হসপিটালে পৌছাতে পৌছাতে প্রায় রাত আটটা চল্লিশ বেজে গেছে। 20 মিনিটের মধ্যে আমার রক্ত তারা কালেকশন করল।
আসসালামুয়ালাইকুম
শুরু করিতেছি মহান সৃষ্টিকর্তা পরম করুণাময় আল্লাহর নামে যিনি মহান ও অত্যন্ত দয়ালু,...
সকল প্রশংসা মহান রাব্বুল আলামীনের জন্য । লাখো কোটি দরুদ ও শান্তি বর্ষিত হোক প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ ( সাঃ) এর প্রতি ।
কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি এই শতাব্দীর শ্রেষ্ঠ আবিষ্কার, লাখো তরুণ তরুণীর আইডল প্রিয় মেন্টর,প্রিয় শিক্ষক জনাব ইকবাল বাহার জাহিদ স্যারের প্রতি, যার অক্লান্ত পরিশ্রমে গড়ে উঠেছে "নিজের বলার মতো একটা গল্প ফাউন্ডেশনের মতো একটা সুবিশাল প্লাটফর্ম ।
আমি মহান আল্লাহর কাছে স্যার সহ পরিবারের সকলের জন্য দোয়া করছি আল্লাহ যেন সসবাইকে সুস্থতা ও নেক হায়াত দান করেন আমিন.....
#সকলের_কাছে_অনুরোধ_গল্পটি_শেষ_পর্যন্ত_পড়বেন
🌺🌺🌺গল্প টা ৮ মাসের শিশু আব্দুল্লাহার মাকে ফিরে পাওয়া।
⁉️করোনা মহামারির এই সময়ে এক ব্যাগ রক্তের জন্য ৮ মাস বয়সের শিশু আব্দুল্লাহার #মা মারা যাবে। ভাবলে শরীর শিহরিত হয়ে উঠে।
মেনে নিতে কষ্ট হয় নিয়তির শিকার হলে কিছু করার থাকে না। তবে এটা বিশ্বাস আমরা সকলে রাখি
যে একটি পথ বন্ধ হলে আল্লাহ্ আর একটি পথ খুলে দেন বান্দার জন্য।
🕒🕒🕒 ঘঠনা টি ২০২০ সালের ডিসেম্বর মাসের শেষের দিকের। তখন আমি ফ্যামেলি নিয়ে নারায়ণগঞ্জ ভাড়া থাকি একটি টিন সেট রুমে।ঐ সময় টাতে প্রচুর ঠান্ডা আবহাওয়া ছিলো যার কারনে টিন সেট রুমে থাকা সম্ভব হচ্ছিলো না।
কারণ আমার এক বছরের মেয়েটা এতো ঠান্ডা সহ্য করতে পারতো না।
এজন্য আমি একটা ফ্লাট ভাড়া নিয়ে সেখানে শিফট হয়ে গেলাম। বাড়িটা ৮ মাসের শিশু আব্দুল্লাহাদের।
‼️‼️‼️ কিছু দিন এভাবে যাবার পর হঠাৎ একদিন আমার মেয়ের মা বিশ্বয়ের সাথে বলল জানো ? আব্দুল্লাহার মা প্রায় এক মাস পঙ্গু হসপিটালে।
আব্দুল্লাহা প্রাই এক মাস কৌটার দুধ খেয়ে বেচে আছে।
শুনে খুব খারাপ হয়ে গেল আমার মনটা।
❓আমি জানতে চাইলাম কি সমস্যার কারনে হসপিটালে আছে ?
✅আমার মেয়ের মা বলল ওর মায়ের পাজোরের হাড় ভেঙ্গে গেছে পড়ে গিয়ে।
চলাফেরা করতে পারতো না।
যার কারনে অপারেশন করার জন্য হসপিটালে এডমিট করা হয়।
💓💓💓এভাবে আরো কিছু দিন কেটে গেল। আমি আর আমার মেয়ের মা আব্দুল্লাহকে খুব সময় দিতে শুরু করলাম।
আমার মেয়ে আর আব্দুল্লাহ কে একই প্লেটে গ্লাসে খাওয়াতাম।
✅✅আব্দুল্লাহার বাবা ওর মায়ের কাছে থাকে। মাঝে মাঝে বাড়িতে এসে ওকে দেখে আবার চলে যায়। এর মধ্যে আমি জানতে পারি যে আব্দুল্লাহার মায়ের অপারেশনের তারখি নির্ধারণ করা হয়েছে ২৮/১২/২০২০ তারিখ রাত নয় টা। শুনে আমি খুব খুশি হলাম।
✅✅হঠাৎ সোমবার সন্ধ্যা সাতটার দিকে আব্দুল্লাহর বাবা এসে বাড়িতে হাজির।আমার সাথে তার দেখা হল।
তাকে অনেকটা হতাশ গ্রস্থ দেখলাম।উদাসীন মনে আমার সাথে কথা বলতেছে। আমি তাকে বললাম যে কি অবস্থা এখন কোন সমস্যা নাই তো? সবকিছু ঠিকঠাক আছে তো? আব্দুল্লাহার বাবা আমাকে বলল জি ভাই রক্তের অভাবে বুঝি আমার স্ত্রী মারা যাবে!
আমি তাকে প্রশ্ন করলাম কি বলেন রক্ত পাচ্ছেন না ? তাও আবার অপারেশনের ডেট ঠিক করে ফেলেছেন?
✅✅সে আমাকে বলল সব কিছু ঠিকঠাক ছিল দুইটি লোক কথা দিয়েছিল রক্ত দিবে কিন্তু এখন তাদের আমি কোন খোঁজ পাচ্ছিনা। আমি তাকে বললাম এখন পর্যন্ত কি সিদ্ধান্ত হয়েছে সেটা আমাকে একটু বলুন? সে আমাকে বলল আমার একজন শালিকা আছে তার ব্লাড আমার ওয়াইফের ব্লাড একই।
এখন আর একজন লোক লাগবে রক্ত দেওয়ার জন্য। কিন্তু কি করবো ভেবে পাচ্ছিনা। অপারেশন তো রাত 9 টায়।
আমি বললাম ভাই আপনার কোন গ্রুপের রক্ত লাগবে বলেন?
আমাকে বলল AB + রক্ত লাগবে আরো এক ব্যাগ।
আমি এখন কিছুটা স্বস্তি ফিরে পেলাম আমি বললাম ভাই আর টেনশন করার দরকার নাই, আমি আছি আমি রক্ত দিবো
আমার ব্লাড গ্রুপ AB+।
আমার কথা শুনে সে দীর্ঘশ্বাস ফেলে কিছুটা স্বস্তি ফিরে পেল।
✅✅আমি তখন অফিস করে কেবল মাত্র বাসায় আসলাম এখনো আমার নিজের ড্রেস আমি চেঞ্জ করিনি ওই ভাবেই তার সাথে রওনা দিলাম ঢাকা পঙ্গু হাসপাতালের উদ্দেশ্যে?
✅✅সময়টা এমন ছিল যে করোনার ভয়ে মানুষ বাইরে বের হতো কম।
তাছাড়া আমার অফিস থেকে নোটিশ করা ছিল যে, নারায়ণগঞ্জ জেলা থেকে কেউ বাইরে যেতে পারবেন না।
যদি বাইরে যান তাহলে করোনার সার্টিফিকেট অফিস সো করতে হবে
এ সকল ভয়-ভীতি কাটিয়ে আমি কোন কিছুকে তোয়াক্কা না করে তার সাথে গেলাম
হসপিটালে।
✅✅হসপিটালে পৌছাতে পৌছাতে প্রায় রাত আটটা চল্লিশ বেজে গেছে। 20 মিনিটের মধ্যে আমার রক্ত তারা কালেকশন করল।
জীবনের প্রথম রক্ত দিলাম কাউকে।
দুঃখের বিষয় হয়ে দাঁড়াল তার যে শালিকাকে নিয়ে গিয়েছিল সাথে করে তার বয়স 12 বছর ছিল।যার কারণে তার থেকে ব্লাড টা নেই নি।
তারা বলে দিয়েছে যে এত অল্প বয়সের কারো কাছ থেকে ব্লাড নেওয়া যাবে না।
⁉️⁉️আরো কিছুটা হতাশা গ্রস্থ হয়ে গেলেন আব্দুল্লাহর বাবা সেই সাথে আমিও অনেকটা হতাশাগ্রস্ত হয়ে গেলাম এখন কি করা যায় এটাই আমাদের মাথায় কারোর কাজ করতেছিল না।
আসলে আল্লাহ যা করেন ভালোর জন্য করেন আমি ডাক্তারের সাথে কথা বললাম যে এখন কি সম্পূর্ণ রক্ত আপনাদের কাছে রিজাভ দিতে হবে?
নাকি সকালে এক ব্যাগ দিলে কোন সমস্যা হবে কি না? ডাক্তার আমাকে বলল সকাল 9 টার মধ্যে এক ব্যাগ রক্ত দিতে হবে তাহলে কোন সমস্যা হবেনা।
❗❗এভাবে হতাশাগ্রস্ত হয়ে সারারাত হসপিটালে ফোলোরে রাত জেগে কাটিয়ে দিলাম।
✅হঠাৎ আমার মাথায় একটি বিষয় কাজ করলো।আমি একটি ব্লাড গ্রুপের সাথে কাজ করি। আমাদের খুলনা ব্লাড গ্রুপ নামে একটি পেজ আছে।
সেখান থেকে একজন বড় ভাইয়ের সাথে কথা বলে আমি এক ব্যাগ রক্ত কালেকশন করি।
সকাল আটটার মধ্যে রক্ত টা ম্যানেজ করে ফেলি।
আমি আমার জায়গা থেকে দীর্ঘ স্বস্তি ফিরে পেলাম যে 8 মাসের আব্দুল্লাহার মাকে বিপদের হাত থেকে রক্ষা করার জন্য যে বিন্দু পরিমান উপকার আমি করতে পেরেছি।
তার জন্য আমার ভিতরে অনেক বড় একটি স্বস্তি কাজ করতে লাগলো আমি অনুভব করতে লাগলাম আমি কত বড় একটি মহৎ কাজ করেছি। নিজের ভিতরে একটা ভালোলাগা কাজ করা শুরু করলো।
✅✅সর্বোপরি তাঁর এক মাস পরে বাড়িতে ফিরে আসলেন ছোট্ট শিশু আব্দুল্লাহার মা। সে আবার তার মাকে ফিরে পেল।
🙏🙏🙏 লেখার মধ্যে ভাষা গত অনেক ভুলত্রুটি আছে।সকলে ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন।
🕓🕓🕓এতক্ষন সময় নিয়ে গল্পটি পড়ার জন্য আপনাকে কে অসংখ্য ধন্যবাদ।
"স্ট্যাটাস অব দ্যা ডে"- ৫৮৪
Date:- ৩১/০৭/২০২১
ধন্যবাদন্তে
আব্দুর রহিম
কমিউনিটি ভলেন্টিয়ার
ব্যাচ ১৩
রেজিঃ নাম্বার ৬০৪৮৫
জেলা যশোর
বতর্মান নারায়ণগঞ্জ সোনারগাঁও
কাজ করছি ALL SIM PAWER LODE.মৌসুমি ফল এবং রান্নার বিভিন্ন প্রকার মশলা নিয়ে।