১৮০০ সালে মেয়েরা বুঝতোই না যে তাদের স্বাধীনতা কতখানি।
জীবনের বাস্তবতা
কঠিন কন্ঠে পৃথীবীর কোন মেয়ে বলতে পারবেনা যে আমি কোনোভাবেই নির্যাতনের শিকার নই।একজন নারী হিসেবে আমি মনে করি বর্তমানে চরম আধুনিকতার যুগে নারী নির্যাতন অনেক বেশী বেড়ে গেছে।আসলে কোন বিষয় সঠিকভাবে বুঝলেই,সে বিষয়ে মানুষের অনুভুতি গাঢ় হয়।১৮০০ সালে মেয়েরা বুঝতোই না যে তাদের স্বাধীনতা কতখানি।তাদের বোধগম্য বিষয় ছিলো ৮–১২ বছর বয়সে বিয়ে হবে,১৩বছর বয়সে বাচ্চার মা হবে আর ২৫বছর বয়সে শ্বাশুরী হবে।যদি স্বামী, শ্বাশুরী ভালো হয় তো ভালো, না হলে,এটাই তার নিয়তি।তাই প্রতিটি মেয়ে নিয়তির এই কঠিন রশি ধরে তাদের জীবন পার করে দিত।কি ই বা করতো তারা।যে সমাজে জামাই পিটানোর বিচার হলোঃ-জামাই যেখানে পিটায় সে জায়গা বেহেস্তে যায়।এবার যত পার মার খাও।একটি ৮-১২ বছর বয়সি মেয়ে, যার তখন বয়স খেলনা পাতিলে বালি,মাটি নিয়ে ভাত রান্না করার,জংলী সাদা ফুল দিয়ে পায়েস রান্না করার,তখন তাকে জলন্ত চুলায়,জলন্ত আগুনে ভাত,পায়েস রাঁধতে হয়।এই মেয়ে কি বুঝবে শ্বাশুরী,শ্বশুর,জামাইয়ের সেবা।অথচ আমরা জানি,১৮বছর বয়স পর্যন্ত মানুষ শিশু থাকে।আবার এও বলে থাকি শিশু মনে আঘাত কর না,তাহলে তারা বিক্ষীপ্ত মনের অধিকারী হয়ে যাবে।অথচ কেও খেয়াল করি না,হয়ত ইচ্ছে করেই করি না,এই শিশু প্রথম আঘাতের শিকার হয় বাসর ঘরে স্বামীর কাছে,তা না কাটাতেই আঘাতের স্বীকার হয় শ্বশুর বাড়ির অন্য সদস্যদের হাতে।আর সবচেয়ে বড় আঘাত পায় যখন গর্ভধারিণী মা বলে এটাই নিয়ম,এটাই বেহেশত। এই বিক্ষীপ্ত মনের লালন-পালন থেকেই সৃষ্টি হয় আরেকজন জল্লাদ শ্বাশুরীর।২৫ বছর বয়স পর্যন্ত একজন মেয়ের যেখানে শেখার কথা কিভাবে মানুষকে ভালোবাসবে,সেখানে সে শিখে কিভাবে মানুষকে আঘাত করতে হয়।আর পরে তার সেই শিক্ষার শিকার হয় তার ছেলের বউ।মানে আমরা বলতে পারি নারী নির্যতনের সূত্রপাত শুরু হয় নারীকে দিয়েই।যখন একজন মা,একজন শ্বাশুরী,একজন বোন,একজন যে শক্ত করে পরিবারে নির্যাতিত মেয়েটির হাত ধরে তার পাশে দাঁড়ায়,তখন সে নারীকে কোন পুরুষ নির্যাতন করতে পারে না।পারবে না।এটা সম্ভব না।এবার আসা যাক ২০২১সালের কথায়।সবই একই ধারায় চলছে। ২টি জিনিস পরিবর্তন।
১।১৮০০সালে বলা হতো ১২ বছর বয়স পার হয়ে গেলে মেয়ের জন্য পাত্র পাওয়া সমস্যা।আর ২০২১ সালে বলে ১৮ বছর পার হয়ে গেলে মেয়ের জন্য পাত্র পাওয়া সমস্যা।বাংলাদেশে শিক্ষিত,অশিক্ষিত মিলে শতকরা ৯৫ জন ছেলে আজও বিয়ে করতে গেলে কচি বউ খুজে।
২।আগে মেয়েরা বুঝত না তারা নির্যাতিত।কিন্তু এখন মেয়েরা বুঝে তারা নির্যাতিত।তবে এই বুঝতে পারায় তেমন একটা লাভ হয় বলে আমার মনে হয় না।মাঝখান থেকে ডিভোর্স,পরকিয়া আর বিদ্ধাশ্রম এর পরিমান বেড়ে চলেছে।
স্ট্যাটাস অব দ্যা ডে"- ৫৬৩
Date:- ৩০/০৬/২০২১
নাম: ফারজানা ইয়াসমিন
ব্যাচ: ১৪
রেজি: ৬৩৪৬১
জেলা: ঢাকা