কমিটমেন্ট বা প্রতিশ্রুতি
কমিটমেন্ট বা প্রতিশ্রুতি
লেখাটি বড় হবে তাই আগেই ক্ষমা প্রার্থী কারন এটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়, যা আগে আমি ফিল করতাম না এখন হাড়ে হাড়ে টের পাই, তাই আমি চাই প্রতিটি মানুষ নিজের সাথে নিজে কমেন্ট করুক এইজন্যেই আজকের স্যারের সেশন শেষে আমার এই লেখা টি।
কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি আমাদের গর্ব, আমাদের প্রিয়য় শিক্ষক ইকবাল বাহার জাহিদ স্যারের প্রতি।
প্রতিটি মানুষকে জীবনে সফল হতে হলে জানতে হবে কমিটমেন্ট বা প্রতিশ্রুতি জিনিসটা কি? আপনি যদি সঠিকভাবে না জানেন কমিটমেন্ট বা প্রতিশ্রুতি জিনিসটা কি তাহলে আপনি দুনিয়াতে শ্বাস নিচ্ছেন ঠিকই কিন্তু আপনার আত্মা মৃত থাকবে।
এখন অনেকে বলবেন ভাই, আমিতো কমিটমেন্ট কি জানিনা তার মানে কি আমার আত্মা টা মৃত?
হ্যাঁ আপনার আত্মার টাইম মৃত, কারণ আপনি যদি কমিটমেন্ট না জানেন তাহলে কমিটমেন্ট রক্ষা করতে পারবেন না তাহলে আপনি কি একজন ভালো মানুষ হবেন কি করে? আর আপনি যদি ভাল মানুষ নাই হতে পারেন তাহলে আপনার আত্মার টা কি করে জীবিত থাকবে?
আমি বলব আমরা সবাই কমিটমেন্ট করতে ভালোবাসি আর কমিটমেন্টের ফলাফল নিতে চাই একটা উদাহারন দিয়ে বুঝাচ্ছি :- প্রথমত আমরা সবাই উদ্যোগতা হতে চাই কিন্তু আমরা বড় বড় স্বপ্ন দেখতে ভয় পায়। দ্বিতীয়ত, যদিও কিছু মানুষ স্বপ্ন দেখেন, আশা করে থাকেন- কিন্তু তাদের এই আশাগুলি মুকুলেই ঝরে পড়ে; যেমন করে আম গাছের প্রায় সব মুকুল টুপ টুপ করে পড়ে।
ঝড় বাতাসে টিকে থাকা অল্প কিছু মুকুল থেকেই কেবল আম হয়। আপনি নিশ্চয়ই নিজেকে ঝরে পড়া মুকুলের সাথে তুলনা করবেন না? শেষ পর্যন্ত টিকে থাকা মুকুলের মতোই আপনাকে টিকে থাকতে হবে। এটাই হচ্ছে নিজের কমিটমেন্ট এর ফলাফল যে আমাকে শেষ পর্যন্ত টিকে থাকতেই হবে।
আসলে যখন আমরা উদ্যোক্তা হতে চাই তখন ভয় কাজ করে যে আমি যদি ব্যর্থ হয়ে যায়, যদি আমি হারিয়ে ফেলি সব টাকা, বাপ বড় কোন ক্ষতির সম্মুখীন হয় আমার ব্যবসা এগুলো নিয়ে চিন্তা করি কারন কি জানেন আমার নিজের প্রতি নিজের কনফিডেন্ট বা কমিটমেন্ট নাই,
মার্কিন উদ্যোক্তা ম্যালকম ফোরবেস বলেছেন, “ব্যর্থতাই তখন সাফল্য, যখন আমরা তা থেকে কিছু শিখি।”
কমিটমেন্ট করার ভয়কে জয় করতে হবে। নিজের সাথে নিজে প্রকৃত অর্থেই ওয়াদা করবেন। দেখবেন এর প্রতি আপনার একটি দায়বদ্ধতা তৈরি হয়ে গেছে।
এখন অনেকে বলবেন যে ভাই আমি আমার প্রতি অনেক কনফিডেন্ট আছে তবে কমিটটমেন্ট করব কিভাবে?
আসুন জেনে নেই কি করে কমিটমেন্ট করতে হয় নিজের সাথে :-
টার্গেট ঠিক করুন :- আমরা প্রতিটি লোক এই ঘুম থেকে উঠার পরে চিন্তা করি দাঁত ব্রাশ করব, গোসল করব বা ব্যায়াম করব তাই না? আপনি যদি একজন উদ্যোক্তা হতে চান তাহলে আপনার টার্গেট ঠিক করে ফেলুন যে আপনি আগামী ছয় মাসের মধ্যে আপনার যে উদ্যোক্তা হওয়ার পরিকল্পনা শিডিউল করে ফেলুন এবং নিজের সাথে নিজে কমিটমেন্ট করুন টার্গেট আমি পূরণ করবোই দেখবেন টার্গেট অনুযায়ী চললে আপনার কাজটি সহজ হয়ে যাবে, এর মাধ্যমে আপনি নিজের সাথে নিজে ভালো করে কমিটমেন্ট করতে পারেন। আপনি কতো দূর যেতে চান বা কতটুকু অর্জন করতে চান, নিজেকে তার একটি টার্গেট দিয়ে দিন।
নিজেকে সময় বেঁধে নিন :- যারা সময়কে সঠিক ভাবে ব্যাবহার করতে জানে না তারা অবশ্যই সময়ের মূল্য বুঝবে না। কিন্তু আপনাকে অবশ্যই বুঝতে হবে যে সময় একটি মহামূল্যবান সম্পদ। বড় মাপের মানুষদের বড় হবার মূল রহস্য হল, তারা প্রতিটি মুহূর্তকে কাজে লাগিয়েছেন।
নিজের কাজকে সময়ের মধ্যে বেঁধে না দিলে কর্মে দীর্ঘ সূত্রতা তৈরি হয়। যেকোনো সময় করা যাবে ভেবে ভেবে আর কখনো করা হয় না। আপনি কতোটা ভালো করে কাজটি করতে পারেন এটা যতোটা না বড় কথা, তার চেয়ে বড় কথা হল, কতো অল্প সময়ে আপনি কাজটি ভালো ভাবে করতে পেরেছেন। ধরুন একটি কাজ ২ ঘণ্টার মধ্যে করতে দেওয়া হল। একজন ৩ ঘণ্টা সময় লাগিয়ে কাজটি খুব ভালো ভাবে করেছেন। আর আপনি মাত্র ১ ঘণ্টায় কাজটি চাহিদা অনুযায়ী মোটামুটি ভালো ভাবে সম্পন্ন করেছেন। সে কিন্তু ইফেক্টিভ হলেও কাজটি এফিসিএন্টলি করতে পারেনি। কেবল একটি কাজে পড়ে থাকার মতো পর্যাপ্ত সময় আমাদের নেই। তাই কাজের ডেড লাইন এঁকে দিতে হবে।
জবাবদিহি করুন নিজের সাথে :- আমাদের প্রিয় স্যার আমাদেরকে শিখিয়েছেন নিজের সাথে নিজে কথা বলতে হবে সেজন্য আপনি যা করবেন, চোখ বন্ধ করে কল্পনা করার মতো করে মনের সাথে কথা বলুন, যদি না পারেন, তাহলে আয়নার সামনে দারিয়ে কথা বলুন। মনে করুন আপনি একজন সেকন্ড পারসনের সাথে কথা বলছেন। মনকে জানান আপনি কিভাবে এগুচ্ছেন, কোন পথে এগুচ্ছেন এবং পরবর্তী পদক্ষেপ কি।
অজুহাত নয়, দায়িত্ব নেন :- স্যার আমাদেরকে শিখিয়েছেন ব্যস্ততা বলে কোন কিছু নাই " It's all about your priority " তাই বলছি অজুহাত খুব খারাপ জিনিষ, সফল ব্যক্তিরা কখনো কথায় কথায় কোন ওজুহাত দেই না তারা দায়িত্ব নিতে জানে। তারা ভুল করলে বলে, কাজটি এভাবে করা আমার ঠিক হয়নি। আমি সর্বাত্মক ভাবে চেষ্টা করবো, পরবর্তী সময়ে যেন আর এমন ভুল না হয়।
ঘোষণা করে দেন সবাইকে :- ভালো কাজ করছেন তা মানুষকে জানিয়ে দেন, আপনার ঘনিষ্ঠ সবাইকে বলে দিন যে অচিরেই আপনি কি করতে বা অর্জন করতে যাচ্ছেন। অন্যদের সাথে কেন বলবেন? কারণ তাতে কাজটি করার জন্য ভেতর থেকে একটি তাগাদা অনুভব করতে পারবেন। তখন আপনি কাজটি না করে পারবেন না। কারণ অন্যরা যেহেতু জানে, তাই কাজটি করা বা না করার সাথে আপনার ইজ্জত-সম্মান সংযুক্ত হয়ে গেছে। আপনি নিশ্চয়ই অন্যদের কাছে লজ্জিত হতে চাইবেন না।
স্মরণ করিয়ে দিন নিজের মনকে :- আপনার মোবাইলের রিমাইন্ডার অপশন আপনার খুব পছন্দ। তিন মাস পরের কোন এক দিন যদি কিছু স্মরণ করতে হয় তাহলে এই কাজটি মোবাইল আপনার হয়ে করে দিবে। আপনি রিমাইন্ডারের টিক টিক শব্দে আশ্চর্য হয়ে যাবেন; কারণ আপনি ভুলেই গিয়েছিলেন এই দিনটির কথা। আপনার নিজেকেও মোবাইলের মতো স্মরণ করিয়ে দিতে হবে যে আপনি একটি বিস্ময়কর কাজ করছেন এবং প্রতিটি সূর্যাস্তের পর একটি করে দিন কমে যাচ্ছে।
এভাবে আপনি কাজটি করার সময় ভুলে যাওয়ার সম্ভাবনা নেই। প্রয়োজনে কাগজে কাজটি লিখে পড়ার টেবিলের সামনে সেঁটে দিন।
প্রতিনিয়ত কাজের অগ্রগতি লক্ষ্য করুন। মেপে দেখুন যতোটা সময় অতিবাহিত হয়েছে সেই অনুপাতে কাজ সম্পন্ন হল কি না। যদি আরও ইম্প্রুভ করার প্রয়োজন পরে তাহলে একটু হার্ড ওয়ার্ক করুন।
যদি কাজের মধ্যে ভুল হয়ে থাকে তাহলে সংশোধন করে নিন। আর যদি আরও ভালো কোন পদ্ধতিতে কিছু কাজ করা যায় তাহলে তাই করুন। এটা আসলে অভিজ্ঞতার ব্যাপার। কাজ করতে করতে দিনে দিনে কাজটি আরও ভালো পদ্ধতি রপ্ত হয়ে যায়।
যাদের আশা পূরণ হয় না, যারা মনে করে স্বপ্ন আর বাস্তব এক নয়, যারা একটুতে সন্তুষ্ট হয়, এবং যারা ভালো কিছু অর্জনের ব্যাপারে প্রতিশ্রুতিশীল নয়-আপনি তাদের মতো নন। আমি বিশ্বাস করি আপনি অন্যদের চেয়ে ভিন্ন এই বাক্যটা মনে করতে সবসময়।
তাই কমিট করতে শিখুন এবং তার পর কাজে ঝাপিয়ে পড়ুন, নিঃসন্দেহে আপনি জয়ী হবেন এবং জয়ী হব।
"স্ট্যাটাস অব দ্যা ডে"- 194
Date:- 14/04/2020
আমি
সিএম হাসান
কমিউনিটি ভলেন্টিয়ার
সদস্যঃ 'রিসার্চ এন্ড প্রোমোশন টিম
তৃতীয় ব্যাচ
রেজি.নং: ৩৫২৭
প্রতিষ্ঠাতা উদ্যোগতা : QB Fashion World
অনারেবল ডাইরেক্টর: নুজুম গ্রুপ
ব্লাড গ্রুপ: A+
লক্ষ্মীপুর জেলা
রেমিটেন্স যোদ্ধা - কাতার প্রবাসী
+974 33492465
cmhasan790@gmail.com