বৃদ্ধ বয়েসে তারা সন্ধান দের থেকে বঞ্চিত। তাই তারা নিরুপায় হয়ে ভিক্ষে করে জীবিকা নির্বাহ করে।
বিসমিল্লাহির রাহিমানির রাহিম।
অবলা অসহায় নারীর গল্প
আশা করি নিজেরা কিছু শিখার জন্য গল্পটি পড়বেন।
পৃথিবীতে যা কিছু মহান চির কল্যাণ কর, তার অর্ধেক করিয়াছে নারী, আর তার অর্ধেক নর!
একজন নারীকে কিছুটা মেনে, কিছটা মানিয়ে চলতে হয়। আমরা নারী সব কিছু মেনে নিতে পারি।
একজন নারীর কোনো নিজেস্ব বাড়ি নেই, সম্পদ নেই।
কখনো বাবার বাড়ি, কখনো স্বামীর বাড়ি, কখনো ভায়ের বাড়ি, কখনো ছেলের বাড়ি। এটার নামই নারী।
একজ অবুলা নারী তার সন্তান কে বলতে হয়, চলো তোমার নানা বাড়ি বা মামার বাড়ি যাবো। আবার নানার বাড়ি থেকে ফেরার সময় ছোট সন্তান কে বলতে হয়, চলো তোমার বাবার বা দাদার বাড়ি অথাবা তোমার বাড়ি যেতে হবে।
অবুজ ছোট শিশুটি তার মাকে জিজ্ঞেস করে, মা তোমার বাড়ি কোন টা??
অবুলা নারী নামক মা তার ছোট সন্তান কে বলতে পারে না, তার বাড়ি কোন টি। ছোট শিশুটি প্রশ্নের কোনো উত্তর নেই অবুলা নারী নামক মার কাছে।
গত দুদিন আগে,, আমি প্রয়োজনীয় কাজে মার্কেটে যাই। বাসে যোগে। তখন একটি মধ্যে বয়সি মেয়ে (২৮/৩০) বছর হবে। বোরকা পড়ে বাসে উঠে ভিক্ষে বা সাহায্য চাইছেন।
মেয়েটি বলতে থাকে তার স্বামী এক্সসিডেন্টে করে, মেডিকেল ভর্তি আছেন, তার স্বামী কে বাঁচাতে চিকৃৎসা করানো জন্য। টাকা লাগবে সবার কাছে সাহায্য চাইছেন।তার ঘরে ছোট দুটি বাচ্ছা আছেন। বাসে ৪৫/৫০ যাত্রি আছেন। মাত্র ২/৩ জন তাকে ৫/১০ টাকা ভিক্ষে দিয়েছেন। আমি চেয়ে চেয়ে দেখেছি আর ভাবছি আমার কাছে কখন আসবে।এক সময় আমার কাছে আসে,আর আমি তাকে ২০ টাকার একটি নোট দিলাম।
সে আমার জন্য অনেক দোয়া করেছেন। ভিক্ষুকরা ভিক্ষা বা সাহায্য পেলে যেমটি করে।
ঠিক এমন সময় পিছনে দুজন পুরুষ যাত্রি বলছে, এগুলো মেয়েটির ব্যাবসা।
কিছু মানুষ আছে যারা জীবনে সব কিছু বাঁকা চোখে দেখে। সোজা বা সরল ভাবে তারা কোনো কিছু চিন্তা করতে পারে না। এদে বাক্য শুরু নেগেটিভ দিয়ে।
নেগেটিভি মানুষ কে নেগেটিভির জন্ম দেয়।
মেয়েটি তাদের কথা শুনতে পেয়েছে,!!
আমি তাকে সান্ত্বনা দিলাম ভিক্ষা না করে কোনো কাজের ব্যাবস্তা করে যেন জীবিকা নির্বাহ করার চেষ্টা করে। কারণ ভিক্ষে করা ভালো কাজ নয়, সম্মানের নয়,। কাজের মাঝে সম্মান আছে, হোক সে ছোট বা বড় কাজ। আর কাজ করলে একদিন সংসারের স্বচ্ছলতা আসতে পারে।
মহিলা টি বাস থেকে নেমে গেলো।
যাবার সময় আমাকে দোয়া করে গেলো।, "আফা আল্লাহ আফনারে ভালো রাখুন, মঙ্গল করুন। হায়াত বাড়িয়ে দিন।ইত্যাদি।
কিছুক্ষণ পর আমি ও বাস থেকে নামলাম। বাস থেকে নামতেই অনেক বৃদ্ধ একজন মহিলা, মাগো কয়ডা টেকা দেন, গত রাত থেকে কিছু খায়নি। আল্লাহ আপনার জান শরীর ভালো রাখবো। বিপদ থেকে বাচাবেন।এমন করে আমার পথ আটকালো।
আমার মন খুব নরম ও আবেগ প্রবণ ও বড্ড মায়া লাগে, কোন বৃদ্ধ মানুষ যদি ভিক্ষে করে।দেখি আর দান ও সাহায্য করতে আমার খুব ভালো লাগে। দিলাম ১০ টাকা।
এমন হাজারো বৃদ্ধ মহিলা ও পুরুষেররা পথে ঘাটে পরে থাকে ক্ষিদার যন্ত্রনায় ভিক্ষে করে ভেড়ায়।
বৃদ্ধ বয়েসে তারা সন্ধান দের থেকে বঞ্চিত। তাই তারা নিরুপায় হয়ে ভিক্ষে করে জীবিকা নির্বাহ করে।
তাই আমি পৃথিবীর সকল সন্ত্বানদের প্রতি অনুরোধ রইলো আপনারা মা বাবা কে ভালোবাবেন, তাদের খেয়াল রাখবেন ও যত্ন নিবেন।
বাস্ট স্টপ এর পাশে দেখি এক মহিলা কিছু আম নিয়ে বসে আছেন। আম বিক্রেতা মহিলা আমাকে বলছে, আফা আম নিয়ে যান। খুব ভালো আম, খুব মিষ্টি। আমি বলি মিষ্টি হবে তো?? মহিলা বলে আফা অনেক কড়া মিষ্টি।
আমি জিজ্ঞেসবাদ করি কত কেজি বিক্রি করেন।
মহিলা বলো, ১২০ টাকা কেজি আর এগুলো ৯০ টাকা কেজি। মহিলার কাছে দুই ধরণের আম। তাই দাম টা ভিন্ন। আমের কোয়ালিটি অনুযায়ী।
আমের দাম শুনে অনেক মনে হলো। আমি চলে যায়। মহিলা, " আফা চলে যান, শুনেন, আপনি কত দিবেন?
আমার কিন্ত আম ক্রয় করার তেমন ইচ্ছে নেই, কারণ আমে ফর্মালিন থাকে বলে। আর আমের সিজনে অনেক আম খাওয়া হয়েছে ফর্মালিন মুক্ত। নিজের বলার বলার মতো একটি গল্প প্রাণের ফাউন্ডেশনের ভাই ও আপুদের থেকে।
মহিলাটি আমাকে পুনরায় পিছন থেকে ডাক দেওয়ার কারণে মহিলার অসহায় মুখ টি দেখে আমার মায়া হলো।
আমি বললাম, আসছি, ব্যাংক থেকে ফেরার সময় তোমার থেকে আম নিয়ে যাবো।
,সবচেয়ে বড় বিনিয়োগ হচ্ছে, সততা ও কমিটমেন্ট ।
কমিটমেন্ট একটি বিশাল ব্যাপার, এটা রাখতে বুকে সাহস লাগে ও মনে জুর লাগে।
প্রিয় শিক্ষক জনাব, ইকবাল বাহার জাহিদ স্যার।
আমি ব্যাংক থেকে ফেরার সময় মহিলা আম বিক্রয়কারীর কাছে যাই, আর মহিলার আমি বিক্রি হয়নি দেখতে পেলাম এবং আমি জিজ্ঞেস করি আম কত টাকা কেজি দিতে পারবেন ??
মহিলা বিক্রয়কারী, বলে, ২ রকমের আম রয়েছে, আপনার জন্য শুধু, ১২০ টাকার আম ১১০ টাকায় দিবো আর ৯০ টাকার টা ৮০ টাকায় দিতে পারবো
তারপর আমি মহিলাটিকে বললাম, আমি ১১০ টাকার আম টা ১০০ টাকা দিবো, আর ৮০ টাকার টা ৭০ টাকা দিবো।
তখন মহিলাটি বললো, "আফা গো এই দামে দিলে আমার লাভ হবে না।
তখন আমি মহিলাটিকে জিজ্ঞেস করি, তোমার এখানে কত কেজি আম আছে?
মহিলাটি বললো, ২ রকমের আম ৫ কেজি + ৫ কেজি, মোট ১০ কেজি।।
আমি মহিলাটিকে বলি, ১০ কেজি, আম বিক্রি করলে তোমার কত লাভ হবে..??
তখন মহিলাটি বলে, আফা, আমি মাহাজন এর কাছ থেকে আম, নিয়ে এখানে আম বিক্রি করতে বসছি, মাহাজান বলছে আমি এই দামে আম বিক্রি করতে পারলে মাহাজান আমাকে ১০০/- টাকা দিবে।
তখন আমি বুঝে গেলাম, মহিলাটি একজন রিসেলার। তারপর মহিলাকে জিজ্ঞেস করলাম তুমি আম বিক্রি করো কেন,?? তোমার স্বামী কোথায়, ছেলে মেয়ে কত জন তোমার???
তখন মহিলাটি বলে, তার স্বামী অটুচালক ছিলো, রোড এক্সিডেন্ট এ মারা গেছে, তার ৩ জন সন্তান, ২ টি মেয়ে ১ টি ছেলে। ছেলেটার বয়স ১০ বছর, আর
একটি মেয়ের বয়স ৪ বছর, আরেকটি মেয়ের বয়স ২ বছর ২ বছরের মেয়েটি মায়ের সাথেই আছে। ১০ বছরের ছেলেটি, মাহাজনের, আমের আরতে কাজ করে।
আমি বলি, তুমি সারাদিনে কত কেজি আম বিক্রি করতে পারো??
মহিলা টি বলে, " ২০- ৪০ কেজি বিক্রি করতে পারি,,
আফা গো ঠিক নাই, একেক দিন একেক রকম।
তখন আমি বলি আজ কত কেজি বিক্রি করেছো?
মহিলা, বলে আজ এহন বিক্রি হয় না, আপনার কাছে বেচতে পারলে, প্রথম বনি হইবো।
আমি বলি, এই আয়ে কি তোমার সংসার চলে.?
মহিলাটি বলে, "না আফা, সকাল বেলা মাহাজনের বাসায় কাজ করি মাহাজন মাসে ১০০০টাকা দেয় , আর সন্ধ্যায় বাড়ি ফিরি। খুব কষ্ট করে তিন টি ছেলে মেয়ে নিয়ে চলি।
আমি, জিজ্ঞেস করি, তুমি কি লেখা পড়া জানোনা?
মহিলাটি বলে, না আফা, আমি লেখাপড়া করতে পারিনাই, আমার মা, বাবা গরিব ছিলো, তাই অভাবে আর লেখা পড়া করা হয়নি।,ছোট কালে মা বাবা বিয়ে দিয়ে দেয়। এখন আমার বাবাও নেই। আমার, দুই ভাই আছে, ভায়ের বউ এর আমায় তেমন, খোজ খবর রাখে না।
তখন আমার, তার প্রতি মায়া, হলো, যদিও, আমার প্রয়োজন ছিলানা তবুও আমি তার ১০ কেজি আম নিয়ে নিলাম।
বাড়িতে ১০ কেজি আম নিয়ে আসলে মা বলছে, এবছর অনেক আম খাওয়া হয়েছে, তারপর ও তুমি কেন এতগুলো আম নিয়ে এসেছো তোমার,
ভাইয়েরা তো আম নিয়ে আসতো তুমি বললে।
আর আম গুলো তো ভালো হবে মনে হয় না । দেখতে তো ভালো দেখা যাচ্ছে। আমি বলি মা খুব মিষ্টি আম।
তখন একটি আম কাটা হলো কিন্তু তেমন মিষ্টি হয়নি। আর পরের দিন অনেক গুলো আম নষ্ট হয়ে যায়।
তখন মাকে আমি বলি মা একজন মহিলা আম বিক্রি করেছিলো তার স্বামী নেই আর এমন ভাবে বলছিলো আর আমার মায়া হচ্ছিলো আর আমি ও সব গুলো আম নিয়ে এসেছি। তখন মা বলে আচ্ছা ঠিক আছে কিন্তু আম গুলো যদি ভালো হতো তাহলে ঠিক ছিলো।
আমি বলি মা মহিলার তো দোষ নেই। আমের আরতের ব্যাবসায়িরা এমন করে আমে ফর্মালিন দিয়ে টাটকা ও সতেজ রাখে। মহিলা এত কিছু বুঝে না, জানে না,।
জীবনের সবচেয়ে বড় সফলতা হচ্ছে খুশি থাকা।আর একজন ভালো মানুষই জীবনে বেশির ভাগ সময়ই খুশি থাকতে পারে।
খাদ্য দ্রব্বে ফর্মালিন দেওয়া জঘন্য অপরাধ। এটেন্ড টু মাডার।
কাউকে ঠকিয়ে কি আনন্দ পাওয়া যায়। ......!????
রাতে ঘুম হয়? পিছনে তাকিয়ে দেখুন আপনিও ভালো নেই। ভালো থাকবেন না।
আমার মা বলে তুমি এখন ও অবুজ বাচ্ছাদের মতই রয়ে গেলা।
মা, বলে ছোট বেলা আমাকে নিয়ে বাহিরে গেলে কোনো ভিক্ষুক যদি টাকা ভিক্ষে চাইতো, তখন মা, বাবা, ভাই, বোন, বড়রা যারাই সংগে থাকতো, তাদের, বাইনা করতাম, ভিক্ষুক কে টাকা দেওয়ার জন্য। আর বাড়িতে কোনো ভিক্ষুক আসেলে, ভিক্ষুক কে, প্রায় আধা কেজি চাল দিয়ে দিতাম। অন্য কিছু ও খবার দিয়ে দিতাম।আর আমার ও মনে পড়ে এসব কথা।
ভালোবাস তে হয় শিশু হয়ে,!
শিশুর মতো করে,!
হয়ে যেতে হয় শিশু।
প্রতিটি মানুষের ভিতরে একটা শিশু বাস করে,,,, অল্প শিশু, একটু বেশি শিশু, বেশি বেশি শিশু।
,সবচেয়ে বড় বিনয়োগ হচ্ছে, সততা ও কমিটমেন্ট ।
প্রতিটি মেয়ের ই কোনো না কোনো কাজ নিয়ে ব্যাস্ত থাকা উচিৎ।
প্রতি টি মেয়ে লেখা পড়া জানা উচিৎ।স্বাবলম্বী হওয়া উচিৎ।
প্রতিটি মেয়ের ছোট হোক বা বড় হোক, যেকোনো চাকরি বা ব্যাবসা করা উচিৎ।
যেকোনো কাজ নিয়ে ব্যাস্ত থাকা উচিৎ। ব্যাস্ত থাকলে, কারো জন্য অপেক্ষা করতে হয় না।
সংসারের ছোট ছোট অবহেলার বিষয় গুলো ইগনোর করা যায় ব্যাস্ততার কারণে।
আমি কি সুখি,?? এটা নিয়ে ভাবনার অবকাশ থাকেনা।
আসে অর্থনৈতিক স্বাধীনতা, স্মমান এবং সিদ্ধান্তের ক্ষেত্রে নিজস্ব একটা অবস্থান।
পরিশেষে আপনার আমার প্রিয় ব্যক্তিত্ব জনাব
ইকবাল বাহার জাহিদ স্যারের প্রতি জানাই অন্তরের অন্তস্থল থেকে বিনম্র শ্রদ্ধা ভালোবাসা ও কৃতজ্ঞতা।
প্রিয় স্যার ও প্রিয় পরিবারে সকলের সু-স্বাস্থ্য, দীর্ঘায়ু ও মঙ্গল কামনা করে আজকের মতো বিধায় নিলাম। সকলে আমার জন্য দোয়া করবেন। সকলের প্রতি শুভকামনা ও ভালবাসা অবিরাম নিরন্তর।
আল্লাহ হাফেজ।
ধন্যবাদান্তে
কামরুন্নাহার খান মৌমিতা