নিজের জীবন থেকে নেওয়া সত্য ঘটনা।
-----------------গল্পে গল্পে সেল পোস্ট ------------------
নিজের জীবন থেকে নেওয়া সত্য ঘটনা।
এই গল্পটি সবাইকে পড়ার অনুরোধ রইলো।
🌿অনেক অনেক ধন্যবাদ জানাই শ্রদ্ধা যানাই আমাদের প্রিয় #মেন্টর_জনাব_ইকবাল_বাহার_জাহিদ স্যারকে,তার জন্যই এই প্লাটফর্ম পাওয়া,তার জন্যই আজ লাখো মানুষের সামনে নিজের জীবনের গল্প তুলে ধরতে পেরেছি।স্যারের দীর্ঘায়ু কামনা করছি,সেই সাথে ধন্যবাদ জানাচ্ছি অন্যান্য মডারেটরদের যারা অক্লান্ত পরিশ্রম করে যাচ্ছে এই প্লাটফর্ম এর জন্য ও সেবা দিয়ে যাচ্ছেন।
🌿প্রায় ২ বছর পর আজ আমার সবচেয়ে প্রিয় বান্ধুবী বললে ভুল হবে আমার জানের বান্ধুবী হটাৎ আমাকে কল করেন। নাম্বারটা দেখে প্রথমে চিন্তা করলাম ভুল দেখছিনা তো।কারন দীর্ঘ ২ বছর ওর সাথে আমার কোন যোগাযোগ নেই।যদিও আমি মাঝে মাঝে ফোন দিতাম কিন্তু ও ধরতো না।যাক অবশেষে ফোনটা ধরলাম।
🌿রিয়াঃকে রে কেমন আছিস?
☘️আমিঃ আলহামদুলিল্লাহ ভালো আছি। তুই কেমন আছিস?
🌿রিয়াঃআলহামদুলিল্লাহ। ফোন দিয়ে আমার খুব প্রশংসা করছিলো।সে নাকি আমার ফেসবুকে আমার পোস্টগুলো দেখে। আর তাই তাকেও বিজনেস শিখাতে অনুরোধ করছে🤣।ওর কথা শুনে আমার হাসি পাচ্ছিল ভীষন তবে হাসিনি,চুপ করে ছিলাম।
☘️আমিঃপ্রশ্ন করলাম যে কেনো তোর এখন কিছু করা লাগবে কেন তুই তো রাজার রানী?
🌿রিয়াঃতখন বললো নিজের একটা পরিচয় খুব দরকার।এতো পড়াশোনা করেছি অথচ কিছুই করছি না।আর তোর তো ব্যাবসা ভালোই চলছে।
☘️আমিঃকিন্তু ওর কথা শুনে আমি উপহাস করতে পারলাম না,কারণ ওর প্রতি ভালোবাসা,সম্মান এখনো আছে।আর ও কেনো,আমি কাউকে নিয়েই উপহাস করতে পারিনা।কেনো না ও এখন নিজের পরিচয়ে পরিচিত হতে চায়।
☘️আমিঃরিয়াকে বললাম,ঠিক আছেন যখন যে সহযোগিতার প্রয়োজন হয় আমাকে বলবি।ইনশাআল্লাহ আমি চেস্টা করব যতটুকু সম্ভব হয়।
🌿রিয়াঃ ঠিক আছে।
☘️আমিঃআচ্ছা রাগ করিস না।একটা কথা বল তো,তুই হটাৎ ব্যাবসা করতে চাচ্ছিস কেন?কারন তুই তো কখনো মেয়ে চাকরি বা কিছু করুক পছন্দ করতি না।
🌿রিয়াঃআসলে সব সময় ভাবতাম স্বামীর এতো টাকা থাকতে আমাকে কেন কিছু করতে হবে?কিন্তু করোনার কারনে ওর চাকরি চলে গেছে।যা টাকা জমা ছিলো সব খরচ করে ফেলেছে।বাসায় ঠিক মতো টাকা দেয় না।টাকা চাইলেই অনেক কথা শুনায়।বলে বাপের বাড়ি থেকে আনতে পারি না বা ভিক্ষা করতে পারি না(কেঁদে দিয়ে)।তাই নিজে কিছু করতে চাচ্ছি।
☘️আমিঃশুনে খুব কষ্ট লাগলো। আসলেই আজ যদি ও স্বাবলম্বী হতো তাহলে হয়তো এই সমস্যা হতো না।যাক ওকে সান্ত্বনা দিলাম।ইনশাআল্লাহ আমি পাশে আছি।
🌿রিয়াঃআচ্ছা পরে আবার ফোন দিব।ভালো থাকিস।বলে ফোন রেখে দিলো।
👇👇👇👇👇👇👇👇
চলুন এবার আসিঃ
🌿আমার হাসি পাওয়ার কারণ হলো
☘️আমিঃ যখন আমি টিউশনি করতাম। তখন আমি চাইলেই অন্য কাউকে টিউশনি দিতে পারতাম।তো আমি ওকে বলেছিলাম তুই টিউশনি করবি অন্তত নিজের খরচ নিজেই চালাতে পারবি সাথে পড়াশোনার চর্চা তা ও করা হবে।
🌿রিয়াঃ তখন ও বলেছিলো মেয়ে মানুষের এতো চাকরির কি দরকার?তোর কোন কমনসেন্স নাই,তোর বাসায় কি অভাব পরেছে নাকি তুই টিউশনি করবি।আমি এত অভাবে পরিনাই যে আমি তোর মতো টিউশনি করবো,কারন ওর বাবার ও অনেক টাকা আছে, আর ও হাজবেন্ড এর তো কথাই নাই,কত টাকার মালিক তা সে নিজেও জানেনা।ও রানীর মতো থাকতো।
☘️আমিঃ ওর কথায় কষ্ট পেলেও বুঝতে দেইনি,অনেকগুলো মানুষের সামনে ও আমাকে অপমান করেছে,কাছের মানুষের অপমানগুলো খুব গায়ে লাগে,রীতিমতো দেখলাম সবাই ও আমাকে নিয়ে উপহাস করলো,হাসাহাসি করলো😪কোন রকমে ওর অপমান হজম করে ওকে বললাম নিজের পরিচয়ে পরিচিত হওয়াটাই বড় কথা,নিজেকে এতো দূর্বল ভাবিসনা,একটা সময় আসবে যখন তুই আমাকে দেখে জেলাস ফিল করবি,আমাকে ফলো করবি।বলে রাখি আমার বাবা ও সরকারি চাকরি করতেন।আমাদের পরিবারের অবস্থা অনেক ভালো ছিলো। তারপর ও আমি নিজের বলার মতো একটা গল্প তৈরি করতে চেয়েছি।
🌿২ বছর আগে একদিন ও আমার অফিসে গেলো,অনেকক্ষণ আমার জন্য অপেক্ষা করছিলো,আমার পারমিশন না নিয়ে তো আর আমার সাথে দেখা করতে দিবেনা তাই জন্য,পিয়ন এসে আমাকে বলেছিলো একজন দেখা করতে চায় কিন্তু কে তা বলেনি,তবে পরে জানতে পেরে ওকে নিয়ে বের হলাম একটা রেষ্টুরেন্টে এ গিয়ে কথা বলবো আর ওকে কিছু খাওয়াব,নামার সময় সবাই যখন সালাম দিচ্ছিলো অনেকেই বসা থেকে দাঁড়িয়ে যাচ্ছিলো, মেডাম বলে সম্মোধন করছিলো,ও সেটা ফলো করছিলো আর মনে মনে কি ভাবছিলো তা জানি না?
🌿যখন আমি চাকরি ছেড়ে দিয়ে বিজনেস শুরু করলাম,তখন ও সেম কথাই শুনালো।
🌿রিয়াঃবললো এত ভালো চাকরী ছেড়ে তুই বিজনেস করছিস?এতো সম্মানের চাকরীটা ছাড়তে তোর মায়া লাগলোনা?তখন বুজতে পারলাম ওরা সমালোচনা ও হিংসা করতে ভালোবাসে,তাই মানুষ যাই করে সেটাই ওদের কাছে খারাপ।
☘️আমিঃতখন বললাম নিজে কিছু কর।,কারণ নিজে কিছু করতে পারলেই সেটা তোর কাজে দিবে,যেটার কফিয়ত তোর কাউকে দিতে হবেনা।
🌿রিয়াঃপ্রতি উত্তরে বলেছিলো, আমার হাজবেন্ড, বাবা এখনো সচল তাদের অবস্থাও অনেক ভালো আর কতটা ভালো তাও তুই জানিস।তোর ইচ্ছে হলে তুই কর,আমার ইচ্ছে নাই।
☘️আমিঃ সেদিন থেকেই নিজেকে আরো ঝলসে নিলাম,এদের সবার কথার জবাব আমি দিবোই।
#এইবার_বলি_ওর_আমার_সম্পর্কের_কথা
🌿এইতো কয়েক বছরের কথা,প্রিয় কাছের বান্ধবী যার সাথে ছোট বেলা থেকে একসাথে বড় হয়েছি,একি খাবার দুজনে ভাগ করে খেয়েছি,যার সাথে মনের সকল কথা বলেছি,যাকে না দেখতে পেলে কান্না করতাম।একি ডিজাইনের জামা পরতাম আমরা,সে আমার বান্ধুবী জানের বান্ধুবী। পাশাপাশি বাসা ছিলো।মাঝখানে শুধু পার্থক্য ছিলো দেয়ালে । আমাদের সম্পর্ক টা অনেক গভীর ছিলো।
🌿প্রেমিক_প্রেমিকা যেমন একজান আরেকজনকে প্রতিদিন দেখতে না পেলে অস্থির হয়ে যেতো ঠিক তেমনি।আমার মেয়ে পুতুল ওর ছেলে পুতুলের সাথে বিয়ে দিয়েছিলাম😊সেই সুবাদে আমরা বিয়াইন ডাকতাম একজন অন্যজন কে।বড়রা সবাই হাসতোে আমাদের এই সম্পর্ক দেখে,আর আমাদের ডাকতো ফেবিকল বলে।
🌿আমরা টিফিনের টাকা বাঁচিয়ে একজন অন্যজনের জন্য গিফ্ট কিনতাম।আমরা যেখানে বেড়াতে যেতাম বা আমাদের বাসায় যদি ও আসতো,বা ওর বাসায় যদি যেতাম তাহলে আমরা এক সাথে ঘুমাতাম,আর অনেক হাসতাম।😃এই হাসির জন্য কত বকা শুনতাম,কেউ বকা দিলে যেনো হাসি আরো বেরে যেতো।
🌿ও আমার থেকে ৩ বছরের বড় ছিলো,তবে বয়সের ব্যবধান টা আমাদের সম্পর্কের মাঝে ছিলোনা।তাতে কি,আমরা খুব ভালো বন্ধু।হঠ্যাৎ করেই জানতে পারলাম ওর বিয়ে ঠিক হয়ে গেছে😓😓খুব খারাপ লাগছিলো,কেনো জানিনা সবাই খুশি অথচ আমি কান্না করি।যার বিয়ে সেও খুশি কিন্তু আমি কেনো অখুশিও কে গ্রামে নিয়ে গেলে বিয়ের জন্য।
☘️আমিঃকল দিতাম, দেখতাম সে বিয়ের কাজে বিজি, বা কথা বলছে তার হবু বরের সাথে,আবার আমার সাথে কথা বলার সময় যদি কল দিতো তবে ও আমার ফোন না বলেই কেটে দিতো,আমার খুবই খারাপ লগতো।
🌿বিয়ের পর ও বদলে গেলো,দেখতে খুব সুন্দরী ছিলো,তাই কোটিপতির একমাত্র ছেলের সাথে ওর বিয়ে হলো,ওর অহংকার ও বেড়ে গেলো,আমাদের মধ্যে সম্পর্কের ও ফাটল ধরলো,ও স্বামী সংসার নিজে ব্যাস্ত আমি ব্যাস্ত হলাম আমার ক্যারিয়ার নিয়ে,ও ব্যস্ত ওর স্বামীর টাকায় ফুটানী নিয়ে,আমি ব্যাস্থ নিজের সফলতা চূড়ায় পৌছানোর রাস্ত খুজার উদ্দেশ্যে।
🌿এই আমাকে যে যতটুকুই চিনে তার পেছনে প্রচুর পরিশ্রম প্রচুর উপহাস প্রচুর বাধার সম্মুখীন হয়েছি,যাদের কাছে খারাপ ছিলাম আজ তাদের কাজে একজন সফল মানুষ,আজ আমি নিজেই নিজের খরচ চালানোর ক্ষমতা রাখি,কারো কাছে প্রয়োজনে চাইতে হয়না।নিজের টাকা নিজে খরচ করি তাই কারো কাছ থেকে অনুমতি নেওয়ার প্রয়োজন নেই,কাকে কত দিলাম তা জিজ্ঞেস করার সাহস বা হিসাব কাউকে দিতে হয়না।
ও আপনাদেরকেও তো বলাই হয় নি আমি কাজ করছি মহিলাদের হিজাব, খিমার সেট, থ্রি পিস, শাড়ি,গ্রাউন,পাঞ্জাবি, কসমেটিকস, নারকেল ও সুপারি নিয়ে।
আমার পেজঃ জাহানারা সুলতান ট্রেডার্স
আশা করি সবাই আমার পেজে লাইক দিয়ে পাশে থাকবেন।
"স্ট্যাটাস অব দ্যা ডে"- ৫৬২
Date:- ২৯/০৬/২০২১
------------------ধন্যবাদান্তে
------------------নাসরিন আক্তার প্রিয়া
------------------কমিউনিটি ভলেন্টিয়ার
------------------ টপ টুয়েন্টি ক্লাবের সদস্য
------------------ হাট মনিটরিং টিমে মেম্বার।
------------------ব্যাচঃ১১
------------------রেজিষ্ট্রেশনঃ৩২৯২৫
------------------ জেলাঃলক্ষিপুর
------------------বর্তমান অবস্থানঃ চাঁদপুর
------------------ পেজঃ জাহানারা সুলতান ট্রেডার্স