ভুলে গিয়েছিলাম মা বাবা সবাইকে
আমার ছিলো তখন খুবই দূরদিন 😥 যে দিন গুলোকে ভাবতেও কষ্ট হয়। জীবনের একটাই লক্ষ্য ছিলো তখন বেঁচে থাকার।
এখনকার মতো এতো কথা বলতে পারতাম না। ভাবতাম জীবন টা শুধু খেয়ে পড়ে বেঁচে থাকার জন্য।
এর বাহিরে যে একটা জগৎ আছে সেটা ছিলো ভাবনার বাহিরে। মোবাইল ব্যবহার করতাম না। সময়টা ছিলো ২০০৭ সালের দিকে। তবে বেঁচে থাকার জন্য। প্রতিটা দিন যুদ্ধ করতাম। আমার ধারনা ছিলো শুধু সেক্রিফাইস করলেই জীবনটা সুন্দর হবে। লক্ষ্য ছিলো শুধু একজন কে খুশি রাখা।
ভুলে গিয়েছিলাম মা বাবা সবাইকে। সত্যি বলতে আমাকেই সবাই ভুলে গিয়েছিলো।😥
কারন সেদিন কারো জন্য একপ্লেট ভাত বাড়ার মতো অবস্থা আমার ছিলোনা। তাই বলে আমি কিন্তু কারো কাছে হাত পাতিনি।
সকালে উঠে ৭-৮ জন মানুষের রান্না শেষ করে ৪-৫ জন বাচ্চা কে পড়াতাম, তাদের পড়ানো শেষ করে দুপুরের আগেই বীমার টাকা কালেকশন করে দিতাম। তারপর তপ্ত রোদে ঘরে ফিরে দুপুরের খাবারের আয়োজন শেষ করতাম। তারপরেই সেলাই মেশিনে বসে যেতাম আর বাচ্চাদের টিউশনি করাতাম।একটা কিন্ডারগার্টেন স্কুলে শিক্ষকতা করতাম। বাচ্চাদের নাচও শিখাতাম। আবার সন্ধ্যার আগে রাতের খাবারের আয়োজন করতাম। তারপর রাত ১১ টা পর্যন্ত টিউশন করতাম।ঘুমাতে যাওয়ার আগে হয়তো জীবনের পাওয়া না পাওয়ার হিসাবটা নিয়ে বসার সময় টুকুও পাইনি। সবাই যখন গভীর ঘুমে আচ্ছন্ন! তখন আমি পড়তে বসতাম😥 এভাবেই চলতো প্রতিদিনের রুটিন।
এর পাশাপাশি চলতো আমার প্রতি সবার অমানবিক নির্যাতন!!! ছোটো খাটো ভুলে প্রচুর পিটুনি খেতে হতো😭 সত্যি বলতে ভাতের অভাব বুঝতে পারলেও অপমান আর নির্যাতনের অভাব টা কোনদিন বুঝিনি। 😭 খুব কষ্ট স্বীকার করে HSC পাস টা দিয়েছিলাম✊ কিন্তু তারপরে আর যুদ্ধ করে টিকে থাকতে পারিনি😭 পড়াশোনাটা বন্ধ হয়েছিলো। অনেকটা আর্থিক সহযোগিতার অভাব আর মাইরের ভয়ে😭
একটা মেয়ের জীবনে তার মা-বাবার ও পরিবারের সাপোর্ট থাকলে হয়তো মেয়েটা রাজ্য জয় করতে পারে✊
আমার নিজেকে হাসপাতালের বেডে যখন রেখেছিলাম যতনে! ঠিক সেই সময়টা নিজের কাছে নিজেকে প্রতিজ্ঞা বদ্ধ হয়েছিলাম যে নিজেকে আগে ভালোবাসতে শিখবে। নিজেকে তৈরি করবো।আলহামদুলিল্লাহ আজ আমি কিছুটা হলেও সেই প্রতিজ্ঞা রক্ষা করতে পেরেছি।
আর আজ নিজেকে ভালোবাসি বলেই হয়তো আমি শাপলা থেকে সাগরিকা ইকবাল হতে পেরেছি✊✊✊✊
"স্ট্যাটাস অব দ্যা ডে"- ৫৭২
Date:- ১৩/০৭/২০২১
সাগরিকা ইকবাল
১১ তম ব্যাচ
২০৫২৪ রেজিষ্ট্রেশন নং
কমিউনিটি ভলেন্টিয়ার
টাংগাইল জেলা
পেইজ শখের হাট