এই প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে বদলে গেছে অনেকের জীবন। অনেকে হতাশা পথ থেকে ফিরে এসেছে আলোর পথে,
"নিজের বলার মতো একটা গল্প" বদলে দিয়েছে যাদের জীবন - লোকমান বিন নূর হাসেম
"নিজের বলার মতো একটা গল্প" ভালো মানুষ এবং উদ্যোক্তা তৈরির একটি অনলাইন প্ল্যাটফর্ম। আমরা জানি এখানে প্রতিদিন একটি করে সেশন পোস্ট করেন প্ল্যাটফর্মের প্রতিষ্ঠাতা আমাদের তরুন প্রজন্মের আইকন Iqbal Bahar Zahid স্যার। যে সেশনগুলোতে এই প্ল্যাটফর্মের শিক্ষার্থীদের জন্য উদ্যোক্তা এবং ভালো মানুষ হওয়ার যাবতীয় বিষয় বিশদ ভাবে আলোচনা করে থাকেন। সপ্তাহে দুইদিন ফেসবুক লাইভে সফল উদ্যোক্তাদের গল্প আমাদের শোনানো হয়। স্যারের সেশন পড়ে এবং সফল উদ্যোক্তাদের গল্প শুনে অর্থাৎ এই প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে বদলে গেছে অনেকের জীবন। অনেকে হতাশা পথ থেকে ফিরে এসেছে আলোর পথে, অর্জন করেছে প্রচন্ড আত্ম বিশ্বাস যা সফলতার অন্যতম প্রধান শর্ত। আবার অনেকে হয়ে গেছেন সফল উদ্যোক্তা, তৈরি করেছেন একাধিক লোকের কর্মসংস্থান। বেকারত্ব দুর করার মাধ্যমে দেশের উন্নয়নে অসাধারণ ভূমিকা রেখেছেন। আমি ধারাবাহিক ভাবে আমাদের এই প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে বদলে যাওয়া লোকগুলোর গল্প লিখতে চাই। আজ লিখবো প্রথম পর্ব এভাবে চলতে থাকবে আমাদের সফলতার গল্প। আপনিও আমাকে জানাতে পারেন এই প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে আপনার বদলে যাওয়ার গল্প, আমি তা আমার সাধ্যমত সুন্দর ভাবে তুলে ধরবো সবার সামনে, আশা করি এর মাধ্যমে অনেকেই উৎসাহিত হবে।
এক. মোয়াজ্জেম হোসেন শামীম শেখ (Sk Shamim) , পিরোজ পুরের সন্তান এবং ফ্রান্সের নাগরিক। ফ্রান্সে তার চারটি ব্যাবসায়ী প্রতিষ্ঠান ছিলো। সেখানে ব্যাবসা বানিজ্য নিয়ে ভালোই চলছিলো তার জীবন। নিজের বলার মতো একটা গল্প গ্রুপে জয়েন করার পর বদলে যায় তার ভাবনা। তিনি ভাবতে শুরু করেন এভাবে একা ভালো থাকার নাম জীবন নয়। তিনি ফ্রান্সে দুটি প্রতিষ্ঠান বিক্রি করে নিজ জেলা পিরোজপুরে এ্যাগ্রী কালচার সেক্টরে বিনিয়োগ করেন। শুরু করেন মাছ চাষ এবং হাসের খামার। বর্তমানে তার খামারে স্থায়ী ভাবে ছয়জন লোকের কর্মসংস্থান হয়েছে তবে বিশেষ মৌসুমে এই সংখ্যা দ্বিগুন হয়ে যায়। শেখ শামিম "জমজম ফিড এন্ড হ্যাচারী লিমিটেড" নামে একটি প্রতিষ্ঠান চালু করেছেন। তার ভাষ্য অনুযায়ী ভবিষ্যতে এখানে শতাধিক লোকের কর্মসংস্থান হওয়ার ব্যাপক সম্ভাবনা রয়েছে। শেখ শামিম নিজের বলার মতো একটা গল্প গ্রুপের ২য় ব্যাচের একজন সদস্য।
দুই, এম কে ইসমাইল হুসাইন যখন বিভিন্ন ব্যবসায় লস করে পুঁজি হারিয়ে হতাশার সাগরে হাবুডুবু খাচ্ছিলেন ঠিক তখনই সন্ধান পান নিজের বলার মতো একটা গল্প প্ল্যাটফর্মের। এখান থেকে অনুপ্রেরনা পেয়ে শুন্য হাতে এই প্ল্যাটফর্মে কাপড়ের ব্যবসা শুরু করেন। এখানে তিনি ব্যাপক সাড়া পান। এ পর্যন্ত ৩২ জেলায় এবং ৫টি দেশে তিনি তার পন্য পাঠিয়েছেন। গড়ে তুলেছেন "নিখাদ বাংলা" নামে তৈরি পোশাকের একটি ব্যাবসায়ী প্রতিষ্ঠান। তার প্রতিষ্ঠানে এখন কাজ করছেন ১২জন লোক। ভবিষ্যতে তিনি নিখাদ বাংলার মাধ্যমে অনেক আরো অনেক লোকের কর্মসংস্থান তৈরি করতে চান। অচিরেই তার প্রতিষ্ঠান নিখাদ বাংলার ২য় ব্রাঞ্চের উদ্বোধন হবে। এম কে ইসমাইল হোসাইন এই প্ল্যাটফর্মের নরসিংদী ডিস্ট্রিক এম্বাসেডর।
তিন. এই প্ল্যাটফর্মের আর একট সফল উদ্যোক্তা সিলেটের Md. Movazul Hoque Movaz । নিজের সফলতার পাশাপাশি তিনি অনেক লোকের কর্মসংস্থান তৈরি করতে সক্ষম হয়েছেন। বিভিন্ন ব্যাবসায় যখন তিনি ক্রমাগত লোকসান করছিলেন এবং এর কোন কারণ খুজে পাচ্ছিলেন না, ঠিক তখনই সন্ধান পান এই প্ল্যাটফর্মের। এখানে নিয়মিত সেশনগুলো পড়ে এবং প্ল্যাটফর্মের বিভিন্ন কার্যক্রমে এক্টিভ থেকে একটা সময় তার ব্যবসায় লুজার হওয়ার কারণ জানতে পারেন। অতপর আগের সব ব্যবসা গুটিয়ে শুরু করেন "আরবান চা" (নিজের তৈরি ব্রান্ড) নিয়ে নতুন ব্যবসা। এখানে যেহেতু ব্যবসার খুটিনাটি ভালো ভাবেই রপ্ত করেছেন তাই তাকে আর পিছু ফিরে তাকাতে হয়নি। বর্তমানে বিভিন্ন উপজেলায় প্রায় ৪০জন আরচান চায়ের ডিলার নিয়ে কাজ করছেন, এর মধ্যে ১৯জন শুধু আরচান চা নিয়ে কাজ করছেন এবং তাদের অধিনে ২/১জন কাজ করে যাচ্ছেন। বিভিন্ন ব্যাবসায় লস করে এই প্ল্যাটফর্ম থেকে প্রশিক্ষন নিয়ে মুভেজুল হক অসংখ্য লোকের কর্মসংস্থান করতে সক্ষম হয়েছে। ভবিষ্যতে তিনি প্রতিটি থানায় আরবান চা'র ডিলার নিয়োগ দিতে চান।মুভেজুল হক মুভেজ এই প্ল্যাটফর্মের একজন মডারেটর এবং সাবেক সিলেট ডিস্ট্রিক এম্বাসেডর।
চার. Md Rubel Ahmed Rubel এই প্ল্যাটফর্ম থেকে ট্রেনিং নিয়ে গড়ে তুলেছেন গরুর খামার 'আহনাফ আর এফ এগ্রোফার্ম'। এই প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে তিনি এতটাই আত্ম বিশ্বাস অর্জন করেছেন যে প্রবাসের আকর্ষনীয় বেতনের চাকরি ছেড়ে একেবারে চলে এসেছেন। অথচ প্রবাসীরা সাধারণত সব সময়ই দেশে গিয়ে কি করবেন এ বিষয়ে একটু হতাশায় ভুগেন। তিনি বলেন আমিও এক সময় হতাশায় ভুগতাম। ভাবতাম দেশে গিয়ে কী করবো? কিন্তু এই প্ল্যাটফর্ম আমার হতাশা দুর করে আমাকে প্রচন্ড আত্ম বিশ্বাস দিয়েছে। তার খামার আহনাফ আর এফ এগ্রো ফার্মে দুই জনের কর্মসংস্থান হয়েছে। তিনি বলেন এখানে আরো অনেক লোকের কর্মসংস্থান হবে। এমডি রুবেল এই প্ল্যাটফর্মের একজন মডারেটর এবং সাবেক মালয়েশিয়া কান্ট্রি এম্বাসেডর। তার বাড়ি সাতক্ষীরায়।
এভাবেই আমরা সফল হবো এবং নিজের উন্নয়নের পাশপাশি কর্মসংস্থান তৈরি করে দেশের উন্নয়নে ভূমিকা রাখবো ইনশা আল্লাহ। ধন্যবাদ স্যারকে আমাদের জন্য এত সুন্দর একটি প্ল্যাটফর্ম তৈরি করার জন্য।
SOD no: 157
Date: 07.03.2020
রেজিষ্ট্রেশন নং ১৫৪
৩য় ব্যাচ, কোর ভলান্টিয়ার এবং মডারেটর
নিজের বলার মতো একটা গল্প প্ল্যাটফর্ম,
ডিস্ট্রিকঃ (শিবচর ) মাদারীপুর।
রিয়াদ,সৌদি আরব প্রবাসী।
lokmanbd22@yahoo.com