টাকা আয় করতাম তা দিয়ে ধারের টাকা শোধ ও নিজে চলার টাকা হত।
🙋♂️আমি লাবলু মিয়া ,,,পৈত্রিক নিবাস বগুড়া জেলার সারিয়াকান্দি উপজেলার কর্নিবাড়ি ইউনিয়নের নান্দিয়ার পাড়া গ্রামে। আমাদের সারিয়াকান্দি উপজেলার বেশিরভাগ এলাকা নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। আমাদেরও জমি জমা সব নদী ভাঙ্গনের কবলে পড়ে , ৭/৮ জায়গায় বাড়ি স্থানান্তরিত হয়ে যাই নিঃস্ব হয়ে যায় আমাদের পরিবার । আমার বয়স তখন ১২/১৩ বছর ক্লাস ফাইভ পযর্ন্ত আমার লেখা পড়া।
👉আমাদের পরিবার:
আমারা তিন ভাই এক বোন তার মধ্যে আমি তৃতীয়,বোন সবার বড় উনাকে বিয়ে দিয়ে দিছি অনেক আগেই আলহামদুলিল্লাহ্।
আমার বড় ভাই কৃষি কাজ করে তার বউ -বাচ্চা নিয়ে সংসার করছে।
আমি ছোটবেলা থেকেই মা -বাবা এবং ছোট ভাইকে নিয়ে সংসারের বরনপোষন করে আসছি। বর্তমানে আমার স্ত্রী এবং ছোট ভাইয়ের বউ এবং এক ছোট্র মা মনি নিয়ে আলহামদুলিল্লাহ্ আমার বড় সংসার।
কর্মজীবন:
আমার বয়স যখন ১১-১২ তখন আমি এবং ছোট ভাই একসঙ্গে গ্রামের প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পড়ালেখা করতাম তখন হঠাৎ করেই নদী ভাঙ্গন শুরু হয় আমাদের গ্রামের সবার বসত ভিটে,রাস্তা-ঘাট,
মসজিদ,বিদ্যালয় সব ছিন্ন বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়।
সবকিছু হারিয়ে নিমিষেই নিঃস্ব হয়ে গেলাম,অনেক জমি ছিলো আমাদের যা হারিয়ে যায় সর্বনাশা যমুনা নদীর বুকে।
সংসারে অভাব দেখা দিলো যদিও বাবা চাচ্ছিলেন পড়িলেখা করতে কিন্তু আমি আমার ছোট ভাইয়ের কথা চিন্তা করে কর্ম করা শুরু করে দেই এই ছোট্ট বয়স থেকেই। জীবিকার তাগিদে চলে আসলাম চটগ্রামে। ওখানে আমাদের এলাকার অনেক লোকজন ছিল, কনস্ট্রাকশন কাজ দিয়ে আমার কর্মজীবন শুরু হয় ,, যা দিয়ে পরিবারকে আর্থিক সাপোর্ট ও ছোট ভাইয়ের পড়ালেখার খরচ যোগান দেই। এই কাজের মধ্যেই কাটিয়ে দেই ( ৯) বছর।
বিদেশে গমন:
চট্টগ্রামে থাকাকালীন সময়ে এক পরিচিত মাধ্যমে ২০০৮ সালের মাঝামাঝি সময়ে লিবিয়ায় গমন করি । বিদেশ গমনের টাকাটা ম্যানেজ করি আত্বীয়-স্বজনের কাছে থেকে। লিবিয়ায় গিয়েও আমাকে একই কাজ করতে হয়। যে টাকা আয় করতাম তা দিয়ে ধারের টাকা শোধ ও নিজে চলার টাকা হত।
এভাবে চলতে চলতে ধারের টাকা কোন ভাবে শোধ হয় । যখন নিজে কিছু করব ঠিক তখনই শুরু হয় লিবিয়ায় দীর্ঘ ৪২ বছরের গাদ্দাফি সরকারপতনের আন্দোলন। ওখান থেকে দেশে ফেরার এক করুন ইতিহাস। একমাস দুর্বিষহ কষ্টের পর আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থার মাধ্যমে তিউনিসিয়া , মিশর হয়ে ২০১১ সালে দেশে ফিরে আসি।
২০১১ --২০১৪ : দেশে ফিরে কিছু দিন পর বিবাহ করে ফেলি। কিছু দিন বাড়িতে থাকার পর ঢাকায় চলে যাই ,,আমার স্ত্রীকে নিয়ে। সেখানে গিয়ে আবার সেই কনস্ট্রাকশন কাজ করতে থাকি। এভাবে কেটে যায় ৩ বছর ।
ব্রুনাই গমন:
ঢাকায় থাকাকালীন সময়ে আবার ও ২০১৪ সালে ৭জানুয়ারি ব্রুনাই গমন করি। ব্রুনাই গিয়েও কোন সুবিধা করতে পারি নাই । উপার্জনের বেশিরভাগ দিতে হত ফোরম্যানকে।
মালয়েশিয়া গমন:
ব্রুনাই থাকাকালীন সময়ে সময় এক দালাল মারফতে টাকার বিনিময়ে,, নিজের ভাগ্যকে বদলানোর আশায় ,, জীবনের ঝুঁকি নিয়ে চলে যাই মালয়েশিয়া। যাত্রাপথে সীমান্ত এলাকায় যে অসহনীয় কষ্ট ,,তা ভাষায় প্ৰকাশ করার মত না । অবশেষে গিয়ে এক আত্বীয়র কাছে গিয়ে আশ্রয় পাই। ওখান থেকে আমি কাজ খুজতে থাকি। খুজতে খুজতে একটি চাইনিজ কোম্পানিতে সেলসম্যানের কাজ পাই।
উদ্যোক্তা হওয়ার গল্প:
একসঙ্গে সেলসম্যানের কাজ করি আমরা অনেক বাঙালি ভাই । তারমধ্যে একজন আমার প্রিয় খোরশেদ আলম ভাই। ভাই আমাকে প্রায় বলতেন যে, উনি একটা গ্রুপের সদস্য যেটার নাম
** নিজের বলার মত একটা গল্প ফাউন্ডেশন**
ভাইয়ের কথায় শেষপর্যন্ত রেজিস্ট্রেশন করলাম জানার আগ্রহবশত ,,প্রিয় স্যারের সেশনগুলো নিয়মিত অধ্যয়ন করলাম এবং ইউটিউবে স্যারের কথাগুলো দেখতে শুরু করলাম ,,তখন আমার ভিতরে পরিবর্তন আসতে শুরু হল নিজের আত্ববিশ্বাস বেড়ে গেল। তখন মনে হল এই মানুষটির কথায় সত্যিই জাদু আছে। যদি তাই না হতো ,, এতগুলো মানুষ কিভাবে তার কথায় অনুপ্রাণিত হয়ে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করার প্রতিযোগিতায় লিপ্ত হয়েছে।
এই প্লাটফর্মে এসে দেখলাম সবাই ,সবার প্রতি খুবই (হেল্ফফুল) এবং ভালো মানুষদের মিলনমেলা। প্রথমে ভাবতাম আমার কাছে থেকে কে কিনবে প্রডাক্ট। কিন্তু আমার সে ধারণা পাল্টে গেল ।
▶পুরোদমে উদ্যোক্তা এখন আমি : প্রিয় স্যারের অনুপ্রেরণায় ফেব্রুয়ারি মাসে শুরু করেই প্রথম মাসেই সেল করলাম ৩৪০০০ টাকা।
আলহামদুলিল্লাহ্ এর পর থেকেই প্রতি মাসে ৫০০০০ হাজারের উপরে সেল করি এবং ঈদের আগের মাসে ৯৪০০০ টাকা সেল করতে সক্ষম হই। বতর্মান মাসে ইতিমধ্যে সেল দাড়িয়েছে ৫০০০০৳ বেশী আমার সেল শুধু অনলাইনে আলহামদুলিল্লাহ্।
✔ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা : প্রিয় ম্যান্টর,অভিভাবক ইকবাল বাহার জাহিদ স্যারের মোটিভেশনাল কথায়..("স্বপ্ন দেখুন সাহস করুন,শুরু করুন,লেগে থাকুন সলতা আসবেই ইনশাআল্লাহ ") অনুপ্রাণিত হয়ে শুরু করেছি,লেগে আছি এবং এখন স্বপ্ন দেখছি সমগ্র বাংলাদেশে
অচিরেই আমাদের বগুড়া শহরে একটি শোরুম খুলবো ইনসাআল্লাহ্। শোরুম থেকে
অনলাইন,অফলাইনে খুচরা এবং পাইকারি সেল করবো ন্যায্যমূল্যে ইনশাআল্লাহ।
যেখানে লেডিস আইঠেম, বাচ্চাদের পোশাক সহ পুরুষের আইঠেম থাকবে ইনশাআল্লাহ।
▶✔ উপসংহারে বলতে চাই যারা জীবন সংগ্রামে হতাশ হয়ে কি করবেন ভাবছেন কিংবা সিদ্ধান্ত হীনতায় ভোগছেন আপনাদের আহ্বান করছি ইকবাল বাহার জাহিদ স্যারের "নিজের বলার মত একটা গল্প ফাউন্ডেশন" এ যুক্ত হোন দেখবেন ধীরে ধীরে আমার মত তথা হাজার হাজার হতাশাগ্রস্ত,বিপদগ্রস্ত,অসহায় মানুষের মত নিজের জীবনের সফল গল্প তৈরী হবে ইনশাআল্লাহ।
"স্ট্যাটাস অব দ্যা ডে"- ৫৬১
Date:- ২৮/০৬/২০২১
💖ধন্যবাদন্তে
নামঃ লাবলু মিয়া
ব্যাচ ঃ ১২
রেজিঃ নং ৪৯৪৯৮
জেলা বগুড়া
বতমানে ঃ মালোশিয়া প্রবাসী।