আমার স্বপ্ন আমি অসহায় মেয়েদের পাশে দাঁড়াবো। কারন মেয়েদের নিজের একটা পরিচয় দরকার।
# ঘুরে দাড়ানোর গল্প
👉আল্লাহ সর্ব শক্তিমান"
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম
আস্সালামু আলাইকুম,
ওয়া রহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু।
👉দয়া করে সময় নিয়ে পড়ে মন্তব্য করবেন।
🍁🍁🍁🍁🍁🍁🍁🍁🍁🍁🍁🍁🍁🍁🍁🍁🍁
👉শুরুতেই আমি শ্রদ্ধার সাথে স্বরন করছি, আমার প্রিয় প্লাটফর্ম "নিজের বলার মতো একটা গল্প" ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা আমাদের সকলের প্রিয় মেন্টর, প্রিয় শিক্ষক, তরুন প্রজন্মের আইডল, জনাব Iqbal Bahar Zahid স্যারকে। যার অক্লান্ত পরিশ্রমের মাধ্যমে আমরা এতো সুন্দর একটা প্লাটফর্ম পেয়েছি।
যার শিক্ষায় শিক্ষিত হয়ে নিজের ছোট ছোট অপূর্ণ স্বপ্নগুলো বাস্তবায়ন করার সাহস করছি।
🌷🌷🌷🌷🌷🌷🌷🌷🌷🌷🌷🌷🌷🌷🌷🌷
👉যেই প্রিয় মানুষটি আমাদের কে প্রতিনিয়ত স্বপ্ন দেখিয়ে যাচ্ছেন,,, আপনাদের ফ্রী প্রশিক্ষণ দিয়ে যাচ্ছেন । প্রিয় স্যারের দেখানো পথ আমরা তরুন তরুনীরা অনুস্বরন করছি। সেই প্রিয় মানুষটির প্রতি আমার অনেক অনেক দোয়া ও ভালেবাসা এবং সব সময় কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে যাবো ইনশাআল্লাহ ।
🌻🌻🌻🌻🌻🌻🌻🌻🌻🌻🌻🌻🌻🌻🌻🌻
👉সকলের প্রতি সম্মান ও ভালোবাসার রেখে স্বরন করছি, আমাদের প্রিয় প্লাটফর্মের সাথে যুক্ত সম্মানিত প্রায় ৬ লক্ষ সহযোদ্ধা, ও সহপাঠী যারা যুক্ত আছেন নিজের বলার মতো একটা গল্প ফাউন্ডেশনের সাথে তাদের সবাইকে।
যেই সকল দায়িত্বশীল প্রিয় ভাই ও বোনেরা শত কর্ম ব্যস্ততার মাঝে থেকে ও কিছু সময় দিয়ে এই প্লাটফর্মের জন্য নিরলস ভাবে কাজ করে যাচ্ছেন। সকলের প্রতি আমার অফুরন্ত ভালোবাসা ও দোয়া রইলো। সবাই যেন ভালো মানুষের পাশাপাশি একজন সফল উদ্যোক্ত হতে পারেন।
🌺🌺🌺🌺🌺🌺🌺🌺🌺🌺🌺🌺🌺🌺
👉সন্মানিত প্রিয় বন্ধুরা কেমন আছেন সবাই? আশা করছি আপনারা যার যার অবস্থানে কর্ম ব্যাস্ততার মাঝেও সবাই আল্লাহর রহমতে ভালো আছেন।
আমি ও আপনাদের দোয়ায় আল্লাহর রহমতে অনেক ভালো আছি, আলহামদুলিল্লাহ।
🏵️🏵️🏵️🏵️🏵️🏵️🏵️🏵️🏵️🏵️🏵️🏵️🏵️🏵️🏵️🏵️🏵️
👉আমি আজকে আপনাদের সাথে আমার বাস্তব জীবনের গল্প থেকে কিছু কথা শেয়ার করবো। আশা করছি একটু সময় নিয়ে পড়বেন।
হয়তো অনেকেই আমাকে চিনেন না
🌻🌻🌻🌻🌻🌻🌻🌻
আমি ফৌজিয়া কলি, লক্ষ্মীপুর জেলার মেয়ে আমি। এই জেলাতেই জন্ম আমার এই জেলাতেই বেড়ে ওঠা। আমরা পাঁচ ভাই বোন ৩ বোন দুই ভাই।ভাই বোনদের মধ্যে আমি ছিলাম চতুর্থ। আমার বাবা একজন চাকরিজীবি ছিলেন।মা হচ্ছেন গৃহিণী।ছোট বেলা থেকেই অভাব কি জিনিস দেখিনি।বাবা অনেক পরিশ্রম করতেন আমাদের মানুষ করার জন্য।বাবা জীবনে অনেক দুঃখ কষ্ট সহ্য করেছেন কিন্তু তা আচ আমাদের গায়ে লাগতে দেয়নি কখনো। তাই ছোটবেলা থেকে অভাব কি জিনিস বুঝতাম না।যেহেতু আমি পরিবারের ছোট মেয়ে ছিলাম সবাই অনেক আদর করত ভালবাসতো।আমি ছোটবেলা থেকে প্রচণ্ড জেদি ছিলাম।যা বলতাম তাই পূর্ণ করার চেষ্টা করতাম।এইভাবে সবার আদর আর ভালোবাসায় কেটে গেল আমার শৈশব কৈশোর।সমস্যা শুরু হল যখন যৌবনে পা দিলাম।২০০৫ সাল আমি তখন ইন্টার সেকেন্ড ইয়ারে পড়ি। চারদিক থেকে বিয়ের জন্য প্রস্তাব আসতে শুরু করলো।গ্রামে একটা কথা চালু আছে যে মেয়েরা নাকি কুড়িতে বুড়ি হয়ে যায়।তাই সবার চিন্তা ভাবনা ছিল মেয়ে বড় হচ্ছে বিয়ে দিতে হবে।পরিবার থেকে সবাই রাজি ছিল কিন্তু আমি রাজি ছিলাম না। আমার ইচ্ছে ছিল আগে নিজের পায়ে দাড়াবো নিজের একটা পরিচয় তৈরি করবো তারপরে বিয়ে।কারন আমি সে ছোটবেলা থেকে শুনে আসছি আমার মা সব সময় বলতো মেয়েদের নাকি নিজস্ব কোনো পরিচয় নেই এমন কি নিজের কোনো বাড়ি হয় না।বিয়ের আগে বাবা আর ভাইদের পরিচয়ে পরিচিত হতে হয় বিয়ের পরে স্বামী তারপরে ছেলে সন্তানের নামে পরিচিত হতে হয়।তাই আমি চেয়েছিলাম আমার নিজের একটা পরিচিতি হবে আমার নিজের নামে সবাই আমাকে চিনবে আমার নাম নিয়ে আমার বাবাকে সবাই যেন বলতে পারে ওইযে অমুকের বাবা যাচ্ছে।কিন্তু না তা আর সম্ভব হয়ে উঠল না 2006 সাল আমার এইচ এস সি ফাইনাল আমার একটানা ২৬ দিন টাইফয়েড ছিল এই জ্বর নিয়ে পরীক্ষা দিয়েছিলাম ঠিকি কিন্তু রেজাল্ট তেমন ভালো আসেনি।রেজাল্ট যেদিন দিয়েছিল সেদিন অনেক কেঁদেছি কারন এই রেজাল্ট দিয়ে আমি আমার স্বপন পুরন করতে পারবো না।😭😭😭😭😭😭😭😭😭😭😭😭😭😭😭😭
তাই আবার পরীক্ষা দিতে চেয়েছিলাম কিন্তু কেউ রাজী হয়নি জেদ করে ওই বছর আর কলেজে ভর্তি হয়নি।ওই যে বললাম ছোটবেলা থেকে আমি অনেক জেদি ছিলাম আর এই জেদের কারণে আমার জীবন থেকে একটা বছর নষ্ট হয়ে গেল।২০০৮ সালে লক্ষীপুর সরকারী কলেজে ডিগ্রিতে ভর্তি হলাম শুরু হলো আবার আমার স্বপনের পথে যাত্রা।১ম বর্ষ,২য় বর্ষ খুব ভালো রেজাল্ট করলাম, ৩য় বর্ষে শেষের দিকে আবার সেই বিয়ে নিয়ে তোড়জোড় এইবার আর শেষ রক্ষাটা আর হলো না।কারন বাবার চাকরি বেশিদিন নাই উনি রিটাড হবেন তাই উনার ইচ্ছে ছিল আমাকে তার আগে বিয়ে দেবেন।তাই ফাইনাল পরীক্ষার ৩ মাস আগে আমার বিয়েটা হয়ে গেল।
🌷🌷
🍁🍁🍁🍁বিয়ের পরের গল্প 🍁🍁🍁
বিয়ের পরে আমার জীবনে অনেক ঝড় আসে নতুন একটা পরিবারে নিজেকে মানিয়ে নেওয়া সম্পুর্ন অপরিচিত একজন মানুষকে আপন করে নেওয়া। তার ঠিক দুইমাস পরে নিজে প্রথম সন্তানের মা হতে যাচ্ছি সেই খবরটা পাওয়া, এর মধ্যে আবার আমার স্বামীর চাকরিটা চলে যাওয়া।সব কিছু মিলিয়ে একটা মানষিক ডিপ্রেশন ভুগছিলাম।ঠিক তার কিছুদিন পরে আমার ডিগ্রী ফাইনাল পরীক্ষা শুরু হলো।সেই অসুস্থ শরীর নিয়ে পরীক্ষা তো দিলাম,কিন্তু পরীক্ষাটা তেমন ভালো হয়নি।জীবনে এই প্রথম আমি কোন পরীক্ষায় পাশ না করে ফেল করলাম।সেই স্কুল জীবন থেকে কলেজ জীবনে কোন পরীক্ষায় আমি কখনো ফেল করিনি সবসময় মেধাতালিকায় আমার নাম থাকত। আর আজ আমি জীবনের এইকোন মোড়ে এসে দাড়ালাম যে আমি এই পরীক্ষায় উওীন হতে পারিনি। সেদিন অনেক কেঁদেছি কাঁদতে কাঁদতে এই বলে মনকে বোঝালাম হয়ত এটাই আমার নিয়তি।তারপর শুরু হলো সংসার জীবনের টানা পোড়ন।আমার প্রথম কন্যা সন্তান পৃথিবীর মুখ দেখলো।বোঝেনইতো সংসারে যার আয় বেশি তার কদর বেশি ছিল।যেহেতু আমার স্বামীর আয় কম তাই আমাদের মা মেয়ের তেমন কদর ছিল না।অনেক অপমান অবহেলা সহ্য করে মেয়েটার দিকে আর মেয়েটার বাবার মুখের দিকে তাকিয়ে অনেক কিছু হজম করতাম। আমার স্বামী মানুষটা ছিল অনেক সহজ সরল আমার দেখা পৃথিবীর সেরা স্বামী।ওর টাকা পয়সা কম ছিল কিন্তু ভালবাসার অভাব ছিল না।ও কিন্তু চেয়েছিল আমি যেন পরের বার পরীক্ষা টা দেই। কিন্তু আমার মা আর আমার শাশুড়ি রাজী ছিল না,কারন আমার মেয়ে তখন সবে আমার কোলে আসলো।তাই আর হলো না স্বপ্নের পথে হাটা।সেখানেই নিজের স্বপ্নটাকে কবর দিতে হল।এর মধ্যে দুই তিন বছর কেটে গেল আমার ছোট মেয়ে আমার কোলে আসলো আমার বাবা আমাকে ছেড়ে আল্লাহর ডাকে সাড়া দিয়ে চলে গেলো।বাবা গিয়ে বুঝিয়ে দিল প্রিয়জন হারানোর কষ্ট টা যে কি।বাবা মারা যাওয়ার পর আমি প্রতিরাতে আমি বাবার জন্য কাঁদতাম। বাবার চলে যাওয়াটা আমার মেনে নিতে কষ্ট হচ্ছিল।এইভাবে দিন যাচ্ছে।তারপর ২০২০সালে শুরু হল করনা মহামারী ফেসবুকে বিভিন্ন গ্রুপের সাথে এড হতে থাকলাম সেইখান থেকে জানলাম বাংলাদেশের মেয়েরা এখন অনলাইনে বিজনেস করে নিজেরা কিভাবে স্বাবলম্বী হচ্ছে।তখন আমিও চিন্তা করলাম আমিও এই বিজনেসটা করবো যেইভাবা সেই কাজ ওর সাথে আলাপ করলাম প্রথমে রাজী হয়নি। পড়ে অনেক বোঝানোর পড়ে যাক রাজি হলো। কিন্তু জামানো কোন টাকা ছিল না যে ব্যবসা শুরু করবো তখন আমার এক চাচাতো ননদের সাথে কথা বলিও।আমার ননদ ও তখন অনলাইন বিজনস করে।ওই আমাকে পেইজ খুলে দেয়,ফেইসবুকে পেইজের নামে একটা গ্রুপ খুলে দেয়।তারপর ওর কাছ থেকে কিছু পন্য বাকীতে পাইকারী নিয়ে আমি নিজে বিক্রি করি।এবং ওর টাকা ওকে দিয়ে দেই আমারও কিছু টাকা লাভ হয় এইভাবে কিছুদিন যাবার পর আমার বড় বোন আর আমি দুইজনে মিলে যৌথ ভাবে শুরু করি। একেবারে শুন্য হাতে নেমেছিলাম আমি কিন্তু আপু কিছু টাকা নিয়ে নামে।আমরা দুই বোন ঢাকাতে পন্য এনে পাইকারী ও খুচরা সেল দিতে থাকি আলহামদুলিল্লাহ ভালোই সেল হতে থাকে।এখন আমাদের দুই বোনের মুলধন আলহামদুলিল্লাহ দুই লাখের কাছাকাছি।
কিছুদিন আগের কথা আমার মেয়ের স্কুলের একজন শিক্ষক Md Mahmudul Hasan sir আমাকে মেসেনজারে নক দিয়ে আমার বিজনেস সম্পর্কে জানতে চায় এবং এক পর্যায় আমাকে বলে যে আপনি তো বিভিন্ন গ্রুপের সাথে যুক্ত আছেন তো আপনাকে আমি"নিজের বলার মতো একটা গল্পো" ফাউন্ডেশনে যুক্ত করে দিচ্ছি কয়েকদিন গ্রুপে দেখেন জানেন আপনার ভালো লাগবো সেই আমার গ্রুপে জয়েন হওয়া।কিন্তু আমাকে জয়েন করিয়ে দিয়ে নিজেই চলে গেলেন না পেরার দেশে ভাইয়ার কথা মনে পড়তেই সত্যি অনেক খারাপ লাগলো।
❤️❤️❤️❤️❤️❤️❤️❤️❤️❤️❤️❤️
🌺🌺🌺🌺গ্রুপ থেকে যা শিখলাম🌺🌺🌺🌺
আমি গ্রুপে যুক্ত হই ১৩ তম ব্যাচ থেকে Sane Rafi ভাইয়ার মাধ্যমে রেজিষ্ট্রেশন করি।এবং ওনার মাধ্যমেই লক্ষ্মীপুর জেলার মেসেনজার গ্রুপে এড হই।সেই থেকে আমি মনে করি আমার শিক্ষাজীবন আবার শুরু হলো।কিভাবে নিজে একজন ভালো মানুষ হতে হবে।কিভাবে জীবনে সব বাধা অতিক্রম করে সামনে এগিয়ে যেতে হবে।আমাদের লক্ষ্মীপুর জেলার মেসেঞ্জার গ্রুপে প্রতিদিন বিকাল 4 টা 30 মিনিটে স্যারের সেশনগুলো নিয়ে চর্চা করা হয়।
🌺🌺🌺🌺🌺🌺🌺🌺🌺🌺🌺🌺🌺🌺
আমার স্বপ্ন আমি অসহায় মেয়েদের পাশে দাঁড়াবো। কারন মেয়েদের নিজের একটা পরিচয় দরকার।
"স্ট্যাটাস অব দ্যা ডে"- ৫৬০
Date:- ২৭/০৬/২০২১
ধন্যবাদান্তে
নাম: ফৌজিয়া কলি
ব্যাচ:13
রেজিঃ 58905
জেলা:লক্ষ্মীপর
কাজ করছিঃমেয়েদের থ্রিপিস,শাড়ী,বিছানার চাদর,হাতের তৈরি বিভিন্ন পুতির ব্যাগও বেতের ঝুড়ি ব্যাগ নিয়ে।
আমার পেইজঃ RK Fashion