একদিন বিকেলে আমি পাটের বস্তার উপর সুতার কাজ করে ফুলতুলছিলাম হঠাৎ তখনই এক
নমস্কার 🙏
কয়েক মাস আগে।
একদিন বিকেলে আমি পাটের বস্তার উপর সুতার কাজ করে ফুলতুলছিলাম হঠাৎ তখনই এক সহপাঠী বন্ধুর হৃদয় ফোন করে, ফোন রিসিভ করতে করতে হাতের কাজ করছিলাম আর বন্ধুর সাথে কথা বলছিলাম, বন্ধু হৃদয় আমাকে জিজ্ঞাসা করলো পাটের বস্তার উপর ফুল তুলে কি হবে? কেমন কাজ করেছিস দেখি? আমিও বন্ধুর কথা অনুসারে ছবি পাঠিয়ে দিলাম, বন্ধু ছবি দেখে বললো- তুই ভালোই কাজ করিস আমার জন্য একটা বানিয়ে দিবি। আমি বললাম অবশ্যই বানিয়ে দিবো। আরো বললো - তুই এগুলোর অনলাইনে কেনো দিচ্ছিস না? অনলাইনে তো এখন অনেক চাহিদা, হাতে তৈরি সেলাই বুনাই। আমি বললাম আমি কিভাবে করবো? তুই তো জানিস যে আমি স্কুলে চাকরি করি স্কুল খুললেই তো আমি ব্যস্ত হয়ে পড়বো? দেখবো কিভাবে? আর অনলাইনেতো অনেক সময় দিতে হয় বন্ধু বললো কেনো পারবি না? তোর বাবাও তো দর্জি কাজ করে, মোটামুটি ভালো পন্য তৈরী করে। আমি বললাম সবই ঠিক আছে, আমি তো চাকরি করি আমি এতকিছু অনলাইনে সার্ভিস কিভাবে দিবো? আর অনলাইনে পন্য সেল করা কঠিন। আমি কিভাবে পারবো বল কর্মজীবী মানুষদের চাকরির ক্ষেএে কিভাবে কন্ট্রোল দেয়। চিন্তা করিস না আমার বন্ধু আমাকে বলল, তুই আগে কিছু প্রোডাক্ট তৈরি কর এবং তোর বাবা যে কাজগুলো করে, সেগুলো তুই অনলাইনে সেলের একটা ব্যবস্থা কর। আমি আর কিছুই বলিনি আমি বললাম ঠিক আছে করবো। কিছুদিন পর আবার কথা হলো, অনলাইনে প্রোডাক্ট সেল দিবি, আমি বললাম দেওয়াটা চাই কিন্তু একা একা সব কিছু করবো কিভাবে? হৃদয় বলল কোন চিন্তা করিস না, তুই আগে পন্য তৈরি কর, সবই ঠিক আছে। আমি আরোও বললাম যে এগুলোর পাশাপাশি চাকরিটা করতে পারবো তো? আমার বন্ধু বলল আচ্ছা তোরে চাকরি করে সব ইচ্ছে, চাহিদা পূরণ হয় বুঝি? আর তোর বাবার যে, এতো সুন্দর হাতের কাজের জিনিস, এগুলো কি সবাই দেখবে না? আমি বললাম ঠিকই বলেছিস ইচ্ছে থাকলে সব কিছু পারা যায়।
নন্দিতা তোর একটা কথা মনে আছে? বিবিএ অনার্স প্রথম বর্ষরে একজন স্যার ছিলো মার্কেটিং সাবজেক্ট ক্লাস নিতেন, এক দিন ক্লাস চলাকালীন সব ছাএ ছাএী কে একটা প্রশ্ন করেছিলো যে মানুষ পণ্য দ্রব্য কি/না? নন্দিতা তোর মনে নেই! আর আমরা সেদিন কেউ উত্তর দিতে পারিনি, হ্যাঁ হৃদয় বন্ধু আমার মনে পড়েছে- স্যার উত্তরটা এইভাবে দিয়ে ছিলো যে, আচ্ছা সবাই বলো তো মানুষ পণ্য দ্রব্য কি/না?
কেও উওর দিতে পারলো না, পরে স্যার নিজেই উওর টা দিয়ে দিলো, স্যারের উওর টা দিয়ে ছিলো এই ভাবে----- মানুষ একটি পণ্য। একটি মানুষকে চাকরী করে তখন একটি কর্মসংস্থানে বা একটি প্রতিষ্ঠান মালিক প্রতিষ্ঠানটি পরিমাণের কর্মচারী রাখে এবং সারাদিনের জন্য পরিশ্রম করিয়ে নির্দিষ্ট পরিমাণ টাকা দিয়ে দিনের পর দিন নিজের কাজের জনসম্পদ বানিয়ে নেই, সারা মাসের জন্যে নির্দিষ্ট বেতনের মাধ্যমে নির্দিষ্ট পরিমাণে কর্মচারীকে ধরে রাখে এবং সারাদিন ৮,৯ ঘণ্টা কাজ করানোর পর, মাস শেষ বেতন দেই এবং এবং প্রতিষ্ঠানের মালিক পক্ষ ১০০% লাভের থেকে পুরো প্রতিষ্ঠানের মালিক ৮৮% লাভ টাকা নিজের কাছে রেখে দেয় এবং বাকি ২২% ভাগ কর্মচারীদের মধ্যে বেতন হিসেবে ভাগ করে দেয়, তো দিন শেষে প্রতিষ্ঠান কর্মচারী গন পন্যই হয়ে যায়, আর চাকরীতো নিজের স্বাধীনতা থাকে না প্রতিষ্ঠানের মালিক যা বলবে তাই করতে হয়।
আমার বন্ধু আমাকে বললো অনলাইনে বিজনেস করলে তুই তোর এই হাতের তৈরি পন্য গুলো তোর মন মতো সবার সামনে উপস্থাপন করতে পারবি, আর ব্যবসায় মালিক যা চাইবে তাই হবে।
হৃদয় বন্ধু আমার তুমি আমার অনেক বড় উপকার করলে চাকরি করে, নিজের সর্ব চাহিদা পূরণ করা সম্ভব না, তোমার এই পরামর্শ আমার খুব ভালো লেগেছে, আমি হৃদয়কে বললাম তুমি আমার প্রকৃত বন্ধু। স্যারের মূল্যবান কথাটি আমাকে মনে করিয়ে দিলো ধন্যবাদ বন্ধু, হৃদয় বলল বন্ধুকে ধন্যবাদ দিতে হবে না এখন আমি আরেকটা কাজ করবো তোকে একটি গ্রুপের সাথে যুক্ত করব যেখানে বিশাল বড় একটি গ্রুপ, যেখানে অনেক ভালো ভালো মানুষ নিজেকে ভালো বেশি ভালো মানুষ হিসেবে গড়ে তুলছে এবং উদ্যোক্তা হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠা করছে আমি বললাম আচ্ছা হৃদয় এটা আবার কোন গ্রুপ আমাকে বলতো, হৃদয় বলল আমি তোকে একটি গ্রুপ ইনভাইট করছি তুই সেখানে যুক্ত হো গ্রুপের নাম হলো "নিজের বলার মতো একটা গল্প" গ্রুপের সাথে এড হ তাহলে বুঝতে পারবি। হাজার হাজার তরুণ-তরুণীর তাদের নিজ সাফল্য অর্জনের উদ্দেশ্যে অনলাইন ব্যবসা শুরু করেছে। ওকে ঠিক আছে বন্ধু আমি এড হয়ে যাবো , এখন ফোনটা রাখি, আচ্ছা পরে কথা হবে। আমি আমার বাবার সাথে এই ব্যাপারে একটু কথা বলিনেই, হৃদয় আরও বলেছিলো আঙ্কেলের সাথে কথা বল এবং গ্রুপে ঢোকার পর তুই আগে শিখবি তারপর হচ্ছে নিজের কাছে ভালো লাগা থেকেই ব্যবসায়ী দিকে মনোযোগ বাড়বে তোর। আমি বাবাকে বললাম বাবা আমরা যে পণ্যগুলো তৈরি করছি সেগুলো আমরা শোরুমে দিচ্ছি, আমাদের যে পণ্য গুলো তৈরি হচ্ছে, সেগুলোতো আর কেউ জানতে পারলো না এগুলোর কে ডিজাইন করেছে? কে বানিয়েছে? কোথা থেকে আসলো? অজানাই রয়ে যাবে। বাবা আমরা যদি শোরুম সেলের এর পাশাপাশি যদি অনলাইনে এগুলো সবার সামনে তুলে ধরতে পারি, আশা করি আমরা ভালো একটা ফল পাবো, বাবা বললো ঠিক আছে করো, তোমাদের যা ভালো মনে হয় তাই করো, আমিও বাবার অনুমতি নিয়ে একটা বিজনেস ফেসবুক পেইজ খুলে নিলাম, আমার বন্ধুর কথা অনুযায়ী। আমি এই নিজের বলার মতো একটি গল্প গ্রুপে যুক্ত হয়ে গেলাম।
🙏
দুলাইন না লিখলেই নয়, আমার @Hridoy podda বন্ধু সবসময় আমাকে সখি ডাক দেই। ধ্রুপদী যেমন যেমন কৃষ্ণ কে সখা বলে ডাক দিতো তাদের মধ্যকার সখা এবং সখীর প্রকৃত বন্ধু বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক আছে তাই অসংখ্য ধন্যবাদ এবং অনেক কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি, আমার এই প্রকৃত বন্ধুর প্রতি। এতো সুন্দর একটি সাজানো গোছানো পরিপাটি পজেটিভ প্লাটফর্মে যুক্ত করার জন্য।
গ্রুপে যুক্ত হওয়ার পর অন্যরকম এই যে "নিজের বলার মতো একটা গল্প" গ্রুপে সবাই খুবই আন্তরিক এবং এতো সুন্দর ভালো চিন্তা ভাবোনার মানুষ, উপস্থাপন করা যায়। আমি এই গ্রুপে আসার পর জেনেছি পণ্য আগে সবার কাছে না পৌঁছে দিয়ে, আগে নিজেকে ব্র্যান্ডিং করা। গ্রুপে ঢুকে ভালো লেগেছিলো এটা দেখে যে, এখানে যা হয় আমাদের মেন্টর ৯০ দিনের আমাদের প্রতি ব্যাচের খুবই সুন্দর চমৎকার একজন নতুন উদ্যোক্তা, একজন ভালো মানুষ হওয়ার জন্য এ প্ল্যাটফর্ম সৃষ্টিকর্তার আশীর্বাদ স্বরূপ আমার কাছে।
গ্রুপের ঢুকার এক/দুই সপ্তাহ পর দেখতে পারলাম, নতুন চমক হিসেবে মঙ্গলবার হাট বসে, আমি দেখে খুব অবাক হয়েছিলাম, সে এক অন্যরকম অনুভূতি। ঘরে বসেই হাটের পণ্য সেল করতে পারবো। মঙ্গলবার যখনই আসে তখনই ভাবি, আজ সেই শুভ দিন এসেছে, আজ মঙ্গলবার আমিও আমার বাবার হাতে তৈরি কিছু পণ্য আপনাদের সামনে তুলে ধরতে চাই, যে পণ্য গুলো নিয়ে আমরা কাজ করি, তার একটা বিবরন আপনাদের কাছে আমি তুলে ধরতে চাই, এই দিনটির জন্য নতুন নতুন স্বপ্ন বুনে যাচ্ছি। কিন্তু হ্যাঁ পরিপক্ক শিক্ষার পরেই, আপনাদের মাঝে আমার পণ্যের চমক নিয়ে আসবো। আফসোস লাগলেও স্যারের শিক্ষার বহিঃপ্রকাশ মোতাবেক ❤️সময় নিন, সময় দিন- এই কথাটাই অন্তরে গেঁথে গেছে আমার।
তবে নিজের প্রতিভাকে ঝালাই করতে এই প্লাটফর্মের কোন বিকল্প নেই, অতীতের অনেক শিক্ষাই মনে হচ্ছে কম ছিলো। খুব ভালো লাগা কাজ করে দিনে দিনে, নেশায় পড়ে যাচ্ছি। এ যেনো কোন নতুন অধ্যায় শুরু হয়ে গেলো আমার। এটা কি গ্রুপের প্রতি প্রেম? নাকি নিজেকে ব্র্যান্ড তৈরীর নেশা? আমিতো কনফিউজড। তবে যাই হোক পজেটিভ কিছু হতে যাচ্ছে। যেখানে স্যারের মতো একজন লিজেন্ড কে নিজের অভিভাবক হিসেবে পেয়ে গেছি, সেখানে আমার মতো একজন একনিষ্ঠ ছাত্রীর কোন দিকে চিন্তা করার প্রশ্নই উঠে না।
লেগে আছি, দোয়া করবেন। 🙏🙏🙏
স্ট্যাটাস অফ দ্যা ডে -২৯০
২৯-০৭-২০২০
ধন্যবাদ,
🙋 নন্দিতা বাড়ৈই ( মন্টি)
🌺গুলশান জোন
🌹 কমিউনিটি ভলান্টিয়ার
🍀ব্যাচঃ ১০ তম
🍀রেজিষ্ট্রেশন নংঃ২১৮৫৭
💐জেলাঃ মুন্সিগঞ্জ
রক্তের গ্রুপঃ এ+