পরিবারে পড়াশোনায় প্রায়োরিটি ছিল না । আমার পড়তে বসার কোন চেয়ার ছিল না আমার চাচাতো ভাই ছিল যার জন্য তার ভাই চেয়ার কিনে আনলো
২০১১ সাল আমি অষ্টম শ্রেণী থেকে নবম শ্রেণিতে উত্তীর্ণ হইছি । নিম্নবিত্ত কৃষক বাবার ৫ ছেলে ও এক মেয়ের সংসারে উপার্জনক্ষম বড় তিন ভাই ২ জন বিবাহিত ও ১জন অবিবাহিত আর আমরা স্কুলপড়ুয়া ২ভাই ও ১বোন সংসারে যেন সকাল বিকাল এটা-ওটা নিয়ে অশান্তি লেগেই থাকত আমি সবার ছোট আমাদের ভালো কথা শোনারো যেন কেউ নেই । দিন দিন বাবা তাঁর কতৃত্ব হারাচ্ছেন আমি লক্ষ্য করলাম । এক পর্যায়ে বিবাহিত বড় দুই ভাই পৃথক হয়ে গেলো । আমাদের মোটিভেট করার কেউ নেই বললেই চলে । শিক্ষার ব্যাপারে উদাসীন তারা এমন যেন নবম শ্রেণিতে আমার কোন বিভাগে যাওয়া উচিত 4th Subject কি নেয়া উচিত এটা বলারো কাউকে পাইনি । এমনকি আমার পরিবারের বড় সদস্যদের যদি কেউ প্রশ্ন করে আমি কি করি? প্রতিষ্ঠানের নামের বাইরে হয়তো কিছুই বলতে পারবে না যেখানে আমার সহপাঠীদের ব্যতিক্রম ছিল । পরিবারের কৃষি কাজে অনেক সময় দিতাম । উপার্জনক্ষম দের সব কাজে সহযোগিতা করেও আমরা অবমুল্যায়িত হতে লাগলাম । আমার ইর্ষা হত । পরিবারে পড়াশোনায় প্রায়োরিটি ছিল না । আমার পড়তে বসার কোন চেয়ার ছিল না আমার চাচাতো ভাই ছিল যার জন্য তার ভাই চেয়ার কিনে আনলো কারন বিছানায় বসে পড়লে সে ঘুমিয়ে যাবে । আমি মৃদু হেসে উড়িয়ে দিলাম যে এটা একটা অপ্রয়োজনীয় জিনিস । পরীক্ষার দিন সকালে সব বন্ধুদের বাড়ি থেকে সবাইকে ৫০০/১০০০ টাকা করে দিয়েছে । আমার মা ব্যতিত কেউ জানেই না যে আমি পরীক্ষা দিতে যাচ্ছি । মা দোয়া করে দিয়েছিলেন । মা চাইলেই যা ইচ্ছা করতে পারতেন না । এমন না যে টাকার অভাব ছিল বিষয় টা ফালতু ছিল তাদের কাছে। অনেক টানা-পোড়নের মধ্যে দিয়ে SSC( এস এস সি) দিলাম (পরিবারে প্রথম কেউ) পাশ করলাম । ৪.৮৯ পেলাম মানবিক বিভাগ থেকে ২০১৪ সালে যদিও ভালো ছাত্র ছিলাম না ,মায়ের দোয়া যে মিরাকেল ঘটায় এটা প্রমাণিত হলো ।
২০১৬ সালে কলেজে ২য় বর্ষে ইন্টারমিডিয়েটের টেষ্ট এক্সাম চলে হঠাৎ বড় ভাই ফোন দিয়ে বললো আমি কাতারে যেতে রাজি কিনা কিছু না ভেবেই বলে দিলাম জ্বী যাবো । ১৫ দিনেই ভিসা হয়ে গেল চলে আসলাম প্রবাস নামক যন্ত্রণার জীবনে হয়তো ভুল ডিসিশন ছিল পরীক্ষা না দিয়ে আসা টা । দেশের থেকে এটা যেন আরো বেশি কঠিন হলো একই সাথে আসা তিন জনের ২জন দেশের ফিরে গেল বেতন কম হওয়ায় ৬মাসের মাঝেই কিন্তু আমি জানতাম আমার ফ্যামিলি থেকে ২য় বার ৩/৪ লক্ষ টাকা আমাকে দিতে পারবে না । যদি কিছু করতে হয় তো আমাকেই করতে হবে । এভাবেই চলতে লাগলো কিন্তু কোন লক্ষ ঠিক করতে পারছিলাম না হঠাৎ ২০১৯ এর অক্টোবরে সন্ধ্যান পেলাম নিজের বলার মত একটা গল্প গ্রুপ এর যেখানে আমার মত দের জন্য রয়েছে অনেক শিক্ষা । তো ৯০ দিনের কর্মসূচি করার পর সপ্ন দেখতে শুরু করলাম । পুর্ব পরিচিত স্বপ্নবাজ বন্ধুদেরও যুক্ত করালাম আর বদলে যেতে লাগলো জীবন ৭ জনে মিলে একটা সপ্ন দেখছি যার নাম BD Rainbow Group Ltd । জীবনের এই মাহেন্দ্রক্ষণে Iqbal Bahar Zahid স্যার দ্বিতীয় বার ঘুরে দাঁড়িয়ে সপ্নের পথে চলতে সাহস ও অনুপ্রেরণা দিলেন ।গত পাঁচ মাস ধরে স্যার নির্দেশনা অনুযায়ী আমরা চাকরির পাশাপাশি অর্থ সঞ্চয় করে আসছি যেন দেশে গিয়ে যেকোনো একটা ব্যবসা করতে পারি । ইনশাআল্লাহ ।
জীবন তো জীবনের মতই ভাববেন একটা হবে অন্যটা । তবুও বিচলিত হয়নি কখনও এসব নিয়ে অভিযোগও করিনি কারণ আমি জানতাম পৃথিবীতে আমার থেকেও বেশী সমস্যায় ভোগা লোক আছে সমাজে আমাদের আসে পাশেই । তাই আল্লাহর উপর ভরসা করে এগিয়ে যাবার চেষ্টা করেছি ।
স্যার বলেছেন সব সময় মা-বাবার সেবা করার জন্য তাই চেষ্টা করে যাচ্ছি তাদের ভালো রাখার জন্য ।
আলহামদুলিল্লাহ এখন আমার মা-বাবা আমার উপর অনেকটা Satisfied ! সবাই দোয়া করবেন আমার জন্য 👦
স্ট্যাটাস অফ দ্যা ডে -১৮৬
০৬-০৪-২০২
Gausul Azam Shanto
👉 proudfull Member
👨🎓 7th Batch
🖋️Reg No : 3076
💉 Blood Group : A+
🇧🇩 Dist. - Magura
🇶🇦 Resident of Qatar
📱+97466553151
📧 smirshanto@gmail.com