স্বপ্ন দেখতে নেই মানা স্বপ্ন পুরুনে আছে বাধা
স্বপ্ন দেখতে নেই মানা স্বপ্ন পুরুনে আছে বাধা 😭😭
🙏🙏🙏গল্প পরার অনুরোধ রইল🙏🙏🙏
👩🦰👩🦰👩🦰আমার স্বপ্ন 👩🦰👩🦰👩🦰
আমি ছোট থেকেই অনেক স্বপ্ন দেখতাম মানুষের সেবা করবো, বিপদে মানুষের পাশে দারাবো আর তাই সুজগ পেলেই চেষ্টা করতাম মানুষের উপকার করতে, আমার কাছে কেউ সাহায্য চাইলে আমি আমার ইচ্ছে মতো চাউল দিয়ে দিতাম, টিফিনের টাকা জমিয়ে বান্ধবীদের খাতা বা কলম কিনে দিতাম, মাঝে মাঝে মায়ের থেকে টাকা চুরি করে মসজিদে দান করতাম। আর কেউ আমার কাছে কোন রকম সাহায্য চাইলে আমি চেষ্টা করতাম সাহায্য করতে। যার কারনে আমাকে অনেক বকা শুনতে হতো মায়ের মুখে।গ্রামের ছোট একটা প্রাইমারি স্কুল থেকে 5 পাস করে যখন ভর্তি হলাম
হাইস্কুলে তখন থেকেই আমার স্বপ্ন দেখা শুরু।
স্বপ্ন দেখতে টাকা লাগেনা তাই নানান স্বপ্ন দেখা
ছোট বেলা থেকেই গান,কবিতা এসব আমার ভালো
লাগতো, স্কুলে ছোট ছোট অনুষ্ঠানে গান ও কবিতা আবৃত্তি করতাম ২০০৪ সালে ২১ ফেব্রুয়ারিতে আমাদের এলাকায় বড় করে একটা অনুষ্ঠান হয়
আমার বান্ধবীরা সবাই মিলে গান পরিবেশন করি
কবিতা আবৃত্তি প্রতিযোগিতায় নাম দিয়ে প্রথম স্থান অধিকার পেয়ে পুরষ্কার ও পেয়েছি, আমার গানের গলা মুটামুটি ভালো ই ছিলো। অনুষ্ঠানে কিছু গানের মাষ্টার উপস্থিত ছিলেন তাদের মধ্যে কেউ এক আমাকে গান শিখতে অনুরোধ করেন আমার ও ইচ্ছে হয় কিন্তু আমার বাবা ধার্মিক ছিলেন তাই তিনি নামাজ রোজা
ছাড়া আর কিছু বুঝতেন না, তাই ইচ্ছে থাকা সত্যেও সাহস হয় নি তবে লুকিয়ে লুকিয়ে চেষ্টা করেছি সম্ভব হয়ে উঠেনি।
👩⚕️👩⚕️আমার নার্স হওয়ার স্বপ্ন 👩⚕️👩⚕️
একদিন আমি আমার বাবা সাথে হসপিটালে যাই,
বাবার চোখ অপরেশন করানো হয়, বাবাকে একটা সরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয় সেখানে নার্স দের দেখে আমার মনে মনে ঠিক করি আমি যদি নার্স হতে পারি তাহলে আমি ও মানুষের সেবা করতে পারবো,
তাই আমার স্বপ্নের কথা বাবা মা কে জানালাম এমন কি স্কুলে কেউ প্রশ্ন করলে বলতাম আমার স্বপ্ন মানুষের সেবা করা আমি বড় হয়ে নার্স হবো মানুষের সেবা করবো।
বাবা ও আমার সাথে একমত হলেন, কিন্তু মা সব সময় বলতেন এসব পরতে অনেক টাকা লাগে আমার কি অত টাকা আছে,আমি তবু স্বপ্ন দেখতাম আমি নার্স হবো। আমার বাবা আমাকে সব সময় সাহস দিতেন
আর বলতে একদিন আমার স্বপ্ন পুরন হবে। আমি দেখেছি হাসপাতালে কিছু ডাক্তার আর নার্স আছে তারা গরীব দের তেমন কেয়ার করে না, তার বাস্তব প্রমান আমি নিজেই।আমার প্রথম সন্তান হওয়ার সময়
আমাদের কাছে তেমন টাকা ছিলো না যার ফলে হাসপাতালে এক কোনে পরে থাকতে হয়েছিলো
শুধু তাই না একটা বেড সিড ও দেওয়া হয়নি আমাকে
আমার ছোট নিশপাপ শিশু টি ফ্লোরে রাখা হয়েছিলো।
যার ফলে ঠান্ডা লেগে নিউমনিয়া হয়ে গিয়েছিলো
সেদিন থেকেই আমার প্রতিজ্ঞা ছেলে কে ডাক্তার বানাবো আর গরীব দের বিনা ফি তে চিকিৎসা দেওয়াবো।
😭😭😭আমার স্বপ্ন ভেঙ্গে গেলো😭😭
২০০৬ সাল বাবার মৃত্যু আর মায়ের অসুস্থতা আমার স্বপ্ন ভেঙে চুরে টুকরো টুকরো হয়ে গেলো, আবার স্বপ্ন দেখলাম প্রতিষ্ঠিত হওয়ার, দিনের পর দিন হারভাঙ্গা পরিশ্রম শুরু হলো আমার স্বপ্ন জয়ের লক্ষে, লক্ষ ছিলো মা কে সুস্থ করা পরিবারের জন্য কিছু করা। আলহামদুলিল্লাহ করতে পেরেছি, নিজের টাকায় ভাইকে বিদেশ পাঠানো মা কে সুস্থ করে তোলা, আলহামদুলিল্লাহ, তবে অনেক কষ্ট করতে হয়েছে আমাকে। অনেক বাধা ও এসেছে জীবনে, আমি সব বাধা পেরিয়ে আমার স্বপ্ন পুরন করতে সক্ষম হয়েছি।
👨💼👨💼ছেলে কে নিয়ে আমার স্বপ্ন 👨💼👨💼
আমার দুই ছেলে বড় ছেলে বয়স এখন ৮+ আর ছোট ছেলের বয়স ২ বছর ২ মাস
আমার স্বপ্ন আমার বড় ছেলে একদিন অনেক বড় ডাক্তার হবে গরীব দুখী মানুষের সেবা করবে টাকা ছাড়া, জানিনা আমার দ্বারা সম্ভব হবে কিনা তবুও স্বপ্ন দেখি, আর ছোট ছেলে হবে আলেম, ইসলাম প্রচারে নিজেকে বিলিয়ে দিবে
আমি জানিনা আমার ছেলেরা আমার স্বপ্ন পুরন করতে পারবে কিনা তবু ও স্বপ্ন দেখি, কারণ স্বপ্ন দেখতে নেই মানা, স্যার বলেছেন স্বপ্ন দেখুন সাহস করুন শুরু করুন।তাই একটা স্বপ্ন পুরন হতেই আরেক টা স্বপ্ন দেখি
🤲🤲আমার আরো একটা স্বপ্ন আছে🤲🤲
যে স্বপ্নটা আমি সেদিন থেকে দেখে আসছি যে দিন থেকে আমি বুঝতে শিখেছি ইসলাম কি, ইসলামের যে
৫ টি কাজ আমাদের জন্য বাধ্যতা মূলক ঠিক সেদিন থেকেই স্বপ্ন দেখি প্রবিত্র মক্কায় যাবো হজ্জ করবো মদিনা যাবো আমার প্রানের প্রিয় নবী মুহাম্মদ [সঃ) এর রওজা জিয়ারত করবো, মহান সৃষ্টি কর্তার অশেস কৃপায় যদি ও ওমরা করার সুজগ পেয়েছি কিন্তু আমার মনের মত করে ওমরা করতে পারিনি, একে একে দুইবার গিয়েছি কিন্তু তবুও স্বাদ মেটেনি তাই আজ ও স্বপ্ন দেখি আমি ও আমার স্বামী সহ আমার মাকে প্রবিত্র কাবা ঘরে প্রবেশ করিয়া মহান রাব্বুল আলামিনের কাছে জীবনের সমস্ত গুনাহ মাফের ফরিয়াদ করবো, সবাই আমার জন্য দোয়া করবেন আমি যেন আমার স্বপ্ন পুরন করতে সক্ষম হয়।
আমি আমার মা কে হজ্জ করাতে চাই আমার নিজের টাকা দিয়ে।
আমার উদ্যোগতা হওয়ার কারণ
আমি যখন আমার জীবনের সমস্ত কষ্টের ফল দিয়ে পরিবারের সবার জন্য কিছু না কিছু করতে পেরেছি ঠিক তখন ই আমি অসুস্থ হয়ে পরি, আর নিজেকে অনেক অসহায় মনে হতো, খুব খারাপ লাগতো স্বামীর থেকে টাকা নিয়ে চিকিৎসা হতে। নিজের কাছে লজ্জা লাগতো। আমি যখন অসুস্থতার কারনে বেকার হয়ে পরি তখন আমাকে আমার স্বামীর মুখের দিকে তাকিয়ে থাকতে হতো কখন তিনি আমার ও আমার মায়ের জন্য কিছু এনে দিবেন, আমার লজ্জা করতো তার থেকে টাকা নিয়ে মায়ের জন্য কিছু কেনার।তবে আলহামদুলিল্লাহ আমার স্বামী অনেক ভালো মানুষ,তিনি কখনো মায়ের ব্যাপারে বিরক্তবোধ করতেন না, তিনি আমার মাকে নিজের মায়ের মত দেখেন,কিন্তু তার পরিবার এটা ভালো চোখে দেখে না তাই আমি উদ্যোগতা হওয়ার স্বপ্ন দেখি।
কারণ আমি বুজতে পেরেছি উদ্যোগতা হলে আমি ঘরে বসে কাজ করতে পারবো মায়ের খরচের টাকা আর স্বামী থেকে নিতে হবে না।
আমার উদ্যোগতা জীবন শুরু
২০১৮ সালে অসুস্থতা কারনে যখন আমার জমানো সমস্ত টাকা খরচ হয়ে যায় এবং আমি মৃত্যু মুখোমুখি হয়ে পরি ঠিক সেই সময় আমি সারাদিন ফেজবুকে পরে থাকতাম আর দেখতাম সবাই ফেজবুকে প্রচার করছে।আমি প্রায় দেখতে পেতাম ঘরে বসে অনলাইন জব করা যায়। একদিন মনে মনে ঠিক করলাম আমি ও ট্রায় করি জব করতে।
যেমন ভাবনা তেমন কাজ, ফেইজবুকে বিজ্ঞাপন থেকে এক আপু কে নক দিলাম, ১৬০৳ ফি দিয়ে কাজ নিলাম, ড্রেস সেল ও মেম্বার এড করা, আমাকে কাজ বুঝিয়ে দিলেন, প্রায় ৩ মাস ট্রায় করে ব্যার্থ হলাম, কোন ইনকাম আসেনি,,কিন্তু আমি নাছর বান্দা হার মানতে রাজি না, তাই আমি নিজে নিযে সিদ্ধান্ত নিলাম আগে কাজ শিখবো তার পর কাজ করবো,
গ্রুপ থেকে লিভ নিয়ে ফেইজবুক এড ফলো করতে লাগলাম কি ভাবে সবাই সেল করে, মাঝে মধ্যে পন্য কেনার অভিনয়ে নক দিতাম, প্রশ্ন করতাম, এভাবেই আমার অভিজ্ঞতা বারতে থাকে, প্রায় ৫ মাস পর একটা বিজ্ঞাপন দেখতে পেলাম। লিখা ছিলো এড ফি ছাড়া সেল জব করতে চাইলে নক দিন।
আমি তখন এসব বিষয় অনেক কিছু শিখে গেছি। তাই আপু কে নক দিলাম তিনি প্রডাক্ট গ্রুপে এড দিলেন, বিসমিল্ললা বলে শুরু করলাম আলহামদুলিল্লাহ প্রথম সপ্তাহে আমি ৩ টা ড্রেস সেল দিলাম ৩০০৳ কমিশন পেলাম, পরে আরো এক সপ্তাহে প্রায় ৫/৭ ড্রেস সেল করলাম
অই আপু টা অনেক ভালো আমাকে খুব ভালো বাসতো আমার কাজে খুসি হয়ে একটু বেশি কমিশন দিতো এভাবেই সেল বারতে থাকে, পরের মাসে এক দিনে ১৭ পিচ থ্রি পিচ অডার পাই,আপু অনেক খুসি হয়ে আমাকে ১২০০৳ কমিশন দেন। তার ২/৩ দিন পর ফোন চুরি হয়ে যায়। আমার মন ভেঙে যায় অনেক কষ্ট পাই কান্না করি।
আমার স্বামী ১ মাস পর আবার ফোন কিনে দেন, আবার শুরু হয় আমার কাজ,কিন্তু তখন আমার সেল কমে যায়,,আমি আস্তে আস্তে বিভিন্ন গ্রুপে বিভিন্ন পেজে যুক্ত হয়, এভাবেই শুরু হয় আমার উদ্যোগতা জীবন।
অবশেষে বাজার সেবা গ্রুপের এডমিন জাহিদ ভাই আমাকে নিয়ে আসেন নিজের বলার মত একটা গল্প ফাউন্ডেশনে।ফাউন্ডেশনে যুক্ত হয়ে কোর্স শেষ করি। কিন্তু গ্রুপে কোন কিছু পোস্ট করতাম না শুধু দেখে যেতাম ১৩ তম ব্যাচ শেষ করে ১৪ তম ব্যাচ শুরু হয় আর আমি স্বপ্ন দেখতে থাকি উদ্যোগ নেওয়ার কিন্তু মুলধন না থাকায় সাহস পাইনা
অবশেষে সব ভয় কে জয় করে ৫ হাজার টাকা মূলধন নিয়ে শুরু করি উদ্যোগতা, রমজানের কিছু দিন আগে,,আমি বুঝতে না পেরে অনলাইন থেকে কিছু থ্রি পিচ কিনি, যার থেকে কিনি তিনি ও একজন নারী,কিন্তু তিনি আমার সাথে বেঈমানী করে, মানস্মত পন্য না দেওয়ার ফলে আমার পুরো টাকা মার যায় আমি একটা ড্রেস ও সেল করতে পারিনা, অবসেষে দিশে হারা হয়ে সে গুলো বিলিয়ে দেই কিছু অসহায় মানুষের মাঝে
আবার আমি অন্যের পন্য সেল করতে থাকি, কিন্তু আমার জেলার সকল ভাই ও বোনদের উৎসাহ পেয়ে নতুন করে শুরু করি, স্বামীর থেকে ২০ হাজার টাকা মূল্যধন নিয়ে আমার উদ্যোগতা জীবন শুরু করেছি।
আমার উদ্যোগতা হওয়ার পিছনে দুইটা স্বপ্ন লুকিয়ে আছে,
১] আমার মায়ের খরচ আমি নিজে বহন করতে চাই
2) আমার স্বামীকে সাহায্য করতে চাই
আমার মায়ের সমস্ত খরচ এখন আমার স্বামী বহন করে আর এতে মা নিজেকে অনেক অসহায় ভাবেন এবং আমার ও অনেক খারাপ লাগে,
আমি চাই আমার মা যতদিন পৃথিবীর বুকে আছেন ততদিন
মায়ের সব খরচ আমি বহন করবো। সবাই আমার জন্য দোয়া করবেন
স্বামী কে সাহায্য করা
আমার স্বামী সকাল ৬ টা থেকে রাত ১২ টা পর্যন্ত আমাদের জন্য হারভাঙ্গা পরিশ্রম করেন যা আমাকে খুব কষ্ট দেয়,আমি সারাদিন ঘরে বসে থাকি, কিন্তু আমার স্বামী সারাদিন হারভাঙ্গা পরিশ্রম করেন। শুধু তাই নয় তিনি আমাদের সুখের জন্য নিজের সন্তানের মুখ আজ ও দেখতে পারেনি, তাই আমি তাকে সাহায্য করতে চাই যাতে করে তিনি একটু সময় তার সন্তান কে দিতে পারেন।
আমি কাজ করছি টাঙ্গাইলের বিখ্যাত তাঁতের শাড়ি, থ্রি পিচ, ট্রি শার্ট পাঞ্জাবি ও কসমেটিক আইটেম নিয়ে, সবাই আমার জন্য দোয়া করবেন আমি যেন সফল উদ্যোগতা হতে পারি।
আমার ব্যাবসায়ী পেজ সোনালি দিন ফ্যাশন হাউস
"স্ট্যাটাস অব দ্যা ডে"- ৫৮০
Date:- ২৫/০৭/২০২১
❤️❤️নামঃ রিতা আক্তারী ❤️❤️
❤️❤️কমিউনিটি ভলেন্টিয়ার❤️❤️
🌻🌻🌻ব্যাচঃ১৩ 🌻🌻🌻🌻🌻🌻
🌻🌻🌻🌻রেজিঃ৬০৯৭৮🌻🌻🌻🌻
🌹🌹🌹🌹🌹জেলা ফরিদপুর🌹🌹🌹