জবাবটা জমিয়ে রাখুন ভবিষতের জন্য, মোক্ষম জবাব দিতে পারে আপনার কাজ, যোগ্যতা, বিনয়
আসসালামু আলাকুম,
আজ ১০ম ব্যাচ-এর ৫৫ এবং ৭৩ নম্বর সেশনের আলোকে আমার_নিজের_একটা_অভিজ্ঞতা_ উপস্থাপন করার চেষ্টা করছি, আশাকরছি আমার۔ প্রিয় ভাই-বোনেরা কষ্ট করে পড়বেন,হয়তো কিছু উপকারও হয়েও যেতে পারে।🙂
📚📚Bangladesh University of bussiness and Technology (BUBT) থেকে B.Sc Hons in Economics শেষ করে আমি M.Sc এডমিশন নিই।
আমার ইনটেক এর কোন বন্ধুরাই ছিলোনা সাথে, কারণ তারা তাদের কিছু সাবজেক্ট ইম্প্রোভমেন্ট নিবে সেকারণেই। আমার সিজিপিএ নিয়ে আমি খুশি ছিলাম তাই আমি আর কোন গ্যাপ তৈরি করতেও চাইনি। একদম অপরিচিতদের সাথেই ক্লাস শুরু করেছিলাম ইভনিং শিফটে।
অনার্স অনেক কষ্টে শেষ করতে হয়েছিল, হাজার বাধা পেয়েছিলাম তাই সময়টা খুব মূল্যবান ছিল আমার কাছে।
ভেবেছিলাম পড়াশোনা শেষ করে একটা ভালো জব না করতে পারলে আমি ব্যবসা করার চেষ্টা করবো, তবে মাস্ট আমাকে কিছু করতে হবে, এটাই মাথার মধ্যে থাকতো সবসময়।
যদিও 2017 সালেই আমি #শিল্পীর_রং" নামে একটা অনলাইন পেজও ক্রিয়েট করেছিলাম, অনেক প্ল্যান ও করেছিলম কিন্তু বিশেষ কারণে প্লানগুলো পূর্ণতা পাইনি মোটেও, কোন সহযোগিতায় পাইনা আমি ব্যাবসার কাজের জন্য।
পড়াশোনা শেষ করে জব করে টাকা উপার্জন করে সেই টাকা ইনভেস্ট করে ব্যবসা করতে হবে এটাই ছিল মাথায় তখন।
বিভিন্ন সমস্যার মধ্যেই আমি M.Sc শেষ করেছিলাম রেজাল্ট ভালো ছিল কিন্তু এক সেমিসটার ছিল রিসার্চ এর জন্য।এটা শেষ না হলে আমি M.Sc সিজিপিএ জানতে পারবোনা আর সার্টিফিকেটও পাবনা তাই এটা নিয়ে বেশ চিন্তিত ছিলাম।
📚📚#মূলঘটনা_শুরু:
এই প্রজেক্ট ওয়ার্কের জন্য আমার সুপারভাইজার ছিলেন একজন সিনিয়র ম্যাডাম। সপ্তায় আমি 4/ 5 দিন ম্যাডামের সাথে দেখা করতে যেতাম, এবং তিনি আমাকে মিনিমাম ৮০ টার মতো আর্টিকেল দিয়েছিলেন কাজ করার জন্য। আমি সব পড়ে যা ফাইন্ড আউট করতাম ম্যাডামকে মেইল করতাম।
আর সব মেইল আমি করতাম রাত 4 টার দিকে করে তারপর যতটা পারতাম ঘুমাইতাম।কারণ আমার সময় ছিল অনলি রাতটা।বাসায় মেহমান থেকেই যেত, সব ম্যানেজ করে ঘুমানোর টাইম টাই সেক্রিফাইস করতে হতো আমার প্রজেক্টের জন্য।😌
পুরো দুই মাস ম্যাডাম আমাকে প্রচুর কষ্ট করান। আমিও বেশ কিছু শিখে ফেলি তখন। সব কাজই আমাকে দিয়েই করাতেন তিনি, বিনিময়ে স্যারদের আর ম্যাডামের অন্য স্টুডেন্টদের কাছে আমার۔ প্রশংসা করতেন।
আমি খুব কষ্ট করে কাজ করতাম তাও কখনো ফ্যামিলি নিয়ে۔ বা কোন ধরণের অজুহাত দেখায়নাই ম্যাডামকে। যখন বলতে ভার্সিটি চলে যেতাম।
হঠাৎ আড়াই মাস পর সাবমিট লিস্টে উনি আমার এবং ম্যাডামের আর একটা পুরানো স্টুডেন্টের নাম দেননি যা অন্য একজন স্যার আমাকে ইনফর্ম করেন আমাকে। ম্যাডামও আমাকে জানালেন আমাকে নেস্ট সেমিস্টার পাঠাবেন কারণ তিনি আমার প্রজেক্ট রেডি করতে পারবেননা।
আমি ভার্সিটি চলে গেলাম।ম্যাডামের রুমে গিয়ে কথা বললাম,রিকোয়েস্ট করলাম কিন্তু ম্যাডাম আমাকে সেম কথাই বললেন,আমি 3 মাস কষ্ট করছি সব বললাম,ম্যাডাম আমাকে বললেন,"আমি۔ কি তোমাকে নিয়ে থাকি আমার আরো কাজ আছে তাই তোমার মেইল ও আমি দেখতে পারিনাই, এটা শোনার পর আমার মাথাটা একদম খারাপ হয়ে গেলো। রুমে থাকা সব স্যার ম্যাডামরা অবাক হলেন, আমি বুঝলাম ব্যাপারটা ভালোভাবে নেননি কেউই।
#ডাইরেক্ট_বললাম_আমিও, আমি এই প্রজেক্টের জন্য ঘুমকে সেক্রিফাইস করেছি, নিজের প্রতি নির্যাতন করেছিও বলা যায়, আপনার জন্য আমি 4 মাস বিসর্জন দিতে পারবোনা। তাই ম্যাডাম আমি 27 মার্চ 2019 তারিখেই প্রজেক্ট সাবমিট করবো,আপনি আমার জন্য দোয়া করবেন, আর বাইরে আপনাকে কিছুই করতে হবেনা আর সেজন্য আপনি অজেই সাবমিট লিস্টে আমার নামটা দিয়ে দিবেন।তানাহলে আমি আপনার নামে ভিসি স্যার এর কাছে লিখিত অভিযোগ করতে বাধ্য হবো।
ম্যাডাম খুব রাগ করে আমাকে বললেন, শিলা তুমি কি আমার সাথে চ্যালেঞ্জ করছো??
আমি বললাম জী ম্যাডাম করছি, আমি ২৭ তারিখের আগে আপনাকে বিরক্ত করবোনা।দোয়া করবেন।আসি ম্যাডাম, আসসালামু আলাইকুম।
বাসায় এসে মন ভোরে কান্না করেছিলাম।একজন স্যার এর কাছে জানলাম লিস্টে আমার নাম দিয়ে দিয়েছেন ম্যাডাম।আসলে ম্যাডাম আমার প্রশংসা এতটাই করেছিলেন যে কিছু করার ছিলোনা আর।
যাইহোক, রাতথেকে কাজ শুরু করলাম, ওই আপুকে নিয়ে আমার বাসায় কাজ করলাম কদিন, তারপর আমার একজন শ্রদ্ধেয় স্যারকে দিলাম সব প্রজেক্ট ফাইল মেইলে।রাত 4 টা পর্যন্ত স্যার আমার সব ফাইল দেখলেন তারপর আমাকে বললেন আমিও সেভাবে ঠিক করলাম সব সাথে আপুটার ৬৫% সব কাজ করে দিলাম।পাওয়ার পয়েন্টে স্লাইড করে সব রেডি করলাম। আমি স্যার এর প্রতি সারাজীবন কৃতজ্ঞ থাকবো।
27 তারিখ সকাল 11 টার সময় 4 + 4 =8 টা ফাইল বাইন্ডিং করে হার্ড কপি বের করে বাসায় আসলাম।
ম্যাডাম কল দিলেন," বললাম আমি আসছি ম্যাডাম সব রেডি হয়েছে আলহামদুলিল্লাহ।
ভার্সিটি গিয়ে ম্যাডামকে সালাম দিলাম, সব স্যার ম্যাডামরা হাসছিলেন, আমিও একটু মুচকি হাসিদিলাম,কিন্তু সুপারভাইজার ম্যাডাম বেশ রেগেছিলেন।
আমি বললাম,"🙂ম্যাডাম আপনি এমন কেন বলুনতো? সপ্তাহে ১২ টার মতো মেইল করতাম,১০ বার কল করতাম,5 দিন দেখাকরতাম, এসব আজকের পরথেকে আর কোনোদিন হয়তো হবেনা এসব ভেবে আপনার আমার জন্য ময় লাগেনা ?সবাই এসব শুনে হাসলেন।
#কিন্তু_ম্যাডাম, ”শোনো শিলা, এই ভার্সিটির একজন সিনিয়ার টিচার আমি, তুমি একটা ছোট মেয়েহয়ে আমার সাথে চ্যালেঞ্জ করে আজ আমার ম্যান সম্মান ডুবাতে আসছো, তোমার এই প্রজেক্ট সাবমিটের জন্য জানিনা আজ আমার মান সম্মান কতটা থাকবে।
#আমি_মুচকি হেসে🙂 খাতাগুলো এগিয়ে দিলাম।
ম্যাডাম সাইন করেদিলেন রাগ করেই।
#আমি, ”ম্যাডাম আপনার কাছে শিখেছি, নিজের সম্মান নিজেকে ধরে রাখতে হয় এবং অজুহাত দেখানো মোটেই উচিত নয়।"টাই আমি কখনো অজুহাত দেখিনাই।আমি সর্বোচ্চ চেষ্টা করবো আপনার সম্মান রাখতে ইনশাল্লাহ।তবে একটা অনুরোধ আপনি আমার জন্য কি করলেন আশা করছি ভেবে দেখবেন🙂। আমাকে ক্ষমা করবেন।
সবার কাছে দোয়া চেয়ে বিদায় নিলাম।
#প্রজেক্ট_সাবমিট শুরু হলো, ভিআইপি সবাই আর প্রজেক্টের আলো,স্তব্ধ পরিবেশ, আমি 3 নো এ ছিলাম, আমাকে অনেক প্রশ্ন করলেন ভালোই ছিল সবকিছু।ঢাকা উনিভার্সিটির একজন স্যার ম্যাডামকে ধন্যবাদ দিলেন যেখানে ম্যাডামের ভূমিকা তেমন ছিলোনা, আমি খুশি হলাম অনেক।🙂
1 ঘন্টা পর রেজাল্ট দিলেন,, সব স্যাররাই অনেক এডভাইস দিলেন কিন্তু আমার।
#ম্যাডাম আমার দিকে একদমই তাকালেননা।ম্যাডামের মনটা খুব খারাপ ছিল।
#আমি ম্যাডামকে ধন্যবাদ জানালাম।তবে ম্যাডাম বেশ আপসেট।
#ম্যাডাম_ "এতবছর সুপারভাইজার হিসেবে কাজ করছি, তবে শিলা আজকের অনুভুতিটা ভিন্ন।দোয়া রইলো তোমার জন্য, আশাকরি ভালো কিছু করবা।
#আমার ওই সময় একদমই কিছু মনে ছিলোনা, ম্যাডামের প্রতি রাগ, অভিযোগ, অভিমান একদমই ছিলোনা,বাসায় এসেই খুব ক্লান্ত লেগেছিলো।
😍😍#সত্যি বলছি আমি۔ এতটা জিততে চাইনি, ওই ঘটনাটা আমার নিজের জন্যে অনুপ্রেরোনার ছিল, কিছু সময়ের জন্য আমি۔ বেশ কৃতজ্ঞ হয়েছিলাম নিজের কাছে।
#আসলেই সব কিছুতেই চুপ থাকতে নেয়।
নিজের স্বপ্ন তৈরিতে নিজেই প্রথম ভরসা হতে হয়, উঠে দাঁড়াতে হয়, মাঝে মাঝে চালাঞ্জ নিতে হয়।সম্মান দেখানোর জায়গায় দেখতে হয়, কিছু মানুষকে শুধরানোর সুযোগও করে দিতে হয়। আমার মনেহয় আমিও তাইই করেছিলাম।
#আপনার জীবনে একজন মানুষের অবহেলাও দরকার কাছে, তাহলে আপনি অনেক কিছুই শিখে যাবেন, আপনি নিজের পায়ে চলতে পারবেন, নিজের চোখে দেখতে পারবেন। একবার সাহস করে উঠে দাঁড়াতে পারলেই আপনি অনেকের সাহায্য পাবেন।
#আমিও কিন্তু চুপ ছিলাম একটা মাস, তারপর সফল হয়েছি তাই আর পরিশোধ প্রবণতা ছিলোনা আমার মাঝে।ক্ষমাশীল হয়ে গিয়েছিলাম। সফল হলে আপনিও অনেক কিছুই নেতিবাচক বিষয়গুলো ভুলে যেতে পারবেন।
#সাহস করেছিলাম বলেই আমিও 4 টা মাস, কষ্ট টাকা, সেভ করতে পেরেছিলাম।
#স্যার_এর_কথা -" জিদ করে শিখে ফেলুন অনেক কিছু তাতে লাভ আপনারই হবে।
"জবাবটা জমিয়ে রাখুন ভবিষতের জন্য, মোক্ষম জবাব দিতে পারে আপনার কাজ, যোগ্যতা, বিনয়।
স্ট্যাটাস অফ দ্যা ডে -২৬৭
২-০৭-২০২০
শিল্পী আক্তার শিলা
ব্যাচ:১০ম
রেজিস্ট্রেশন নাম্বার: ১৬৯৬৫
কমিউনিটি ভলেন্টিয়ার
ব্লাড গ্রুপ: বি পজেটিভ
জেলা: চুয়াডাঙ্গা
বর্তমান অবস্থান: পল্লবী,মিরপুর, ঢাকা
স্বত্তাধিকারী :শিল্পীর রং