❤ একজন সফল নারীর আত্মকাহিনী❤
❤ একজন সফল নারীর আত্মকাহিনী❤
--------------------------------------------------------------------------
৫ম শ্রেণী পড়ুয়া একজন মেয়ে বিয়ে হয় ১৩/ ১৪ বছর বয়সে।স্বামী একজন খাঁটি কৃষক।স্বামী কৃষক হলেও তাদের ঘরে তেমন কোন অভাব নেই। কৃষি কাজ ও মাঝে মাঝে গরুর ব্যবসা তাদের প্রধান পেশা।পাশাপাশি স্ত্রী হাসঁ- মুরগী পালন করে। অল্প কিছু দিনের ভিতরে তাদের জমাজমির পরিমান বৃদ্ধি পেতে থাকে।১৯৭১ সালে যুদ্ধ চলা কালে তাদের কোলে আসে এক ছেলে সন্তান। তারপর থেকে একেক করে ৫ ছেলে ও ১ মেয়ে সন্তানের জন্মদেয়।সংসার বড় হয়ে গেল।বাবা তার জীবন উৎসর্গ করে মাঠে -ঘাটে পরিশ্রম করতে থাকে ও স্ত্রী সহযোগিতা করতে থাকে।
যা হোক এখন আসি আসল কথায়।
তখনকার সময়ে লেখা পড়া খুব বেশি ছিল না।বড় ছেলে স্কুলে যাই আর বাবা বাধা দেয়। বাবার পরিকল্পনা লেখাপড়া করে কি হবে সকলে মিলে কৃষি কাজ করবো আর সংসার তো ভালই চলছে। আর মা ভাবতো আমার ছেলে মেয়েদের লেখাপড়া শিখিয়ে মানুষের মত মানুষ করবো।কিন্তু কোন ভাবে স্বামীর অনুমতি মিলছে না বরং এর জন্য ভোগ করতে হয় অসংখ্য নির্যাতন।
এমন দিন গেছে না খেয়ে থাকতে হয়েছে।কারণ স্বামী ঘরে রান্না করতে দেয়নি।শেষ পযন্ত ছেলে মেয়েকে রাতে বাড়িতে পড়াতে থাকে।কারণ স্কুলে যাওয়া বন্ধ।
বাবা সব দেয় কিন্তু স্কুল, বই, খাতা, কলম কিনার টাকা দেয় না। যাহোক মা তার সংকল্প নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে। লোকিয়ে লোকিয়ে মা তার ছেলেদের লেখাপড়ার উপকরণ কিনে দিতো ও বাড়িতে পড়াতে থাকলো।
বড় ছেলে যখন ৬ষ্ঠ শ্রেণীতে পড়ার সময় বা বয়স হল তখন স্কুলে ভর্তি হল এই শর্তে যে সংসার থেকে এক টাকা খরচ দিবে না ও উনার সাথে ক্ষেতে খামারে কাজ করতে হবে। একটা সময় সব ছেলে মেয়েকে স্কুলে ভতি করাতে সক্ষম হন। মায়ের ছিল প্রচন্ড মানসিক শক্তি । উনি ৮ টি হাঁস পালন করতে লাগলেন ও ছেলে মেয়ের লেখাপড়ার খরচ বহন করতে লাগলেন। ছেলে মেয়ে গুলো লেখাপড়ায় বেশ ভাল ছিল।তাই স্কুল থেকে বেতন মকুফ সহ সব ধরনের সুযোগ সুবিধা পেতো।
তারপর মান থেকে চুন খসলে নির্যাতন করতো এমনকি মারধর করতো।একটা সময় বড় ছেলে SSC পরীক্ষার্থী। মা তো সব চালাতে পারলো কিন্তু ছেলের ফরম ফিলাপের টাকা কিভাবে দিবে।এই চিন্তায় অস্তির, একটা সময় স্বামীকে না জানিয়ে ধান বিক্রি করে দিল।ছেলের ফরম ফিলাপ করলো ও ছেলে পরীক্ষা দিল।অবশেষে পরীক্ষার ফল বের হল, ছেলে তো স্টার মার্ক পেয়ে কৃতকার্য হল।চারদিকে হৈ হৈ রব পড়ে গেল। মায়ের প্রাথমিক টার্গেট পূর্ণ হল।ছেলেকে HSC তে ভর্তি করা হল। ২য় ছেলে SSC পরীক্ষা দিল প্রথম বিভাগ পেয়ে কৃতকার্য হল।একটা সময় চার দিক থেকে প্রশংসার বাণী আসতে থাকলো।বাবা যখন বাজারে যায় তখন স্কুলের শিক্ষক ও আশেপাশের লোক বাবা কে সন্মান করতো। সবাই বাবাকে বলতো আপনি তো কাজের কাজ করতেছেন। যা হোক একটা সময় ঐ বাবা ছেলে মেয়েদের লেখাপড়ার প্রেমে পড়ে যায়। ৫ ছেলে মেয়ের লেখাপড়ার খরচ চালাতে নিজের কিনা জমি বিক্রি করে দিয়েছেন নিমিষেই।
৫ছেলে ও ১ মেয়ে সবায় উচ্চ শিক্ষায় শিক্ষিত হয়।অবশেষে মায়ের সপ্ন পূর্ণ হল।
😍আসলে এতক্ষণ যে কাহিনী বললাম এটা অন্য কারো না এটা আমার বাবা মায়ের।
এই সফল নারী আমার প্রিয় মা 😍
SOD No: 161
Date: 11.03.2020
ফেরদৌস আলম
কমিউনিটি ভলান্টিয়ার
গফরগাঁও, ময়মনসিংহ
ব্যবসাঃকোনাবাড়ী,গাজীপুর
ব্যাচঃ৬ষ্ঠ
মোবাইলঃ০১৮৭২৭৩২০৫১
রেজিষ্ট্রেশন নাম্বারঃ১১৯
Founder and Managing Director
Prantik tea and Co limited