অবশেষে মন স্থির করলাম আমি যেহেতু ব্যবসায়ী
>>>মূল বিষয়
সবার জীবনে একটা গল্প থাকে
সেই গল্পে থাকে সুখ,দুংখ,হাসি,কান্না,
একপেশে গল্প খুব কম মানুষেরই হয়,
আসলে ছোট থেকেই আমি একটু ডানপিটে সবসময় নিজের কাধে কাজ তুলে নিতে পছন্দ করি এ জন্য অনেক সময় সম্মিলিত কাজের ব্যর্থতার দায় ভার আমার উপর আসার অভিজ্ঞা ও আছে,
তা নিয়ে আমি মোটেও ভাবছি না
আমি ছোট একটা ব্যবসায়ী পরিবারের ছেলে আমার দাদা- বাবা -চাচা-সবাই কোনো না কোনো ব্যবসার সাথে জরিত ছিলো আছে,
পড়াশুনায় খুব ভালো ছিলাম তা নয় কিন্তু একেবারে খারাপ স্টুডেন্ট ছিলাম না
ছোট থেকেই মান অভিমান ছিলো প্রচুর
এই মানঅভিমানের কারনে পড়াশুনা
থেকে নিজেকে বঞ্চিত করেছি বলা যায় অকারনে সবার মত এখন আমিও বুঝি কি ভুল করেছি,
প্রথিবীতে এমন কাউকে পাওয়া যাবেনা যে পড়াশোনা ছেড়ে পরে আফসোস করেনি
যাইহোক আফসোস নিয়ে বসে থাকলে তো চলবেনা তাই বিখ্যাত সেই ভাষনে যেমন বলা আছে যার যা কিছু আছে তাই নিয়ে নামো
জয় আমাদের হবে ইনশাআল্লাহ,
নামিলাম মাঠে ঘাঠে শেষে একপর্যায় চাকরি নিলাম(যোগ্যতা অনুযায়ী) কিন্তু না মন বসাতে পারলাম কিছুতেই,
★চাকরি মানে কপাল আপনার
পাথর মনিবের আপনি সেখানে কপাল ঠুকিয়ে রক্ত দিয়ে কালার করবেন
মনিব তখন পিন্টিং হিসেবে বিক্রি করে
নাম মাএ মুজুরী দিবে আপনাকে,
যদি আপনি সৌভাগ্যবান না হোন
তাহলে আরো খারাপ কিছু থাকতে পারে আপনার কপালে,
অবশেষে মন স্থির করলাম আমি যেহেতু ব্যবসায়ী পরিবারের ছেলে অতএব ব্যবসাই আমার জন্য উত্তম পেশা হবে,
কিন্তু পারিবারিক মনোহারী ব্যবসা আমার ভালো লাগেনা ব্যতিক্রম বহুমুখী কিছু করা ইচ্ছা নিয়ে শুরু করলাম মাইক্রো ক্রেডিট (সমবায় সমিতি)রেজিষ্ট্রেশন নিয়ে শুরুটা ঠিকঠাক চলছিলো,
কিন্তু ভুলটা চোখে পড়ে কিছু দিনের মধ্যে
সেই মান অভিমানের কারনে আমি যে কয়েক বছর গ্রামে ছিলাম না
এই না থাকার কারনে পার্টনার সিলেকশন ভুল অপরাজনিতি মিলেমিশে আমাকে ছিন্নবিচ্ছিন্ন করে দিয়েছে,
বুঝিয়ে দিয়েছে আমার চিন্তা ভাবনা আর বাস্তব কত কঠিন
দেখতে সব মানুষের মত হলেও সবাই মানুষ না
কেউ কেউ শুধু মানুষের মুখোশ পড়ে থাকে মিষ্টভাষী মানুষ গুলো সার্থের প্রয়োজনে কতটা নিষ্ঠুর হতে পারে তা শুধু ভুক্তভোগীই উপলব্ধি করতে পারবে,
হেরেছি পরেছি মরে যাইনি হারাতে হারাতে অবষ্ঠি কিছুই ছিলোনা এমন কি আপন মানুষ গুলো যখন মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে তখন বেচে থাকা অর্থহীন মনে হয়েছিলো মা কেঁদেছে বাবা বুকে কষ্ট নিয়ে নতুনভাবে ঘুরে দাঁড়াবো এই জন্য দোয়া করেছে আমিতো যুদ্ধে,
মানুষের মাঝে মানুষ হয়ে বেচে থাকার যুদ্ধের চেয়ে কঠিন কোনো যুদ্ধ প্রথিবীতে আছে বলে আমার মনে হয়না,
সময়টা ছিলো ২০০৯ইং যখন আমার বয়স ছিলো ২১বছর বয়সের চেয়ে চিন্তার ভাবনার ওজন বেশি হলে যা হয় তাই হয়েছে এই বলে শান্তনা দেই নিজেকে,
শুধু নিজের ভাগ্যের পরিবর্তন করবো এমন একক চিন্তা কখনো করতে পারিনি
আবার দু চারজনের কর্মসংস্থান করবো এই ভাবনায় বার বার চেষ্টা করেও যখন ব্যর্থ হই
তখন নিজেকে নিজেই ধিক্কার দিয়েছি
আর ভেবে নিয়েছি আমার পহ্মে এমন কিছুই সম্ভব নয়,
তারপর শুরু হল নিজের বেচে থাকার লড়াই জীবিকার তাগিদে সৎ পথে থেকে অনেক কিছুই করেছি সফলতা জেনো আমার থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে হতাশা আর ব্যর্থতা প্রতিযোগিতা করছে আমার সাথে দিনের পর দিন বছরের পর বছর,
এভাবেই চলছি আমি হার না মানা এক পথহারা পথিক
পথেই কত মানুষ পেলাম সবাই আমায় বাজিয়ে দেখে আমি শুধু চেয়েই রইলাম,
সপ্ন দেখা ভুলে যাইনি কারন সপ্নই ছিলো আমার একমাত্র সম্বল আজ থেকে একযুগ আগে একজন ♥ইকবাল বাহার জাহিদ♥ থাকলে বাস্তবতা ভিন্ন হতে পারতো,
২০১৩-১৪তে এসে মোটামোটি ভালোই চলছিল
কিন্তু মাঝপথে চন্দ পতন ভাগ্যের সাথে বনিবনা সবসময়ই ছিলো তাই বলে প্রতিযোগিতায় বারবার আমার পরাজয়
যা মেনে নেওয়া ছাড়া আর কোনো পথ
ছিলোনা,
আমরা তিন(ভাই বন্ধু অথবা সহচর) যে ভাষায় প্রকাশ করিনা কেনো কম বলা হবে
চলার পথে ইট কাঠের এই শহরে যে কজন মানুষের মাঝে নিজেকে খুজে পেয়েছি যাদের সাথে ভাগ করে নিয়েছি
সুখ দুংখ হাসি কান্না যে হাত গুলোর সাথে হাত মিলিয়ে এগিয়ে যাওয়ার সপ্ন দেখেছি
সেই হাত গুলো এক সড়ক দূরঘটনার হারিয়ে যাবে নিমেষেই এক মূহুর্তে এ কেমন ভাগ্যফল
নিয়তি নির্ধারণ করেছে আমার জন্য,
০৭-০৯-২০১৪ ইং রাত ৮.৩০মিনিট একসাথে ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা নিয়ে আলাপ করছি আর চিকেন ফ্রাই গিলছি সাথে চাইনিজ সালাদ
কে জানতো মরার খাওয়া খাচ্ছি,
তিনজনের একজন তো আমাকে বলেই বসলো তন্ময় তুমি চিকেন খাও সালাদ টা দারুন হইছে আমরা নিচ্ছি তুমি অনেক দিন বাঁচবে পরে খাওয়ার সুযোগ হবে হা হা হা সে কি হাসি আমিও হেসে এগিয়ে দিলাম আমার প্লেট নেও সালাদ দুইজনে নিলো তৃপ্তিসাধন করলো,
খেয়ে আসলাম রামপুরা ব্রিজ (টম এন্ড জেরি) জুটি বলতো অনেকে আসলেই তাই ছিলাম আমরা ১০০+দুইজনের সাথে আমি বেচারা ৫২+ হা হা এটাই বাস্তব,
বাড্ডা যাবো রিক্সায় চড়ে আমরা তিনজন ভেঙে গেলে একজন একা হয়ে যাবে তাই সিদ্ধান্ত একসাথে যাওয়ার রিক্সাওলারা সাইজ দেখে রাজি নয়
অবশেষে একভাই রাজি ভাড়া বেশি দিতে হবে
ঠিক আছে চল একসাথে যাওয়াই জেনো জরুরী
সত্যি বলতে কেউ কাউকে কাছথেকে সরাতে চাচ্ছি না,
উঠে চড়তেই ২/৩মিনিট
অনেক কিছু হয়েছে এর মাঝে
আমি নিজেকে আবিস্কার করি কয়েক জোরা চোখের সামনে হসপিটালের ব্রেডে ২মিনিটের
ফিরে আসা আবার কয়েক ঘন্টার জন্য চলে গেছি অজানায়,
২য় বার যখন জ্ঞান ফিরে পাই তখন ইর্মাজেন্সিতে নাকে মুখে পাইপ অক্সিজেন হাত পা ব্রেডের সাথে বাধা
পরে জানতে পারি বেচারা রিক্সাওলা সহ তিন জনই এ প্রথিবীতে নেই,
★আমি স্বাভাবিকভাবে বাঁচতে পারবো এমন বিশ্বাস ছিলোনা অনেকের,
সত্যি বলতে আমি নিজেও ভেবে নিয়েছি এ বুঝি আমার অসহায়ত্ব জীবন শুরু
অনেকটা বাংলা সিনেমার গল্পের মত
অবহেলা আর করুনার জীবন কেমন হবে এ দৃশ্য জেনো আমার চোখে মুখে ভেসে উঠছে
সেইসাথে চাপাকান্না নিজের ভেতরটা তচনচ করে দিচ্ছে,
শুরুটা তেমন না হলেও সময়ের ব্যবধানে কল্পনার অশুভ বাস্তবতার কাছে নিজেকে
হারমানতে হয়েছে আরো কঠিন শব্দে,
আপন পর কেউ বাদ যায়নি এই সরে যাওয়ার মিছিলে যোগ দেয়নি
এ জেনো অপরিহার্য হয়ে গেছে সবার নিজেকে আড়াল করে নেওয়ার,
সময়ের সাথে তাল মিলিয়ে চলাই বুদ্ধিমানের কাজ
তাই নিজেকে সেই সময় আবেগী নয়,
বাস্তব মেনে নেওয়া জন্য
কঠিন চেলেঞ্জ মোকাবেলায় মনকে শক্ত রেখে নিজের দৃঢ়রূপে ফিরে আসার চেষ্টায় লড়াই করে গেছি অবিচল,
আলহামদুলিল্লাহ
সেই দুইমাস বাচা মরার লড়াই করার পর
আজ পযন্ত আমি সুস্থ
(বড় ধরেনের বিপদআপদ আমার হয়নি)এরপর আর পিছু ফিরে তাকাইনি শুধু ছুটে চলেছি এগিয়ে যাওয়ার পথে,
ইতিমধ্যে ৫ বছরের সংসারজীবন (৩ বছরের) এক সন্তানের (ছেলের)বাবা আমি,
এখনো অনেকে দেখে বলে তুমি ঠিক আছো? কোনো সমস্যা নেই তো?
আমি হাসি দিয়ে বলি আলহামদুলিল্লাহ,
মহান আল্লাহ দরবারে শুকরিয়া আল্লাহ আমাকে শুধু বাঁচিয়ে রাখেনি
বাঁচার মত বাঁচিয়ে রেখেছেন,
আমার মাধ্যমে আমি সহ ৫জনে কর্মসংস্থান করার তৌফিক দিয়েছেন,
এখন শুধু নিজের ভবিষ্যৎ নিয়ে ভাবলে হবেনা
সন্তানের জন্য কিছু করে যেতে চাই,
আর সেই ভাবনা থেকে এ গ্রুপের মাধ্যমে নতুন কিছু নিয়ে আগামীতে সবার মাঝে আসবো ইনশাআল্লাহ।
সবাইকে অনেক ধন্যবাদ জানাই
যারা শুরু থেকে আমার বাস্তব জীবন থেকে নেওয়া এই গল্পের সাথে ছিলেন,
SOD- 203
DATE: 23Apr 2020
মো:ইউসুফ হোসেন তন্ময়
কমিউনিটি ভলেন্টিয়ার
৭তম ব্যাচ
রেজিষ্ট্রেশন নং-২৯৫৫
শ্রীপুর -গাজীপুর
জন্মস্থান কুমিল্লা।