আম্মু অনেক ক্ষিদে লাগছে কিছু দাওনা।
মেয়েঃ আম্মু অনেক ক্ষিদে লাগছে কিছু দাওনা।
মাঃ আমি একটু ব্যাস্ত আছি তুই কি খাবি খেয়ে নেয়।
মেয়েঃ আচ্ছা ঠিক আছে।যাচ্ছি।ভালো কথা তোমায় কেমন চিন্তিত মনে হচ্ছে।
মাঃহুম চিন্তিত তো বটেই।
মেয়েঃ কেন আম্মু কোন সমস্যা হইছে।
মাঃ আরে সমস্যা মানে জটিল সমস্যা,,, সামনে কোরবানি। আমি এখন পযন্ত কিছুই যোগাড় করতে পারিনি।এখন বসে বসে লিস্ট করতেছি বাজার কি কি লাগবে।
মেয়েঃ তো চিন্তা করতেছো কি নিয়ে।
মাঃএখন কোরবানীর বেশি সময় নেই হলুদ,,, মরিচ,,এগুলা গোটা এনে ভাঙাতে হবে। রুটির জন্য আতপ চাউল এর গুড়ি করতে হবে।
এদিকে তোর রহিমা খালার (বুয়া) ছেলে অসুস্থ ও আসতে পারবেনা।চারদিকে যে অবস্থা ও না আসাই ভালো।কিন্তু এই কয়দিনে আমি এত বাজার কিভাবে করবো কিভাবে সব সামলাবো।
মেয়েঃ আম্মু তোমার কোন চিন্তা নেই,,,আমি আছিনা।
মাঃ হু...দেখতেই পাচ্ছি,,,,তোর উপর আমি করবো ভরসা আর কাজ নেই।
তুমি কি কাজ কর সারাদিন শুনি,,,,সারাক্ষণ শুধু ফোনের ভিতর ঢুকি থাকস।আর কি এক স্যার পাইছস সারাদিন তার গুণগান গেয়ে মাথা নষ্ট করিস।এখন এখান থেকে যা আমার ভালো লাগছে না।
মেয়েঃ আরে আম্মু একটু শান্ত হও ,,,,, আমার কথাটা তো শুনবা না কি।
মাঃ হুম বল
মেয়েঃআরে আমার স্যার যার কথা তোমারে বলি সবসময়,,, উনি কোরবানী উপলক্ষে এক বিশাল হাটের ব্যাবস্থা করেছেন।যেখানে কোরবানীর গরু হতে,,, দা,, বটি ,, ছাটাই,, মশলা পাতি সব পাবা তুমি।
এক হাটেই সব কিছু অন্য কোথায় থেকে নিতে হবে না।আমি তো কাল আব্বু কে কয়েকটা গরু দেখিয়েছি,,, আমাদের গরুটাও হাট থেকে নিলে ভালো।এই পরিস্থিতির মধ্যে বাইরে যাওয়ার দরকার কি।আব্বু তোমায় কিছু বলে নি?
মাঃ বলিস কি এত সুবিধা,,,,কই তোর আব্বু কিছুই বলে নি।আমার সব মসলা পাবো হাটে।
মেয়েঃ অবশ্যই তুমি শুধু তোমার লিস্ট আমাকে দাও।
মাঃ এই নে ধর এই গুলা হাট থেকে নিছ,,,,,আমি ড্রাইভার কে দিয়ে আতপ চাউল টা আনাবো গুড়ি করার জন্য,,,,কোরবানী ঈদে রুটি না হলে তো হবেই না।
মেয়েঃ আম্মু তুমি তো এইমাত্র বললে রহিমা খালা আসবেনা তাহলে এত রুটি কে বানাবে তুমি।
মাঃ তো আমি ছাড়া আর কে বানাবে শুনি। কষ্ট করে হলেও তৈরি করতে হবে কোরবানীর ঈদ আর রুটি নেই তা কখনো হবে।
মেয়েঃ আম্মু একটা কাজ করলে হয় না
মাঃ কি
মেয়েঃ আমাদের হাটে এক আপু আছে ওনার নাম নওশিন। উনি কোরবানী উপলক্ষে হাটে তুলছেন রুটি,,,পায়েস,,,হালুয়া,,, রসমালাই,,দই।
মাঃ বলিস কি,,মেয়ে মানুষ হাটে দিচ্ছে দোকান
মেয়েঃ আরে মা মেয়েরা এখন কোন দিক থেকে পিছিয়ে নেই।আচ্ছা আমি ভাবতেছি আপুর থেকে রুটি নিলে কেমন হয়?
আর সাথে পায়েস,,রসমালাই,,,দই এগুলা ও নেয়ে যাবে।ঈদের দিন মিষ্টি মুখ না করলে কি হবে।
মাঃ আচ্ছা অর্ডার দিতে পারিস,,,,হ্যারে ভালো হবে তো
মেয়েঃ আম্মু ইনশাআল্লাহ ভালোই হবে,,,,,আর উনি ফেনীরই মেয়ে,,, ভালো না লাগলে ফেরত দিয়ে দিবো।উনি গ্যারান্টি দিয়ে বলতে পারে উনি একজন ভালো মানুষ,,উনি কাওকে ঠকায় না।
মাঃ আচ্ছা তুই যা ভালো বুজিস,,,,আর শুন রুটি তো নষ্ট বা শক্ত হতে পারে,,,,, কেমনে দিবে বুজতেছিনা,,,
মেয়েঃ তুমি যেমন চাও ফ্রোজেন নিলে ঈদের আগের দিন সকালে পাঠিয়ে দিবে,,,, আর তৈরি রুটি নিতে চাইলে ঈদের আগের দিন বিকেলে পাবে,,,,,,আপু তোমায় প্রসেস টা বলে দিবে সেভাবে রাখলে রুটি গুলো ঈদের দিন পযন্ত অনেক ভালো,,ফ্রেশ থাকবে। মনে হবে যেন সকালে তরতাজা বানানো।
মাঃ মাশাল্লাহ,,, মেয়েটা তো তাহলে ভালোই জানে।
রুটির পিস কত করে?
মেয়েঃ রুটি মনে হয় ৫ টাকা পিস,,আচ্ছা দাড়াও আমি মোবাইটা আনি,,, তারপর বলে দিচ্ছি।
মাঃ হুম,,,তাড়াতাড়ি কর,,,,আগে থেকে অর্ডার না দিলে পরে যদি অর্ডার না নেয়।এতক্ষনে আমার টেনশন দূর হলো।
মেয়েঃ হুম.............
মেয়েঃ এই যে আম্মু দেখো নওশিন আপুর
১/ রুটি=৫ টাকা প্রতি পিস
২/ ডিমের হালুয়া = ২৫০ গ্রাম ২০০ টাকা
৩/ডালের হালুয়া= ১ কেজি ৩০০ টাকা
৪/গাজরের হালুয়া= ১ কেজি ৪৫০ টাকা
৫/সুজির হালুয়া = ১ কেজি ৩০০ টাকা
৬/শুকনো সেমাই ভাজা = ১ কেজি ৩০০টাকা
৭/পাউরুটির হালুয়া।= ১ কেজি ২০০ টাকা
৮/ মিষ্টি দই = ১ কেজি ২৫০ টাকা
৯/নরমাল রসমালাই =১কেজি ৩৫০টাকা
স্পেশাল রসমালাই =১ কেজি ৫৫০ টাকা
১০ তুলসিমালা চাউলের পায়েস= ১ কেজি ৫৮০ টাকা /হাফ কেজি ৩০০
মাঃ তুই ২০০ রুটির অর্ডার দিছ,,,১ কেজি স্পেশাল রসমালাই,, ২ কেজি মিষ্টি দই,,,২৫০ গ্রাম ডিমের হালুয়া এগুলার অর্ডার দিছ আপাতত
মেয়েঃ আচ্ছা আম্মু ঠিক আছে।
মাঃ আচ্ছা এখন যা কিছু খাবি বলছিলি না,,,,খেয়ে রুমে গিয়ে একটু পড়ালেখা কর।মোবাইল এর ভিতর ঢুকি যাইস না।
লকডাউনে পড়ালেখা তো করছ না।
মেয়েঃ আচ্ছা আম্মু যাচ্ছি।
মাঃহুম,,,,যা যা আমার কাজ আছে
স্ট্যাটাস অফ দ্যা ডে -২৮২
১৮-০৭-২০২০
নওশিন তারানুম
নবম ব্যাচ
রেজিষ্ট্রেশন নম্বরঃ ১২৬২৮
জেলাঃ ফেনী