প্রবাস_মানে_হাসি_নয়_কষ্ট_চোখের_জল_প্রবাস_মানে_ভাঙ্গা_বুকে_জীবন_গড়ার_বল
আসসালামু আলাইকুম
এই ফাউন্ডেশনকে আমার পরিবারের চেয়েও আমি বেশি ভাবি, তাই প্রিয় পরিবারের মানুষের সাথে আমার কিছু না বলা কষ্টের কথা শেয়ার করতে আজকে আমার এই লেখা। আশা করি আমার পরিবারের সদস্যরা আমাকে নিরাশ করবেন না পুরোলেখাটি পড়বেন।
লেখার শুরুতে শুকরীয়া আদায় করছি মহান সৃষ্টিকতার নিকট যিনি কিনা আমাদেরকে সৃষ্টির সেরা জিব আশরাফুল মাখলুকাত মানুষ হিসেবে সৃষ্টি করেছেন। আলহামদুলিল্লাহ
দরুদ ও ছালাম পেশ করছি আমাদের সকলের বিশ্ব মানবতার অগ্রদূত হজরত মুহাম্মদ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের প্রতি এবং কৃতজ্ঞতা ও ভালোবাসা আমার শ্রদ্ধাভাজন পিতা মাতার প্রতি।
আরো কৃতজ্ঞতা ও ভালবাসা জ্ঞাপন করছি সেই মহান ব্যক্তির প্রতি, সমাজের নিবেদিত প্রান লাখো তরুণ-তরুণীর প্রাণপ্রিয় শিক্ষাগুরু ইকবাল বাহার জাহিদ স্যারের প্রতি।
#মূল_গল্প
'''''''''''''''''''''''''''''''''''''''''
আমাদের পরিবারের সদস্য সংখ্যা মোট ৮ জন আব্বা আম্মা আমরা ৬ ভাই-বোন । একটি সাধারণ কৃষক পরিবারে আমার জন্ম হয়। হাজি শরীয়তউল্লার শরীয়তপুর জেলার ডামুড্যা থানার ধান কাটি ইউনিয়ন চরধানকাটি প্রত্যন্ত একটি গ্রামে একটি মুসলিম পরিবারে আমার জন্ম। দাদা- দাদিকে দেখার সৌভাগ্য আমার হয়নাই , তাই দাদা দাদির আদর ভালবাসা কি জিনিস তা আমি কখনো উপলব্ধি করতে পারি নাই।
কৃষি হচ্ছে আমাদের প্রধান এবং একমাত্র উপারজনের মাধ্যম। এর মধ্যে উতপাদন কারি ফসল গুলো হচ্ছে ধান পাট মরিচ রসুন পিয়াজ ইত্যাদি। আমাদের জমি নিচু ছিলো বিদায় বছরে ৫/৬মাস আমরা ফসল আবাদ করতে পারতাম , যে বছর প্রাকৃতিক দুর্যোগ অথবা বন্যার পানি দীর্ঘস্থায়ী হত ওই বছর আমাদের চলতে অনেক কষ্ট হতো।
আমি যখন থেকে বুঝতে শিখেছি তখন থেকে দেখতাম বাবা কঠোর পরিশ্রম করতেন , আমার বাবা অনেক ধার্মিক ব্যক্তি ছিলেন ফজরের আযানের পর কাউকে আর ঘুমিয়ে থাকতে দিতেন না আমাদের সবাইকে ডেকে তিনি নামাজ পড়ে বেরিয়ে যেতেন। দিনরাত হাড়ভাঙ্গা পরিশ্রম করে আমাদের আটজনের ফ্যামিলি টাকে বুকে আগলে রাখতে চেষ্টা করছিলেন আমাদের বাবা, কিন্তু বারবার প্রকৃতির কাছে হার মানতে হচ্ছে আমাদের, বাধ্য হয়ে বাবা বড় দুই ভাইকে এক দোকানে দিলেন কাজের জন্য, আমার বড় বোনের অনেক আগেই বিয়ে হয়ে গিয়েছিল।
আমার দৈনন্দিন রুটিন ছিল ফজরের নামাজ শেষ করে মক্তবে আরবি পড়তে যেতাম আরবি পড়া শেষ সকালের নাস্তা খেয়ে স্কুলে যেতাম স্কুল থেকে ফিরে বাবাকে আমাদের জমি আবাদের জন্য সাহায্য করতাম এভাবেই চলছিল আমার দিন কাল ।
হঠাৎ করে একদিন আমার মা ভীষণ অসুস্থ হয়ে পড়লেন কোন কাজ কর্ম করতে পারেন না ঘরের সকল কাজের দায়িত্ব পরলো আমার ছোট আপার কাঁধের উপর , অনেক ডাক্তার অনেক কবিরাজকে দেখানো হয়েছে কোন কাজই হচ্ছে না এখনকার মতন চিকিৎসাব্যবস্থা তখন এত উন্নত ছিল না তখন, বড়ো ভাইয়েরা যেই টাকা বেতন পেতেন পুরো টাকা টায় মায়ের পিছনে ডাক্তার এবং ঔষধেই খরচ হয়ে যেত।
একদিন মেজো ভাই কাজ ছেড়ে বাড়ি চলে এলেন বাবাকে বললেন দেশে আমার কাজ করতে ভালো লাগছে না আমাকে বিদেশে পাঠানোর ব্যবস্থা করে দেন এতে আপনার কষ্ট লাঘব হবে , বাবা কিছু জাগা বন্ধক রেখে এবং আত্মীয় স্বজনদের কাছ থেকে টাকা ধার করে মেজো ভাইকে বিদেশে পাঠালেন , আমরা আশা করেছিলাম মেজো ভাই বিদেশে গেলে আমাদের পরিবারে আর্থিক সচ্ছলতা আসবে কিন্তু আমাদের আশায় গুড়ে বালি কারণ মেজ ভাইকে যে বেতন বলে নেওয়া হয়েছিল ওই বেতনের তিন ভাগের এক ভাগ দেওয়া হতো ওই বেতন নিয়ে ভাই নিজেই চলতে পারতেন না আমাদেরকে আর কি দিবেন।
তখন আমি অষ্টম শ্রেণিতে পড়ি
হঠাৎ একদিন ছোট আপুর বিবাহের প্রস্তাব আসে আমাদের পাশের গ্রাম থেকে ছেলে দুবাই প্রবাসী ভালো ছেলে দেখে বাবা আর অমত করে নাই আল্লাহর হুকুমে ছোট আপুর বিবাহ হয়ে রায়। বিবাহের চার মাস পর দুলাভাই তার ছুটি শেষ হয়ে গেলে তিনি আবার দুবাই চলে যান। দুলাভাই চলে যাবার দুই থেকে তিন মাস পরে হটাৎ আমার ছোট আপু অসুস্থ হয়ে পড়ে গ্রামের ডাক্তার কবিরাজ দেখানো হয়েছিল আপুকে , কিন্তু কোন কাজ হচ্ছিলো না অবস্থা খারাপ দেখে ছোট আপুর শশুর-শাশুড়ি আমার বড় ভাই কে খবর দিলো বড় ভাই আপুর এই অবস্থা দেখে এক মুহূর্ত দেরি না করে সোজা সদরে হাসপাতালে নিয়ে গেলো । হাসপাতালে ভর্তি ঠিক দুই দিন পরে আমার ছোট আপু আমাদের কে ছেড়ে না ফেরার দেশে পাড়ি জমালো। আমার স্পষ্ট খেয়াল আছে আমি স্কুল শেষ করে বাড়ি ফিরে দেখি বড় ভাই আপুর লাশের পাশে কাঁদছিলেন প্রথমে আমি বিশ্বাস করতে পারছিলাম না ছোট আপু আমাকে অনেক আদর করতেন আপুকে হারিয়ে আমি স্থির থাকতে পারছিলাম না সেই দিন প্রথম বার বুজেছিলাম আপনজন হারানোর বেদনা যে কত কষ্টের।
মা আগে থেকে অসুস্থ ছিলেন এর পরে আরো বেশি অসুস্থ হয়ে পড়লেন। বড় আপু এসে আমাদের রান্না করে দিয়ে যেত এভাবে চললো বেশকিছু দিন। মায়ের অসুস্থতা দিনকে দিন বেড়েই চলেছে এমন অবস্থায় বাবাকে বললাম মাকে ঢাকায় নিয়ে চিকিৎসা করানোর জন্য , মেজো ভাই কিছু টাকা পাঠালেন সেটা চিকিৎসার জন্য যথেষ্ট ছিল না বিধায় বাবা সিদ্ধান্ত নিয়েছে একটা হালের গরু বিক্রি করার। দিনটি ছিলো সোমবার হাটের দিন এক কবিরাজ মায়ের চিকিৎসা করতেন তার বাড়ি অনেক দূর বাবা বললেন তুই কবিরাজ বাড়ি যা তোর মায়ের ওষুধ আনতে আমি গরু নিয়ে হাটে যাচ্ছি তুই ওষুধ নিয়ে সোজা হাটে চলে আসিস পরে আমরা একসাথে বাড়ি ফিরবো। আমি ওষুধ নিয়ে হাটে গিয়ে দেখি বাবার মুখটা মলিন হয়ে আছে বাবাকে জিজ্ঞেস করলাম গরু বিক্রি হয়নি বাবা দীর্ঘশ্বাস-ফেলে বললেন না রে বাবা কথাটা শুনে আমার মনটা অনেক খারাপ হয়ে গেল আমার মন খারাপ দেখে বাবা আমার পিঠ-চাপরে বললেন মন খারাপ করিস না বাবা এই সপ্তাহের বিক্রি হয় নাই তো কি হয়েছে সামনের সপ্তাহে ঠিকই আমাদের গরু বিক্রি , হবে তারপর তোর মাকে নিয়ে ঢাকা যাবো। বাবা বললো চল বাড়ি চলে যাই বাড়ির কাছে আসতেই দেখি অনেক মানুষের ভিড়ে আমার ছোট মামা দৌড়ে এসে জিজ্ঞেস করলেন তোমরা কোথায় ছিলে সারাদিন বাবা বললেন ও ওর মা জন্য ওষুধ আনতে গিয়েছিলো আর আমি হাটে গরু বিক্রি করতে গিয়েছিল তোর বোন নিয়ে ঢাকা যাবো চিকিৎসার জন্য মামা আমাকে জড়িয়ে ধরে চিৎকার করে বলল তোর মা আর কোনদিন ওষুধ খাবে না রে.............. তোর মা আমাদেরকে ছেড়ে আল্লাহর ডাকে সাড়া দিয়ে না ফেরার দেশে চলে গেছে কথাটা শুনে আমার কাছে মনে হলো আকাশ ভেঙে আমার মাথার উপর পরলো , মনে হচ্ছিল পায়ের নিচের মাটি সরে যাচ্ছে , সাথেসাথে আমি বেহুশ হয়ে যাই , হুশ ফেরার পরে দেখি মায়ের যানাজা দেয়ার জন্য সবাই আমার অপেক্ষা করতেছে শেষ বারের মতো মায়ের মুখটা একবার দেখলাম। এতিম হয়ে গেলাম ছোট ভাইটা তখন ৪র্থ শ্রেণীতে আর আমি নবম শ্রেণিতে পড়ি , আমাদের জীবনে নেমে এসেছে ঘোর-অন্ধকার মাত্র ছয় মাসে ব্যাবধানে পরিবারের দুই জনের মৃত্যুতে আমাদের জীবনটাকে তছনছ করে দিয়েছে। এরপর থেকে ঘুম খাবার পরালেখা কিছুই ভালো লাগতো না বাড়ি শুন্য শুন্য মনে হতো ভেতর থেকে দম বন্ধ হয়ে আসতো কিছুতেই নিজেকে সান্ত্বনা দিতে পারছিলাম না।
এরপর বাবা বড় ভাইকে বিয়ের কথা বললেন বড় ভাই প্রথমে রাজি ছিল না শেষমেষ আমাদের কথা চিন্তা করে বিয়েতে রাজি হল নতুন ভাবী এল বয়সে ছোট বিধায় পুরো সংসার সামাল দিতে ভাবি হিমশিম খেতে লাগলেন। তারপর
সব ভাই বোন আত্মীয় স্বজনরা এক সাথে বসে সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাবাকে আবার বিয়ে করাবো , বাবার বয়সী একজন বিধবা মহিলাকে পেয়েও গেলাম বিয়ে করানো হল বাবাকে ।
নিজেকে শক্ত করে নতুন করে আবার জীবন শুরু করার চেষ্টা করতেছি আবার লেখাপড়া শুরু করলাম ২০০২ সালে S.S.C. পরীক্ষা শেষ করে বাবাকে বলি আমি আর পড়ালেখা করবো না, আমাকে বিদেশে পাঠানোর ব্যবস্থা করে দেন সাথে মেজো ভাইকে জানায় , ভাই বলে টেইলারিং কাজটা শিখো আর পাসপোর্ট বানাতে দাও দেখি কি করা যায়। তারপর পাসপোর্ট বানানো হলে এক কপি আমার মেজ ভাইকে পাঠাই আরেক কপি কুয়েত প্রবাসী আমার চাচাতো ভাইকে পাঠাই। কিছুদিন পর আমার চাচাতো ভাই আমার জন্য ভিসা পাঠায়।
প্রবাস জীবন শুরু
'''''''''''''''''''''''''''''''''''''''''''''''''''''''''''''''''''''''
#প্রবাস_মানে_হাসি_নয়_কষ্ট_চোখের_জল_প্রবাস_মানে_ভাঙ্গা_বুকে_জীবন_গড়ার_বল
কুয়েত আসলাম তিন মাস বেকার বসে খেলাম , ভাষাগত সমস্যার কারণে কাজ পেতে অনেক কষ্ট হল তিন মাস পর একটা কাজ পেলাম তাও আবার এক মাস পর কারখানা বন্ধ হয়ে গেলে বেতনও পেলাম না। আবার আরেক জায়গায় কাজ পেলাম বেতন অনেক কম নিজের রুম ভাড়া খাবার খরচ দিতেই বেতনের অবশিষ্ট কিছুই থাকত না আমার হাতে অনেক কষ্ট করে ছয় মাস পর বাবার জন্য ১০ হাজার টাকা পাঠালাম। চাচা তো ভাই একদিন এসে বললো এভাবে চলতে থাকলে তুমিতো ভিসা নবায়নের টাকা কিভাবে জোগাড় করবা কিভাবে , তুমি একটা কাজ করো আমি একটা কুয়েতির সন্ধান পেয়েছি দিনে কাজ করবে রাতে কুয়েতীর দেওয়ানীয়াতে চা কফি বানিয়ে দিবে তাদের তোমার থাকা-খাওয়া ওইখানেই, তোমার একটু কষ্ট হবে কিন্তু আবার লাভও আছে তোমার ভাষাগত সমস্যা টা কেটে যাবে এরাবিয়ান কালচার সম্বন্ধে ধারণা পাবে যেটা তোমার ভবিষ্যতে কাজে আসবে, আমি রাজি হয়ে গেলাম কথায় আছে কষ্ট না করলে কেষ্ট মিলে না সকাল সাতটা থেকে রাত আটটা পর্যন্ত টানা টেইলারিং এর কাজ করতাম এরপর (দেওয়ানীয়াতে মানে- কুয়েতিরা বন্ধুবান্ধব নিয়ে যেখানে আড্ডা মারে ওটাকে আরবিতে দেওয়ানীয়া বলে) রাত ৮ থেকে ১২টা/ ১টা পর্যন্ত কোন কোন সময়৩/৪ টাও বেজে যেত কিন্তু কিছুই করার নেই আমার বাধ্য হয়ে কাজ করতে হতো , এভাবে পুরো একটি বছর পর ওইখানে কাজ করি। এর ভিতর আরবি ভাষাটা মোটামুটি আমি আয়ত্ত করে ফেলেছি এবং আরবি কালচার সম্বন্ধে কিছুটা ধারণা হয়েছে।
এর ভিতরে বেশ কিছু লোকের সাথে আমার পরিচয় হয় যারা কিনা টেইলারিং পেশায় আছে , এবং আমার ভিতরে অনেক শেখার এবং জানার আগ্রহ তৈরি হয়। এর ভেতরে এক দোকানে থেকে কাজের অফার আসে , বেতন বেশি না কিন্তু ওইখান থেকে নতুন কিছু শিখতে পারবো এবং তারা আমার আকামা নবায়ন করে দিবে সম্পূর্ণ ফ্রিতে যেটা আমার খুবই প্রয়োজন ছিল। এই ভেবে আগের চাকরি ছেড়ে ওইখানে জয়েন্ট করি , ভালই কাটছিল এখানে আমার দিন, অনেক কিছু জানতে এবং শিখতে পারছিলাম দেখতে দেখতে আকামা নবায়নের সময় এসে গেলো তখনই বাদে আরেক বিপত্তি , বাংলাদেশীদের আকামা ট্রানস্ফার কুয়েত সরকার সামরিকভাবে বন্ধ করে দেয় , তখন বাধ্য হয়ে আমার পুরনো মালিকের কাছে যাই আমার আকামা নবায়নের জন্য আলোচনা করতে, আমার পুরনো কপিল ছিল সুযোগ সন্ধানী আমার এই অবস্থার কথা শুনে তিনি আমার কাছে দ্বিগুণ টাকা চেয়ে বসলেন আকামা নবায়ন করার জন্য ,অনেক অনুরোধ করা সত্ত্বেও তিনি একটি টাকাও কম করলেন না বাধ্য হয়েই দ্বিগুন টাকা দিয়ে দুই বছরের জন্য আকামা নবায়ন করতে দিলাম ,যখন আমি আমার সিভিল আইডি আনতে গেলাম উনার কাছে তখন দেখি উনি মাত্র এক বছরের আকামা নবায়ন করেছে, তাকে এই বিষয়ে জিজ্ঞেস করতেই তুমি আমার উপর রেগে গেলেন বললেন বেশি কথা বলবে আকামা ক্যানসেল করে সোজা দেশে পাঠিয়ে দিবো , আমি আর কথা বাড়ালাম না উনাদের দেশ উনাদের আইন কানুন আমাদের কথা শোনার কেউ নাই এখানে একমাত্র আল্লাহ ছাড়া আল্লাহর কাছে বিচার দিয়ে চলে এলাম।
এরপর ২০১১ সালে ছুটিতে দেশে গেলাম দেশে যাওয়ার পর সবার পছন্দ মতে বিয়ে করলাম শুরু হলো আমার নতুন জীবন বিয়ের চার মাস পর আবার কুয়েতে ব্যাক করলাম এভাবে যাওয়া-আসার ভিতরে থাকলাম।
২৩-১২-২০১৫ তারিখে আমাদের ঘর আলো করে এ পৃথিবীতে জন্ম গ্রহণ করলো আমার পুত্র সন্তান
আর দশজন প্রবাসী যে ভুলটি কাজ টি করে আমিও ঠিক একই রকম কাজ করছি এক বছর/দেড় বছরে যা কামাই করতাম ছুটিতে গিয়ে দেশে সব খরচ করে আসতাম। আমার পুত্র সন্তান হওয়ার পর একটু চিন্তায় পড়ে গেলাম নিজেকে নিজে জিজ্ঞাস করলাম এভাবে যদি চলতে থাকি তাহলে আমার ভবিষ্যৎ কী! চিন্তা করলাম এমন কিছু করবো কাজের পাশাপাশি যাতে দুইটা টাকা আয় করা যায় এক বন্ধুর সাথে পার্টনারে ছোটখাটো পার্ট টাইম বিজনেস শুরু করলাম। মোটামুটি কিছু টাকা লাভ হচ্ছিল কিন্তু আমরা দুজনই নিজেদের কাজে এত ব্যস্ত ছিলাম যে ওই ব্যবসাটা দীর্ঘস্থায়ী করা সম্ভব হল না। কিছুদিন পর চিন্তা করলাম দেশে কিছু করা যায় কিনা কিন্তু কিভাবে আমারও তো অর্থ নাই দেশে কোন কিছুতে ইনভেস্ট করবো।
এভাবে দোটানায় চলছিল আমার জীবন
হঠাৎ একদিন ইউটিউবে স্যারের ভিডিও দেখলাম স্যারের কথাগুলো আমার মনে গেঁথে গেল তারপর নিজের বলার মতো একটা গল্প ফাউন্ডেশনে সাথে যুক্ত হয় যুক্ত হওয়ার পরে নিজে নিজে রেজিস্ট্রেশন সম্পন্ন করি। স্যারের প্রতিটি কথা প্রতিটি সেশন আমাকে নতুন করে স্বপ্ন দেখার জন্য উদ্বুদ্ধ করে , এই প্ল্যাটফর্মে যুক্ত হওয়ার পর থেকে আমি নিজেই নিজের পরিবর্তন দেখতে পাচ্ছি এখন আর টেনশন করি না নিজের ভবিষ্যৎ নিয়ে স্যারের শিক্ষা এবং আদর্শ নিয়ে এগিয়ে যেতে চাই।
সময় নিন সময় দিন সময়ই সব ঠিক করে দিবে। প্রিয় স্যারের এই মূল্যবান বাণী বুকে ধারণ করে ধৈর্য ধরে সময়ের জন্য অপেক্ষা করছি।
ইকবাল বাহার জাহিদ স্যার আপনার কাছে আমরা বাংলাদেশের সকল প্রবাসীরা চির-ঋণী হয়ে থাকলাম। আপনি যে স্বপ্ন দেখিছেন আমাদের এবং যে শিক্ষা দিয়ে যাচ্ছেন আমরা যেন তা বাস্তবায়ন করতে পারি দোয়া করবেন আমাদের জন্য প্রিয় স্যার। আপনি প্রবাসীদের যে সম্মান এবং যে স্বীকৃতি দিয়েছেন তা প্রবাসীদের চলার পথে অনুপ্রেরণা যুগিয়েছে অনেক গুণ।
নিজের বলার মতো একটা গল্প ফাউন্ডেশন থেকে আমার প্রাপ্তির কথা বলে শেষ করা যাবে না , তার পরেও এন আর বি কুয়েত টিমের কথা না বললেই নয় , কুয়েত টিমের প্রত্যেকটা সদস্য একে অন্যকে কি পরিমান শ্রদ্ধা করে এবং ভালোবাসে তা বলে বোঝানো যাবে না , বিশেষ করে মাহমুদ ভাইয়ের কথা না বললেই নয় নতুন সদস্যদের উনি গড়ে তুলতে যে পরিশ্রম করে তা অতুলনীয়। এন আর বি কুয়েত টিমকে সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়ে এগিয়ে নিয়ে চলেছেন প্রিয় ভাই প্রিয় ভাইয়ের সুস্বাস্থ্য ও নেক হায়াত কামনা করছি।
পরিশেষে বলবো প্রিয় স্যার আপনার সুস্বাস্থ্য এবং নেক হায়াত কামনা করছি মহান সৃষ্টিকর্তার প্রতি।
আমার পরিবারের সদস্য বৃন্দ আমার লেখার মধ্যে যদি কোন ভুল-ত্রুটি থাকে ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন।
কোরণা-মহামারী প্রকট হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে বাংলাদেশসহ পুরা বিশ্বে" নিজের বলার মত একটা গল্প ফাউন্ডেশনের"আমার শ্রদ্ধাভাজন ভাই ও বোনেরা যে যেখানেই থাকেন না কেনো একটু সাবধানে চলাফেরা করবেন , স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলাফেরা করবেন , দোয়া করি মহান আল্লাহর কাছে আপনাদের সবাইকে আল্লাহ সুস্থ এবং নিরাপদ রাখে।
"স্ট্যাটাস অব দ্যা ডে"- ৫৬৫
Date:- ২/০৭/২০২১
___________________________________
________________________________________________
ধন্যবাদান্তে
নাম : মোঃ রিপন আলি।
ব্যাচঃ ১২
রেজিঃ৩৭৬১৬
জেলাঃশরিয়তপুর।
থানাঃ সদর
ব্লাডঃ বি পজিটিভ
বর্তমানে কুয়েত প্রবাসী