একদিন তরীখানা থেমেছিল এই ঘাটে লেগে বসন্তের নতুন হাওয়ার বেগে ।
একদিন তরীখানা থেমেছিল এই ঘাটে লেগে
বসন্তের নতুন হাওয়ার বেগে ।
তোমারা শুধায়েছিলে মোরে ডাকি,
পরিচয় কোন আছে নাকি,
যাবে কোনখানে?
ছোটবেলা থেকেই স্বপ্ন দেখতাম আমি বড় হব বড় হয়ে কিছু করব বড় হলাম . কিছু করবো সেই প্রত্যাশা ।
ভাবছি আর ভাবছি । জীবনকে ভালো রাখার জন্য বারং বার চেষ্টা । পরিবারটা যৌথ ছিল । আমার বাবা চাচারা ফুফুরা মিলে ৯ জন । আমার বাবা দ্বিতীয় সন্তান । গ্রামের হাতুরে ডাক্তার । আমার দাদু ছিলেন একজন স্বর্ণকার । আমাদের পাড়ার তিন কিলো বৃত্তে আমরাই 3 ঘর হিন্দু সম্প্রদায়ের ছিলাম ।ছোটবেলার গল্প অতটা মনে নেই যা মনে আছে তাই বর্ণনা করছি ।
যেত আমার বাবা গ্রাম্য চিকিৎসক তার হাতের যশ ভালো ছিল তৎকালীন সময়ে যখন একজন শ্রমিকের বেতন 20 টাকা তখন আমার বাবার দৈনিক আয় ছিল 400/ 500 টাকা । আমার বড় চাচা গ্রাম চিকিৎসক ছিলেন । দুই চাচা পুলিশ । এক চাচা ব্যাংকার, ঢাকায় থাকেন । এক চাচা ও ফুফু ইন্ডিয়াতে থাকেন । আমার ইন্ডিয়ান চাচা বেশ ভালো আছেন গার্মেন্ট
শিল্প আছে ।আছে ফ্লাট বাড়ি । চাচাতো ভাইয়ের ও বেশ ভালো আছে ।ব্যবসা বাণিজ্য আছে । সবচেয়ে বড় ফুফু আর সবচেয়ে ছোট ফুফু ওখানে । ওরা ছেলে মেয়েদেরকে নিয়ে ভালো আছেন । আধুনিক সভ্যতার উন্নতির সাথে সাথে উন্নতি হয়েছে আমাদের । আমরা প্রতিনিয়ত যোগাযোগ করি বিশেষ করে মোবাইলে মেসেঞ্জার, হোয়াটসঅ্যাপ ,হিমু , ইত্যাদির মাধ্যমে । বিয়ে-শাদী নিমন্ত্রণ দিলে আমাদের সদস্যরা কেউ যায় । ওরাও মাঝে মাঝে আসে । এপার বাংলা ওপার বাংলার এক মিলন মেলা হয় । গল্পের আসর জমে তাদের সাথে । বছর 10 হবে ছোট ফুফুর পরিবার স্থাবর অস্থাবর সব বিক্রি করে ভারতে গিয়ে তাদের আরেকটি বাড়িতে গিয়ে ওঠে । ফুফাতো ভাই আমার বয়সী একসাথে ছোটবেলা থেকে বেড়ে ওঠা । এক শ্রেণীতে পড়াশোনা ।
বন্ধুত্বের বন্ধন খানিকটা ভাটা পড়ে গেল ওর সাথে গল্প হয় না আগের মত ।ও চলে গেলে খানিকটা কষ্ট লাগে । এখন তো নিয়মিত কথা হয় । জীবন চলছে জীবনের মত । আমরা চার ভাই এক বোন । আমি দ্বিতীয় ।
#জীবনে_ঝরা_পাতার_শুনে_কে !
যখন আমি প্রথম শ্রেণীতে ভর্তি হয় ।
তখন আমার পিতা শ্রী কিডনি রোগে আক্রান্ত হয় । দ্বারস্থ হই আমরা সবার কাছে । বাবার রোগটা ভালো হয়ে উঠলো না । চিকিৎসা চলছিল আমাদের জমানো টাকা এবং আত্মীয়-স্বজন রাও যথাসাধ্য করেছিল । তারা আমাদের পরিবারের পাশে এসে দাঁড়িয়েছিল সেটা ভাষায় প্রকাশ করা যাবে না । তাদের ঐকান্তিক প্রচেষ্টা কথা বলবার সামর্থ্য আমি রাখি না । আমি দেখছিলাম ,একজন হাতুড়ে ডাক্তার তার পাড়া প্রতিবেশীর কাছে অনেক সাহায্য নিয়ে বেঁচে থাকার প্রাণপণ চেষ্টা । আমার পিতা কে আমার পাড়ার সবাই খুব ভালো বাসতেন তা উপলব্ধির বিষয় ছিল । আমার বাবাকে যখন ঢাকা থেকে ফেরত দিয়ে দেয় , দেশে নিয়ে আসে যতদিন বেঁচে ছিল আমার বাড়িটা ছিল একদম রীতিমতো হাটখোলা । দেশ-বিদেশ থেকে বিভিন্ন প্রান্ত থেকে বিভিন্ন লোকজন আসতো আমার বাবাকে দেখার জন্য, শেষ দেখা । আমার বাবার প্রাণ রক্ষার্থে কত মানুষ ,কত দোয়া মাফিল করেছিল , কত মন্দিরে কত আয়োজন করেছে আমি জানি না তবে অগণিত ভক্ত তৈরি করেছিলেন আমার পিতা তা আমি দেখেছিলাম । যেহেতু আমার
বাবা বিচক্ষণ ডাক্তার ছিলেন সেহেতু তিনি তার মৃত্যুর আগে আমাদেরকে ভাগ ভাগ করে আমাদের চাচা দের হাতে তুলে দিলেন । দায়িত্ব পড়ল আমার এক চাচার উপর । আমার বাবা আমার মায়ের গর্ভে ছোট ভাইটাকে রেখে পৃথিবী থেকে চিরবিদায় নিলেন । মৃত্যুর 24 দিন পর পৃথিবীর বুক চিরিয়া আমার ছোট ভাই ভূমিষ্ঠ হলেন । ।।্্্্্্্্্্্
#জনম_দুখিনী_মা_আমার
মায়ের দুঃখ প্রকাশ করার ভাষা খুঁজে পাচ্ছে না ছেলে । সেদিন কেমন ছিল একদিকে স্বামীহারা সুখ আরেকদিকে নবাগতের আগমনী বার্তা । এক চোখে অশ্রু আরেক চোখে হাসি । মায়ের কোল জুড়ে সন্তান আসলে চারপাশে খুশির জোয়ার বয়ে । আর অবাক মা আমার একদিকে স্বামী হারানোর বেদনা অন্যদিকে ছেলেকে টিকে থাকার জন্য বাঁচিয়ে রাখার জন্য আপ্রাণ চেষ্টা এ যেন আরেকটা দুঃখ তাতো বইয়ের পাতায় লিপিবদ্ধ করা যাবে না । দুঃখ প্রকাশ করিবার ভাষা প্রকাশিত করার জন্য পৃথিবীতে কাগজ কলম সৃষ্টি হয়নি । কোন লাইভে সেমিনার করলেও তা উপলব্ধি করার ক্ষমতা শুধু ভুক্তভোগী জানে বা বুঝবে । পুরো পরিবারে এসে এমন হাজারো দুখিনী মায়ের গল্প আমি পড়েছি আর অশ্রু বিসর্জন করেছি । আমার গল্প আর আমি লেখার সুযোগ পায়নি তাদের দুঃখের সাগরে আমি ডুব দিয়েছি বারংবার ।
#পিতৃহীন_সুকান্ত তার মায়ের কষ্ট কিভাবে লাভ করবে সেই চেষ্টা ছিল দুর্বার । সবাই আমার মাকে শান্তনা দিতে মাকে আমার শান্তনার নেয়ার মত পরিস্থিতি ছিলো । না ছিল না । আমাদের পরিবারে প্রতিটি বেলায় ছটি মুখের জন্য 6 প্লেট খাবার এভাবে আঠারোটি প্লেট খাবার প্রয়োজন হতো । আমাদের চাচারা আমাদেরকে পিতৃস্নেহে লালন করেছেন । চাচীরা লালন করেছেন মাতৃস্নেহে তা আমার জীবন দশায় কোন ডাইরিতে লিখতে পারবো না । সুকান্তের শিখর যত গভীরে যাক না কেন শুরুটা হয়েছিল আমার সেই পরিবারই চাচা-চাচীর কাছে । । মাঝে মাঝে মা কান্না করতেন । আমি নিরবে সহ্য করতাম ছোট ছিলাম । অল্প অল্প বুঝতাম । দুঃখ লাঘব করতে চাইতাম ছোট বলে কথা পারতাম না । অসহ্য যন্ত্রণা ছোটবেলা থেকেই হৃদয় গহীনে লালন করা শিখে গেলাম । আবার মাকে নিয়ে কোনদিন বিস্তারিত আলোচনা করব । মনে না নিলেও মেনে নিয়েছি অনেক কিছু ।মা হলো পৃথিবীর একমাত্র ব্যাংক যেখানে আমরা আমাদের সব দুঃখ গুলো জমা রাখি এবং এর বিনিময়ে নেই বিনামূল্যে অকৃত্রিম ভালোবাসা
#সুকান্তের_শৈশব
আমি শৈশব কাল থেকেই ভাবতে বেশি পছন্দ করতাম মানুষ কেন এমন হয় । ওই বেলাতেই আমি সবার প্রিয় ভাজন ছিলাম । সঠিক উত্তরের খোঁজে আমি বেকুল ছিলাম । সক্রেটিসের মত সত্য সন্ধান করতাম অবিরত । একটাই প্রশ্ন ছিল মনে মানুষ সত্য কথা মুখে বলে কিন্তু তার কথানুযায়ী সে কেন পালন করে না এ নিয়ে আমার বেশ ঝড় তুলত মনের গহীনে ।
#প্রাথমিক_বিদ্যালয়_এর_ভর্তি
#শান্ত_সুকান্ত তার বিদ্যালয়ে নানা সমস্যা উপলব্ধি করতে পারলেন । আমি খুব নীরব ছিলাম । স্যার , আপারা বইতে যে রকম পড়ায় বা সত্যের সন্ধান নিয়ে আলোচনা হয় তেমনটা বাস্তবে তারা ও প্রয়োগ করে না । নিজের ভিতর একটা কেমন জানি দিন দিন জটলা বেধেই চলছে । মায়ের কাছে এসে প্রশ্ন করতাম মা " বইয়ের ভিতরে যা লেখা তা সত্য না মানুষ যা করে তা সত্য" । মা বলতো তোর অত বোঝার দরকার নেই চুপচাপ বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা তা বলে তা মুখস্ত করে পরীক্ষার খাতা দিয়ে আসবি । বলতাম "বইয়ে তো লেখা সদা সত্য কথা বলি বা পরের উপকার করি কিন্তু আমরা কারণে অকারণে মিথ্যা কথা বলি পারলে অপকার করি উপকার তো দূরের কথা ।
কেন এমন করি !এর উত্তর কোথায় আমি খোজা শুরু করলাম । সঠিক উত্তর আর মিলে না । ছোটবেলাতে সবাই খেলাধুলা করে, হইহুল্লোড় করে, আমি নিশ্চুপ হয়ে এক জায়গায় বসে থাকতাম আর ওদের খেলাধুলা দেখতাম খুব নরম স্বভাবের ছিলাম । মজার বিষয় হচ্ছে" আমার বান্ধবীরা আমার আমার সাথে এসে খোঁচা দিয়ে কথা বলতো । আমি তখন বিরক্তি বোধ করতাম তবে কিছু বলতাম না । সুযোগ পেলে সবাই খোঁচা মারে সেটা আমার আর বোঝার বাকি রইল না ।
প্রাথমিক বিদ্যালয়ের গণ্ডি পেরিয়ে মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে প্রবেশ :
পৃথিবী আমারে চায় রেখো না বেঁধে আমায় ।
নিশ্চুপ সুকান্ত এখন চঞ্চল সুকান্ত রূপান্তরিত হল ।
ফটিক চরিত্র ফুটে উঠল আমার ভিতর । পাড়ার সকল কে নিয়া একসাথে খেলাধুলা করা হৈ হুল্লোড় করা যেন ছিল নিয়মিত কর্ম । সেই দলে নেতা না হলেও আমি ছিলাম নেতার বুদ্ধিদাতা বলা চলে" গোপাল ভাড় "
কোন ঘটনায় না থাকলেও অঘটনায় একধাপ এগিয়ে নিলাম । বইগুলো আগের মত আর পড়া হয় না । থাকবো নাকো বদ্ধ ঘরে দেখব এবার জগৎটাকে কেমন করে ঘুরছে মানুষ যুগান্তরের ঘূর্ণিপাকে যুগ যুগ যুগান্তরে । এই বয়সেই আমি স্বেচ্ছাসেবকের খাতায় নাম লিখে ফেলেছি । পাড়ার যত কাজ আছে সব আমরাই করিতাম , যেটাকে বলে আজাইরা কাম ।। যেখানে তার পরিবারের তিন বেলা খাবার জোটাতে কষ্ট হয় সেখানে পড়াশোনা করে কি হবে । নিজেকে মাঝে মাঝে পরিবারের পরগাছা মনে হতো । চাচাদের আয় ততটা সচ্ছল ছিল না তবুও আমাদেরকে একসাথে রেখে তিনবেলা ভাত দিয়েছে তাতো ভগবান স্বরূপ । এরপর বাড়তি খরচ কে বহন করে কিভাবে বহন করে তাই কিছু বলার ছিল না । নিরব যন্ত্রণা থেকে মুক্তির পথ খুঁজেছি আমি বহুবার ।
অনেকবার চেয়েছিলাম পড়াশোনা করবো না আবার না করলেই বা কি করব ? বেশি কষ্ট অনুভব করতাম যখন নতুন বছরে শ্রেণীতে উত্তীর্ণ হয়ে বই কিনতে হতো , পরীক্ষার ফি দেওয়ার সময় । আমার বড় চাচা ও তার বড় ছেলের ভূমিকা ছিল মুখ্য । বিশেষ করে তাদের সাথেই আমার পরিবারটা একসাথে থাকতো । আমার এক চাচা ছিলেন ইংরেজি শিক্ষক । মায়ের বিদ্যালয়ের বেতন ও টিউশন ফি দেওয়ার মতো সামর্থ্য ছিল না বড় চাচা চার ভাগের এক ভাগ টাকা দিত শিক্ষকের কাছ থেকে পারমিশন নিয়ে প্রতিদিন পরীক্ষা দিতাম । আমরা ভাই-বোন সবাই পড়াশোনা করতাম অনেক খরচ আমার চাচাদের চালাতে অনেক কষ্ট হতো কিছু বলতে পারতাম না বলার বাকি থাকে না
তারা যা করছে তা তো অতুলনীয় । বুঝতে শিখেছি অভাব কাকে কয় । আমার পরিবার কখনোই আমার পিতার অভাব বুঝতে দেয়নি কিন্তু কারনে অকারনে আমার বটগাছটার কথা বেশ মনে পড়তো । পেয়েছিলাম অনেক তবুও অপূর্ণতার স্বাধ আমার থেকে যেত । পিতা শ্রী যদি বেঁচে থাকতো তাহলে হয়তো আজ টিউশন ফি নতুন বইয়ের স্বাধ পেতে আমাকে অন্য কারো কাছে হাত পাততে হতো না । আমার মায়ের চেষ্টা বারবার ব্যর্থ হত । মাঝে মাঝে তিনি বিলাপ করতেন। অতীতকে নিয়ে ঘাটাঘাটি করে কি লাভ । বড় চাচা বিদ্যালয়ে গিয়ে আমাদের ভাই-বোনদের জন্য হাফ থ্রি ফুল ফ্রী করিয়ে প্রধান শিক্ষকের সাথে আলোচনা করে আমাদেরকে মানুষ করেছেন । বড় চাচা আমাকে নিয়ে খুব ভাবতেন । বড় চাচার ছেলেরা গ্রাম্য চিকিৎসক তাদের কাছ থেকেই হাত খরচ তা বহন করতাম । বড় চাচার বড় ছেলেকে আমরা বরদা বলতাম । আমার কাছে স্বয়ং ভগবান । মামা মাসি ,মামিরা ছিল পাশাপাশি কাছাকাছি । ছোটবেলা থেকেই আমার পরিবার আমাকে নিয়ে খুব দুশ্চিন্তায় থাকছেন । কারণ আমি জন্মগত ভাবে গরিব, প্রতিবন্ধী । এই দুর্বিসহ জীবন কে যাপন করা কতটা যে প্রতিকূলতা পার করতে হয় সেতো আরেকজন প্রতিবন্ধী অনুধাবন করতে পারে ।
#প্রতিবন্ধিত্ব_জয়ের_নেশায়_সুকান্ত :
শারীরিক কর্ম অক্ষম সুকান্ত খুঁজে পাচ্ছিল না পৃথিবীর বুকে কিভাবে সে জীবনকে যাপন করবে । আমার ডান হাত ও ডান পা খানিকটা সমস্যা সঠিক ভাবে হাঁটতে গেলে একটু সমস্যা হয় ডান হাত দিয়ে ভারী কাজ করতে পারিনা । আমার এই প্রতিবন্ধকতা সচরাচর বোঝা যায় না । হাটতে গেলে ডান পা একটু টেনে হাটি ।
ভালোবাসা পাওয়ার মাঝে সব পূর্নতা ও তৃপ্তি থাকে না।
কিছু কিছু সময় ভালোবাসা না পাওয়ার মাঝেই অনেক পূর্নতা ও তৃপ্তি থাকে। সমাজ আমাদেরকে করেছে ধিক্কার , সামাজিক প্রাণীগুলো দেখেছে অবহেলার চোখে । আমাদেরকে মানুষ গুলো কেমন যেন একটু আড়চোখে দেখে । সমাজের প্রতি আমার ক্ষোভ আছে । আমি যখন কোন নতুন বস্ত্র পরিধান করিয়া বাহির হইতাম তখন ডান পা খানিকটা টেনে দিতাম সমাজের নির্বোধ কিছু সামাজিক প্রাণী আমাকে ভেংচি মারিত "দেখো, সুকান্ত, নতুন পোশাক তৈরি কেমন ঠং করে হাটে " । এ কথা শ্রবণ করা মাত্র আমার ভিতর দুঃখ আসিয়া ভিড় জমায় প্রতিশোধ নেওয়ার নেশায় বিভোর থাকতাম ।উত্তর জানা ছিল না তাদেরকে কে বলে " আমার পায়ের সমস্যা, আমি অস্বাভাবিক শিশু । সান্তনা দেওয়ার মতো কেউ ছিল না । কোন কিছু কিনতে গেলে দোকানদার এর কাছে আমি ডান হাত প্রসারিত না করে বাম হাত করতাম । তখন দোকানদার ও আমাকে বকাঝকা করত । বলতো ডান হাত কি কাউয়ায় খাইয়ায় ফালাইছে । এরূপ কিছু অশ্লীল ভাষা প্রয়োগ করতো আমার উপর । নীরবে সহ্য করতাম । সে হয়তো জানতো না আমার বাম হাতে সমস্যা । এই ভেবে উত্তর দিতাম না । এত সমস্যা থাকা সত্বেও আমি বিশ্বাস করেছিলাম স্বয়ম্ভু আমার পাশে আছেন পৃথিবীর কোথাও না কোথাও আমার একটা অবস্থান হবে আমিও পৃথিবীর একজন নাগরিক হিসেবে দায়িত্ব কর্তব্য পালন করব । শুধু দেশ না বিদেশেও আমার নাম রেখে যাবো । বাবার আদর 'কি" পাইনি । মা
তো ছিল বুঝেও অবুঝ ।
#সাইকেল_চালাতে পারেলে প্রতিবন্ধিত্ব দূর করা যাবে !
একবার ভাবলাম আমি সাইকেল চালানো শিখব । সাইকেল ভাড়া নিয়ে বন্ধুবান্ধব সাথে করে মাঠে সাইকেল ্চালানো্র জন্য সাহায্য করতো ।
দু একবার সাহায্য করত যখন দেখতো আমি পারতাম না তখন আমাকে একা রেখে ওড়াও চলে যেত ।
বলতো তোর দ্বারা সাইকেল চালানো সম্ভব হবে না ।
আমি একা একা সাইকেল চালানোর চেষ্টা করতাম । পারতাম না একপর্যায়ে সময় শেষ হওয়ার আগেই সাইকেল যারা ভাড়া দিত তাদের কাছে জমা দিয়ে আসতাম । অদম্য ইচ্ছাশক্তি আর দৃঢ় বিশ্বাস ছিল আমি পারবো । অনেকবার সাইকেল ভাড়া নিয়েছি, আবার ফিরে এসেছি । সাইকেল চালানো আমার আর শিখা হলো না । ছোট ভাইকে স্বর্ণ কারি কাজ শেখানোর জন্য পাশের গ্রামে একটা দোকানে দেওয়া হল । ও মাঝে মাঝে দুপুরে আমাদের বাড়ি আসত একটা সাইকেল নিয়ে । আমি একা একাই সেই সাইকেলটি দিয়ে সাইকেল চালনা শিখে যাই । এখন আমি সাইকেল চালাইতে পারি
#আমার_দ্বারা_সব_সম্ভব হবে । আমি পারবো পারবো ই । তখন থেকে আমার মানসিক প্রতিবন্ধকতা দূর হয়ে গেল শারীরিক প্রতিবন্ধকতা আমার কাছে কিছু মনে হলো না । যেহেতু আমি সাইকেল চালাতে পারি কোন কিছুই ব্যাপার না ।
ফটিক চরিত্রে সুকান্ত : কোন বাঁধাই এখন আর আমার কাছে কোনো বাধা নয় । সমাজের কাকের নেয় আমি এখন সমাজ পরিষ্কারক হিসেবে নিজের নাম লিখলাম । গ্রামের রাস্তা ঘাট যেকোনো কাজ মেরামতের জন্য সুকান্ত টিম হাজির । ক্রিকেট টিম ম্যানেজার, আম্পেয়ার, রাজনৈতিক মঞ্চে ভাষণ দেওয়া , এগুলো ছিল নিত্য দিনের কাজ । আমাদের গ্রামে আমার এক ছোট ভাই ছিল ফ্লেক্সিলোড করত । অন্যের দোকানে সে কাজ করতো । একবার মালিকের কথায় ছাদ পরিষ্কার করতে গিয়ে বিদ্যুৎ স্পর্শে মারা যায় । মৃত দেহের সাথে শরীয়তপুর যেতে হবে মর্গে পরীক্ষা হবে কিভাবে সে মারা গিয়েছে । পুলিশ লাশের সাথে একজনকে যেতে বলছে । পাড়ার কেউ রাজি হল না । সেদিন বুঝেছিলাম মৃত্যুর পরে তোমার পাশে যে থাকবে সে তোমার আপন জন । আমি কাউকেই লাশের সাথে যেতে রাজি হতে দেখলাম না । ওই ছোট ভাইটি আমাকে বেশ সাহায্য করত সে ছিল আমার অলিখিত ব্যাংকার । যখন টাকা চাইতাম তখন সে অবলীলায় ধার হিসেবে টাকা দিত আমি যখন পারতাম তখন দিয়ে দিতাম। অবসর টা ওখানেই কাটিয়েছিলাম । ওর ব্রেইনটা ছিল একটা মিনি কম্পিউটার । পাড়ার সবার মোবাইল নাম্বার মুখস্থ ছিল তার । সেখান থেকেই রোবটিক্স দুনিয়ার প্রতি আমার মোহ জন্মে । সে সবাইকে উপকার করেছিলো কিন্তু মৃত্যুর পর কেউ তার সাথে নেই । এই বিষয়টা তখন আমাকে বেশ আকর্ষিত করল । সন্ধ্যাবেলা আমি মৃত দেহ নিয়ে নসিমন করে জেলার উদ্দেশ্যে রওনা হলাম । আমি আর লাশ নসিমন গাড়ি চলছে রাস্তা ধরে সেদিন থেকে পৃথিবীর সম্পর্কে ধারণা বদলে গেল । আমি বুঝতে পারলাম "পৃথিবীর কাছ থেকে আমার নেওয়ার কিছুই নেই বরংচ জীবন থাকা অব্দি আমাকে শুধু দিয়েই যেতে হবে দিয়েই যেতে হবে । শুধু স্বয়ম্ভু আমাকে দিবে । স্বেচ্ছাসেবকের পরীক্ষা দিলাম সেই লাশবাহীতো নসিমনে বসে । সাংবাদিক আশিয়া নানা রকম প্রশ্ন করিল তাহা উত্তর দিলাম সাবলীল ভাষায় । সেদিন মানবিকতা ও মৈত্রী পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হলাম । পুর্নজন্ম হল । নিজের মধ্যে মানবিক সুকান্ত কে খুঁজে পেলাম ।
ছাত্র হিসেবে সুকান্ত : ছাত্র হিসেবে আমি দ্বিতীয় শ্রেণীর । এসএসসি পরীক্ষার সময় প্রধান শিক্ষক সাহেব আমাদেরকে ভালো ফলাফলের আশায় আবাসিকে নিয়ে রাখলেন । আমরা যারা টেস্ট পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে ছিলাম সবাইকে একসাথে পড়াশোনার জন্য নিবিড় পরিচর্যার মাধ্যমে আবাসিক জায়গায় অবস্থান করলাম । একসাথে অনেকগুলো বানর যদি রাখা হয় তাহলে অবস্থা কেমন হয় তা আর বলে বোঝানোর দরকার হবে না । পড়াশোনা ভালো হওয়ার জন্য শিক্ষকরা আপ্রাণ চেষ্টা করেছিলেন আমরা কেউ কারো কথা শুনিনি । দুষ্টুমিতে আমরা সেরা । ওই বছরই প্রথম কোন পরীক্ষার্থীদের হোস্টেলে রেখে পড়াশোনা করেছেন নতুন প্রধান শিক্ষক । নিশ্চয়ই থানায় ভাল রেজাল্ট করবে এই বিদ্যালয়টি । এরূপ আশা করা অস্বাভাবিক নয় । হিতে হল বিপরীত । রাতের আধারে আমরা তাস খেলা সহ পাড়ায় চুরি করা শুরু করলাম । পড়াশোনা আর হলো না । ফটিক তার টিমকে নিয়ে বেশ ভালই আছে । পড়াশোনার হচ্ছে না সকালে 9 টায় ঘুম থেকে উঠে কোচিং করা বিকেলে খেলাধুলা শেষে সন্ধ্যায় বই নিয়ে বসা । বসতে না বসতেই বন্ধুদের ডাক চলো আমরা তাস খেলি । আর কি করার তাস খেলতাম রাত দশটায় দেয়াল টপকিয়ে
টিমকে নিয়ে চুরি করতে বের হয়ে যাওয়া । পড়াশোনার সব গোল্লায় গেল । ওই বছর ৮/১০ জন বাদে সবাই অকৃতকার্য হয়েছিল । আমি দুই বিষয়ে অকৃতকার্য হয়েছিলাম তাও অংক এবং ইংরেজি । পড়াশোনায় অকৃতকার্য হওয়া সুকান্ত তার সময় কাটানোর জন্য দেশ-বিদেশে ভ্রমণ করা শুরু করলো । এমন কোনো আত্মীয়-স্বজন নেই যার বাসায় আমি ভাত খাইনি । ফেল করলেও সুকান্ত সাহিত্যচর্চায় একধাপ এগিয়ে ছিল তা নিঃসন্দেহে বলতে হয় । সঙ্গদোষ আর রঙ্গ দোষ জীবনটাকে অতিষ্ঠ করে তুলল ।
দ্বিতীয় বছর শিক্ষক মহাশয়রা আমায় পরীক্ষা দেওয়ার সুযোগ দিলেন না । তৃতীয়বারের সময় আমার শ্রদ্ধেয় ইংরেজি শিক্ষক কাকা তার উৎসাহে উৎসাহিত হইয়া পরীক্ষা দিয়া উর্ত্তীণ হলাম । তিনবারে উর্ত্তীণ হওয়া সুকান্ত আর টেবিলে বই নিয়ে বসা হলো না ।
#যাদের_খুব_সুখী_দেখে_তোমার_মনে_হয় নিজের জন্য আফসোস জমা হয় ।
একটু দৃষ্টি বদলে তাকিয়ে দেখো তাদের দিকে,
যারা তোমার থেকে অনেক অনেক #বেশি_ অসহায় ।
#গৃহপালিত_শিক্ষক_ সুকান্ত : পাড়ায় পাড়ায় এখন আমি অন্যর ছেলেমেয়েদেরকে সুশিক্ষায় শিক্ষিত করার তরে শিক্ষক হিসেবে নাম লিখলাম । নিজে পড়াশোনা দিয়ে কিচ্ছু পড়তে পারলাম না কিন্তু অন্যদেরকে দিয়ে ঠিকই করিয়ে নেব । এই মনোবল নিয়ে আমি হলাম রাতুল মাস্টার । অতীতের ভুলগুলো মানুষ ভুলে গিয়ে নতুন করে বাঁচার স্বপ্ন দেখলাম । আমার পাঠশালায় আমার মত গরীব ছাত্রছাত্রীরা পরতে আসি তো । মাস শেষে অনেক টাকা আসার কথা থাকলেও পর্যাপ্ত পরিমাণ টাকা আমায় দিত না ।
ওরাও আমার মত গরীব অথবা গরীব ঘরের সন্তান দিন আনতে পান্তা ফুরায় । তাই ফি আদায়ের জন্য জোরে দিতাম না । বেতন পেলে বিভিন্ন প্রশিক্ষক দের সাথে বিভিন্ন সময় দেশ বিদেশ প্রশিক্ষণ দিতে যেতাম । অভিজ্ঞতা অর্জন হতে লাগলো । ইন্টারমিডিয়েট দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র আমি তখন এমন সময় এক নামকরা কোম্পানির এজেন্ট এর সাথে আমার পরিচয় হয়ে গেল খালার বাসায় বেড়াতে গিয়ে । অসম্ভব স্বপ্ন দেখা শুরু করলাম আর কেউ পারুক আর না পারুক ওই কোম্পানির পরিকল্পনা অনুযায়ী আমি জিৎ বই । এদিকে অর্থের অভাবে এইচএসসি পরীক্ষা দেওয়ার ইচ্ছা মারা গেল । অবশ্য তিনবারে এইচএসসি পাস করলাম ।
#বাকপটু_সুকান্ত
স্বপ্ন এখন টাকা ইনকাম । দেশ-বিদেশে আমাকে তারা তৈরি করল একজন ভালো বক্তা হিসেবে । আমি তাদের শিখানো বার্তা সুন্দর করে বলতে পারতাম এটা ছিল আমার বিশেষ গুণ । দলে কাজ করা যেহেতু আমার জিনে আছে সেহুতু সাংগঠনিকভাবে দলের নেতৃত্ব আমার কাছে থাকতো ।
বিশ্বাসের প্রতীক ছিলাম আমি । সরল বিশ্বাস আর স্বাভাবিক আচরণ আমাকে অনেকদূর কিন্তু নিয়ে গিয়েছিল । বাংলার বিভিন্ন জেলায় বিভিন্ন থানায় গ্রামে সুকান্তর পদচারণায় মুখরিত ছিল । বাক্য বাহানায় মানুষকে মাতিয়ে তুলতাম সহজেই । পরিকল্পনা মাফিক জীবন চলছিল জীবনের মত । হঠাৎ বিনা মেঘে বজ্রপাত হল কম্পানি তছনছ হয়ে গেল । আমরা ছিন্ন-বিচ্ছিন্ন হয়ে গেলাম । আমি আর কোম্পানির অসময়ে দূরে যেতে পারলাম না । আঁকড়ে ধরে রাখার চেষ্টা করলাম তবুও পারছি না হতাশায় নিমজ্জিত হয়ে গেলাম আবার আমি । অতিতের ইতিহাস এখনো আমাকে নির্ঘুম রাখে সারারাত । অস্থির ব্যথা বাঁধে আমার মনের গহীনে । শূন্য থেকে 100 । 100 থেকে আবার শূন্য । এরমাঝে বিবেককে বিসর্জন দিতে পারলাম না । নাম জানা অজানা অনেক কোম্পানির অলিখিত ট্রেনার হিসেবে বক্তব্য দিয়ে টাকা ইনকাম করা সুকান্ত আজ টাকার কষ্টে ভুগছে । অনেকের সাথে প্রতিশ্রুতি বদ্ধ ছিলাম ভালো থাকবে একসাথে থাকব খারাপ থাকলে একসাথে থাকব । এই ভেবে আর কোন পথে যাওয়া হলো না ।
এক টা ওষুধ কোম্পানির রিপ্রেজেনটিভ ট্রেনার হিসেবে যোগদান করলাম । ওই কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক দুর্বল ছিলেন তাই কোম্পানিটা ধ্বস নেমে গেল । আমি চলে এলাম ।
এরুপ ৫ /৭ টি কোম্পানিতে যোগদান করে ও সঠিক পথের মিল পেলাম না
এখানেই জন্ম হয়েছিল লেখক সুকান্তের ।
লেখক হিসেবে সুকান্ত: কোম্পানির জন্য লেখালেখি করি জনপ্রিয়তা আবার উঠে আসে । লেখক সুকান্তকে সবাই চিনে ছদ্মবেশে লিখলাম কোম্পানি কে উদ্ধার করার তরে । লেখার কারণে বহু ব্যক্তির হুমকি খেলাম । সাহস দিয়ে লিখি চললাম সেখান থেকে জন্ম হয়েছে সাহসী সুকান্তের । মৃত্যুকে জয় করলাম । মৃত্যু হয় এখন আমাকে দেখলে পালিয়ে যায় । পৃথিবীর বুকে আমি একজন লেখকের নাম দেখতে চাই ।
#বল_বীর_উন্নত মম শীর ।
উদ্যোক্তা সুকান্ত "
তিন কিলো গোলে কোন মাধ্যমিক বিদ্যালয় নেই আমাদের । পাড়ায় দেশ বিদেশি মুরুব্বিদের উৎসাহ উদ্দীপনায় তৈরি হতে লাগলো স্বপ্নের এক বিদ্যালয় যেখানে সুকান্ত সৈকত একজন স্বেচ্ছাসেবক ।
সবাই মিলে তৈরি হলো বিদ্যালয় মোদের বিদ্যালয় । বাড়ি বাড়ি গিয়ে বিদ্যালয় ছাত্র-ছাত্রী ভর্তি করালাম ।
শিক্ষক হিসেবে আমি সেখানে পরীক্ষা দেওয়ার মাধ্যমে প্রথম উত্তীর্ণ হয়ে নিয়োগ পেলাম । এটা আমার কাছে প্রথম বিজয় মনে হয় হল । কপালে সইল না । ছাত্র-ছাত্রীদের কাছ থেকে বেতন পর্যাপ্ত পরিমাণ আসলো না । দাতারা দান কমিয়ে দিল । বিদ্যালয় শিক্ষকদের বেতন দেওয়া কষ্টসাধ্য হয়ে গেল । প্রাণের বিদ্যালয়টি ছাড়তে বাধ্য হলাম । । মধ্যবিত্ত পরিবারে বেঁচে থাকার জন্য প্রাণ কোম্পানিতে এস আর হিসেবে যোগদান করি । তাও আবার নিজের থানায় ।
কোচিং শেষ করে সাইকেল নিয়ে দোকানে দোকানে মাল বিক্রি করতে যেতাম ।
#শিক্ষক সুকান্ত : পাড়ার ইস্কুলে শিক্ষকতা পেশার পাশাপাশি টিউশনি করাতাম এসএসসি ও এইচএসসি ইংরেজি । অতীতের কলঙ্ক খানিকটা কমতে লাগলো ।
থানায় নাম প্রসারের জন্য তথ্যপ্রযুক্তি মেলায় আমি একটি মাদ্রাসার হয়ে কাজ করে প্রথম বানালাম । সেখানে আমি মাদ্রাসার কেউ না সাহায্যকারী হিসেবে গিয়েছিলাম যেটাকে স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে জানি । এক ধরনের স্কুল বিদ্যালয় মাদ্রাসার শ্রমিক হিসেবে বিভিন্ন অনুষ্ঠানে সাহায্য করেছিল আমার কাজ । প্রথম হওয়ার পরে আমার নামে একটি সার্টিফিকেট আনতে গিয়েছিলাম সেখানেও বাধা পড়েছিল আমি ওই মাদ্রাসার কে । কেউ না । এখন তো মানুষ অনলাইনে অফলাইনে চাইলেই কারিগরি দক্ষতার জন্য সনদ প্রদান করে । আমি আনতে পারলাম না সেই সনদ । বিশ্ব নিখিল এতটাই আমার বিরুদ্ধে চলে গিয়েছিল । তবুও বিশ্বাস করেছিলাম আমি পৃথিবীর সেরা দের মধ্যে সেরা হব । চারটি নামকরা স্কুলে শিক্ষকতা পেশায় নিজেকে নিয়োজিত করি ।
পুরস্কারপ্রাপ্ত সুকান্ত : কলেজে কবিতা আবৃত্তিতে প্রথম ছিলাম । ভাষণে বক্তৃতায় প্রথম ছিলাম । অন্যের ভাষণ লিখিতাম আমি । কিছু পুরুষ্কার পেয়েছিলাম যা আমাকে উৎসাহ দেয় কারনে অকারনে । আমি যেই বিদ্যালয় তথ্যপ্রযুক্তি মেলায় শ্রমিক হিসেবে কাজ করতাম সেই বিদ্যালয়টি থানায় অথবা জেলায় প্রথমত
হতো । অনুষ্ঠানের তিনদিন আগে ছাত্রছাত্রীদের কে নিয়ে কোচিং করিয়ে কিভাবে প্রথম হতে হয় কিভাবে প্রদর্শনী করতে হয় তা শিখিয়ে দিতাম । এর জন্য আমি কোন বিদ্যালয় এর রেজিস্টার ভুক্ত শিক্ষক ছিলাম না
। ওরা জিতে গেলে আমি জিতে যেতাম এটা খুব আনন্দ লাগত সেখান থেকেই কারিগর বানানোর নেশা আমাকে প্রবলভাবে পেয়ে বসে । পিতৃহীন প্রতিবন্ধী সুকান্তের পাশে সৃষ্টিকর্তা ছাড়া কেউ থাকে নি ।
বারবার যে তার পরেও আমাকে দুর দুর করে তাড়িয়ে দিয়েছে সভ্য মানুষরা । ভবঘুরে সুকান্ত কেমন যেন একটু অবচেতন । নিজের ভালো নিজে বোঝেনা ।
এগুলো করলে প্রথম হওয়া যায় টাকা আসে না তো ।
বড় মা এবং আমি : আমি যখন দেউলিয়া তারা যখন সমস্ত মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে তখন আমার বড়মা আমাকে আগলে রেখেছে । তিনি আজ পৃথিবী ছেড়ে অনেক দূরে । আমার অসময়ে আশার আলো । জন্মের পরে আমরা ভাই বোন মা বলেই ডাকতাম । আমি এমন নারী পৃথিবীতে আর দেখি সর্বংসহা বুদ্ধিমতি । আমাদের পরিবারটা আগলে রেখেছেন পরম যত্নে । ভালো থাকবেন আপনি যেখানে থাকবেন ।
কয়েকটা সংগঠন গড়ে তুলি । সংগঠনগুলো মানবের তরে কাজ করে যাচ্ছে । দেশ ও দশের তরে কাজ করতে গেলে স্বেচ্ছাসেবক সংগঠনের ভূমিকা অনস্বীকার্য ।
বিশ্বাসী সুকান্ত : আমার পাড়ায় যখন কোনো আলোচনা বৈঠক হয় তখন মসজিদে সেখানে আমাকে নিমন্ত্রণ করে । আমি আমার পাড়ার অলিখিত আবদার । কাঁটাতারের ব্যবচ্ছেদ আর দেশ প্রেম এই দুই মিলে আমাকে পৃথিবী প্রেম করতে বাধ্য করেছে ।
জন্ম দিয়েছে সাম্যবাদী সুকান্তের । দেশের প্রতি প্রগাঢ় ভালোবাসা থাকার কারণেই যাওয়া হলো না আমার ইন্ডিয়াতে । আমার মাকে অনেকেই বলতো যেটা সন্তানকে ইন্ডিয়ায় পাঠিয়ে দাও সেখানে মানুষ করুক ওর কাকা । কাকা বহুবার নিতে চেয়েছিলেন আমরা যাইনি । কপোতাক্ষ নদ পড়ে মাইকেল মধুসূদন দত্তের প্ দেশপ্রেম সম্পর্কে জানতে পারলাম। তাই সংখ্যালঘু হওয়া সত্বেও দেশপ্রেমের প্রবল টানে দেশেই থেকে গেলাম । চির ঋণী হয়ে রইলাম দেশের কাছে গ্রামের কাছে যারা আমাকে এই প্রজন্ত নিয়ে এসেছে তাদের কাছে ।
"" এমন দেশটি কোথাও খুঁজে পাবে নাকো তুমি
সকল দেশের রানী সে যে আমার জন্মভূমি"
ডি এল রায়ের কবিতা চরণ দুটি বারং বার মনে পড়ে যায় ।
#এস_আর_হিসেবে_সুকান্ত :
থানাকে প্রদক্ষিণ করাই ছিল আমার কাজ । একদিকে সংসারের হাল ধরতে হবে অন্যদিকে আমার দেশ প্রেম করতে হবে । টাই কোর্ট ছেড়ে মা মাটির সাথে মিশে তে গিয়ে নতুন মানবিক সুকান্তের জন্ম হলো ।
উপর তলা থেকে সরাসরি নিচতলায় বস্তিতে অবস্থান ।
সাইকেল চালিয়ে আমার থানায় দোকানে দোকানে গিয়ে প্রাণ কোম্পানির বিজ্ঞাপন দেখে দোকানদারের কাছ থেকে পন্যর অর্ডার নেওয়া কতটা আনন্দের ও কতটা বেদনাদায়ক কষ্টের একজন ভুক্তভোগী শুধু জানে । সাইকেল চালাতে কষ্ট হতো কারণ এক পায়ের সমস্যা ছিল । অনেক সময় আমার সহযোগিরা
আমার সাইকেল টিকে সাঁকো
পার করিয়ে দিতো । এখান থেকেই জন্ম হয়েছিল সহযোগী মনোভাব । এক পায়ে সমস্যা থাকলেও হাজার পা আমার সাথে থাকত কারণে-অকারণে তারা সাহায্য করতো। মানুষ মানুষের জন্য।জুস কোম্পানিতে আমার দায়িত্ব ছিল ।। রেমি কসমেটিকের কাজ করার সুবাদে ঢাকার বিভিন্ন থানার অলিগলি চিনার সৌভাগ্য হয়েছিল । টেক্স সলবার বিডি নামের গার্মেন্টস গার্মেন্টস এক্সেসরিজ কোম্পানিতে চাকরি করেছিলাম ।
#বিশ্বজোড়া_পাঠশালা_মোর_সবার_আমি_ছাত্র : আমি শিখেছি সাধারণের মধ্যে লুকিয়ে আছে অসাধারণ প্রতিভা ।আমার পাড়াগাঁয়ের প্রতিটি দোকানদারের মাথা এক একটা বিল গেটস আমি তা নিঃসন্দেহে বলতে পারি । আমি যত জটিল হিসাব করেই পণ্য বেশি না কেন তাহারা সহজেই তাহার লাভ নিয়ে হিসাব করে আমাকে বলতো বানিয়ে তাদের স্বার্থ উদ্ধার করে দাবি আদায় করে সেটা আমি দেখেছি উপলব্ধি করেছি হৃদয় দিয়ে য় তখন মান বেকারত্বই আমার মনে হয় প্রথম দায়ী ।
জীবণ নামক _লাল_কুকুর যখন ধাওয়া করে পিছন দিক :
১) সাত কিলো হেঁটে গিয়ে একটি বিদ্যালয়ে খন্ডকালীন শিক্ষকতা পেশায় নিয়োজিত ছিলাম । পথ দিয়ে হেঁটে কত কষ্ট হতো প্রতিবন্ধকতা আমার জন্য কোন প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করতে পারেনি তিনি থাকলে পাশে পারবেন না ।
২) তিন কিলো হেঁটেছিলাম দুপুরবেলা ভাত খাওয়ার জন্য বাসায় লজিন পরিয়ে ।
৩) ছয় কিলো সকালে চার কিলো বিকালে হিসাববিজ্ঞানে পারদর্শী হওয়ার জন্য পড়তে গিয়েছিলাম । তাও পায়ে হেঁটে ।
৪) ঢাকায় 50 কেজি ওজনের মেশিন একটানে কাঁধে তুলে নিয়েছিলাম । কুনিপাড়া বাবলি আজও আমার পরিচিত শিক্ষালয় ।
৪) মালিবাগ মোড়ে অতর্কিত হামলার শিকার হয়েছিলাম ।
৪) প্রেসক্লাবের সামনে বহুবার মাইকে মাইকে
ভাষণ দিয়েছিলাম । সত্যকে নিয়ে সামনের দিকে গিয়েছিলাম বহুবার
৫) কুচক্রী মহল দ্বারা বহুবার শাসিত হয়েছি কিন্তু মাথা নোয়ায় নি ।
৬) মার খাওয়া এটা কোন ব্যাপার না । সত্যকে বিক্রি করতে পারিনি ।
৭) জীবনযাত্রায় সমস্যা খুঁজেছি সমাধান করার জন্য ।
সমাধান করতে গিয়ে অনেক দোষ মাথা পেতে নিয়েছি ।
৮) এক বালিকাকে ভালবেসেছি বলে অন্য বালিকাকে এখনো গ্রহন করি না । যদি করি তবে তার বালক গ্রহণ করার পরে ।
৯) মান অভিমান থাকার কারণে এখনও কোন পাণ্ডুলিপিতে আমার লেখা ছাপা পাইনা
১০) না খেয়ে থাকতে থাকতে এখন ক্ষুদা কাকে বলে ভুলে গিয়েছি ।। অন্যকে খাওয়াতে পারলে নিজের ক্ষুধা নিবারণ হয় ।
১১) টাকা ,নারী, চেয়ার ,এখন আমার কাছে শুধুই তিনটা নাম ।
১২) নিকোটিনের মত নেশায় আসক্ত একটি পরিবার তার তার নাম #নিজের_বলার_মত_একটা_গল্প ফাউন্ডেশন এবং গুরু #জনাব_ইকবাল_বাহার_ জাহিদ স্যার
১৩) বাকি জনমে মিথ্যা আর অসত্যের সাথে কখনো মোলাকাত হবে না । বিশ্বাসঘাতকের সাথে মিলন হবে না ।
প্রিয় পরিবার থেকে অনেক কিছু শিখেছি whatneedbd.com নামে . অনলাইনে তরল পণ্য বিক্রি করতেছি । মধুওয়ালা সুকান্ত নামে পরচিত ।লেখালেখি করছি । শিখছি আমি আপন মনে ।
আপনাদের কাছ থেকে যা পেয়েছি তা আমার জীবন দশায় স্মরণীয় থাকবে ।
ইতিহাস সৃষ্টি করেছেন
নিজের বলার মত একটা গল্প ফাউন্ডেশন। এই মহান ভালো মানুষটির প্রতি কৃজ্ঞতা প্রকাশ করছি এবং প্রিয় পরিবারের সকল ভাই বোনদের প্রতি রৈলো অকৃত্রিম ভালোবাসা।
স্ট্যাটাস অব দ্যা ডে"- ৫৫৯
Date:- ২৬/০৬/২০২১
সুকান্ত সৈকত
ব্যাচ ১০ ম
রেজি ঃ ১৩৫৯৮
কমিউনিটি ভলান্টিয়ার
ও
উপজেলা এম্বাসেডর
জেলা শরীয়তপুর