স্যারের প্রতিদিন প্রতিটা সেশন পড়ি নিজের ভিতরে ধারণ করি, আর একদম ঠিক স্যারের প্রতিটি সেশন ই আমার জীবনের মোড় ঘুরতে শুরু
🌹আসসালামুওলাইকুম, কেমন আছেন সবাই?🌹
🌼পরম করুনাময় ও অসীম দয়ালু আল্লাহর নামে শুরু করছি।🌼
👉👉আজ আমি আপনাদের সামনে আমার নিজের বাস্তব জীবনের গল্প তুলে ধরতে এসেছি।👆
❤❤প্রথমে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানাই প্রিয় ইকবাল বাহার জাহিদ স্যারকে।প্রিয় স্যারের কাছ থেকে শিক্ষা পেয়ে আজ আমি একজন ভালোমানুষ হতে পেরেছি, স্যারের অনুপ্রেরণায় নতুন কিছু উদ্যোগ নিতে পেরেছি ও আজ আমি আপনাদের নিজের জীবনের গল্পটা বলতে পারছি।❤❤
👉👉আমি মোঃইসমাইল হোসেন চাঁদ, সাতক্ষীরা জেলায় আমার জন্ম ও বেড়ে উঠা।আমি খুবই আর্থিক ভাবে অসচ্ছল পরিবারের একজন সন্তান। পরিবারের সবার মূখে আমি গল্প শুনি,আমি যখন জন্মগ্রহণ করেছি তখন আমাদের এতোটাই অভাব ছিলো যে আমার গালে একটু মিষ্টি দেওয়ার টাকা আমার বাড়িতে ছিলো না। 😥
👉👉 ৫ বছর বয়সে আমাকে স্কুলে ভর্তি করা হয়।স্কুলটি ছিলো আমার বাড়ি থেকে ৩ কিলোমিটার দূরে, পায়ে হেটে যেতে হতো এবং পায়ে হেটে ফিরতে হতো এবং বৃষ্টির দিন রাস্তায় ভীষন কাদা হতো স্কুলে যেতে অনেক সমস্যা হতো।সেময় আমাদের ২-৩ টা গরু ছিলো,আমি স্কুল থেকে এসে আবার গরু গুলো দেখাশুনা করতাম। প্রথম থেকে পঞম শ্রেনি পযর্ন্ত এভাবে কেটে যায়। কিন্তু একটি দুঃখের বিষয় এই ৫ বছর আমি সামান্য ১ টাকার জন্য অনেক অনেক বার কেদেছি কিন্তু কোনো কোনো সময় পেয়েছি আবার কোনো কোনো সময় সারাদিন কেদে ও পায়নি।
👉👉আমি প্রাইমারী শেষ করে মাধ্যমিক স্কুল এ পা রাখলাম।মাধ্যমিক স্কুলটি ছিলো আমাদের বাড়ি থেকে ৪ কিলোমিটার দূরে। এখানে ও হেটে যাওয়া -আসা করতাম কারন গাড়ির ব্যবস্তা থাকলে ও আমার যে টাকা নেই।খুবই কষ্টে দিন চলতে লাগলো, সবাই দেখতাম ভালো ভালো টিফিন নিয়ে যেত আর আমি কিছুই নিয়ে যেতে পারতাম না। মাঝে মাঝে মা চাউলের আটায় লবন দিয়ে পিঠা মতো বানিয়ে দিতো সেটা নিয়ে যেতাম টিফিন।এভাবে চললো অষ্টম শ্রেণি পযর্ন্ত এর মধ্যে অনেকবার চেষ্টা করেছি এতো পথ হেটে যাই কেউ একটা সাইকেল কিনে দেয় কিনা কিন্ত তেমন কোনো ব্যবস্তা হলো না।
👉👉নবম শ্রেণীতে পড়াশুনা করার সময় পূজা বা ঈদের সময় যে ছুটি পেতাম, এই ছুটিতে আমি পূজার বাজার এ কসমেটিক এর দোকান দিতাম।অবশ্য পরিচিত একজনের দোকান ছিলো তার দোকানের সারা বছরের লট মাল আমি পূজার বাজারে বিক্রি করতাম। আর ঈদ এর ছুটিতে ভাজার দোকান দিতাম যেমন পেজু -চপ এসব। তখনি আমার মাথায় ব্যবসা চলে আসলো যে আমি ব্যবসা করবো।
👉👉দশম শ্রেণিতে পা রাখলাম কিন্তু পড়াশুনার দিকে আমার আর মন-কান নেয়।এদিকে স্কুল থেকে যে বই -খাতা কিনতে বলে সেটা ও আমি ঠিকমতো কিনতে পারি না টাকার জন্য ।খুবই দুঃখের বিষয় ওখানেই আমার পড়াশুনা জীবন শেষ হয়।তখন মাথায় একটাই চিন্তা ব্যবসা করবো এবং হাতে টাকা আসবে কিভাবে।
👉👉 ঘুরতে ঘুরতে এক কাপড়ের দোকানদার এর সাথে আমার পরিচয় হয় উনি আমাকে কয়েক পিচ করে লুঙ্গি দেয় সেটা আমি আমাদের পাশে হাটে বা বাজারে রাস্তায় দাড়িয়ে বিক্রি করি তা থেকে কমিশন দেয়। কিন্তু তেমন বিক্রি হতো না। উনি বললো তুমি বাবা এতো কষ্ট করো তার চেয়ে আমার দোকানে থেকে বেচা-কেনা করো।এখান থেকে শুরু হলো আমার চাকরি জীবন।
👉👉চাকরি করে যা বেতন পাই তা সংসার এ দিয়ে নিজের চলা অনেক কষ্ট হয়ে যায়।কিন্তু আমার মাথায় তো সেই চিন্তা যে ব্যবসা করবো কিন্তু টাকা লাগবে।আমার অনেক টাকা এক জাইগায় করা লাগবে কিন্তু কিভাবে করবো।
👉👉 তারপর ভাবলাম প্রাইবেটকার গাড়ি চালানো শিখি এতে অনেক টাকা। অনেক কষ্টের পর গাড়ি চালানো শিখলাম। কিন্তু গাড়ি চালানো শেখার পরে ও কোনো লাভ হলো না, কারন আমার লাইসেন্স নেই।আমার কাছে বা আমার পারিবার এর কাছে লাইসেন্স করার মতো ৫-৭ হাজার টাকা ও নেই।কিন্তু লাইসেন্স করতে পারলে আমার চাকরি ফাইনাল।এর মধ্যে কারো একটু গাড়িটা ধুয়ে দেয় বা কারো বাজার করে দেয় ২০-৫০ টাকা দেয় তা দিয়ে এক বছর সময় লাগে আমার লাইসেন্স করার টাকা যোগাতে।
👉👉আমি লাইসেন্স করে ঢাকাতে একটা ড্রাইভিং চাকরি পেলাম। ভালো বেতন দেয় কিন্তু সব খরচ করে ফেলি। কারন ছোট বেলা থেকে ভালো খেতে বা পরতে পারি নি। তাই মাস শেষে যা বেতন পাই ভালো খেতে, ভালো পরতে, ভালো জায়গায় ঘুরতে সব শেষ হয়ে যাই।কিন্তু আমার ভাবনা তো ব্যবসা করবো সেটার জন্য টাকা যোগানো।
👉👉ঠিক তখনি আমার কি ভাগ্য পেলাম প্রিয় Iqbal Bahar Zahid স্যারকে।স্যারের আইডি থেকে পোস্ট করলেন যে ৬৪ জেলা থেকে ১২৮ জন, প্রতি জেলা থেকে ২ জন করে নিয়ে একটা ফেইসবুক গ্রুপ খুলবেন যেখানে শেখানো হবে কিভাবে ভালো মানুষ হতে হয় এবং উদ্যোক্তা তৈরির ৯০ দিনের কর্মশালা। আমি আগ্রহী হয়ে কমেন্ট করতেই স্যার আমাকে গ্রুপে যুক্ত করে নেন এবং প্রিয় নিজের বলার মতো একটা গল্প গ্রুপের প্রথম ব্যাচের ১২৮ জনের ভিতরে নিজে জাগয়া পেয়ে অনেক খুশি হলাম। কিন্তু সদস্য সংখ্যা ১২৮ থেকে বেড়ে ১৬৪ জন হয়ে যায়।
👉👉গ্রুপে সেশন শুরু হওয়ার আগের দিন একটা পোষ্ট এ স্যার যানান যে আমাদেরকে কি কি শিখানো হবে।সেটা দেখে আমার যেন ভলো-লাগার আর শেষ নেই কারন আমার জীবনে যে শিক্ষাগুলোর প্রয়োজন সেগুলো আমি নিজের বলার মতো একটা গল্প গ্রুপে পাচ্ছি তাও আমার বিনামূল্যে।এরকম সুযোগ পৃথিবীতে আর কোথাও নেই।
👉👉 স্যারের প্রতিদিন প্রতিটা সেশন পড়ি নিজের ভিতরে ধারণ করি, আর একদম ঠিক স্যারের প্রতিটি সেশন ই আমার জীবনের মোড় ঘুরতে শুরু করে। আমি আগে ডিউটিতে রিক্সায় যাওয়া আসা করতাম, আর এখম সকালে হেটে যায় টাকা ও বাঁচলো এবং হাটা ও হলো।আগে ৩ বেলা বাহিরে খেতাম, আর এখন ৩ বেলা নিজে কষ্ট করে বাসার নিজে রান্না করে খেতাম যাতে কিছু টাকা যোগাতে পারি। সবসময় ই চেষ্টা করি খরচ কমায়ে কিভাবে টাকা যোগানো যায় নিজে কিছু করার জন্য এবং অংশ নিতে থাকি স্যারের আহবানে সাড়া দিয়ে সকল সামাজিক ও মানবিক কার্যক্রমে। অসাধারণ এক ভালোলাগা নিজের মধ্যে বিরাজ করতে শুরু করে দিলো এই নিজের বলার মতো একটা গল্প প্লাটফর্মে থাকার সুবিধায় অংশ নিতে পারলাম অসহায়দের খাবার বিতরণ কার্যক্রমে, শীতার্তদের কম্বল বিতরণ সহ অসংখ্য মানবিক কর্মকাণ্ডে। সর্বশেষ সাতক্ষীরায় আম্পানে ক্ষতিগ্রস্ত ১০৮টি পরিবারের মাঝে প্রিয় প্ল্যাটফর্মের পক্ষ থেকে সাতক্ষীরা জেলার উদ্যোগে ত্রাণ বিতরণ কর্মকাণ্ড ,সত্যিই এই কাজগুলো অসাধারণ এক ভালোলাগা এনে দিয়েছে আমার জীবনে।
👉👉প্রথম ব্যাচ শেষে আমাদের ১৬৪ জনের সমাপনী অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়।সেখানে ১৬৪ জনের মধ্যে ১০ জনকে সম্মাননা জানানো হয়, সেখানে সম্মাননা জানানোর জন্য আমার নাম টাই প্রথমে ডাকা হয়। সেদিন এর আনন্দ অনূভুতি আপনাদের বলে শেষ করতে পারবো না। সেদিন আনন্দে আমি কেঁদেছিলাম।প্রিয় স্যার কে সামনে থেকে দেখা চমৎকার একটি আয়োজন থেকে তাঁর হাত থেকে সম্মাননা নেওয়া আমার জীবনের স্মরণীয় ও গর্বের দিন। আমার জীবনের অকল্পনীয় অধ্যায়গুলো সূচনা করে দিলো Iqbal Bahar Zahid স্যারের হাতে সৃষ্ট সারা বিশ্বের জন্য রোলমডেল সৃষ্টিকারী প্রিয় প্ল্যাটফর্ম "নিজের বলার মতো একটা গল্প"। প্রথম ব্যাচের ১৬৪ জন দশম ব্যাচ এসে ৩০০০০০ শিক্ষার্থী পার স্যালুট প্রিয় স্যার আপনাকে।।
👉👉৯০ দিনের সেশন শেষ করে প্রথম নিজের ভিতরে যেটা ধারণ করি সেটা হলো একমানুষ ভালোমানুষ হওয়া।জীবনে কিভাবে একজন ভালোমানুষ হতে হয় সেটা প্রিয় স্যারের এর কাছ থেকে এই ৯০ দিনে শিক্ষা পেয়ে নিজেকে অনেক অনেক পরিবর্তন করে ফেলি। এবং সেই অনুযায়ী নিজের জীবনের প্রতিটা ক্ষেত্রে প্রয়োগ করার চেষ্টা করি এবং ইনশাআল্লাহ যতদিন বেঁচে থাকি তাই করবো।
👉👉 উদ্যোক্তা হওয়ার নেশা যেহেতু আগে থেকেই ছিলো, সেই সাথে প্রিয় স্যারের অনুপ্রেরণা প্ল্যাটফর্মের শিক্ষা আরো জোরালো মাথায় চেপে বসলো। শুরু করে দিলাম অফলাইনে চাকুরীর পাশাপাশি বিভিন্ন নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র পাইকারি বিক্রির কাজ। আলহামদুলিল্লাহ জমানো কিছু পুঁজি থেকে শুরু করে ভালো একটা সংগ্রহ হয়ে গেলো। আমিও চাকরির পাশাপাশি এই কাজটা কে গুরুত্বের সাথে নিয়ে প্রিয় স্যারের শিক্ষা প্রতিষ্ঠিত হওয়া পর্যন্ত সময়ের গণ্ডি ভুলে গিয়ে কাজে লেগে গেলাম। আমার নিজ গ্রামে কৃষিপণ্য কে বাজারজাতকরণের দিকে গুরুত্বারোপ করলাম। এবং সে অনুযায়ী এখনও পর্যন্ত কাজ করে যাচ্ছি। যেহেতু আমি কাজগুলো অফলাইনে করি তাই প্ল্যাটফর্মে হয়তো ওই ভাবে সেল পোস্ট আকারে নিয়ে আসিনি। প্ল্যাটফর্মের ক্ষেত্রে আমি শুধু ভলেন্টিয়ারিং কর্মকাণ্ড পরিচালনা করছি। প্রিয় স্যার যেহেতু অতিসম্প্রতি সাপ্তাহিক অনলাইন হাটবার কার্যক্রম শুরু করেছেন তাই ভাবছি আমার অফলাইন কার্যক্রমের অনলাইন প্রক্রিয়া খুব শীঘ্রই শুরু করব ইনশাআল্লাহ।প্রিয় প্ল্যাটফর্মের সকল ভাই বোনদের প্রতি আহবান করব আপনারা আমাদের পাশেই থাকবেন যাতে আমরা প্রিয় স্যারের শিক্ষাকে কাজে লাগিয়ে নিজেদের জীবনের সফলতার গল্প রচনা করতে পারি।
প্রিয় স্যারের যুগান্তকারী উক্তি জীবনের সবচেয়ে বড় অর্জন হলো ভালো মানুষ হওয়া যেন প্রতিটি ক্ষেত্রে কাজে লাগিয়ে প্রিয় স্যারের ঘোষিত ভালো মানুষদের ব্র্যান্ড এই প্ল্যাটফর্ম বিশ্বের দরবারে আমরা সমন্বিতভাবে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারি।।
ধন্যবাদ প্রিয় স্যার আপনাকে। এত বিশাল পরিমণ্ডল আমাদের তৈরি করে দেয়ার জন্য। শুভকামনা রইল সবার জন্য।।
স্ট্যাটাস অফ দ্যা ডে -২৭৬
১১-০৭-২০২০
মোঃইসমাইল হোসেন চাঁদ
প্রথম ব্যাচ
রেজিঃ১৬৫৯
জেলাঃসাতক্ষীরা
বর্তমানঃগুলশান জোন,ঢাকা।