সবার জীবনেই কিছু না কিছু কথা লুকানো থাকে
আসলে আমি একজন স্টুডেন্ট, লেখা পড়া করছি।
আমার নিজের তেমন কোন গল্প এখনো তৈরি করতে পারি নাই বলে আমি মনে করি।
সবার জীবনেই কিছু না কিছু কথা লুকানো থাকে। আবার অনেকরই জীবনে স্বপ্ন থাকে আকাশ ছোঁয়া। আমারও ঠিক তেমনি স্বপ্ন আছে কিন্তু স্বপ্ন বস্তুব হবে বলে আমার মনে হয় না।
মানুষ যা চায় তা কি পায় ? আমার মনে হয় না। কারণ আমি একজন নারী, আমি আমার পরিবারের বড় মেয়ে, আমাকে দিয়ে কিছু হবেনা, আমাকে বিয়ে দিতে হবে, আমি কেন বাইরে যাবো, আমি কেন অন্য সবার মত না, এটাই কী আমি ? কিন্তু না এটা আমি না।
কথায় বলে আমরা নারী আমরা ও পারি,
হ্যা আমি ও এক স্বপ্নবাজ নারী। আমি ও নিজে থেকে কিছু করতে চাই, আমি আমার স্বপ্ন পূরণ করতে চাই। আমার লক্ষ্যে পৌঁছাতে চাই। আমি চাই আমাকে দেখে আমার সব বোনেরা ঘর বন্দি না থেকে কিছু করে তাদের স্বপ্ন পূরণ করবে, নিজেদেরকে নতুনভাবে তৈরি করবে। আমি আমার পরিবারের সকল মানুষের কাছ থেকে অনেক সাপোর্ট পেয়েছি, সাহস পেয়েছি, অনুপ্রেরণা পেয়েছি। আমি আমার পরিবারের অনেক আদরের সন্তান,, আমাকে সব সময় আমার বাবা মা সাপোর্ট করেন।
আমার পরিচয় - আমরা তিন ভাই বোন। ভাই বোনদের মধ্যে আমি সবার বড়, তার পর আমার বোন মেজ , সবার ছোট আমার ভাইয়া । আমি বর্তমানে পড়াশোনা করছি ডিগ্রিতে। ছোট বেলা থেকে নিজে কিছু করতে চাইতাম। এবং নিজের কাজ গুলো নিজেই করতাম। আমার বাবা বিজনেস করে আর আমার মা একজন গৃহীনি। আমি প্রথমে বলেছি বাবা মার খুব আদরের মেয়ে আমি । আমার বাবা অনেক কষ্ট করে আমাদের মানুষ করছে এবং আমি অনেক কাছ থেকে বাবার কষ্টটা কী তা নিজের চোখে দেখেছি। আর তখন থেকেই মনের ভিতর নিজে কিছু একটা করার ভাবনাটা কাজ করতে থাকে,, কিন্তু কী করবো বুঝে উঠতে পারছি না ।
তখন ভাবলাম আমাকে কিছু একটা করতেই হবে সামনে আমার S.s.c পরীক্ষা তাই পরিক্ষাটা দেওয়ার পর পরই আমি টিউশনি শুরু করে দিলাম,,, রেজাল্ট আসলো পাশ করেলাম,,, কিন্তু টিউশনি ছাড়িনি এই ভাবে কন্টিনিউ করতে থাকলাম, পাশা পাশি লেখা পড়া ও চলতে থাকলো এমনি করে H.S.C পর্যন্ত চালিয়ে গেলাম। H.S.C পরিক্ষার সময় হলো ভালোভাবে পিপারেশন নিয়ে HSC পরীক্ষা দিয়ে অবস্বর সময়টা বসে না থেকে জীবনের প্রথম বারের মতো একটা জব নেই,,,, জবটা নেওয়ার পর আমি বুঝতে পারলাম জব মেয়েদের জন্য না।
চার মাস পরে সেই জবটা ছেড়েও দিলাম । তার পর একটা স্কুলে জব নিলাম সেটাও ছেড়ে দিলাম । তার পর ভাবলাম কী করবো কিছুই বুঝতে পারছিলাম না। ভাবলাম নিজে বিজনেস করবো কিন্তু শুরুটা কি কিভাবে করবো বুঝতে পারছি না ।
নিজের চোখে বাবার কষ্টটা দেখে ভাবলাম আমাকে কিছু না কিছু করতেই হবে, নিজের পরিচয় নিজেকেই তৈরি করতে হবে। কী করবো ভাবতে ভাবতে ফেইজবুকে ঘাটাঘাটি করে আমি একটা পেইজ থেকে একটা থ্রি পিছ কিনেছিলাম।
কিন্তু আমাকে যেই থ্রি পিছ ছবিতে দেখিয়েছে এক রকম , দিয়েছিলো অন্য রকম।
সেখান থেকে আমার মন ভেঙে যায়। আমার অনেক খারাপ লাগে সখ করে অনলাইনে কাপড় কিনে ধোকা খেলাম। মানুষ এমন কি ভাবে করতে পারে ? সেটা আমার জানা ছিলো না জীবনে প্রথম বারের মতো নতুন অভিজ্ঞতা অর্জন করেছি।
সেই দিন থেকে মনে মনে আমার অনেক জেদ হয়। সেই জেদ থেকে থ্রিপিছ নিয়ে কাজ করার ইচ্ছে জাগে মনে।
যেই ভাবনা সেই কাজ, মানুষ আমার সাথে যেই ভাবে প্রতারনা করেছে আমি সেই প্রতারনার হাত থেকে মানুষকে বাচাতে নিজ উদ্যোগে থ্রি পিছ নিয়ে বিজনেস করার প্লান করলাম। মানুষকে ভালো কিছু দিবো বলে , আমার কাজে আমি সততা ঢেলে দিবো।সেই থেকে আমার এই পথে হাঁটা দুই চোখ স্বপ্ন নিয়ে সামনে এগিয়ে যাওয়া। মানুষের হৃদয়ে সততা দিয়ে জায়গা করে নেওয়াই আমার স্বপ্ন। আশা করছি কেউ আমার থেকে পন্য নিয়ে প্রতারিত হবে না সেটা ১০০% গ্যারান্টি।
বিজনেস শুরু করতে গিয়ে অনেকের অনেক কটু কথা শুনেছি আবার পরিবার থেকে অনেকে বলেছেন মেয়ে মানুষ বিয়ে দিতে হবে। মেয়ে লেখা পড়া করে অনলাইনে কাপড়ের বিজনেস করছে আশে পাশের সবাই শুনলে খারাপ বলবে। মেয়েরা বিজনেস করুক আমাদের সমাজের বেশির ভাগ মানুষ সেটা সহজে মেনে নেয় না। এটা আমারা বেশির ভাগ মানুষেই জানি। আমি নাছোর বান্দা। যেটা একবার নিজের মনের সাথে কমিটমেন্ট করি সেটা করেই ছাড়ি। যে যাই বলুক, যে যা মনে করুক তাতে আমার কিচ্ছু যায় আসে না। আজকে যারা আমাকে বাজে কথা বলছে, আমাকে কটু কথা বলছে তারা কখনো আমাকে কোন দিন একটিবার জিজ্ঞেস ও করে নাই যে মা তুমি কি আজকে খেয় আছো নাকি নাখেয়ে আছো। কারো কথায় আমার পেট ভরবেনা সুতারাং আমি তাদের কথা শুনবো কেন ?
কারো কথা পাওা না দিয়ে নিজে যা ভালো মনে করেছি তাই করছি,,, আমি তো খারাপ কিছু করছি না। বিজনেস কি খারাপ কাজ ?
পাড়া মহল্লার কেউ না থাকলেও আমার সাথে আমার আল্লাহ আছে আর আছে আমার বাবা, মা। তাদের দোয়া নিয়েই আগামীর পথ চলতে শুরু করলাম। আমি এটা জানি যে মানুষের কথায় কান দিলে নিজের স্বপ্ন কখনো পূরণ করতে পারবো না। জীবনে শত বাদা বিপওি, সমস্যা পদে পদে আসবেই,, সেই সকল বাদা বিপওি সমস্যা অতিক্রম করে আমাকে এগিয়ে যেতে হবে।
শুরু হলো দিগন্তের পথ চলা আমার স্বপ্ন পূরণের কাজ। ছোট করে শুরু করলাম, আগে লক্ষ্য স্থির করে সামনে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার পথে চলা শুরু করে দিলাম।বাকীটা আল্লাহ ভরসা। তবে মনের ভিতর প্রচন্ড সাহাস ছিলো আমি পারবো আমাকে পারতেই হবে।
আমি যখন বিজনেস শুরু করি তখন আমার পুঁজি অনেক কম ছিল। আর আমার এত চিন্তা ভাবনা ছিলো না কীভাবে কী করবো। বিজনেস শুরু করে আস্তে আস্তে বুঝতে পারলাম এই স্বপ্ন পূরণ করতে হলে লেগে থাকতে হবে। তখন থেকে নতুন সময়ে একটু একটু করে আমাদের প্রিয় মেন্টরের প্রতিদিনের সেশন বুকে ধারন করতে থাকি একটি পড়া শেষ হলে আরও একটির অপেক্ষায় থাকি । আর সেই সেশন গুলো পড়ে আমি অনেক কিছু শিক্ষা অর্জন করতে পেরেছি, সেই শিক্ষা আমার বিজন পরিচালোনার ক্ষেএে অনেক কাজে আসবে। আলহামদুলিল্লাহ।
প্রিয় মেন্টর জনাব ইকবাল বাহার জাহিদ স্যার আমার জীবনে এক নতুনত্ব নিয়ে আসেন। স্যারের প্রতিটি কথা আমার হৃদয়ে গেথে যায়। স্যারের সেশন ফলো করে আমি ফিরে পাই জীবনের আশার আলো,জীবনে সফল হওয়ার মূলমন্ত্র। লেগে থাকাটা শিখে যাই স্যারের একটি প্রিয় স্লোগান থেকে,
স্বপ্ন দেখুন......সাহস করুন,
শুরু করুন... এবং লেগে থাকুন, ,,,
সফল্য আসবেই
এই যে লেগে থাকার ব্যাপারটা স্লোগানের মধ্যে এর গভীরতা ফুটে উঠে, লেগে থাকার ফলাফল হচ্ছে সফলতা। আগের থেকে অনেকটা বদলে গিয়েছি প্রিয় ফাউন্ডেশনের পজিটিভ, ভালো মানুষের মিলনমেলা পেয়ে। সবাই অনেক আন্তরিক এই বিষয় টা আমাকে বেশি অনুপ্রাণিত করেছে ,প্রিয় স্যারের প্রতিটি কথা আমাকে প্রতিটা মূহুর্তে অনুপ্রাণিত করে। সামনে এগিয়ে চলার উৎসাহ দেয়, উদ্দীপনা যোগায় এগিয়ে যাওয়ার ভূবনে।
___আমি এই প্লাটফর্ম থেকে যা যা শিখেছি___
●বিজনেস প্ল্যান কী?
●ব্যবসায়িকপরিকল্পনা।
●লক্ষ্য সেট।
●মার্কেট এনালাইসিস।
●পরিচালনা কাঠামো।
●প্রোডাক্ট ও সার্ভিস।
●প্রচার এবং বিক্রির কৌশল।
●বাজেট।
●এক্সিকিউশন অথবা বাস্তবায়ন।
একজন সফল উদ্যোক্ত হতে হলে এগুলো কী আগে সেটা আমার জানা প্রয়োজন। তাহলেই আমি সামনের দিকে সুন্দর ভাবে নিজের বিজনেস পরিচালনা করতে পারবো। আমি আমার ব্যবসাটি ভালো করে শুরু করতে পারবো।
আমি জেটা জেনেছি এবং বুঝেছি ।
***বিজনেস প্ল্যান কী?***
অনলাইন বিজনেস শুরু সত্যি অনেক কঠিন আবার সহজ । জানতে হবে বিজনেস প্ল্যানিং মেকিং ফরমুলা। আর না জানলে পুরাটাই লস সব কিছু হারাবেন। যে কোন বিজনেস শুরু করার আগে সেই বিজনেস সম্পর্কে ধারনা নেওয়াটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
✪বিজনেস প্ল্যান✪
সাধারনত ব্যবসা পরিকল্পনা হচ্ছে বিজনেস প্ল্যান।বিজনেস প্ল্যান বা ব্যবসা পরিকল্পনা একটি লিখিত ডকুমেন্ট। বিজনেস প্ল্যান বা ব্যবসা পরিকল্পনা ব্যবসায়ের অতীত ও বর্তমান অবস্থানকে বর্ণনা ও বিশ্লেষণ করে। তবে এর মূল উদ্দেশ্য ব্যবসার ভবিষ্যত উপস্থাপন করা।
***ব্যবসায়িক পরিকল্পনার*** অনেকগুলো অংশ থাকলেও কিছু অংশ খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
✪একটি ব্যবসায়িক সংক্ষিপ্তসার✪
ব্যবসা শুরু করতে গেলেই সবার আগে যে কাজটি আমার করতে হয়েছে, সেটা হলো একটি ব্যবসায় সংক্ষিপ্তসার আমার লিখে ফেলতে হবে। এটা দেখে বুঝা যাবে আমি বিজনেস কিভাবে করবো । যা দেখলেই পুরা বিজনেস আইডিয়াটা পাওয়া যাবে।
✪লক্ষ্য সেট✪
বিজনেস করতে গেলে অবশ্যই আমাকে লক্ষ্য সেট করতে হবে এবং আমি বিজনেস থেকে কত টাকা ইনকাম করতে চাই, আমার বিজনেস আমি কোথায় দেখতে চায়, সবকিছুর উপরে কিন্তু শুরুতেই আমাকে একটা প্ল্যান করে রাখতে হবে। যদি কোন লক্ষ্য না থাকে তাহলে কখনওই আমি আমার গন্তব্য স্থানে পৌঁছাতে পারবো না।
✪মার্কেট এনালাইসিস✪
যত ভালো করে মার্কেট এনালাইসিস করতে পারবো , ততই আমার জন্য সুবিধা। চলার পথ আরো সহজ হয়ে যাবে। কি নিয়ে বিসনেস শুরু করবো তা নিয়ে বাজার এবং প্রতিযোগীদের সম্পর্কে মার্কেট রিসার্চ করতে হবে আমার ।
✪পরিচালনা কাঠামো✪
একটি বিজনেস প্ল্যান অনুযায়ী যখন কোন ব্যবসা পরিচালিত হয় তখন কাজ গুলোকে ছোট ছোট ভাগে ভাগ করে ফেললে তখন কজটা খুব সহজেই শেষ করা যায়।
✪প্রোডাক্ট ও সার্ভিস✪
আমি জদি কোন প্রোডাক্ট বা সার্ভিস নিয়ে কাজ করতে চাই তা আগে থেকে ঠিক করে নেওয়া খুব দরকার আমার জানতে হবে।যেমন,
কেন এই সার্ভিস বিজনেস শুরু করবো
কারা চমার পন্যটি কিনবে
কেন কিনবে
আর কারা এই বিজনেস করে
কিভাবে করে
প্রোডাক্ট কিভাবে তেরি করে এই সকল বিষয়ে জানতে ও শিখতে পেরেছি।
✪প্রচার এবং বিক্রির কৌশল✪
যেহেতু আমি অনলাইন বিজনেস প্ল্যানিং নিয়ে বলছি তাই অনলাইন বিজনেস করতে আমাদের জানতে হবে আমরা অনলাইনের কোন কোন প্লাটফর্ম গুলোকে বেছে নিবো আর কিভাবে আমাদের পণ্যের প্রচার প্রসার ঘটাবো।আর পণ্য বিক্রি করাও আমাদের টার্গেট, তাই সেটার কৌশল ও আমাদেরকে বের করে আনতে হবে।তবে অবশ্য ধোকাবাজি করে বিক্রি শুরু করলে বেশি দিন টিকে থাকা যাবে না। এটাও খুব চমৎকার ভাবে বুঝতে পেরেছি
প্রিয় স্যার প্রতি কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করছি, সারাটি জীবন স্যার সুস্থ ও নিরাপদ থাকুক, আপনার এই স্যারের এই মহৎই উদ্যোগের কারনে নিজেকে বদলে দিতে পেরেছি। এই ফাউন্ডেশন এর কল্যানে, এগিয়ে যাচ্ছি একজন নারীর স্বপ্ন পূরনের জন্য, নিজেকে ভালোবেসে এগিয়ে যাচ্ছি, অন্যকে ভালো রাখার তাগিদে, একা নয় বরং সবাইকে নিয়ে ভালো থাকবো। আপনার বানীটা মনে পড়ে গেলো স্যার,
কেউ একা বড় হতে পারে না,
বড় হতে হলে আপনার আসে পাশের সবাই সাথে নিয়ে বড় হতে হয়।
নিজের বলার মতো একটা গল্প ফাউন্ডেশনের মতো এমন একটা পাঠশালার শিক্ষার্থী হতে পেরে আমি সত্যিই গর্বিত। দোয়া করবেন প্রিয় শুভাকাঙ্ক্ষী ভাই বোনেরা।দেখা হবে বিজয়ে।
লিখার শেষ পৃষ্ঠায় আমি আমার প্রিয় স্যার ও স্যারের পরিবারের সদস্যদের প্রতি আমার অন্তরের অন্তস্তল থেকে অনেক অনেক দোয়া করছি।
আল্লাহ যেন আমার প্রিয় স্যার সহ স্যারের পরিবারে সদস্য যারা অসুস্থ অবস্থায় আছেন তাদের সবাইকে অতি দ্রুত সুস্থতা দান করে,,,আবার আমাদের মাঝে ফিরিয়ে দেন। প্রিয় স্যার আমি আপনার সুস্বাস্থ্য ও দীর্ঘ আয়ু কামনা করছি।
"স্ট্যাটাস অব দ্যা ডে"- ৫৭৩
Date:- ১৪/০৭/২০২১
আমি - Sadia Sarmen Nur
নিজের বলার মতে এটা গল্প ফাউন্ডেশনের একজন গর্ভিত সদস্য
রেজিষ্ট্রেশন নং:৫৩৯৩১
ব্যাচ নং:১৩
জেলা:মানিকগঞ্জ
উপজেলা:সিংগাইর