প্রতিটি মানুষের জীবনে একটি গল্প থাকে। তেমনি আমারো জীবনের একটি গল্প রয়েছে।
❤❤
প্রতিটি মানুষের জীবনে একটি গল্প থাকে। তেমনি আমারো জীবনের একটি গল্প রয়েছে।কিন্তুু গল্পটি বলার কোন মাধ্যম এতোদিন ছিলনা।প্রিয় স্যারের অনুপ্রেরণা ও সাহসের এর মাধ্যমে আমার জীবনের গল্প লিখলাম।আশাকরি সবাই একটু সময় নিয়ে গল্পটি পড়বেন ❤❤
❤❤আমি মোঃ শামছুল আলম শিপু। দাদার রাখা নাম মোঃ রাজা প্রধান।জেলাঃ নারায়ণগঞ্জ, উপজেলাঃ সোনারগাঁও। বাবা,মা,আমরা দুইভাই ও ছোট একবোন সহ পরিবারে মোট সদস্য সংখ্যা পাঁচ(৫) জন সংসারের উপার্জনক্ষম ব্যক্তি বলতে শুধুই আমার বাবা।বাবা পেশায় ছিলেন একজন ব্যবসায়ি।আমি পরিবারের বড় ছেলে সে কারনে আমার দায়িত্বটাও একটু বেশি।ছোট বেলা থেকেই আমাদের পরিবারের এবং আমাদের বাড়ির বড় ছেলে হওয়ার কারনে সবাই আমাকে খুব আদর করতো।আমার দাদাও আমাকে খুব আদর করতো।যখন যেখানেই যেত আমাকে সাথেকরে নিয়ে যেত।আমার দাদিকে আমি কখনো দেখিনাই।বাবার কাছে শুনেছি বাবা যখন ছোট তখন আমার দাদি আল্লাহর ডাকে পৃথিবী ছেড়ে না ফেরার দেশে চলে গেছেন। সন্তানদের দিকে চেয়ে আমার দাদা আর বিয়ে করেন নাই।যার কারনে আমার বাবা ছোট থেকেই অনেক কষ্টের মধ্যদিয়ে বড় হয়েছেন।মা হারানোর জ্বালা সেই বুঝে যে হারায়।আমার দাদা পেশায় ছিল একজন ব্যবসায়ি।কিন্তুু পরিবারটি আর্থিক ভাবে তেমন সচ্ছল ছিলোনা।আমার বাবা ছিল সংসারের বড় ছেলে তাই পরিবারের সচ্ছলতার জন্য বাবা দাদাকে তার ব্যবসায় সময় দিতো।সে ছোট থেকেই আমার বাবা সংগ্রামের সাথে অক্লান্ত পরিশ্রম করেছেন এখনো করেন।আমার বয়স যখন (৯) নয় বছর তখন আমার দাদা আল্লাহর ডাকে সারা দিয়ে আমাদের ছেড়ে চলে গেছেন না ফেরার দেশে। আল্লাহর কাছে দোয়া করি আল্লাহ যেন আমার দাদাকে জান্নাতুল ফেরদৌসের সর্বোচ্চ মাকাম দান করেন আমিন❤
❤❤আমি তখন কেজি স্কুলে পড়াশোনা করি।ছোট থেকেই আমি অনেক মেধাবি ছাত্র ছিলাম।বিভিন্ন ছবি আঁকতে খুব পছন্দ করতাম।সুন্দর ছবি আকাঁর কারনে ক্লাসে সবসময় সকল প্রতিযোগিতায় প্রথম হতাম।এখনো ছোট ভাই-বোনদের ক্লাসে ছবি আকাঁর কোন এসাইনমেন্ট থাকে তাহলে আমি তা করে দেই।আমার বাবা কাঠের ব্যবসা করতো।সাথে একজন কর্মচারী ছিল।পড়াশোনার পাশাপাশি যখনই সময় পেতাম তখনই বাবার ব্যবসায় সময় দিতাম এবং ব্যবসা শিখতে চেষ্টা করতাম।নিজের হাত খরচের জন্য মাঝে মাঝে টিওশনিও করেছি।এক বৎসর প্রাইভেট একটি স্কুলে জব করেছি।আমার বাবা কর্মচারীকে খুব পছন্দ করতেন।যার জন্য মাসে ৫-৬ দিন গাছ কিনতে ঢাকার বাহিরে বরিশাল থাকতে হতো।কারন বরিশাল হলো বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় পাইকারী মোকাম।সে সুযোগে কর্মচারী তার ক্যারিয়ার তৈরি করেছেন যখন বুঝতে পারি তখন অনেক দেড়ি হয়ে গেছে❤❤
❤❤আমাদের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানটি ঢাকা -চট্টগ্রাম মহাসড়কের পাশে থাকায় ব্যক্তি মালিকানা থাকা সত্ত্বেও রাস্তা বর্ধিত করার কারনে অনেক জায়গা ছেড়ে দিতে হয়েছে। কিন্তুু জায়গা নিয়েছে কয়েকবার।যার কারনে আমাদের প্রতিষ্ঠানের অনেক আর্থিক ক্ষতি হয়েছে।একদিকে কর্মিচারীর বিশ্বাস ঘাতকতা আরেক দিকে কয়েকবার দোকান ডেকোরেশন করা সব মিলিয়ে বিশাল আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হই।আমার বাবাও ছিলেন একরোখা ও পরিশ্রমী ব্যক্তি উনি লেগেছিলেন ভিষনভাবে।একটু একটু করে ঘুরে দাড়াতে থাকেন❤️❤️আমি যখন HSC পরীক্ষা দিলাম তারপর অবসর সময়টি পুরোটাই আমাদের ব্যবসায় দিতাম।এর মধ্যে হঠাৎ একদিন অতিরিক্ত পরিশ্রমের কারনে বাবা ঘারে আঘাত পান।আঘাতটি গুরুতর হওয়ায় হসপিটালে শিফট করতে হয়।পরীক্ষা নিরীক্ষা করে ডাক্তার বলেন ডায়বেটিস, হাইপ্রেশার এবং হার্টের প্রবলেম তাই সম্পূর্ণ বিশ্রামে থাকতে হবে।৫ কেজি ওজনের বেশি ধরাও নিষেধ।যার কারনে বেশ কিছুদিন বাবাকে বিশ্রামে থাকতে হয়❤️❤️❤️❤️তখন বাবার বিশ্রামের সময়টায় আমি ব্যবসায় বসতাম।তখনো পুরোপুরি ব্যবসা শিখতে পারি নাই।দক্ষ কর্মচারী থাকায় সেই সব কিছু দেখাশোনা করতো।এ সুযোগে সেও আমাদের ঠকায়।আমাকে সে ব্যবসা শিখাতোনা শিখালে যদি আমি তাকে ধরে ফেলি।তখন থেকেই তার প্রতি আমার সন্দেহ কাজ করতো।তাই জিদ করে নিজেনিজেই কিভাবে বিক্রি করে কিভাবে পণ্য ক্রয় করে তা দেখে দেখে ব্যবসা শেখার জন্য চেষ্টা করতাম।পাশাপাশি পড়াশোনা চালিয়ে যেতাম।বাবা কিছুটা সুস্থ হওয়ার পর আবার ব্যবসায় সময় দেয়া শুরু করেন।আমি তখন বি বি এ মার্কেটিং এ প্রথম বর্ষ পরীক্ষা দেই।তখন অবসর সময়টুকু ব্যবসায় দিতাম এবং বাবার কাছ থেকে ব্যবসা শেখার চেষ্টা করতাম।বাবাও আমার আগ্রহ দেখে ব্যবসা শেখাতো।এভাবে কিছুদিন যাবার পর মোটামুটি ব্যবসাটা শিখি।এরপর একদিন কর্মচারীর অপরাধ হাতেনাতে ধরে তাকে বিদায় করে দেই।তারপর থেকে আমি আর বাবা দুইজনেই ব্যবসাটি পরিচালনা করি।এর কিছুদিন পর বাবা হঠাৎ করে মেসিভ স্ট্রোক করে ফেলে।সাথে সাথে বাবাকে ঢাকা মেডিকেলে ভর্তি করি।বিভিন্ন পরীক্ষা নিরীক্ষার পর বাবার হার্টে চারটি (৪) ব্লোক ধরা পরে।পূর্বের ন্যায় তখনো বেশ কিছুদিন মেডিকেলে থাকতে হয়।সারাদিন ব্যবসা করে রাতে মেডিকেলে যেতাম আবার সকাল হলে ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানে চলে আসতাম।বাবা সি সি ইউ তে থাকায় যায়গার অভাবে ঘুম হতোনা।সে কি কষ্ট।যাই হোক বাবা কিছুটা সুস্থ হলে বাসায় নিয়ে আসলাম।তখন তাকে পুরোপুরি বিশ্রামে রাখা হয়।এঅবস্থায় পরিবারের মুখের দিকে তাকিয়ে আমার পরাশোনা আর চালাতে পারলামনা।বন্ধ হয়ে গেল আমার পড়াশোনা।শুরু হলো আমার একার পথচলা।তখন সারাক্ষন ব্যবসায় সময় দিতাম।তখনো পুরোপুরি ব্যবসা না শেখার কারনে ব্যবসায় আর্থিক ভাবে লোকসান গুনতে হয়।যার কারনে প্রায়ই মন খারাপ থাকতো।এরপর আবারো ঘুরেদাড়াতে চেষ্টা করি।।আসলে আমি খুব সহজেই মানুষকে বিশ্বাস করে ফেলি।তাই সেই সরলতার সুযোগে অনেকেই আমাকে ঠকিয়েছে❤️❤️
❤️❤️প্রিয় স্যার একটি কথা বলেন যেটি আমার অন্তরে গেথেগেছে -কেউ আপনার বিশাল পৃথিবীকে হয়তো একটু খানি ঠকাতে পারবে কিন্তুু সে পুরাই ঠকে যাবে তার ছোট্ট পৃথিবী নিয়ে❤️❤️
❤️❤️যখনই মোন খারাপ থাকতো তখনই ইন্টারনেট ঘাটাঘাটি করতাম আর মোটিভেশনাল ভিডিও দেখতাম।কে জানতো সামনে আমাদের জন্য আরো বড় এবং ভয়াবহ বিপদ অপেক্ষা করতাছে।গত রমজানের ঈদের তিন (৩) দিন আগে সেহেরির আগে আমাদের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে ভয়াবহ আগুন লাগে।ফায়ার সার্ভিসের চারটি (৪) ইউনিট আসে কিন্তুু ততক্ষনে আমাদের চোখের সামনে সব পুরে শেষ হয়ে গেছে।শুধু চেয়ে চেয়ে দেখেছি আর কান্না করছি কিছুই করতে পাড়িনাই।তিলেতিলে গড়া ব্যবসা প্রতিষ্ঠানটি একনিমিশেই পুরে কয়লা হয়ে গেল।বিষটি লিখতে গিয়ে এখনো আমার চোখ দিয়ে অনবরত পানি পড়তাছে।তখন আবারো বিষনভাবে আর্থিক ক্ষতিতে পড়ি।সবকিছুই শেষ হয়ে যায়।তাই মানসিক ভাবে ভেঙে পড়ি।কি করবো কিছুই বুঝতে পারছিলাম না❤️❤️
❤️❤️তখন প্রিয় স্যার এর একটি কথা আমার অন্তরে বিষন ভাবে আঘাত করে সেটি হলো -""যে জিতবে সে বারবার পড়বে আবার উঠে দাড়াঁবে এবং বলবে আমি খেলবো। কিন্তুু যে পড়ে যাবার পড় উঠে দাড়াবেনা সে কখনো জিততে পারবেনা এবং জীবনে কোন কিছু করতে পারবে না।""তাই প্রিয় স্যার এর কথায় এবং শিক্ষায় অনুপ্রাণিত হয়ে ইনশাআল্লাহ আবার পুনরায় "কাঠের" ব্যবসা শুরু করেছি এবং ঘুরে দাঁড়াতে চেষ্টা করতাছি❤️❤️
❤️❤️প্রিয়স্যার বলেছেন -সপ্ন দেখুন,সাহস করুন,শুরু করুন এবং লেগে থাকুন সাফল্য আসবেই।তাই এখনো লেগে আছি ইনশাআল্লাহ ❤️❤️
❤️❤️নিজের বলার মতো একটি গল্প ফাউন্ডেশনের সাথে পরিচয়ঃ যখন মানসিকভাবে বেঙে পড়তাম তখনই মোটিভেশনাল ভিডিও দেখতাম।এমনই দেখতে দেখতে একদিন প্রিয় স্যার এর একটি ভিডিও চোখে পড়ে।প্রিয় স্যার ভিডিওতে বলেছিল ""চাকরি করবোনা চাকরি দিবো""এ স্লোগানটি যখন দেখলাম তখনই কেমন যেন মোনে হলো।ভাবলাম যেখানে চাকরির জন্য সকল যায়গায় হাহাকার উনি কি বলে।তারপড় ভিডিওটি পুরোটা দেখলাম অনেক ভালো লাগলো সাথে আর কিছু ভিডিও দেখলাম তখনই প্রিয়স্যার এর প্রেমে পড়ে গেলাম।তারপড় বিস্তারিত জানলাম এটি হচ্ছে নিজের বলার মতো একটি গল্প তখনো ফাউন্ডেশন হয়নি।আমার কাছে ইউনিক বিষয়টি হচ্ছে এটি প্রতি ৯০ দিনের অনলাইন কোর্স,৩৬০ টি কন্টেন্ট দিয়ে সাজানো যা এক একটি ব্যাচ আকারে দেয়া হয়, মাঝে একদিন ও গেপ নাই,এখানে যারা যুক্ত আছে তাদেরকে পুনরায় সুযোগ দেয়া হয় যাতে বারবার চর্চা করতে পাড়ে,প্রতিদিন ছোট ছোট পোস্ট আকারে দেয়া হয়,আবার উক্ত সেশনটি প্রতিদিন ভিডিও আকারে দেয়া হয়,আর এখানে যারা যুক্ত হবেন তাদেরকে অবশ্যই একজন ভালো মানুষ হতে হবে।এটি একটি উদ্দোক্তা তৈরির প্লাটফর্ম যা আগে কখনো পাইনাই।তারপর জানতেপাড়ি ফেসবুকে পেজের মাধ্যমে এ প্রশিক্ষনটি দেয়া হয় সম্পূর্ণ ফ্রি।তখনই উক্ত পেইজে প্রবেশ করি এবং ৭ম ব্যাচে রেজিষ্ট্রেশন করে আজীবন সদস্য পদ লাভ করি।এখন ১৫ তম ব্যাচ শুরু হয়েছে এখনো আমি যুক্ত আছি। প্রিয়স্যার এর প্রতিদিন দেয়া সেশন থেকে কিছু না কিছু শিখছি।প্রিয় স্যার এর গুরুত্বপূর্ণ একটি বাণী হচ্ছে আপনি যাই হোন না কেন আগে আপনাকে একজন ভালো মানুষ হতে হবে। কারন ভালো মানুষরাই বুক ফুলিয়ে বেচেঁ থাকতে পাড়ে❤️❤️
❤️❤️গল্পটি এত বড় করার কারন হচ্ছে আমি এবং আমার পরিবার জীবনে অনেক বাধা বিপত্তির সম্মুখীন হয়েছি এবং বারবার ঘুরে দাঁড়াতে চেষ্টা করতাছি।কিন্তুু থেমে যাইনি❤️
❤️গ্রুপ থেকে শিক্ষা❤️
❤️প্রিয়স্যার বলেছেন আগে শিখুন তারপর ব্যবসা করুন।তাই এ প্রিয় স্যার এবং গ্রুপ থেকে এখনও আমি শিখতেছি❤
❤️আমার ব্যবসায় লোকসানের কারনগুলো কি কি তার উত্তর খুজে পাচ্ছি❤️
❤️ব্যবসা করতে গিয়ে আর কি সমস্যার মুখোমুখি হতে হবে তা শিখতে পারতেছি❤️
❤️একজন উদ্দোক্তা হতে যা যা প্রয়োজন তার কলাকৌশল এখান থেকে শিখতে পারতেছি❤️
❤️কিভাবে সমাজ এবং দেশের সেবা করতে হয় তার শিক্ষা পেয়েছি❤️
❤️এ প্লাটফর্ম থেকে শিক্ষা নেয়ার মাধ্যমে আমি এখন নিজেকে একজন ভালো মানুষ হিসাবে পরিচয় দেই❤
❤️একা বড় হওয়ার মধ্যে কোন আনন্দ নেই সবাই মিলেমিশে বড় হওয়ার মধ্যেই আনন্দ ও গৌরব রয়েছে তা এখান থেকেই শিখছি।আর অনেক কিছু শিখেছি যা আগে কখনো জানাছিলনা❤️
❤️❤️পরিশেষে আমার গল্পটি ধৈর্য্য সহকারে পড়ার জন্য আমার প্লাটফর্মের সকল ভাই-বোনদের এবং আমার শ্রদ্ধাভাজন গুরুজন ও দায়িত্বশীল প্রত্যেককে আমার অন্তরের অন্তস্তল থেকে ধন্যবাদ এবং অভিনন্দন জানাচ্ছি। আশা করি আমার এ দীর্ঘ সংগ্রামে আপনাদের ভালোবাসা দিয়ে আমার পাশেই থাকবেন এবং আমার জন্য আল্লাহর কাছে দোয়া করবেন ইনশাআল্লাহ❤️❤️
"স্ট্যাটাস অব দ্যা ডে"- ৫৯০
Date:- ০৬/০৮/২০২১
❤️❤️ধন্যবাদান্তে❤️❤️
❤️মোঃ শামছুল আলম শিপু ❤️
❤️ব্যাচ নংঃ ৭ম❤️
❤️রেজিষ্ট্রেশন নংঃ ৪৫১৯❤️
❤️ব্লাড গ্রুপঃ "বি" পজেটিভ❤️
❤️পেশাঃ কাঠের ব্যবসা❤️
❤️জেলাঃ নারায়ণগঞ্জ ❤️
❤️উপজেলাঃ সোনারগাঁও ❤️
❤️নিজের বলার মতো একটি গল্প ফাউন্ডেশনের আজীবন সদস্য❤️