প্রবাসীদের স্বপ্ন পূরনের পথ " নিজের বলার মতো একটি গল্প " গ্রুপ।
প্রবাসীদের স্বপ্ন পূরনের পথ " নিজের বলার মতো একটি গল্প " গ্রুপ।
👉একটি পরিবারে বেড়ে ওঠা মানুষটি এক সময় স্বপ্ন দেখে। তার পরিবারের দায়িত্ব নেবে।
যেখানে থাকবে মা বাবা, ভাই বোন, স্ত্রী সন্তান। যাদের মুখে হাসি ফোটানোর জন্য স্বপ্ন দেখে ভালো বাড়ি, ভাই-বোন কিংবা সন্তানের জন্য উন্নত স্কুলে পড়ালেখার সুবিধা।
বাবা মাকে ভালো মানের খাবার ও চিকিৎসার ব্যবস্থা করা। নিজের জন্য একটি সাজানো ঘর তৈরি করা ইত্যাদি।
👉 তার জীবন থেকে কয়েকটি বছর প্রবাসে কাটাবে। তারপর দেশে এসে একটি সুন্দর বাড়ি বানাবে। একটি ব্যবসা নিয়ে বসবে। তারপর বাকি জীবন আরাম-আয়েশে কাটাবে।
👉কেউ ঋণ করে, কেউবা তার পৈতৃক সম্বল জমিটুকু বিক্রি করে। প্রবাসে পাড়ি জমান। তার মাঝে কোন চিন্তা নেই, আমি কি পারবো? আমার ঋণ পরিশোধ করতে? আমি কি পারবো? হারানো সম্বলটুকু ফিরে পেতে?
👉 তার মাঝে থাকে স্বপ্ন ও বিশ্বাস। ১-২ বছরের মধ্যেই সব ঋণ শোধ করবো কিংবা হারানো সম্বলটুকু ফিরিয়ে নেব। সবকিছুর অবসান ঘটিয়ে পাড়ি জমান প্রবাসে। যখনই প্রবাস নামক জগতে চলে আসেন, তখনই তার অর্ধেক স্বপ্ন ভেঙে যায়।
👉 কারন, প্রথম মাসের বেতন পাওয়ার পর, যখন হিসাব করতে বসে। তখন বুঝতে পারে, এক বছর কিংবা দুই বছরের সম্ভব না। হয়তো আরো কিছু সময় বেশি লাগতে পারে। কিন্তু আমার সব স্বপ্নই পূরণ হবে।
👉 কিন্তু কিছুদিন পর, যেই পরিবারে 15000 টাকায় সংসার ভালই চলত। আজ সেই পরিবারের চাহিদা অনেক গুণ বেড়ে গেছে। বাড়িতে ফোন করলে শুধু পরিবারের চাহিদা। এই টাকায় কিছুই হচ্ছে না সামনের মাসে আরেকটু বাড়িয়ে দিও। বাজারে জিনিসপত্রের দাম অনেক গুণ বেড়ে গেছে।
👉 পরিবারের একের পর এক চাহিদা মেটাতে গিয়ে, প্রবাসে আসা লোকটা ভুলেই যায়, কখন, কিভাবে কেটে গেল ৫ টি বছর। কিন্তু দেনা এখনো পরিশোধ হয় নি। কি আর করার দীর্ঘ ৫ বছর পর যখন বাড়িতে আসার কথা বলে, তখন পরিবারের এইটা লাগবে, ঐটা লাগবে। নতুন করে আরো আবদার বেড়ে যায়। সবার জন্য আবদার মিটাতে গিয়ে, সব টাকা খরচ হয়ে যায়। অনেকে তো যাওয়ার সময় নিজের জন্য সর্বোচ্চ ২টি শার্ট, ২ টি প্যান্ট ও ১ জোড়া জুতা কিনে নেয়। প্রবাসে যেখানে ছেঁড়া কাপড় পড়ে সময় কাটিয়েছে, আজ সেখানে হয়তো এই প্রথম নিজের জন্য কোন টাকা খরচ করলো।
👉 অবশেষে দেশে যাওয়ার পর, সবাইকে সব কিছু দেওয়ার পর ও অনেকের মন খারাপ থাকে। সবার মন মত হয় না 😥 তখন অনেক শুভাকাঙ্ক্ষী সামনে এগিয়ে আসে। কারন বিদেশ ফেরত। অনেক টাকার মালিক, কিন্তু শুধু প্রবাস থেকে আসা মানুষটিই যানে। তার ভিতরের খবর।
👉 ছুটি শেষে প্রবাসে আসার সময়, অনেকে তো নিজের হাতের ঘড়ি বা মোবাইলটা পর্যন্ত রেখে আসতে হয়। পরিবারের চাহিদা পূরনে আবার টাকা ধার করতে হয়।
👉 ছুটি শেষে আবার চলে আসতে হয়, প্রবাস নামের জেল খানায়। শুরু হয় আবার দেনা পরিশোধ করা এবং পরিবারের চাহিদা পূরনের যুদ্ধ। এইভাবে বছরের পর বছর কাটিয়ে দেন আপনজনের কাছ থেকে নিজেকে অনেক দূরে রেখে।
👉 একসময় যৌবন শেষ হয়ে বার্ধক্যে পৌঁছে যায়। শরীরে আর শক্তি নেই কাজ করার। চিন্তা করে দেশে চলে যাবে। বাকী জীবন পরিবারের সাথেই কাটাবেন। কিন্তু কয়জন পারেন?
👉 অনেক প্রবাসীতো পরিবারের চাহিদা পূরনের ব্যর্থ হয়ে, আত্মহত্যার পথ ও বেচে নেন। যারা যুদ্ধ করে বেচে যায়, তার মধ্যে অনেকেই আবার, দেশে গিয়ে হয়ে যান নিজের পরিবারের কাছে অবহেলিত।
অথচ এই মানুষটিই প্রাবাসে থাকার সময় ছিল, পরিবারের সবচেয়ে বেশি আপন, বেশি প্রিয়।
👉 দেশে যাওয়ার পর যখন পরিবারের অবহেলা দেখে ভাবতে থাকে, আমি কি করেছি জীবনে? তার কিছুই করার থাকে না, কেননা সে করে নি কোন সঞ্চয়, ছিল না কোন পরিকল্পনা, হারিয়ে ফেলে কিছু করার সাহস। যদিও কিছু করতে চায়, পায় না কোন অনুপ্রেরণা।
নিজের জীবন শেষ করে আজ নিঃস্ব। 😥 এখন না আছে টাকা পয়সা না আছে কাজ করার শক্তি? না আছে সাহস করে কিছু করার 😥
👉এভাবেই পৃথিবী থেকে চলে যায় হাজারো প্রবাসীদের জীবন 😥। যে জীবন মানুষগুলো অনেকের কাছেই অপরিচিত। তাদের হয়না নিজের কোন সফলতার গল্প। আমিও প্রবাসী, আমার জীবন টাও কি তাদের মতো শেষ হয়ে যাবে??
উত্তরঃ না। ইনশাআল্লাহ, আমি তৈরি করবো নিজের বলার মতো একটি গল্প। আমি হার মানতে নারাজ।
🌹কারন, আমি তাদের মতো নই, যারা জীবনের সকল অর্থ ব্যয় করেছে পরিবারের চাহিদা মিটাতে।
🌹 কারন, আমি তাদের মতো নই, যারা সঞ্চয় করতে ভুলে গেছে।
🌹 কারন, আমি তাদের মতো নই, যারা অন্যের স্বপ্ন পূরনে নিজের স্বপ্ন দেখা ভুলে গেছে।
🌹 কারন, আমি তাদের মতো নই, যারা সাহস হারিয়ে ফেলেছে কিছু করার।
এই সবগুলো কারনের মূল কারণ হচ্ছেঃ
❤ আমি আজ জানিঃ জীবনে সঞ্চয় অনেক জরুরি।
❤ আমি জানিঃ সব ইনকাম খরচ করতে নেই। কিছুটা বাচিয়ে রাখতে।
❤ আমি জানিঃ স্বপ্ন দেখতে, স্বপ্ন পূরনে সাহস করতে।
❤ আমি জানিঃ স্বপ্ন পূরন না হওয়া পর্যন্ত লেগে থাকাতে।
❤ আমি জানিঃ কিভাবে সফলতা চিনিয়ে নিতে হয়, সততা ও শ্রম দিয়ে।
❤আমি জানিঃ কিভাবে যুদ্ধ করে বেঁচে থাকতে হবে।
🌻আর এই সব কিছু আমি কখনোই জানতাম না। যদি আমি আমার এই জীবনে খুঁজে না পেতাম " নিজের বলার মতো একটি গল্প" নামক প্লাটফর্মের।
🌻আমি জানতাম না, যদি আমাদের সবার প্রিয় " ইকবাল বাহার জাহিদ" স্যার আমাদের পাশে না থাকতেন।
🌻 আমি জানতাম না, যদি আমি স্যারের ছাত্র না হতাম।
🌻 আমি জানতাম না, যদি স্যার এত কষ্ট করে, আমাদের উদ্দোক্তা হওয়ার প্রশিক্ষণ না দিতেন।
🌻 আমি জানতাম না, যদি আমি স্যারের কাছ থেকে শিখতে না পারতামঃ
"আপনার প্রতিটি স্বপ্ন
হয়ত সফল হবে না,
কিন্তু স্বপ্ন দেখা
বন্ধ করা যাবে না।
কারন স্বপ্নই আপনাকে
জাগ্রত রাখবে"।
"স্ট্যাটাস অব দ্যা ডে"- 203
Date:- 23/04/2020
নামঃ সহিদ হোসেন
কমিউনিটি ভলেন্টিয়ার
ব্যাচঃ ৮ম
রেজিষ্ট্রেশন নঃ ৭৫৮২
জেলাঃ লক্ষ্মীপুর জেলা