আজকে_আমি_আমার_নিজেকে_নিয়ে_কিছু_লিখব।
আসসালামুয়ালাইকুম,আসা করি সবাই ভাল আছেন। সবসময় আল্লাহ তায়ালা যেন সবাই কে সুস্থ রাখেন সে কামনাই করি। এবং আমিও আল্লাহর অশেষ রহমতে ভালো আছি আলহামদুলিল্লাহ।
#প্রথমে ধন্যবাদ জানাই আমাদের শ্রদ্ধেয় শিক্ষক এবং পথ প্রদর্শক জনাব ইকবাল বাহার জাহিদ স্যার কে।
আমি সায়মা আক্তার। চট্টগ্রামের সন্দ্বীপে আমার বাড়ি। বর্তমান অবস্থান চট্টগ্রামে। যদিও সন্দ্বীপ এর বাসিন্দা কিন্তু জন্ম U.A.E এর আবুধাবিতে। ওখানেই আমার বড় হওয়া। আমি বাংলা অথবা ইংলিশ স্কুলে লেখাপড়া করতে পারি নি। কারণ ওই স্কুল গুলো আমাদের ওখান থেকে একটু দূরে ছিল। আমার বাবা ছিলেন একজন মাওলানা এবং অনেক স্ট্রিক ছিলেন। দূরে কোথাও যাওয়া যাবে না। আমার মা ও বাবার কথা ছাড়া কোন কিছুই করতেন না। এরপর যাইহোক আর কি করার বাসার কাছে পাকিস্তানি স্কুল ছিল, ওখানেই আমার লেখা পড়া এবং বড় হয়ে উঠা। এবং পাশাপাশি বাংলা পড়া টা ও চালিয়ে যায়। বাসায় আবার আমার বাবা বাংলা পড়ার জন্য গৃহ শিক্ষক রেখেছিলেন। এভাবে আমি সপ্তম শ্রেণী পর্যন্ত পড়াশোনা করি ওখানে।
এরপর আমার আব্বু সিদ্ধান্ত নেয়, দেশে পাঠিয়ে দিবেন আমাদের কে। যেহেতু ওখানে লেখা পড়ার সমস্যা হচ্ছিল তাই। এরপর আমরা ২০০০সালে দেশে চলে আসি।
দেশে এসে আমি অস্টম শ্রেণীতে ভর্তি হই।
এরপর অনেক বড় দুঃখের বিষয় হল দেশে আসার পর আমার বাবা সিদ্ধান্ত নেয় আমাকে এবার বিয়ে দিয়ে দিবেন। তবুও এর মধ্যে আমি অনেক যুদ্ধ করে দশম শ্রেণীতে উত্তীর্ণ হয়। তার পর এক দিন সত্যি সত্যি দশম শ্রেণী থেকে আমার বিয়ে হয়ে যায়। আমাদের ফ্যামলিতে সবাই মাওলানা ছিলেন । আমার দাদা, চাচা,মাম, বাবা সবাই।তাই ওনাদের চিন্তা ভাবনা ছিল, মেয়েরা বেশি লেখা পড়া করা ভালো না। কিন্তু আমি এটার একেবারে বিরুদ্ধে ছিলাম।
আমি সেই বন্দি জীবনে বসে বসে শুধু স্বপ্ন দেখতাম যে আমি লেখা পড়া করে কিছু একটা করব। কিন্তু আমার ভাগ্যে জোটে নি। বিয়ের পর শশুর বাড়িতে ও এসে সেই একি অবস্থা। কারো সাপোর্ট পায়নি। নিজের স্বপ্ন গুলো কে মাটি চাপা দিয়ে দিলাম।
এখন আমার বিয়ের জীবন ষোলো বছর চলছে। আমার বাচ্চারা আস্তে আস্তে বড় হয়ে গেছে । আমার মনে আবার আগের সেই ঝুলন্ত স্বপ্ন গুলো নাড়া দিতে থাকে।
অনেক স্বপ্ন এবং ইচ্ছা থাকার পরও সাহস করতে পারছিলাম না। কারণ এখনো আমাকে সহযোগিতা করার মতো আমি কাওকে পায়নি। এমনকি আমার হাজব্যান্ড ও না ।
এবার আস্তে আস্তে ফেসবুক, গুগল, ইউটিউব সবখানে খুঁজতে থাকি,যদি কোন সাহস দেয়ার মতো কাউকে পাওয়া যায় কি না। ইউটিউব এ অনেক ভিডিও দেখেছি, কিন্তু কারো কোনো কথায় সাহস পাচ্ছিলাম না। একদিন #ইকবাল_বাহার_জাহিদ স্যার এর একটি ভিডিও দেখি।ভালোই লেগেছে কথা গুলো।তার পর আস্তে আস্তে স্যার এর সব ভিডিও দেখতে শুরু করি। তখন অস্টম ব্যাচ চলছিলো। নবম ব্যাচ শুরু হওয়ার এক মাস আগের কথা ছিলো সেটা। নবম ব্যাচ এ এসে আমি রেজিষ্ট্রেশন করি।
তার পর আস্তে আস্তে স্যার এর সেশন গুলো পড়তে থাকি। এবং নিজেকে পরিবর্তন করতে থাকি। স্যার এর সেশন গুলো পড়ে আমি মানুষিক ভাবে অনেক শক্তিশালী হয়ে উঠি। এবং আমি কিছু বুটিকস এর প্রোডাক্ট এনে আমার কাজ শুরু করে দিয়েছি। আলহামদুলিল্লাহ সবগুলো প্রডাক্ট আমার সেল হয়ে যায়। এবং দ্বিতীয় বার প্রডাক্ট আন্তে সক্ষম হই।
এবং সবচেয়ে আনন্দের বিষয় হলো আমি আমার লেখা পড়া কনটিনিউ করার সিদ্ধান্ত নেয়েছি।ডঃ রুবানা হক এর একটা ভিডিও দেখেছি, সেখানে তিনি বলেছিলেন, তিনি ৫২ বছর বয়সে পি এইচ ডি করেছেন। সেটা দেখে আমি লেখা পড়ার বিষয়ে আরো বেশি অনুপ্রাণিত হয়। উনি যদি ৫২ বছর বয়সে এসে ও লেখা পড়া করতে পারে তাহলে আমি পারবো না কেন,!
আমি যদি বেঁচে থাকি তাহলে আমি আমার সম্পূর্ণ লেখা পড়া টা অবশ্যই শেষ করবো।
ইনশাআল্লাহ।
সবশেষে আবার ও শ্রদ্ধা এবং কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি আমার জীবনের পরিবর্তন কারি , আমার জীবনের সবচেয়ে বড় শিক্ষা দান কারি, আমার জীবনের সবচেয়ে প্রিয় শিক্ষক, শ্রদ্ধেয়
#ইকবাল_বাহার_জাহিদ স্যারকে।
সবাই ভালো থাকুন সুস্থ থাকুন এবং নিরাপদে থাকুন।
ভুল ত্রুটি হলে ক্ষমা করবেন।
সায়মা আক্তার
রেজিস্ট্রেশন নং ৯৯২৯
নবম ব্যাচ
জেলা চট্টগ্রাম
স্ট্যাটাস অব দ্যা ডে"- 199
Date:- 19/04/2020