেচূড়ে যায় ওর ওই ছোট্ট বুকটা....ও ভাবে সবারই বাবা আছে আমার বাবা কেন থেকেও নেই....! ওর বয়স যখন ৩ বছর তখনই ওর বাবার সাথে আমার ছাড়াছাড়ি হয়ে যায়!
🍂🍂🍂এবার বুঝলেন তো,আমি ডিভোর্সি মেয়ে।যখন আমাকে কেউ জিজ্ঞেস করে ভাইয়া কি করেন,আমি উত্তর দিই,"
I have been divorced since 2018.তারপর আবার পাল্টা প্রশ্ন কেন ডিভোর্স হয়েছে তোমার??কে আগে ডিভোর্স দিয়েছে, তুমি না উনি...... ইত্যাদি, ইত্যাদি! আচ্ছা, কোনো মেয়ে কি শখের বসে ছেলে সন্তানসহ ডিভোর্সি হয়...! হয়না!! কেউ চায়না তার জীবনে অস্বাভাবিকতার কালো ছায়া নেমে আসুক.....সময় পরিবেশ পরিস্থিতি কখন কোনদিকে চলে যায় তা সৃষ্টিকর্তা ছাড়া আর কে বলতে পারে???🍂🍂🍂
🍁🍁🍁🍁ফেলে আসা দিনের কিছু কথা:
সময়টা ২০১১ সালের জুলাই মাসের ২৫ তারিখ।এইচ.এস.সি পরীক্ষার ফল বের হয়েছে আমার।মানবিক বিভাগ থেকে জিপিএ ৫ পাওয়া বিষয়টা তখন বেশ সাফল্যেরই। রেজাল্ট শুনলাম আমি এ+ পেয়েছি।আবেগে আত্মহারা আমি!আমিও সফলই ধরতে গেলে।তার আগের শিক্ষাগত জীবনটাও বেশ গৌরবমণ্ডিত। যদিও পড়াশোনাটা গ্রামের স্কুলে,সেই স্কুলে প্রথম সারির স্টুডেন্টদের তালিকায় আমার নামটা প্রথমেই থাকতো। আর সেই সুবাদে এক নামেই চিনতো সবাই।জীবনের এই সময়গুলোতে দুঃখকষ্ট শব্দগুলোর সাথে তেমন পরিচিত ছিলাম না।বাবা ছিলেন গ্রামের স্কুল শিক্ষক। গ্রামে উনার যতটা টিউশন ছিলো সাইকেলের পিছনে করে প্রতিটা স্টুডেন্টের সাথে আমাকে পড়াতেন।আর বাড়িতে যতক্ষণ থাকতাম ততক্ষণ মায়ের সাথে বই নিয়েই বসে থাকতে হতো।আমাকে নিয়ে একবুক স্বপ্ন শুধু বাবা মায়ের ছিলো না।ছিলো পাড়া-প্রতিবেশী,আত্মীয়- স্বজনদের।
আর তাই আত্মবিশ্বাসও ছিলো প্রবল।আমি জীবনে ভালো কিছু নিশ্চয়ই করবো।
🍂🍂🍂আমার জীবনের প্রথম,একমাত্র এবং সর্বোচ্চ ভুল:🍂🍂🍂
এইচ.এস.সির ফল বের হওয়ার ঠিক পরের দিনই আমার বিয়ে।পাত্র স্বল্পশিক্ষিত।তেমন কিছুই করেনা।তার সাথে আগে থেকেই জানাশোনা ছিল আমার।দীর্ঘ ৩ বছরের সম্পর্ক। অন্ধের মতো বিশ্বাস করি তাকে।জীবনের ১৬ টা বসন্ত পার করেছিলাম কোনো ছেলের দিকে চোখ তুলে না তাকিয়েই।১৭ তম বসন্তটা আমার জীবনের কাল বসন্ত ছিলো তা সৃষ্টিকর্তাই হয়তো জানতেন,সৃষ্টিকর্তাই তো অদৃষ্টের জ্ঞান রাখেন!!!
🌻🌻🌻আট দশটা মেয়ের মতো লাল শাড়ি পরে আমারও বিয়ে হলো,যার ভবিষ্যতের কোনো নিশ্চয়তা নেই,যার সামাজিক কোনো অবস্থান নেই এমন একজোড়া হাত ধরলাম।একটা সাজানো গোছানো সুন্দর স্বপ্ন আমারও চোখে।তখনও আমি দিবাস্বপ্ন দেখেই দিন পাড় করে দিচ্ছি।আমি ভালো ছাত্রী। পড়াশোনা শেষ করবো, চাকরি করবো।গুছিয়ে সংসার করবো।🌻🌻🌻
🍂🍂🍂ভাবনাটা যতটা সহজ ছিলো, বাস্তবতা তত সহজ ছিলোনা।স্বামীর উপার্জন নেই,আমারও নেই।আমার পড়াশোনা চলবে কি করে? আমার অনার্স ১ম বর্ষের বই কেনাকে কেন্দ্র করে বিশাল একটা পারিবারিক জটিলতা দেখা দিলো।স্বামীর পরিবার থেকে সিদ্ধান্ত আসলো তোমাকে আর পড়তে হবেনা।
আমি এটা মানতে পারিনি।কত নির্ঘুম রাত পার করে প্রতিটা পরীক্ষায় অংশ নেয়া,কৃতিত্বের সাথে পাশ করা এই আমিকে পড়াশোনা বাদ দিয়ে বসে থাকতে হবে এটা আমার পক্ষে নেয়া সম্ভব ছিলনা।
আমার কথা একটাই ছিল,আমার প্রতি আপনাদের আচরণ যাই হোক না কেন আমি পড়াশোনা ছাড়বো না।
জি,আমার প্রতি তাদের আচরণটা তেমনি ছিলো যে ধরনের আচরণের সাথে আমি পরিচিত ছিলাম না।আমার পরিচয়টা বাড়ির বউ ছিলনা,ছিল কাজের লোক।মেয়ে হয়ে জন্মেছি ঘর-কন্না তো জানতেই হবে।এতে আমার কোনো সমস্যা ছিলো না।
মানসিকভাবে প্রচণ্ড ভেঙে পড়তাম যখন দেখতাম আমার হাতে যে সময়ে বই থাকার কথা সে সময়ে কোনো না কোনো কাজ ধরিয়ে দেয়া হয়েছে।বিশেষ করে পরীক্ষার দিনগুলোতে এমন কাজ দেয়া হতো যেগুলো করতে অনেক সময় লেগে যাবে এবং আমার পরীক্ষায় বসা হবেনা।
পড়াশোনা তো জোর করে চালাচ্ছি, কিন্তু খরচের কি হবে? এ জটিলতায় বাড়ির খাবারটাও বন্ধ হয়ে গেলো আমাদের জন্য।আমরা তখন ফ্যামিলি থেকে আলাদা।চোখে সরষে ফুল দেখতে লাগলাম।বিয়ে হয়ে গেছে এখন বাবার বাড়ি থেকেই বা টাকা চাই কি করে???আর নিজে পছন্দ করে বিয়ে করেছি,এমন অসহায়ত্ব মানুষ দেখে তো হাসাহাসি করবে।তাই ভাবলাম যত কষ্টই হোকনা কেন,যে যুদ্ধে নেমেছি এখানে আমাকে জিততেই হবে। এলাকার একটা কোচিং এ কাজ নিলাম।ফজরের সময় রান্না শেষ করি,৭ টায় কোচিং এ যাই। ৯ টায় ফিরি।সেখান থেকে ফিরে খাওয়ার সময় থাকলে খাই নয়তো না খেয়েই কলেজে চলে যাই।কলেজ ছুটির পর রিকশাভাড়া বাঁচানোর জন্য ২ কিলোমিটার রাস্তা হেঁটে টিউশনে যাই।সেখান থেকে বাড়ি ফিরতে ফিরতে ৪:৩০ টা বেজে যেতো।আবার বিকাল ৫ টা থেকে রাত ৯ টা পর্যন্ত কোচিং।
তখন আমার পড়ার খরচ চালানোর জন্য এবং সংসারে দেয়ার জন্য কিছু টাকা আসে হাতে।
স্বামীর জমানো কিছু টাকা,আমার কিছু টাকা আর
বাবার বাড়ি থেকে কিছু টাকা নিয়ে ছোট্ট একটা ব্যবসা প্রতিষ্ঠান দাঁড় করালাম।
যখন আমার হাতে এক টাকাও ছিলোনা তখন কিন্তু কেউ এক টাকাও সামনে ধরেনি,আমি মেয়ে হয়ে যখন রাত নয়টায় কোচিং পড়াই তখন আমাদের সমাজের তথাকথিত সুশীল লোকদের টনক নড়লো।কোচিং এর দূরত্বটা ছিলো বাড়ি থেকে ৩ মিনিটের রাস্তা।দূরত্ব যাই হোক সন্ধ্যার পর বাইরে থাকাটা মেয়েদের জন্য পাপ।সমাজের সুশীলরা এটা মানতে পারেনি।তারা ইনিয়ে বিনিয়ে নানা কথা তুলে দিয়েছে স্বামীর কানে।আর আমার প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষাবিহীন স্বামী আমাকে মানসিক চাপে রেখেছেন সারাক্ষণ।
জীবনে প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার গুরুত্ব কতখানি তখন উপলব্ধি করেছিলাম।তবে বুঝতে অনেক দেরি হয়ে গিয়েছিল।
🌱🌱🌱২০১৪ সালে একটা কিন্ডারগার্টেনে চাকরি নিলাম।এই বছরই ছেলে সন্তানের মা হলাম আমি।এতদিন নদীতে ছিলাম।এখন যেন মহাসমুদ্রে পড়লাম।চাকরি, সংসার, সন্তান.....কি করবো আমি! আল্লাহ্ সহায় বাবার বাড়িটা কাছাকাছি ছিলো।সকালে বাবার বাড়ি থেকে কেউ এসে ছেলেটাকে নিয়ে সারাদিন রাখতো,আমি স্কুল, টিউশন শেষে আবার সন্ধ্যায় গিয়ে ছেলে নিয়ে আসতাম।এভাবেই কাটতো আমার সারাদিন।আমি নিজের নেয়া একটা সিদ্ধান্তকে টিকিয়ে রাখতে জীবনের উপর দিয়ে যুদ্ধ চালাচ্ছি....কিন্তু বাস্তবতা যে এত নিষ্ঠুর হতে পারে জানা ছিলো না।হঠাৎ ই একদিন জানতে পারলাম যাকে নিয়ে জীবন পার করার চিন্তা করছি,সে তার লেভেলের কোনো এক মহিলাকে নিয়ে স্বপ্ন দেখছে।পেতেও থাকলাম তার সেই স্বপ্ন বাস্তবায়নের একের পর এক প্রমাণ।
আমি অনার্স শেষ করেছি।মাস্টার্স করবো ঠিক এই মুহুর্তে আমাকে জোর জবরদস্তি করা হলো চাকরি বাকরি পড়াশোনা সব বন্ধ করে যদি আমার সাথে থাকতে পারিস থাক নয়তো চলে যা।
মাথায় আকাশ ভেঙে পড়লো....এ জীবনযুদ্ধ কার জন্য ছিলো,আর কি হচ্ছে????
এত কষ্টের টাকায় পড়াশোনা করে এমন একটা পরিবেশ কি কোনো ভাবে মেনে নেয়া সম্ভব যেখানে কিনা ভাত, কাপড়ের, ছেলের খাবারের কোনো নিশ্চয়তা নেই???আর সামনে পড়ে রয়েছে ছেলের অনাগত ভবিষ্যৎ। আমার ছেলে আট দশটা ছেলের মতো ভালো পরতে পারবেনা,খেতে পারবেনা,ভালো স্কুলে পড়তে পারবেনা,আর যোগ্যতা থাকা সত্ত্বেও আমি মা হয়ে আরেকজনের অন্যায় আবদার মেনে নিয়ে হাত গুটিয়ে বসে থাকবো,এতটা ধৈর্য আল্লাহ্ আমায় দেন নি।
আমার জায়গা হলো বাবার বাড়িতে।তিন বছরের ছেলে নিয়ে বাবার বাড়ি থাকি।এভাবেই পাঁচমাস পার হয়।আমার ছেলের খোঁজ নেয়ারও প্রয়োজন বোধ হয়নি তার।
সময়টা ২০১৮,জানুয়ারির ১০ তারিখ।ক্লাস করাচ্ছি,ডাকপিয়ন আসলেন,আমার হাতে একটা পেপারস ধরিয়ে দিলেন।
আজ থেকে ৭ বছর আগে যাকে পৃথিবীর সমস্ত শান্তির উৎস ভেবেছিলাম,যার অযোগ্যতা, অনিশ্চিত জীবন জেনেও তাকে নিয়ে জীবনের সবটুকু সময় পার করতে চেয়েছিলাম,যার জন্য নিজের শিক্ষাগত জীবন স্বাচ্ছন্দ্যে শেষ না করে যুদ্ধ করে পার করেছি,সে তার বিশ্বাসের উপযুক্ত প্রতিদান দিয়েছে।সে ডিভোর্স করেছে আমাকে।আমি আজও ডিভোর্সি। আর ডিভোর্সের পরদিন থেকেই পাশের রুমের ভাড়াটিয়া মহিলা তার স্ত্রী! ৩ বছর বয়সী ছেলেটা হলো বাবা হারা।ভাবছেন তো বাবা হারা কিভাবে??? আমি তো মা! কোনো মা কি মানবে নিজের শরীরে শেষ রক্তবিন্দু থাকা অবধি তার ৩ বছর বয়সী সন্তানের উপর সৎ মায়ের ছায়া পড়ুক!আমিও মানিনি! বলছিলাম ছেলে দিবো না।তাদের সোজাসাপ্টা উত্তর আমরা খরচ দেবো না! মেনে নিলাম যত কষ্টই হোক ছেলেটাকে ভরণপোষণের দায়িত্বও কাঁধে তুলে নিলাম।
☘️☘️☘️☘️আমি একজন ডিভোর্সি মেয়ে।আমাদেরকে এই সমাজ সোজা চোখে দেখেনা।কানাকানি,বলাবলি....নিশ্চয়ই মেয়েটার মধ্যে সমস্যা আছে নয়তো স্বামী ছেড়ে দেবে কেন???ওই দ্যাখ দ্যাখ মেয়েটা যাচ্ছে,ওকে না স্বামী ছেড়ে দিয়েছে। হ্যাঁ এমন হাজারটা কথা আমার গাঁয়ে বুকে তীরের মতো বিঁধার পর যখন একটা শব্দ শুনি, মা'! পেছন ফিরে সন্তানের মায়াভরা মুখটা দেখে ভাবি,এর জন্য হলেও আমাকে বেঁচে থাকতে হবে।☘️☘️☘️☘️
জীবন থেকে চরম শিক্ষা নেয়া হলো,কাউকে বিশ্বাস করো।কিন্তু অন্ধভাবে নয়।
জীবনের এই চরম পরিস্থিতিতে যখন কাউকে বিশ্বাস করার মানসিক শক্তি হারিয়ে ফেলেছি তখনই আমি সন্ধান পাই প্রিয় মেন্টর ইকবাল বাহার জাহিদ স্যারের তিল তিল করে গড়ে তোলা ভালো মানুষদের এই প্লাটফর্ম' নিজের বলার মতো একটি গল্প!'
প্লাটফর্মের সাথে আমার প্রথম পরিচয়ের সময়টা ২০২০ এর শেষের দিকে। করোনার জন্য পুরো পৃথিবী থেমে গেছে।সর্বত্র লকডাউন। আমি ছিলাম একজন কিন্ডারগার্টেন শিক্ষিকা।স্কুল বন্ধ হয়ে গেলো।টিউশনগুলো ছেড়ে দিতে হলো।উপার্জনের কোনো রাস্তাও নেই।মাস শেষে চাকরির মাইনে হাত পেতে নেওয়ার বাইরেও যে কিছু করা যায় তা আমি তখন জানিনা।
চাকুরী,টিউশন সব হারিয়ে যখন ভাবনার অথৈ সমুদ্রে হাবুডুবু খাচ্ছিলাম,তখনই পেয়ে যাই,উদ্যোক্তা তৈরির সুবিশাল প্লাটফর্ম 'নিজের বলার মতো একটি গল্প'!ফলো করতে লাগলাম গ্রুপের কর্মকান্ড।আমার উদ্যোক্তা হওয়ার স্বপ্নের শুরুও এখান থেকেই,পথ চলাও এখান থেকেই।ইনশাআল্লাহ্ গন্তব্যে পৌঁছবোও এই প্লাটফর্মের হাত ধরেই।
🌿🌿🌿🌿 আমাদের প্রিয় মেন্টর ইকবাল বাহার জাহিদ স্যার আমাদের শিখিয়েছেন, নিজের ভুল স্বীকার করাটাও একটা বিরাট গুণ! ভুল স্বীকার করলে একটা ভুল হয়, আর স্বীকার না করলে একটার পর একটা ভুল হতেই থাকে, আর সবশেষে ভুলে ভরা জীবন হয়।
🌿🌿🌿🌿🌿নিজের বলার মতো একটি গল্প প্লাটফর্ম আমাকে অনেক কিছুই দিয়েছে।স্যারের প্রতিটি নির্দেশনা পেয়েছি,যেসব নির্দেশনার প্রতিটি বর্ণ আমাকে অনুপ্রাণিত করেছে! আমি পেয়েছি প্রিয় Sagarika Ekbal আপুর মতো সাহসী এক নারী সহযোদ্ধাকে যাকে দেখলে নব উদ্যমে কাজ শুরু করার ভাবনা এমনিতেই চলে আসে।পেয়েছি MD Jahir Islam ,Iqbal Hossain, Ashik Ahmed,Jahid Mridha, Kh Istiak Ahmed Shajib, Majedul Islam ভাইয়ার মতো দায়িত্বশীল ব্যক্তিদের যাদের বিচক্ষণ নেতৃত্বে টাংগাইল এগিয়ে চলছে অদম্য গতিতে।স্বপ্ন বোনার সারথী হিসেবে পেয়েছি প্রিয় Rabeya Haque Munni Sabina Yasmin Sakila Mumu Mukty Akter আপুর মতো সাহসী উদ্যোক্তাদের।প্রিয় Abirul Hasan Sohel মোহাম্মদ এম আলী Ratan Khan Srabon Shakil Ahmed Sagor Ashik Alahe Majedul Islam Majed উনাদের অবদান আমার জীবনে সহোদর -ভাইয়ের থেকে কোনো অংশে কম নয়।প্রতিনিয়ত গ্রুপকে আমি যেটুকু সময় দিচ্ছি,গ্রুপ তার ফিডব্যাক আমাকে সুদে-আসলে দিচ্ছে।
🌸🌸ভালো মানুষ গড়ার এই প্লাটফর্ম থেকে আমার যে ভুলগুলো আমি ধরতে পেরেছি এবং স্বীকার করছি সেই সাথে একটা ভুল সংশোধনের জন্য হাজারটা অনুপ্রেরণা এখান থেকেই পাচ্ছি:
১.প্রিয় স্যারের নির্দেশনায়,আমি স্বপ্ন দেখেছি,শুরু করেছি,কিন্তু লেগে থাকাটা হয়নি।
২.যে স্বপ্নটা আমি দেখেছি তা স্বপ্ন ছিলো না, কারণ যেটা স্বপ্ন তা পূরণের তীব্র আকাঙ্ক্ষা আপনার ঘুম কেড়ে নেবে।
৩.লাখ -লাখ তরুণ তরুণীর এই প্লাটফর্মে নিজের ব্র্যান্ডিংটা তেমন করতে পারিনি।
৪.সবার সাথে আন্তরিকতা তৈরির তেমন চেষ্টা করিনি।
🌺🌺🌺🌺এই যে ভুলগুলো,এগুলো নিয়ে পড়ে থেকে ভুলে ভরা জীবন তৈরির শিক্ষা প্রিয় স্যার আমাকে দেন নি!
🌺🌺🌺🌺প্রিয় স্যার আমাকে শিখিয়েছেন,জীবনের প্রতিটা মুহুর্তই মূল্যবান,যে সময়টা চলে গেলো তা আর নতুন করে ফেরত পাওয়া যাবে না।তাই প্রতিদিনই নিজের কাজের মাত্রাটা বাড়ানো জরুরি।আর প্রতিটি ভুল সংশোধন করে সঠিক পথে এগুনোটাও জরুরি।
🌺🌺🌺অদম্য টাংগাইল ও সিলেট জেলার সম্মিলিত মিট-আপে উপস্থিত থেকে প্রিয় স্যারের মুখোমুখি কিছু কথা শোনার সৌভাগ্য আমার হয়েছিলো।
স্যার দীর্ঘসময় কথা বলেছেন সবার সাথে। আমি শুধু অবাক হয়ে তাকিয়ে ছিলাম কথার মাধুর্য কতটা সুন্দর হলে এত মনোযোগ নিয়ে কারও কথা শোনা যায়।কথার ভিতরে কতটা অনুপ্রেরণা থাকলে প্রত্যেকটি কথা হৃদয়ে ধারণের ইচ্ছা জাগ্রত হয়।
🌿🌿🌿🌿স্যার বলেছিলেন,সমাজে যারা অবহেলিত যারা মূল্যায়ন পায়না,তাদেরকে আপনি সালাম দিয়ে দেখবেন,তাদের মুখটা আনন্দে উজ্জ্বল হয়ে উঠবে।তাদের সেই হাসিতে আপনারা যে আত্মতৃপ্তি ও সুখ খুঁজে পাবেন তা আপনি আর কোথায় খুঁজে পাবেন না।
একজন বিপদগ্রস্ত মানুষকে সহযোগিতা করার শিক্ষাও স্যারের থেকেই পাওয়া।
প্রিয় মেন্টর গর্ব করে বললেন আমার টিমের সদস্যরা রক্তদান,জীবনদান, একজন আরেকজনের বিপদে একটা পরিচয়েই এগিয়ে আসে,আর তা হচ্ছে তারা সবার নিজের বলার মতো একটি গল্পের সদস্য,এটাই আমার অনেক বিশাল প্রাপ্তি।
প্রিয় প্লাটফর্ম থেকে শিক্ষা নিয়েই আমি শুরু করেছি আমার উদ্যোগ।স্যার বলেছেন, সবচেয়ে বড় বিনিয়োগ হচ্ছে সততা ও কমিটমেন্ট।সেই থেকেই আমি আমার পেইজের নাম দিয়েছি প্রতিশ্রুতি।কাজ করছি হোমমেইড আচার ও বেবি নকশীকাঁথা নিয়ে।ক্রেতার প্রতি করা আমার প্রতিশ্রুতি রক্ষায় আমি বদ্ধ পরিকর, ইনশাআল্লাহ্।
আমার উদ্যোগে আমি পাশে পেয়েছি Masud Rana Md Jahangir Alom,Kazi Monzur Rahman MD Monir Madbar Kove Mir Saidur Rahman Liton Md Abu Kalam Mohammad Dulal Siraj Sittu-saudi Nasim Uddin Moshiur Bappy Sittu-saudi Maharun Zakir Sonia Alam Akando সহ লাখ লাখ ভালো মানুষদের।
আমি আজ জীবনের সব হতাশা থেকে বের হয়ে এসেছি।নিজের বলার মতো গল্প তৈরির চেষ্টায় আছি। আমার জীবনে অনেক কিছু না থাকলেও নিজের বলার মতো একটা গল্প প্লাটফর্ম আছে এটাই আমার বিশাল পাওনা! প্রিয় স্যারের একটি কথা দিয়ে শেষ করতে চাই,"জীবনে ভালো থাকার জন্য অনেক কিছু প্রয়োজন নেই।দরকার একটুখানি।এই একটুখানিতে হাসিমুখে জড়িয়ে থাকার নাম জীবন!!!
স্ট্যাটাস অব দ্যা ডে"- ৫৫৯
Date:- ২৬/০৬/২০২১
আমি খাদিজা
কমিউনিটি ভলান্টিয়ার
ব্যাচ:১১
রেজি:৩৬৮৬২
উপজেলা :মধুপুর
জেলা:টাংগাইল।
আমার উদ্যোগ: প্রতিশ্রুতি।
https://www.facebook.com/প্রতিশ্রুতি-116193216960725/