আমার মা রাজকুমারী থেকে হয়ে যায় চাকরানি।
আমার শিশুকালঃ-
আমার মা বাড়ির একমাত্র মেয়ে ৪ ভাইয়ের একমাত্র বোন।আমার মায়ের বয়স যখন ৪ বছর তখন আমার নানা মারা যায়। পারিবারিক ভাবে মধ্যবিত্ত থাকা সত্ত্বেও আমার মামারা আমার মাকে একজন রাজকুমারীর মতো মানুষ করে। আমার মায়ের যখন ১০ বছর বয়স তখন আমার বাবার সাথে বিয়ে হয়। যেটা বিয়ের কোনো বয়সের মধ্যেই পরে না৷ আমার বাবার সাথে বিয়ে হওয়ার পরেই শুরু হয় আমার মায়ের জীবন যুদ্ধ।
আমার মা রাজকুমারী থেকে হয়ে যায় চাকরানি। কারন, আমার বাবার বাড়িটা ছিলো সম্ভ্রান্ত - বংশ মর্যাদা নিয়ে সবাই ব্যস্ত। এই ব্যস্ত পরিবারে আসলে ছেলের বউ দরকার ছিলো না, দরকার ছিলো একজন চাকরানির। প্যারালাইজড শশুরের সেবা করা, শাশুড়ির যত্ন করা, বাড়ির রাখাল, কর্মচারী এবং বাড়ির সব মিলিয়ে ৩০ জন সদস্যদের মানোবিক এবং দৈনিক চাহিদা পুরন করাই ছিলো যার একমাত্র কাজ আমার কথাটা কেউ খারাপ ভাবে নিবেন না।আসলে আমার এই কথাটার মানে বুঝতে হলে পুরো গল্পটা মনোযোগ সহকারে পড়তে হবে।
আমি আসলে বলতে চাই বিয়ের পারে স্বামী, শুশুর,শাশুড়ী এবং শশুর বাড়ির লোকেদের সেবা করাই মেয়েদের ধর্ম।কথায় আছে বিয়ের পরে স্বামীর মা বাবা স্ত্রীর মা বাবা হয়। কখনো কখনো তার উল্টোটাও হয়। কিছু কিছু মেয়েরা শশুর বাড়ি মেয়ে হয়ে আসলেও এসে বাবা মা পাইনা। আবার কিছু মেয়েরা এসে বাবা মা পেলেও তাদের মেয়ে হয়ে উঠতে পারেনা ঠিক তেমনি আমার মা তার শশুড় বাড়ীতে মেয়ে হয়ে আসলে ও এসে বাবা মা পায়না তাদের মেয়ে হয়ে উঠতে পারেনি আমার মায়ের ক্ষেত্রেও এমনটা হয়েছে।
এই জন্য আমার মা দায়ী না, দায়ী হলো মায়ের পরিবারের দারিদ্রতা এবং সমাজের উঁচুনিচু ভেদাভেদ আর অহংকার। আমার বাবার পরিবারের মানুষেরা মনে করতো যারা ধনী তারাই শুধু মানুষ তাদেরই শুধু মান সম্মান আছে। আসলে কোন দায়িত্ব যখন জোরপূর্বক হয়ে যায় তখন সেটা নির্যাতনে রুপ নেয়। আমার মায়ের ক্ষেত্রে তাই হয়েছিল,অনেকে হয়তো ভাবতে পারেন এতো বড়লোক পরিবারে আমার মায়ের বিয়েটা কিভাবে হয়েছিলো। আসলে কিছু বড়লোক পরিবারের বাবা-মায়েরা চায় গরীব ঘরের মেয়েকে ঘরের বউ বানাতে। তাতে অনেক সুবিধা আছে। তার মধ্যে প্রধান একটা কারন হলো বাড়িতে একটা কাজের লোক কম রাখতে হয়। বাস্তব একটা সত্য কথা হলো নিজেদের এই সার্থসিদ্ধির জন্য অহংকারী দাম্ভিক মানুষ গুলো কিছু সময় ভালো হওয়ার অভিনয় করে আর এটা করে কিছু ভালো মনের মানুষদের তাদের সার্থে বলির পাঠা করার জন্য
দুর্ভাগ্য বসতো ঐ বলির পাঠাটা আমার মা হয়ে যায়। আমার মায়ের জন্য সেই যুদ্ধোটা সহজ ছিলো না।কারণ, আমার মায়ের বয়স কম হওয়ার কারণে শারীরিক বা মানুষিক কোন ভাবেই আমার মা ফিট ছিলো না। বছর যেতে না যেতেই আমার মা সন্তান সম্ভবা হয় আর আমি আসি মায়ের পেটে। আমার দুঃখ হয় কেনো জানেন মায়ের মুখে শুনেছি আমি যখন মায়ের পেটে ছিলাম তখন আমার মা পেট ভরে একবেলা খাবার ও পায়নি, একটু বিশ্রাম নিতে পারেনি। সংসারের চাপে আমার মা পেট ভরে ভালো খাবারের পরিবর্তে পেট ভরে ভাতের মাড় খেতো।এক্সট্রা কেয়ারের পরিবর্তে পেতো এক্সট্রা মানুষিক নির্যাতন এবং সীমাহীন অবহেলা।
এর কিছুদিন পরেই আল্লাহ তায়ালার অশেষ কৃপায় জন্ম হয় আমার। আমার মায়ের সংসার নামক ঐ কারাগারে আমি একজন সহযোদ্ধা হয়ে যুক্ত হই মায়ের প্রথম সন্তান।
আমার কাছে সব থেকে খারাপ লাগে এবং ঘৃণা হয় এটা যেনে যে আমার জন্ম একটা সম্ভ্রান্ত পরিবারে হওয়া শর্তেও আমাকে খেতে হয়েছে মায়ের বুকের দুধের বদলে ভাতের মাড়।পেতে হয়েছে অবহেলা। কেনো এমন হয়েছে জানেন আমার অপরাধ ছিলো আমি কন্যা হয়ে জন্ম নিয়েছি এবং আমার মা একজন গরীব ঘরের সন্তান। শুধুমাত্র আমি মেয়ে হয়ে জন্ম নিয়েছি বলেই আমার বাবা যে একজন বড়লোক পিতার সন্তান আর আমি আমার বাবার একমাত্র সন্তান এটা সবাই ভুলে গিয়ে আমাকে ফেলে দেয় মায়ের দলে।
আমার এটা ভেবে ভালো লাগে যে আমার মায়ের ঐ অশান্তির জাহান্নামে একমাত্র শান্তির ছোয়া ছিলাম আমি। মায়ের কাছে শুনেছি আমি হওয়ার পরে আমার মায়ের প্রতি নির্যাতন বহুগুনে বেড়ে যায়। তখন আমার মাকে মামারা চায় নিয়ে যেতে কিন্তু আমার মা শুধু মাত্র আমার ভবিষ্যতের কথা ভেবে যায় না। তবে আমার মনে হয় আমার মা সে দিন ভুল করেছিলো। আমাকে যে বংশ মর্যাদা এবং সম্মান দেয়ার জন্য সে থেকে গিয়েছিলো সত্যি বলতে এই বংশমর্যদা আর সম্মান আমি চাই না। যেখানে আমার মা সুরুথেকে এবং গর্ভধারিণী সময় পর্যন্ত বিন্দু মাত্র সম্মান, মর্যদা, ভালোবাসা পায়নি। আমি সেই বংশমর্যদা,সম্মান,ভালবাসাকে ঘৃণা করি।
এমন ভাবে চলতে থাকে আমার আর আমার মায়ের জীবন। আমার বাবার আসলে কোন দোষ নেই। কারণ, আমার বাবা তার পরিবারের বাধ্য সন্তান ছিল। আমার কাছে যদি কেউ আমার বাবার ব্যাপারে জানতে চায়, আমি এক কথায় বলবো আমার যদি আরেকবার পূনর্জন্ম হয় সে জীবনেও এই সহজ সরল, সৎ,পরোউপকারি মানুষটিকেই বাবা হিসাবে চাইব।
আর আমার মাকে চাইব হাজার জনমের ভালো বন্ধু হিসাবে।
এই ধনী গরিবের খেলার মধ্যে আমার বাবা নিরহ নিবেদিত প্রান মাত্র। আমাদের প্রতি অবহেলা সহ্য করতে না পেরে এক ধরনের মানুষিক ডিপ্রেশনে চলে যায় সে এবং একটি খারাপ জীবনের সাথে জড়িয়ে যায়। এর মধ্যে আমার ছোট বোন হয় এবং দাদু মারা যায়। তখন আমার বয়স ৬ বছর। দাদু মারা যাবার পর আমাকে আমার বাবা- মাকে বোনকে আলাদা সংসারে পাঠানো হয়।
তখন থেকে শুরু হল আমার আর আমার মায়ের আরো কঠিন জীবন। কারণ, আমার বাবা কোন কাজ করতেন না। টিকমত বাড়ি আসতেন না। মায়ের কাছে টাকাপয়সা না থাকায় দিনের পর দিন না খেয়ে থেকেছি। আমরা তবে আল্লাহর কাছে হাজার শুকরিয়া। এই জন্য যে আমার বয়স মাত্র ৬ বছর হলেও আমি দেখতে ১২ বছরের কিশোরীর মতো ছিলাম। এবং যথেষ্ট চঞ্চল ছিলাম এবং বয়স হিসেবে বেশি পরিশ্রম করতে পারতাম।
আমি একটা কথা বলতে চাই আমি দেখতে মেয়ে হলেও আমার চলাফেরা ডানপিটে ছেলেদের মতো ছিলো। সব সময় মাথায় একটা চিন্তা ছিলো। আমি এমন কিছু করতে চাই যাতে আমার মায়ের প্রতি হওয়া অবিচারের যোগ্য জবাব দিতে পারি। এবং আমার মতো মেয়ে হয়ে জন্ম নেয়ার কারণে যারা অবহেলিত তাদের পাশে দাড়াতে পারি।বলে রাখা ভালো আমি মাত্র ৮ বছর বয়সে ৫ম শ্রেণী থেকে ষষ্ঠ শ্রেনীতে উঠি। কারণ, আমি ১ম শ্রেনীতে ভালো ছাত্রী ছিলাম বলে স্যার আমাকে ৩য় শ্রেনীতে উঠিয়ে দিয়েছিলো৷ তখনও আমি মায়ের বুকের দুধ ছাড়িনি।
আমার এখনও মনে আছে যখন আমি ৫ম শ্রেণীতে পড়তাম তখন আমার দাঁত পড়ে নি। এই জন্য আমাকে স্কুল কমিটি ষষ্ঠ শ্রেণীতে ভর্তি নিতে চায়নি। কারণ, আমার বয়স কম কিন্তু আমার মধ্যে ছিলো দ্রুত বড় হওয়ার অনেক ইচ্ছা কারন মায়ের জন্য আমাকে কিছু করতেই হবে। তাই সেদিন বাড়ি ফেরার পথে নিজের গালের কাঁচা দাঁত নিজেই ফেলে দেই জিদ করে। শুধু মাত্র ক্লাস six এ উঠার জন্য। এবং পরের দিন আমার মাকে নিয়ে আবার স্কুলে যাই এবং ভর্তি হই। ষষ্ঠ শ্রেণীতে আমার লেখা পড়ার খরচ চালানো আমার মায়ের পক্ষে অনেক কষ্ট হতো তার মধ্যে ছোট বোনের জন্য আলাদা খরচ এগুলো নিজের চোখের সামনে দেখতে পারতাম না তাই আমাকে ছেলেদের মতো সব কাজ করতে হতো।আর তাই নিজেদের সব কাজ করতাম। গ্রামের মানুষের কাজও করতাম।যেমন; যার বাড়িতে মাছ মারার মানুষ ছিলো না তার মাছ মেরে দিতাম।মাটি কেটে দিতাম,নারকেল পেড়ে দিতাম, বাড়ির বেড়া দিয়ে দিতাম এর বিনিময়ে আমাকে কখনো টাকা কখনো মাছ কখনো চাল এগুলো দিতো।
আমি এগুলো এনে মাকে দিতাম। কিন্তু যে পরিবার গুলো অসহায় ছিলো তাদের কাছ থেকে আমি কোন বিনিময় নিতাম না।আমার ত্যাগ শুরু হয় এখান থেকে। ছোট থেকে সবার উপকার করতাম,আর মানুষের পাশে থাকতেই হবে এটা সারাজীবনের জন্য মাথার মধ্যে ঢুকিয়ে নিয়েছিলাম এমন ভাবে চলে গেলো কিছু বছর একান্ত নিজের কোন শখ এবং সপ্ন ছিলো না, মায়ের কষ্টের ভাগিদার হওয়া এবং ছোট বোনকে তার চাহিদা মতো সব দেওয়া আর নিজের পড়াশুনা এর বাহিরে আমার কোন জীবন ছিলো না।কিন্তু এগুলো করতে যেয়ে মানুষের চোখে অনেক কুটুক্তির শিকার হয়েছি কেউ কেউ তো বলতো আমার কোন দিন বিয়ে হবে না।কারণ আমি শুধু নামে মেয়েদের মতো ছিলাম,পোশাক পরতাম ছেলেদের কাজও করতাম ছেলেদের।আসলে কারো কথায় কান দিতাম না। নিজের জন্য যেটা ভালো তাই করতাম।আর যারা বলতো আমার বিয়ে হবে না,তারাতো জানতোনা যে আমারই বিয়ে করার কোন ইচ্ছাই নাই।
আমার কৈশর কাল ও বর্তমান অবস্থা -
আমার কৈশর কাল এবং পারিবারিক জীবন একি সাথে শুরু হয়েছে। এমন করেই দিলাম S.S.C তারপর বেড়ে যায় দায়িত্ব জীবনের প্রয়োজনে টাকার চাহিদা টাও বেড়ে গেলো, ছোট বোন ও বড় হচ্ছে এই জন্য। আমরা ৪ জন ঢাকা চলে আসি। বাবা- মা দুজনেই একটা গার্মেন্টসে চাকরী নেয়।আমাকেও দেওয়া হয় একটা গার্মেন্টসে। দেওয়া হয় বললে ভুল হবে। আমি নিজে থেকে যাই কারন বাবা - মায়ের যে টাকা বেতন ছিলো এতে বাবা মা আমাদের সংসার চালিয়ে আমাদের দুই বোনকে পড়াতে পারবেন না। তাই এখানেও আমি ত্যাগ করলাম বোনকে স্কুলে ভর্তি করে আমি ভর্তি হলাম গার্মেন্টসে । ২০০৬ সালে আমার বেতন ছিলো মাত্র ৬৫০ টাকা এটা দিয়েই শুরু করলাম আমার সংগ্রামী জীবন।
কিন্তু সেখানে ও শান্তি পাইনি উপর মহলের লোকদের ছিলো আমার উপর খারাপ নজর তাদের কূপ্রস্তাবে রাজি হতামনা বলে সইতে হয়েছে অনেক নির্যাতন আসলে আমি কখনো নিজের চরিত্র খারাপ করতে চাইনি সবসময় সৎ থাকার চেষ্টা করতাম আর তাদের চোখে এটাই ছিলো আমার বড় অপরাধ। এমন ভাবেই চলতে থাকলো বছরের পর বছর। নিজের পরিবারকেও সহযোগিতা করতাম, পাশাপাশি অনেক মানুষের ও উপকার করতাম। কিন্তু, দিনশেষে আমি পেতাম অবহেলা। অবহেলা পেয়ে পেয়ে নিজেকে খুব একা মনে হতো। যাকে ভালোবাসতাম সে আমাকে ঠকাতো যাকে টাকা দিয়ে উপকার করেছি সেই আবার বেইমানি করেছে আমার সাথে। আমার জীবনে আশা প্রত্যেকটা মানুষ আমাকে শুধু ব্যবহারই করেছে এবং আমার সরলতার সু্যোগ নিয়েছে আর আমাকে অবহেলা করেছে।
কিন্তু আমি আজও তাদের ভালোবাসি এবং বেশি বিশ্বাস করি, তবে এগুলো দেখতে দেখতে একটা সময় আমি যখন সাময়িক ভাবে হতাশ এবং ভেঙে পড়েছি। তখন মনটাকে ভালো করার অনেক চেষ্টা করতাম বারনবার শুধু এমন একটা মানুষ খুজতাম জাকে একটু ভরসা করতে পারি যে আমাকে একটু বুঝবে। এমন ভাবে কাটতে থাকলো দিন কাটতে থাকলো বছর। বোনটাও বড় হতে থাকলো ওর পড়াশুনার জন্য সব ব্যবস্থা করে দিলাম। ও নিয়মিত পড়াশুনা করতো।
২০২০ সালে শখের বসে একটা স্মার্টফোন কিনেছিলাম। শখ করে ফেসবুক আইডিও খুলেছিলাম৷ একদিন ছুটির দিনে হটাৎ আমার ফেসবুকে একটা গ্রুপ দেখলাম৷ নিজের বলার মতো একটা গল্প ফাউন্ডেশন কে বা কারা এখানে কখন যে আমায় যুক্ত করেছে আমি নিজেও তা জানিনা। কারণ, তখনও আমি ফোন সম্পর্কে এতো কিছু বুঝতাম না। এখনো ভালোভাবে বুঝিনা।ফাউন্ডেশনে যুক্ত হওয়ার পর থেকে আমি সেই মানুষটাকে এখনো খুঁজি এবং মন থেকে দোয়া করি তার জন্য। যাই হোক আমি সেইদিন যুক্ত হই নিজের বলার মত একটা গল্প ফাউন্ডেশনে জীবনে অনেক শিখেছি আবার নতুন করে শিখা শুরু করি তবে এই শিক্ষাটা আমার কাছে অনেক বড় পাওয়া এখানে শিখেছি সব হারিয়ে কিভাবে ঘুরে দাঁড়াতে হয় কিভাবে মানুষের পাশে দাঁড়াতে হয়
এখানে শিখেছি আমার কিছু নাই তবুও মনে সৎ ইচ্ছা থাকলে কোন না কোনভাবে মানুষের উপকার করা যায়..আমি চাই সব অসহায় মানুষগুলো নিজের জায়গাটা ঠিক করবে এবং কেউ হারিয়ে যাবেনা। বিশ্বাস করেন আমি জানি অভাব কি এটা হয়তো সত্যি একজন মানুষ কখনো নিজের জায়গায় দড়িয়ে অন্যের দুঃখ ততোটা বুঝতে পারেনা তবে অনুভব করতে পারে আর আমার বিশ্বাস আমি সেটা পারি তাই আমি এমন একটা কিছু করতে চাই যেন যে অসহায় মেয়ে গুলো আছে তাদের পাশে দাড়াতে পারি। যদিও আমি অনেক আগে থেকে কিছু মানুষকে ব্যক্তিগতভাবে সাহায্য করি কিন্তু এই কিছুকে আমি কয়েক হাজার থেকে লাখে পরিনত করতে চাই। যদিও আমার একার পক্ষে সম্ভব না তবুও আমি চাই ৫ জন কে সাহায্য করবো সেই ৫ জন অন্য ৫ জনকে সাহায্য করতে পারবে,
এভাবে কয়েক হাজার থেকে লাখে পরিনত হবে। এখন আমার একমাত্র চাওয়া আমার জীবনের সোনালী দিন গুলো যেমন শুধুই কষ্টে কেটেছে এমন যেনো আর কারো না হয়। বিশ্বাস করুন আমি জানি মানুষ কষ্টে পড়লে কে কেমন ব্যবহার করে আমার একটা ভালো ফোন ছিলনা বলে একগাদা মানুষের সামনে ও আমাকে অপমানিত হতে হয়েছে আসলে আমি চাইলেই নিজের জন্য একটা দামী ফোন বা কিছু দামি কাপড় কিনতেই পারতাম তাহলে আমার এই বিলেসিতার জন্য হয়তো আমার ফ্যমিলি একটু খারাপ থাকতো
আমি একটা দামি ফোন নিলে আমার বোনের জন্য কম্পিউটার কিনতে পারতাম না আমার দামী ফোনের থেকে বোনের কম্পিউটার টা জরুরি দরকার ছিলো তাই তখন কিনতে পারিনি আলহামদুলিল্লাহ এখন আমার সবই আছে আমার মাকেও সবাই ভালোবাসে সম্মান করে আপনাদের দোয়াই। আমার ছোট বোন এখনো পড়াশোনা করছে অনার্স 3rd Years - এ। আজ আমি আমার পরিবার নিয়ে অনেক সুখে আছি কিন্তু আমার মনে হয় আমার জার্নিটা শেষ হয়নি।
আমার পরিবারের এখন আর আমার Support এর দরকার নেই। কারণ, এখন আমি তাদের পাশে পুরো পুরি দাড়াতে চাই। যাদের পাশে দাড়নোর মতো কেউ নেই। আমার মনে অনেক কষ্ট যে আমাকে Support দেয়ার মতো একটা মানুষকে ও পাইনি, তাই হয়তো আমার জীবনটা একটু বেশি কষ্টে কেটেছে।এই কথা চিন্তা করে কিছুদিন আগে একটা দেশি মুরগির খামার দেই, কিন্তু দুর্ভাগ্য বসত করনা কালিন সময়ে একরাতে আমার খামার শ্বশানে পরিনত হয়ে যায়।অনেক টাকার ক্ষতি হয়।তবুও আমি ভেঙে পড়িনি,,, ইনশাআল্লাহ আবার নতুন কিছু শুরু করতে পারবো। আপনারা আমার জন্য দোয়া করবেন এবং পাশে থাকবেন।
"স্ট্যাটাস অব দ্যা ডে"- ৫৬১
Date:- ২৮/০৬/২০২১
আমি গাজী রত্না
রেজিঃ৩৬৭১৪
ব্যাচঃ১১
ব্লাডঃO+
নিজ জেলা বাগেরহাট