জীবনের_গল্প_বাকী_আছে_অল্প
-----------------"বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম "---------------
#জীবনের_গল্প_বাকী_আছে_অল্প
আমার জীবনের ২০টি বছরের বাস্তব কাহিনী তুলে ধরার চেষ্টা করতেছি আপনাদের মাঝে সংক্ষিপ্ত আকারে।
আলহামদুলিল্লাহ। সর্ব প্রথম আল্লাহর দরবারে লাখো কোটি শুকরিয়া আদায় করছি। এর পর আমাদের মানবতার আইডল হযরত মোহাম্মদ (ছঃ) এর প্রতি দুরুদ ও সালাম পেশ করছি।
★★★বহুদিন যাবত ভাবছি আমার জীবনের বাস্তব গল্প টা তুলে ধরবো আপনাদের সামনে। সময় বের করতে পারছিলাম না।
যাই হোক প্রবাস জীবনের ফাকে কিছু সময় বের করে বসে পরলাম আমার জীবনের সত্যি ও বাস্তব গল্প টা আপনাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য। আসা করি সকলে ভালোবেসে আপনার মূল্যবান সময় থেকে একটু সময় ব্যায় করে আমার জীবনের গল্পটা পড়ার জন্য অনুরোধ করছি 🙏🙏🙏
👉২০ বছরের বাস্তব কাহিনী সংক্ষিপ্ত আকারে।
👉দিনটা ছিল ২০০১ সাল।
#নতুন_জীবনের_পর্দাপণঃ
****কেবল মাত্র ssc পরীক্ষা দিলাম।পরিক্ষা শেষে চলে গেলাম তবলিগে। তবলিগ থেকে এসে রেজাল্টের অপেক্ষায় বেশ কিছু দিন কাটছিলো। হঠাৎ করে বাবা - মার ইচ্ছে হলো বড় ছেলে কে বিয়ে করাবে। যেই বলা সেই কাজ। বিশেষ করে আমার মা খুব করে প্রেশার দিচ্ছে বিয়েটা করার জন্য। তাই বাবা মায়ের ইচ্ছে ও খুশি করতে অল্প বয়সে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হলাম।এভাবে শুরু হলো নতুন জীবনের সুখের সংসার। বাবা মা অনেক খুশি হলো। ভালো কাটছিলে দিন গুলো।
পরীক্ষার রেজাল্ট বের হলো। আলহামদুলিল্লাহ পাশ করলাম মানবিক শাখা থেকে। তারপর পর বাবা বল্লো কিরে লেখাপড়া করবি নাকি বিদেশে যাবি? কি করবো ভেবে পাচ্ছি না। বন্ধুদের সাথে শেয়ার করলাম। বন্ধুরা বললো চল তোকে কলেজে ভর্তি করে দেই। ওদের কথামতো কলেজে গেলাম প্রায় ৩ মাসের মত,
কিন্তু মন যে মানেনা বিয়ে করে বাবার ঘারে বসে খাবো? কেমন যেন নিজেকে অপরাধী মনে হচ্ছে। ইতি টানলাম লেখাপড়ার। বাবার সাথে কৃষি কাজে জয়েন করলাম। এর পর থেকে শুরু হয় নতুন জীবনের আরেক পরিক্ষা। বিয়ের পর দেখতে হয় পারিবারিক বিভিন্ন ঝামেলা। যেটা বাংলাদেশের বেশিরভাগ পরিবারেই ঘটে থাকে বিয়ের পরে।মধ্যবর্তি পরিবারের মানুষ আমি।আল্লাহ তুমি আমার বাবা-মায়ের নেক হায়াত বাড়িয়ে দিন। যে বাবা আমাকে ছোট কাল থেকে কোন খেতে খামারে যেতে দেন নি। যদিও মাঝে মাঝে যেতে চাইতাম বাবা বলতো তুই বাড়িতে চলে যা তোর গায়ে রৌদ্র লাগবে সয্য করতে পারবিনা। এমনিতেই বাবার সাথে টুকটাক কাজের পাশাপাশি চলে গেল ১ টা বছর।
#প্রবাস_নামের_জেল_খানার_জীবন_শুরুঃ
বাবা মায়ের ইচ্ছায় চলে আসলাম স্বপ্নের শহর সিঙ্গাপুর।
👉বছরটা ছিল ২০০২ সাল।
👉আমার জীবনের কালো একটি অধ্যায়।
যদিও সৌদি যেতে চেয়েছিলাম আমি। কিন্তু কপালে নেই। আমার এক মামা আর বাবা মিলে মিশে বললো বাবা সিংগাপুর চলে যা, কারন আমরা সিঙ্গাপুরে কাজ করে আসছি অনেক টাকা কামানো যায়, যেই কথা সেই কাজ,তাদের কথা মতো ইনশাআল্লাহ চলে আসলাম।বাবা পাঠালো শিপইয়ার্ডে, তারা কাজ করে গেছিল ব্লক ক্লিনারে, অনেক টাকা বেতনে কাজ করেছিল, তাই ভেবে ওরা আমাকে বেশি টাকা কামানো যাবে বলে সিঙ্গাপুর পাঠিয়ে দিলো।
যাইহোক আসলাম কিছুদিন পর কাজে জয়েন হলাম।একেকটা শিপ ১৫ তলা ২০ তলা বাড়ির সমান। সিড়ি বেয়ে উঠতে আধা ঘন্টার বেশি সময় লাগে, কোন সময় এর বেশিও লাগে, প্রথমে ভালোই চলছিলো।টাকা পয়সা সব বাড়িতে পাঠিয়ে দিতাম, পারলে আরো ধার করে পাঠাতাম, অনেক সময় শিপের একদম নিচে গিয়ে কাদাও পরিষ্কার করতাম, এভাবেই চলে যায় কয়েক মাস। কিন্তু কয়েক মাস পরেই শুরু হয় কোম্পানির দূর অবস্থা কাজ নেই, কারন কোম্পানি ছিল সাবকন।Boss ঠিকমত কাজ দিতে পারতোনা।
#শুরু_হয়ে_জীবনের_দুঃখের_কাহিনীঃ
😭😭😭এখন আর আগের মত বাড়িতে টাকা পাঠাইতে পারিনা। কারন এমন ও মাস যায় নিজের খাবারের টাকাও পাইনা মাস শেষে, বাড়িতে বলি সমস্যা কিন্তু পরিবারকে কিছুতেই বিশ্বাস করাতে সক্ষম হইনা। কারন ঐযে প্রথমে অনেক টাকা পাঠাতাম এখন সমস্যার কথা বললেও সহজে বিশ্বাস করতে পারে না।এরি-ই মধ্যে আমার ঘরে আসে একটি কন্যা সন্তান আলহামদুলিল্লাহ। তখন ছিল চিঠির যুগ। চিঠি পাঠালে দের থেকে ২ মাস লেগে যেত পৌঁছাতে। আবার এখানেও পেতে পেতে ২ থেকে আড়াই মাস পরে পেতাম। এমনিতেই চলে যায় দীর্ঘ ৪ টি বছর। দেশে ছুটিতে গেলাম ৪ বছর পর।
#প্রবাসীদের_কষ্ট_কেউ_বুঝতে_চায়_নাঃ
বাড়িতে গিয়ে দেখি কেউ খুশি না আমার প্রতি। একমাত্র আমার সহধর্মিণী ছাড়া। ২ মাসের ছুটিতে গিয়ে বাড়ির পরিস্থিতি দেখলাম। আমার প্রানপ্রিয় স্ত্রীর নিকট জানতে পারি মাসের পর মাস বছরের পর বছর শুধু মাত্র ২ টি জামা কাপড় পড়ে দিন কাটিয়েছে। কেউ একটি জামাও বানিয়ে দেয়ার মত ছিল না। ওদের পরিবারের সাথে ছিল ঝগড়া। 😭
যাইহোক ২ মাসের ছুটি কাটাতে না পেরে দের মাস পরে এক বুক দুঃখ কষ্ট ও বেদনা নিয়ে আবার বাড়ি ছেড়ে চলে আসতে হল স্বপ্নের সিংগাপুর। 😭
কিন্তু আসার ৩ মাস পর কোম্পানি কেস খায়। এর পর দশমাস পর আবার দেশে চলে যেতে হয়। কোম্পানি বন্ধ হয়ে যায়। 😭চলে আসলাম বাংলাদেশ।
#আপনজনদের_কাছ_থেকে_পাওয়া_কষ্ট_গুলোঃ
তখন ছিল ২০০৭ সাল।
কারো কোন সাপোর্ট পাচ্ছি না কি করবো ভেবে পাচ্ছি না, বাবাকে বললাম আমাকে ইউরোপে পাঠিয়ে দিন। কোন পজিটিভ উত্তর পেলাম না। বাবা কি করল? বাবা নিজে, আমার আপন মামা এবং ছোট বোনের জামাই কে নিয়ে টাকা জমা দিয়ে সবাইকে নিয়ে চলে যায় মালয়েশিয়া বেশি টাকা কামানোর জন্য।আমি বাড়িতে কি করবো নেই কোন নিজের ইনকাম, নেই টাকা পয়সা।😭😭😭
নিজের একটি মেয়ে এবং সংঘের সাথী কে নিয়ে তেমন কিছুই করতে পারছিনা চলতে অনেক সমস্যা হচ্ছে । মন চাইলেও স্ত্রী ও মেয়েকে কিছু কিনে দিতে পারি না। তো কি করবো?🤔এর মধ্যে মাঝে মাঝে মানুষের জমিতে কাজ করতে যাই। আমাদের বিক্রমপুর প্রচুর আলু চাষ হয় তো অনেক সময় আলুর বোঝা টানতাম।অন্যের জমিতে বদলি যেতাম।এভাবে চলে যায় একটি বছর।
তবে মামা মালয়েশিয়া চলে যাবার সময় একটি ছোট্ট দোকানে ফ্লেক্সিলোড চালাতো। মামা যাবার সময় সেটা আমাকে দিয়ে যায়, বলে তোর নানাতো বুড়ো হয়ে গেছে চালাতে পারেনা তু দেখিস। কিন্তু মূলধন যেন না হারায়, কথা মতো চলতে থাকে যা কিছু লাভ হয় নানার জন্য ও আমার বাড়ির জন্য টুকটাক তরিতরকারি কিনে আনি,মাঝে মাঝে দোকান ছেড়ে অন্যের জমিতে কাজ করি।সবচেয়ে দুঃখের বিষয় হচ্ছে আমার প্রানপ্রিয় বাবা দীর্ঘ একটি বছরে আমাকে একবারের জন্য ও ফোন করে একটু খোজ নেননি। কি করে জীবন যাপন করতেছি?সংগের সাথী ও ছোট্ট মেয়েকে নিয়ে কিভাবে দিন কাটাচ্ছি?কি যে কষ্ট করেছি সেই সময় টায় আজও আমি ভুলতে পারিনা, কিভাবে চলি, কিভাবে কি করি কোন দিন ও কারো নিকট থেকে কিছু পাইনি। স্ত্রী ও মেয়ের জন্য কোন কিছু আনতে চাইলেও আনা সম্ভব হয়নি। অসংখ্য ধন্যবাদ ও ভালোবাসা অবিরাম প্রিয় স্ত্রীকে💗। শত শত কষ্টের মাঝেও এবং আজ ও বলেনি কোনদিন সখ করে আমাকে এই জিনিসটা এনে দাও। ওর মত এমন ধৈর্যশীল মেয়ে দ্বিতীয়টি আছে কিনা পৃথিবীতে আমার জানা নেই। আল্লাহ যেন আমার স্ত্রীকে ইহকাল ও পরকালে সুখে শান্তিতে রাখেন।
আমিন।🤲🤲🤲।
#নতুন_অতিথির_আগমনে_দায়িত্বটা_বেড়ে_গেলোঃ
যে বাবা আমাকে কোন কাজ করতে দিতনা। কাজে গেলে বলতো তুই বাড়িতে চলে যা গায়ে রৌদ্র লাগবে সেই বাবা-ই আমার খোজ নেয়না দীর্ঘ এক বছর।😭
এরি-ই মধ্যে আমার ঘরে আল্লাহ একটি ছেলে সন্তান দান করেন। আলহামদুলিল্লাহ। সিজার করতে হবে, কি করবো ভেবে পাচ্ছি না, আমার ছোট বোন কারো নিকট থেকে চেয়েও কোন হেল্প পাইনি, আমার এক বন্ধুর নিকট থেকে ১০,০০০ হাজার টাকা ধার করে বিল পরিশোধ করি।ছেলের ৩ মাস বয়স হলে আমার শাশুরি আমাকে সাহস দিয়ে বলে বাজান তুমি সাভার চলে যাও স্কিল করতে। তুমি পুরান মানুষ, তুমি পারবা ইন-শা-আল্লাহ।সাহস করে ১০ হাজার টাকা দিয়ে ভর্তি হয়ে যাই আমার এক মামার সাহায্যে। সবার অবহেলা আর অসন্তুষ্টি যে আর ভালো লাগেনা, চলে গেলাম সাভারে, সেখানে গিয়েও পরি আরেক হতাশায়। কারন সেন্টারে একবার মারামারি হয়েছিল। কেউ বলে পরীক্ষা হবে কেউ বলে হবেনা, এই কথা শুনে অনেকেই চলে যায় সেন্টার ছেড়ে।আমি হতাশ হইনি কারন জীবন যুদ্ধে যে পারি দিতে হবে। ধৈর্য ধরে পড়ে রইলাম, পড়ে থেকে দীর্ঘ ৪ মাস ২০ দিনে কত যে মিষ্টি কুমড়া,ডালের পানি আর সিদ্ধ ডিম যে খেতে হয়েছে যা বলে বুঝানো যাবেনা।খাবার ও ভালো লাগেনা। নিজের কাছে টাকাও নেই যে বাহির থেকে তরকারি কিনে আনবো।অনেকেই কিনে আনে।একবার মা আমাকে একহাজার টাকা দেন বাহির থেকে কিছু খাবার এনে খাওয়ার জন্য সে টাকাটাও হারিয়ে যায়। 😭😭😭 এরি-ই মধ্যে মাঝে মাঝে ১৫-২০ দিন পর পর বাড়িতে আসতাম সবার সংগে দেখা করতে।একদিন বাড়িতে আসার সময় লেট হয়, পথিমধ্যে ফতুল্লা থেকে আসতে ট্রলারে নদী পথে পার হতে হয়।আসতে রাত্র হয়ে যায় নদীর মাঝখানে কঠিন তুফানের মধ্যে পরি। সাথে ছিল আরো ২ জন, মনে হয়েছিল যেন ঐদিনই শেষ।😭😭😭
রাত্র বারোটা আবার ঝর তুফান টলার ডুবে যাবার উপক্রম। এত রাতে কেউ সাহায্য করবে যে তাও সম্ভব নয়। যাইহোক আল্লাহ কে ডাকতে ডাকতে নদী পার হই ইন-শা-আল্লাহ। এরপর তুফান ও চলে যায় আলহামদুলিল্লাহ। বাড়িতে আসি সবাই ঘুমাচ্ছে। মাকে ডেকে তোল্লাম। মা বলে বাজান আসছত? আমার মনটা কেমন যেন ছট ফট করছে, ভিতরটা কেমন যেন লাগতেছে। মা বলছে আর কখনো আকাশের অবস্থা খারাপ দেখলে আসবিনা, মায়ের মন তাই বুঝতে পারছে, আমার কোন সন্তান মনে হয় বিপদে আছে।মাকে বুঝিয়ে বললাম মা আসার পথে পথিমধ্যে ফতুল্লায় তুফানের মাঝে পড়ে যাই, আমার মাকে আল্লাহ যেন দীর্ঘ নেক হায়াত দান করেন। আমিন।🤲🤲🤲
#অবশেষে_২০০৮_সাল_স্বস্থির_দেখা_মিললোঃ
দীর্ঘ ৪ মাস ২০ দিনে পরিক্ষা দিয়ে ইন-শা-আল্লাহ রেজাল্ট বের হলে আলহামদুলিল্লাহ পাশ করি। তার পর সিঙ্গাপুরে আসতে তিনলক্ষ টাকা লাগে। আমার স্ত্রীর কিছু স্বর্ন ছিল সেগুলো দিয়ে লাভে টাকা নিয়ে আরো কিছু ধার দেনা করে সিঙ্গাপুর আসি দ্বিতীয় বারের মত। এসে আলহামদুলিল্লাহ মোটামুটি ভালো ছোট্ট একটি কোম্পানিতে ওয়েল্ডিং এর কাজ করি ss এবং এলুমিনিয়ামের। বেতন পেয়ে মানুষের পাওনা টাকা দেই একি -ই সাথে সংসারে খরচও দেই। কিছু দিন পর হঠাৎ আব্বু কল করে মালয়েশিয়া থেকে সেখানকার অবস্থা ভালোনা। তখন বাবাকে বলি দেশে চলে যান, আমি ইন-শা-আল্লাহ দেখছি। বাবা চলে যায়। এভাবে কোম্পানিতে টানা সারে ছয় বছর থেকে মানুষের পাওনা টাকা পরিশোধ করি। ছোট ভাইকে স্কিল করিয়ে ৬ লক্ষ টাকা দিয়ে সিঙ্গাপুর আনি, সংসার খরচ ও দিয়ে থাকি, বাড়িতে নতুন বিল্ডিং করি আলহামদুলিল্লাহ। যদি ও ২ কিংবা আড়াই বছর পর পর ছুটিতে যেতাম মাত্র দের থেকে ২ মাসের জন্য।এভাবে চলতে তাকে ২০২১ সাল পর্যন্ত। আজো কেউ কোন ভালো পরামর্শ দেয়নি কিভাবে দেশে যাবো কি করে ভবিষ্যতে চলার চেষ্টা করবো?
#নতুন_স্বপ্ন_পূরনের_যাত্রা_শুরু_২০২১_সালঃ
আলহামদুলিল্লাহ প্রবাস জীবনে নানা ঝামেলায় পারি দিয়েও ভালো চলছিলো দিন। কিন্তু মনে সবসময় একটা চাপা কষ্ট কাজ করতো যে, দেশে থেকে দেশের মাটিতে স্বাধীন ভাবে কিছু করে পরিবারের সবার সাথে ভালো_ মন্দ মিলিয়ে থাকবো। পরিবার, সমাজ ও দেশের জন্য কিছু করবো কিন্তু চিন্তা থাকতো কি করবো। প্রবাসে কষ্ট থাকলেও মাস শেষে যা টাকা পাই তাই দিয়ে পরিবার সবাইকে ভালো রাখতে পারছি, কিন্তু দেশে গিয়ে যদি ভালো কিছু করতে না পারি তখন আবার বিপদে পরে যাবো তাই ইচ্ছে থাকলেও সাহস করতে পারতাম না। আসলে গাইড লাইন দেওয়ার মতো কাউকে পাই নাই পাশে এটা বড় সমস্যা।
এরি মধ্যে হঠাৎ ভাবতে থাকি ইউটিউবে তো অনেক কিছু পাওয়া যায়, ব্যবসার উপর সার্চ করি। ইচ্ছে ছিলো ভালো কিছু যদি করার সুযোগ পাই তাহলে দেশে চলে যাবো।
👉👉এরি মধ্যে একবার ফেসবুকে দেখি একজন স্ট্যাটাস দেয় নিজের বলার মত একটা গল্প ফাউন্ডেশন নিয়ে, ভাগ্যিস ও আবার আমার কোম্পানিতে কাজ করে গেছে, তো ওর সাথে ফেসবুকে এড ছিল, সাথে সাথে ওকে মেসেঞ্জারে কল দেই, ওর নিকট থেকে তথ্য পেতে সময় লাগে এক সপ্তাহ, পরে আরেক জনের মাধ্যমে লিংক পেয়ে নিজেই রেজিষ্ট্রেশন করি, তারপর ইউটিউবে গিয়ে স্যারের কিছু আলোচনা শুনি।খুবই ভালো লাগে, তার পর continue ভিডিও সেশন গুলো শুনতে থাকি, তার পর প্রিয় স্যারের একটা উক্তি শুনি।
স্বপ্ন দেখুন।
সাহস করুন।
শুরু করুন।
লেগে থকুন সফলতা
আসবেই ইন-শা-আল্লাহ।
এই উক্তিটা টা শুনে অন্তরে সাহস নিয়ে দেরি না করে ফেসবুকে স্টাটাস দেই অর্গানিক আম নিয়ে কারন তখন ছিল আমের মৌসুম।তখন ও আমার ২ মাস পূর্ণ হয়নি ফাউন্ডেশনের সেশন চর্চায়।সেল পোস্ট করতে পারিনা। তাই ফেসবুকে শেয়ার করি দুষ্টমি করে। মাশাল্লাহ অনেকেই নক করতে থাকেন আপনি কি আমের ব্যাবসা করেন? আমি বলি জ্বি করি। মাশাল্লাহ প্রথমেই অর্ডার পাই ১০ কেরেট, এরি মধ্যে প্লাটফর্মের একজনের সাথে পরিচিত হই, তার পর ওর নিকট থেকে আম এনে সবার বাড়িতে ডেলিভারি করি ভাগিনার মাধ্যমে সিংগাপুর বসে। আলহামদুলিল্লাহ, এর পর কুমিল্লা, নারায়ণগঞ্জ ও ধানমন্ডি বিভিন্ন জায়গায় আম বিক্রি করে সেলআসে প্রায় ৩১৫০০ টাকা। পরে আরো ১০ কেরেট অর্ডার পেয়েও লক ডাউনের কারনে বাকি অর্ডারগুলো ঠিক মত দিতে সক্ষম হইনা।😥
এখন সিঙ্গাপুর যদিও আলহামদুলিল্লাহ ভালো একটি বেতনে চাকরি করি তার পরেও মনে শান্তি লাগেনা।এভাবেই কি জীবন কাটবে?২০ টি বছর পার হয়ে গেছে প্রবাসে। আজো পরিবারের সাথেই আছি আলহামদুলিল্লাহ। দেশে চলার মত কিছু করতে পারছিনা। স্যারের কথাগুলো শুনে অনুপ্রেরণা পেয়ে এখন শুধু একজন উদ্যোক্তা হওয়ার চেষ্টায় মেতে উঠেছি। এরি মধ্যে আমি আমার এক আত্মীয় কে দিয়ে দোকান নিয়ে ব্যাবসা করতে উৎসাহ দেই, সে আর আমি মুদি দোকান দিয়ে মাশাল্লাহ এখন মাসে ১ লক্ষ টাকা সেল হচ্ছে। আলহামদুলিল্লাহ, আর প্রবাসে থেকে আমি অনলাইনে কিছু সেল করছি। ইন-শা-আল্লাহ দেশে গিয়ে পুরোপুরিভাবে পরিচালনা করে ভবিষ্যতে আমার ব্যাবসাকে আরো অনেকদূর এগিয়ে নিয়ে যাবার স্বপ্ন দেখি।তাই আপনাদের সাহস,সাহায্য এবং দোয়া কামনা করছি।
এখন আমি ছোট করে শুরু করেছি বিভিন্ন অর্গানিক ফুড, হোলসেল গার্মেন্টস ও UK থেকে ইমপোর্টার্স করা কসমেটিকস নিয়ে। আমার একটি অনলাইন সপ পেইজ আছে #More_fresh.ইনশাআল্লাহ। প্রিয় গ্রুপের সবার জন্য দোয়া ও শুভকামনা রইল। আসা করি সবাই ভালোবেসে পাশে থাকবেন।
সবাই আমার জন্য দোয়া করবেন আর লেখার মাঝে কোন ভুলভ্রান্তি হয়ে থাকলে ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন বলে আসা রাখি।🤲🤲🤲
অসংখ্য ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি সকলকে আমার গল্পটাকে ধৈর্য সহকারে আপনার মূল্যবান সময় ব্যয় করে পড়ার জন্য। 🙏🙏🙏
সর্বশেষে প্রিয় স্যার সহ সকলের দীর্ঘ আয়ু ও সুস্থতা কামনা করে আজকের মতো এখানেই শেষ করছি, সবাই ভালো থাকুন সুস্থ থাকুন নিরাপদ থাকুন।
আসসালামুয়ালাইকুম।
"স্ট্যাটাস অব দ্যা ডে"- ৫৮৮
Date:- ০৪/০৮/২০২১
আমি মোক্তার হোসাইন
রেজিষ্ট্রেশনঃ ৬০১৮২
ব্যাচ নংঃ ১৩
জিলাঃ মুন্সীগন্জ
থানাঃ সিরাজদিখান
গ্রামঃ খাসমহলবালুচর
বর্তমান অবস্থান সিঙ্গাপুর।
👉✅একজন গর্বিত সদস্য নিজের বলার মতো একটি গল্প ফাউন্ডেশন।